পাতা-১
সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ আগামী সেপ্টেম্বরে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজসহ আট শ্রেণির অংশীজনের সঙ্গে সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর পাশাপাশি সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত, দল নিবন্ধন, পর্যবেক্ষক সংস্থা চূড়ান্ত করাসহ ২৪টি কাজকে প্রাধান্য দিয়ে নির্বাচনী পথনকশা (রোডম্যাপ) ঘোষণা করেছে সংস্থাটি। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ইসির জ্যেষ্ঠ সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এই পথনকশা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘আজ আমরা আমাদের কার্যপরিকল্পনা জানাচ্ছি।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে লক্ষ্য করে পদক্ষেপগুলোকে মূলত ২৪টি ভাগে ভাগ করে আমরা এই পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছি।’এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার পর তাদের মতামত অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনায় নতুন বিষয় সংযোজন হতে পারে। তবে কিছু বিয়োজন হবে না।তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ইসির পথনকশাকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলেছে, জুলাই সনদ ঘোষণার পর এটা দিলে ভালো হতো। সূত্রঃ সমকাল।
ঢাকায় নাগরিক সমাবেশ
চলনবিলে বিশ্ববিদ্যালয় নয়
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ জলজ বাস্তসংস্থান চলনবিলে কেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করা হবে? প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংস করে এ ধরনের স্থাপনা করা যাবে না। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত থেকে অবিলম্বে সরে আসতে হবে।
চলনবিলের প্রবাহমুখ বন্ধ করে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের প্রতিবাদে এবং বিলের প্রাণ প্রকৃতি বাস্তসংস্থান রক্ষার দাবিতে নাগরিক সমাবেশে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন। গত ২৭ আগষ্ট বুধবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ওই নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্সের (বিআইপি) সভাপতি অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান প্রশ্ন তোলেন জলজ বাস্তসংস্থান চলনবিলে কেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করাতে হবে। তিনি বলেন, চলনবিল আমাদের অসংখ্য জলজ বাস্তসংস্থান, পানির আধার । সেই আধারে কেন বিশ্ববিদ্যালয় হবে’। তিনি বলেন, কীভাবে এই প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পেল।এবং এই অনুমোদন প্রক্রিয়ায় পরিকল্পনাগত প্রতিবেদন, পরিবেশগত প্রতিবেদন সত্যিকার অর্থে আমলে নেওয়া হয়েছে কি না, সেটা জানতে হবে। ভবিষ্যতে যেন পরিবেশ ধ্বংস করে আর কোন প্রকল্প না গ্রহণ করা হয় , সে দাবি জানান তিনি। সূত্রঃ প্রথম আলো।
‘ভূতের মুখে রাম নাম’- হাসিনাও এখন তত্ত¡াবধায়ক সরকার চান : অ্যাটর্নি জেনারেল
ডেস্ক রিপোর্টঃ অ্যাটর্নি জেনারেল মো.আসাদুজ্জামান বলেছেন, এখন ভূতের মুখে রাম নাম উঠেছে। শেখ হাসিনা নিজেও বলেছেন, উনারা নাকি তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চান।গত বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেলের নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে শুনানির অনুমতি দেওয়ার পর ব্রিফিংয়ে আসেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) বাতিল ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় দিয়েছিলেন। আমরা আজকে আদালতে বলেছি, এখন আবার আমরা তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরতে চাই। আমরা মনে করি, দেশে তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরে আসবে। এর ফলে আর কোনো মানুষের বুক খালি হবে না, কোনো মা-বাবা তার সন্তান হারাবেন না, কোনো ভাই তার ভাইকে হারাবে না, কোনো সন্তান তার মা-বাবাকে হারাবে না। আর কখনো রক্ত দিয়ে ভোটের ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায় করতে হবে না।তিনি আরও বলেন, আগের সরকার বলতো কখনো অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকতে পারে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার নিজেই ছিল অনির্বাচিত। আমরা তো তত্তা¡বধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে ছিলাম। এখন আবার ভূতের মুখে রাম নাম উঠেছে। শেখ হাসিনা নিজেও বলেছেন, উনারা নাকি তত্ত¡বধায়ক সরকার চান। সূত্রঃ বিডি প্রতিদিন।
জনমত জরিপেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ইস্যুতে
চলনবিল রক্ষার পক্ষে একমত ৬১ শতাংশ মানুষ
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিচালিত এই জরিপে অংশ নিয়েছেন মোট ১ হাজার ৩৮১ জন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। ‘হ্যাঁ’ ভোট দিয়েছেন ৮৩৮ জন এবং ‘না’ ভোট দিয়েছেন ৪৮৯ জন মানুষ। হ্যাঁ বা না কোনো মন্তব্য করেননি ৫৪ জন।
চলনবিল রক্ষায় বুড়ি পোতাজিয়া থেকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বিকল্প জায়গায় স্থানান্তরের জোড়ালো দাবি উঠেছে। এই দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন ৬১ শতাংশ মানুষ।প্রসঙ্গত, বুড়ি পোতাজিয়া এলাকায় যেখানে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে তা নদীর প্রবাহ মুখে। সেখানে ৪০ ফুট উচ্চতায় বালি ভরাট করা হচ্ছে। তাতে চলনবিল অঞ্চলে পানি প্রবাহ ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ১৬ আগস্ট বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) চারঘাট উপজেলা শাখা স্থানীয় ফরহাত আলাউদ্দিন মডেল স্কুলের হলরুমে এক মতবিনিময় সভা আয়োজন করে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ক্যাম্পাস স্থানান্তরের দাবি তোলা হয়। বিষয়টি নিয়ে জরিপ চালায় দেশের শিক্ষা বিষয়ক একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম। তাতে ৬১ শতাংশ মানুষ ওই দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন। তবে ৩৫ শতাংশ মানুষ এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন নি।
গত ১৭ আগস্ট সকাল থেকে শুরু হয়ে ১৮ আগস্ট দুপুর পর্যন্ত দৈনিক শিক্ষাডটকমের ওয়েবসাইটে এই জরিপ চলানো হয়।দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিচালিত এই জরিপে অংশ নিয়েছেন মোট ১ হাজার ৩৮১ জন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। ‘হ্যাঁ’ ভোট দিয়েছেন ৮৩৮ জন এবং ‘না’ ভোট দিয়েছেন ৪৮৯ জন মানুষ। হ্যাঁ বা না কোনো মন্তব্য করেননি ৫৪ জন।জরিপের প্রশ্ন করা হয়, চলনবিল রক্ষায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থানান্তরের দাবির সঙ্গে আপনিও কি একমত? জরিপে ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’ এর পাশাপাশি ‘মন্তব্য নেই’ নামে আরেকটি ঘর ছিলো।প্রসঙ্গত, চলনবিল অঞ্চলের ৬টি জেলা, ৪১টি উপজেলা, ১ হাজার বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে ৪৭টি নদী ও ১৬৩ বিল, ৩০০টির বেশি ক্যানেল, ১ লাখ ২০ হাজার পুকুর এবং বড় বড় বেশ কয়েকটি পাথার আছে। এ অঞ্চলে চলনবিলের সুবিধাভোগী মানুষের সংখ্যা পরোক্ষভাবে প্রায় ১ কোটি, যারা এই অঞ্চলে পানি প্রবাহের ওপরে জীবনধারণ ও জীবিকা নির্বাহ করেন। সূত্রঃ দৈনিক শিক্ষাডটকম।
হাসিনা গেল, কিন্তু হাসিনার পুলিশ গেল না : ফাইয়াজ
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ ৩ দফা দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসবভন যমুনা অভিমুখে যাত্রা করলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এক পর্যায়ে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
গত বুধবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এর আগে ৩ দফা দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।এ ঘটনায় পুলিশের কড়া সমালোচনা করেছেন বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ। বুধবার বিকেলে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘হাসিনা গেল, কিন্তু হাসিনার পুলিশ আর গেল না।’ সূত্রঃ সমকাল।
তাড়াশে প্রধান শিক্ষকের অনৈতিক
আচরণের তদন্ত অনুষ্ঠিত ছবি
তাড়াশ প্রতিনিধিঃ সহকর্মী দুই নারী শিক্ষিককে কু-প্রস্তাব, তাঁদের সাথে অশালীন আচরণ করায় সিরাজগঞ্জের কলামুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল সালামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়েরর পর তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
এর পূর্বে ভুক্তভোগি দু‘জন নারী শিক্ষকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আপেল মাহমুদ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো.আতিকুর রহমানকে প্রধান ও সহকারী উপজেলা প্রাথমি শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমকে সদস্য করে তদন্ত কমিটির গঠন করেন।
গত সোমবার দুপুরে তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল কলামুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শণ করে তদন্ত শুরু করেন। তদন্ত কমিটি তদন্তকালে শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেছেন। পাশাপাশি তদন্ত কমিটির প্রধান মো.আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, তদন্তকালে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।এছাড়াও শিক্ষক সালামের বিরুদ্ধে সরকারী সম্পদ বিদ্যালয়ের দুটি ল্যাপটপ তাঁর ছেলে মেয়েকে দিয়ে ব্যবহার করারও বিস্তর অভিযোগ আছে। আরো অভিযোগ আছে, শিক্ষার্থীদের গালাগাল করা ও কোমলমতি শিশু শিক্ষাথীদের প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কাজ করানোরও অভিযোগ রয়েছে।অবশ্য, সকল অভিযোগ অস্বীকার করে কলামুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান মো. আব্দুস সালাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আপেল মাহমুদ জানান, তদন্ত কমিটি তদন্ত সম্পন্ন করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে ওই শিক্ষক দোষী প্রমানীত হলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তাড়াশের নাদোসৈয়দপুরে বিদ্যালয় মাঠে হাট
লেখাপড়া চরম ব্যাহত
চলনবিল প্রতিনিধিঃ ১৯৭৪ সালে দুইএকর ৬২ শতক জায়গায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নাদোসৈয়দপুর জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুইটি দ্বি-তলভবনের পর অবশিষ্ট জায়গা বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আবার বিদ্যালয় সংলগ্ন ২৫ শতক জায়গাটি মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নিজস্ব সম্পত্তি। সেখানে একটি আধা পাঁকা ভবনে চলে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কার্যক্রম। বাঁকী জায়গা খোলা পড়ে থাকে।
জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের জায়গায় কোন সীমানা প্রাচীর নাই। তাই প্রতি রোববার ও বুধবার বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ও তৎসংলগ্ন ভূমি অফিসের জায়গায় “নাদো সৈয়দপুর সাপ্তাহিক হাট”বসায় শত শত মানুষের উপস্থিতি, পন্যের পসরা বসিয়ে বিকিকিনি, হাঁক-ডাক, মোটরবাইক, কৃষিজপণ্য রাখা, ভ্যান, ভুটভুটির গ্যারেজ করায় বিদ্যালয়ে হাটবারে শিক্ষার্থীদের পড়া- লেখার চরম ব্যাঘাত ঘটছে,এমনি ভাষ্য, এলাকার বাসিন্দা আবু শামার (৬৭)। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী জুয়েল রানা বলেন, সপ্তাহে মাত্র পাঁচ দিন ক্লাস চলে। মাঝে দুই দিন হাট বসায় শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখা লাঠে উঠছে।তারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নাদো সৈয়দপুর জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মাজেদুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসায় হাট বারে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার চরম ক্ষতি হয়। যা বন্ধ হওয়া জরুরী। নাদো সৈয়দপুর জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আরিফুল ইসলাম চঞ্চল বিদ্যালয় মাঠে হাট বসায় শিক্ষার্থীদের পড়া- লেখার ব্যতয় ঘটছে স্বীকার করে বলেন, নানা সমস্যায় বিদ্যালয়ের জায়গায় প্রাচির নির্মাণকরা যাচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.আব্দুস ছালাম বলেন, কোন বিদ্যালয়ের জায়গায়ই হাট বসানো, দোকানপাট করা যাবে না। তাড়াশ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নববধূ বোনের সাথে বোনের শশুরালয়ে যেতে বারণ করায় অভিমানে রুপা খাতুন (১৫) নামের এক মাদ্রসা ছাত্রীর বিষপানে আতœহননের খবর পাওয়া গেছে।মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার তাড়াশ পৌর এলাকার ক্ষুদ্র মাঝিড়া মহল্লায়।রুপা খাতুন ওই মহল্লার আব্দুর রশীদের মেয়ে এবং তাড়াশ ফাজিল মাদ্রসার অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষাথী।বিষয়টি তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত রোববার তাড়াশ পৌর এলাকার ক্ষুদ্র মাঝিড়া মহল্লার বাসিন্দা আব্দুর রশীদের বড় মেয়ে রোকসানা খাতুনের সাথে পাশ্ববর্তী লালুয়া মাঝিড়া গ্রামের আরজ আলীর ছেলে মো. আহাদ আলী বিয়ে সম্পন্ন হয়। এ দিকে এলাকার রীতি অনুয়ায়ী বিয়ে শেষে কনের বিদায় বেলায় তাঁর সাথে কনের শশুরালয়ে কনের পরিবারের কোন এক নারী স্বজনকে যেতে হয়। আর নারী স্বজন হিসেবে নববধূ রোকসানার ছোট বোন রুপা বড় বোনের সাথে যেতে চান। এ কথা শুনে পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা বিয়ের ওই অনুষ্ঠানেই রপাকে গালমন্দ করেন। পাশাপাশি রুপাকে বাদ দিয়ে অন্য এক নারী স্বজনকে রোকসানার শশুরালয়ে পাঠান। এতে মন খারাপ করে সোমবার রাত ১১ টার দিকে রুপা নিজ ঘরে ঘুমাতে যায় এবং রাতের কোন এক সময় বিষপান করে আত্মহত্যা করে।
পাতা-২
চলনবিলে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়
শুরু হচ্ছে পরিবেশ ধ্বংসের মহাযজ্ঞ
আবদুর রাজ্জাক রাজু
সম্প্রতি নাটোরের গুরুদাসপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে চলনবিল রক্ষা আন্দোলনের জনৈক মুখপাত্র বলেছেন, “আমরা চলনবিলও চাই- রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয়ও চাই”। তাই চলনবিল আর রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয় একই সুরে ও আবেগের সাথে গাঁথা তা সবারই সমান অনুভূতি বটে। দুটোই গুরুত্বপূর্ণ । তবে চলনবিল না থাকলে রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয় অর্থহীন সে কথাও বুঝতে হবে। বিশেষ করে দেশ ও দেশের জনপদ, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য আগে। দেশের মানুষ ও পরিবেশ সর্বাগ্রে। শিল্প, কলকারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এগুলোর প্রাধান্য পরে। কারণ “মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই – নহে কিছু মহিয়ান”। কবি’র সে কথার মর্ম অনুধাবন কিন্তু কঠিন নয়। কাজেই চলনবিল বাঁচলে এর মানুষ বাঁচবে। চলনবিল মরলে এর মানুষসহ গোটা প্রাণ, প্রকৃতি, পরিবেশ সবই হুমকি, ঝুঁকি ও বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে যাবে। এর অস্তিত্ব বিলীন হবে। সেটাকে বলা যায় এক ধরনের সুনামি। সে কারণেই পরিবেশ বাদ দিয়ে কোনো উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি হতে পারে না- এ মতবাদ আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। সে অর্থে চলনবিলের গুরুত্ব,ব্যাপকতা ও তাৎপর্যের সাথে রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয় তুলনীয় হতে পারে না। এটা যুক্তিসম্মত ও বাস্তবসম্মত নয়।
রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে গত ১৫ জুলাই ২০২৫ একই বিশ^বিদ্যালয় মিলনায়তনে স্থায়ী ক্যাম্প্স নির্মাণের দাবিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে কিছু বক্তব্য উপস্থাপিত হয়েছে। যা বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ের জ্ঞান ও মানের সাথে যায় না। যেমন: “পরিবেশ কর্মী পরিচয়ে একটি লোভী স্বার্থান্ধ গোষ্ঠি রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয় হলে চলনবিল ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে”। এ নিবন্ধে প্রথমেই আমি ওই পরিবেশ কর্মী তথা চলনবিল রক্ষা আন্দোলনের আহবায়কের সাম্প্রতিক মন্তব্যের উদ্বৃতি দিয়েছি। তিনি চলনবিল ও রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয় দুটোই চেয়েছেন। তিনি বলেননি, এই বিশ^বিদ্যালয় হলে চলনবিল ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বরং চলনবিলের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট তথা চলনবিলের পানি নিস্কাশনের বহু খাল বা নদীমুখ যেখানে এসে মিশেছে সেখান থেকে বিলের পানি প্রবাহ যমুনায় গড়াতে বাধাপ্রাপ্ত হলে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় চলনবিলে নানামুখী পরিবেশগত বিপর্যয় দেখা দেবে; যদি শাহজাদপুরের বুড়ি পোতাজিয়ার উল্লেখিত নির্ধারিত স্থানে উক্ত বিশ^বিদ্যালয় ভবন ও ক্যাম্পাস নির্মিত হয়- ¯্রফে এই অকাট্য যুক্তিটা তিনি সামনে এনেছেন। অর্থাৎ নিরেট বিলের মাঝখানে বিরান বিল এলাকায় একটি বিশাল জলাধারের বুকে বড় বড় কংক্রীটের পাকা দালানসহ ভরাট-পাইলিং করে বিশাল আকারের স্থাপনা ও রাস্তাঘাট নির্মাণ কখনো পরিবেশসম্মত হতে পারে না। আর এ ব্যাপারটা বিজ্ঞানের তত্ব, তথ্য বা সূত্র দিয়ে বুঝানোর প্রয়োজন পড়ে না। সাধারণ জ্ঞান, বিবেক ও বাস্তব বিচার বিচেনাতেই এর মর্ম-তাৎপর্য সহজে বোধগম্য। সেটা চলনবিল না হয়ে অন্য যে কোনো বিশাল জলাভূমি বা বিস্তৃত খাল নদী লেক হলেও একই কথা প্রযোজ্য হত। এখানে ভাল-মন্দ বিবেক বোধ ও মানবিকতার প্রশ্ন জড়িত।
আবার বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত উপরোক্ত একই সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত প্রশ্ন “গত ৯ বছরে এ নিয়ে কেন প্রতিবাদ হল না” তার জবাবে বলা যায়, সম্ভবত: বুড়ি পোতাজিয়ায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মিত হবে তা গণমাধ্যমের সুবাদে বৃহত্তর জনপরিসরে প্রচার ও চাউর হয়ে সবার নজরে এসেছে হালে, অতি সম্প্রতি মাত্র। মানে এখানকার শিক্ষার্থীদের স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলনের সূত্রে স্থান নির্বাচনের বিষয়টি ব্যাপকভাবে জানাজানি বা প্রকাশিত হয়। এতে করেই চলনবিলের মাঝে বিশাল স্থাপনা নির্মাণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এমনকি এটা আবার ওই বিশ্ববিদ্যালয় না হয়ে অন্য বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রসঙ্গ হলেও পরিবেশবাদীরা অনুরূপ অভিযোগ আপত্তি তুলতে পারেন তাও অযৌক্তিক এবং অবিবেচনাপ্রসূত হবে না তা নিশ্চিতই বলা যায়। এ ক্ষেত্রে কৃষি বা পরিবেশ অধিদপ্তর কী ছাড়পত্র কিংবা প্রত্যয়ন দিলো কি দিলো না সে আইনী যুক্তি অবান্তর। কারণ খালি চোখে ও সুস্থ জ্ঞানে যার বাস্তবতা ও পরিণাম উপলব্ধি করা যায় অনুবীক্ষণ বা দূরবীক্ষণ লাগিয়ে তা দেখার আবশ্যকতা কোথায়। তাছাড়া আমাদের দেশের সমাজ ব্যবস্থায় ক্ষমতা ও প্রভাব থাকলে কোনো ছাড়পত্র যোগার করাই অসাধ্য-দু:সাধ্য নয় সেটা সব্রাই জানা। অধিকন্ত পরিবেশ ধ্বংস করে প্রকল্প করা এ দেশে একটা কালচারে দাঁড়িয়ে গেছে।
এখন আসি শাহজাদপুরের “বুড়ি পোতাজিয়া হতে চলনবিল ৬৮ মাইল দূরে অবস্থিত” একই সংবাদ সম্মেলনে এমন উদ্ভট দৃষ্টিভঙ্গীর অবতারনা প্রসঙ্গে। এটা যেন মাতৃগর্ভে শিশুর অবস্থান সত্বেও ভ্রমাত্মক ব্যবধানের অনুমান। আচ্ছা ,তাই যদি হবে তো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চলনবিল মধ্যস্থিত শাহজাদপুরে না এসে উল্লেখিত ৬৮ মাইল দূরবর্তী চলনবিলে আস্তানা গাড়লেন না কেন। কেনই বা তিনি অনেক কালজয়ী লেখনীতে শাহজাদপুরকে চলনবিল নামে অভিহিত করেছেন। আরো কেন ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে , রবী ঠাকুর, শাহজাদপুর কাছারীবাড়ী ও চলনবিল এসব অখন্ড ইতিহাসের অংশ বা অধ্যায়। এগুলোর একটিকে আরেকটি থেকে পৃথক বা আলাদা করা যায় না। ঐতিহাসিকভাবে স্বত:সিদ্ধ যে, শাহজাদপুর চলনবিলের অবিচ্ছেদ্য অংশ, এর প্রায় চতুর্পাশেই আজো বিল আর নদনদী ঘেরা।তাই বুড়িপোতাজিয়া বা শাহজাদপুরের সাথে চলনবিলের সম্পর্ক প্রশ্নাতীতভাবে প্রমাণিত, সন্দেহাতীতভাবে প্রতিষ্ঠিত। তাহলে কোন্ যুক্তি ও প্রমাণের ভিত্তিতে বলা হল, “বুড়ি পোতাজিয়া বা শাহজাদপুর থেকে চলনবিল ৬৮ মাইল রৈখিক দূরত্বে অবস্থিত”। বরং শাহজাদপুর সহ পূর্বের বৃহত্তর চলনবিলের যে ১২টি থানা অধুনা উপজেলাকে শত শত বছর যাবৎ নানা প্রকারে পরিবেশগতভাবে বিধ্বস্ত ও বিপন্ন করা হয়েছে তার ফলে সমগ্র চলনবিল আজ পরিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অনুরূপএই এলাকায় ভরাট-দখল ও দূষণ বন্ধে এবং জলজ-উদ্ভিজ বাস্ততন্ত্র বিনাশ প্রতিরোধে গৃহীত হয়নি কোন ব্যবস্থাই। এ কারণে উপমহাদেশের বৃহত্তম এই বিল দ্রæত সংকুচিত হয়ে আসছে যা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ অশনিসংকেত স্বরূপ।
ওদিকে যুগ যুগ ধরে অসংখ্য অগনিত বাঁধ, ¯øুইচগেট, পোল্ডার, ব্রীজ,কালভার্ট, ড্যাম,সড়ক,রাস্তাঘাট,রেলপথ,পুকুর,বাড়ীঘর,ব্যবসা-বাণিজ্য, ইটভাটা এবং শিল্প-কলকারখানা ইত্যাকার অবকাঠামো নির্মাণ করে প্রকৃতপক্ষে চলনবিলের প্রাণ-প্রকৃতি, পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য বহুলাংশে ধ্বংস করা হয়েছে। এখন সেই ধ্বংসযজ্ঞের শেষ পেরেক ঠোকা হবে যদি এই বিলের বুকে এবার রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশাল ইট পাথরের দালানকোঠা সহ বিভিন্ন স্থাপনা বা কাঠামো নির্মিত হয়।এতে উজানের সমগ্র চলনবিল জুরে সৃষ্ট দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা চলনবিলবাসীর দুঃখের কারণ হবে যেমন হোয়াং হো চীনের দুঃখ। তাই চলনবিলবাসীর পক্ষে আমাদের প্রস্তাব,বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস ওখানে না করে শাহজাপুরের পূর্ব অথবা উত্তরের উঁচু স্থলভাগ এলাকার যে কোন স্থানে বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের আশেপাশে কিংবা এর অদূরবর্তী উপযুক্ত স্থান নির্বাচিত করে নির্মাণ করা হলে তা চলনবিল রক্ষায় সহায়ক হবে। বিকল্প স্থান নির্বাচনের কোন সমস্যা ও অভাব নেই , যেহেতু প্রচুর উঁচু স্থলভূমি রয়েছে শাহজাদপুরের অন্যত্র। এ নিবন্ধ লেখার সময় সংবাদপত্রে খবর দেখলাম, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নির্মাণের প্রস্তাব একনেকে পাশ অর্থাৎ অনুমোদন হয়েছে, তবে শর্ত হলো-পরিবেশগত সমীক্ষা জরিপ সাপেক্ষে। অবশ্য এটা ভাল খবর। এছাড়া চলনবিলের বিভিন্ন এলাকার জ্ঞানী, গুণী ও বিজ্ঞজনের এ ব্যাপারে মতামত নেওয়া যেতে পারে। তাসত্বেও তড়িঘড়ি করে চলনবিলের ঐ স্থানে তা করাটা ঠিক হবে না। আর যদি শেষমেষ তাই হয় তাহলে চলনবিলবাসীকে এর বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ হিসেবে হাইকোর্টে রিট করা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। মনে রাখতে হবে, শুধু রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, কর্তৃপক্ষ এবং শুভার্থীরাই নয়, চলনবিলের সব মানুষেরও প্রাণের দাবি- এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত শাহজাদপুরেই স্থাপিত হোক। তবে চলনবিলের পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ, এর জলাভূমি বিনাশ বা এর কোনরূপ ক্ষতি না করে তা করতে হবে- এটাই একমাত্র চাওয়া। কোন মহলের এমনটি ভাবনা-চিন্তা করা ভুল তথা অমূলক হবে যে, যারা চলনবিল রক্ষার্থে বুড়ি পোতাজিয়ায় এর নির্মাণের বিরোধীতা করছে তারা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়েরও বিরুদ্ধে বা বিপক্ষে, ওরা এর শত্রæ। তারা চায় না এটা হোক।এই ধারণা আত্মকেন্দ্রিক , একপেশে এবং সম্পূর্ণ অযথার্থ-অযৌক্তিক। বিশ্ববিদ্যালয়টি বুড়ি পোতাজিয়া বা চলনবিলের নি¤œ জলাধার এবং পানি প্রবাহকে বিঘিœত না করে এমন যে কোন বিতর্কমুক্ত জায়গায় হোক তাতে তো চলনবিল অঞ্চলের মানুষের আপত্তি নেই। তবে বুড়ি পোতাজিয়াতেই এটা হতে হবে এই জিদ, গোঁড়ামী ও একগুঁয়েমী পরিহার করা দেশ ও দশের স্বার্থে একান্ত বাঞ্ছনীয়।
বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলকে দূরদর্শী দৃষ্টি দিয়ে, চলনবিল দৃশ্যপটে ভবিষ্যতের ভাবনা ভেবে, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের দেশীয় এবং স্থানীয় অভিঘাতের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে এই কাজটি করতে হবে। কারণ এটা কোন সাময়িক, অস্থায়ী ও ছোটখাটো হালকা স্থাপনা নয়। এমনকি ভবিষ্যতে এর কলেবর, পরিসর ও পরিধি প্রয়োজনের ও চাহিদার আলোকে ক্রমান্বয়ে আরো বৃদ্ধি ও প্রসারিত হয়ে অবশেষে শহরায়নের দিকে ধাবিত হবে। তখন চলনবিলের আরো বিস্তৃত জায়গা দখলের দরকার দেখা দেবে। এর পরিণতিতে বর্তমানে মৃতপ্রায় চলনবিলের মৃত্যু আরো ত্বরান্বিত হবে যার দুর্যোগময় সর্বনাশা ফলাফল ভোগ করতে হবে সমগ্র চলনবিলের বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্ম এবং প্রকৃতিকে। তেমনটি কারোই কাম্য নয়। সে কথা ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে পদক্ষেপ নেওয়াই শ্রেয়। কেননা, স্থান হিসেবে বুড়ি পোতাজিয়া এখনও ধারণাগত, প্রস্তাবিত এবং পরিকল্পিত পর্যায়ে রয়েছে যা অদ্যাবধি কার্যকরীভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। এর বিকল্প এবং বিজ্ঞান সম্মত উপায় খোঁজার এখনো সময় এবং সুযোগ আছে। অবকাশ আছে গভীরভাবে ভেবে দেখার ও পরিণতি চিন্তা করার। এ স্থান এখনও বদলানো বা পরিবর্তন করা সহজ ও সম্ভব, কঠিন নয়। লক্ষ্যনীয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট প্রায় সবাই এখানে বহিরাগত। তারা এসেছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। ফলে চলনবিল সম্পর্কে তাদের ধারণা ও জ্ঞানের গভীরতার ঘাটতি থাকতে পারে। যে কারণে এর কর্তৃপক্ষ বুড়ি পোতাজিয়াতেই ক্যাম্পাস করার গোঁ ধরে আছেন।
এখানে চলনবিল ইস্যুটি কিছুতেই অগাহ্য করা ঠিক হবে না। অস্থীর , অশান্ত আর তাড়াহুড়ো করে গৃহীত সিদ্ধান্ত আমাদের বিরাট অকল্যাণ বয়ে আনতে পারে।এ দেশের বহু কর্মকান্ড, প্রকল্প, প্রতিষ্ঠান,স্থাপনা ,অবকাঠামো অপরিকল্পিত এবং পরিবেশ বিরুদ্ধ পন্থায় নির্মাণ করে ইতোমধ্যেই জাতির অপরিসীম ক্ষতি তথা অমঙ্গল করা হয়েছে এবং সে ধারাবাহিকতা আজো অব্যাহতভাবে চলছে।এ কারণেও দেশে আজ অসাম্য-বৈষম্য ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এবারে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও অপরিণামদর্শীর মতো কিছু করা হোক তা চলনবিল এলাকাবাসী চাইবে না। আশা করি বিচার, বিবেক, বুদ্ধি,যুক্তির সম্মিলনে ভৌগলিক ও পরিবেশগত দিক এক্ষেত্রে প্রাধান্য এবং মানবিকতা অগ্রাধিকার পাবে। তানাহলে এ কাজটা হবে চলনবিলের জন্য সর্বশেষ পরিবেশগত বোমা বর্ষনের শামিল , বিল পাড়ের মানুষের জন্য চিরকালীন মরণ ফাঁদ। শিক্ষা বিস্তারের নামে পরিবেশ ধ্বংস বা হত্যা করা হলে সেটা হবে ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নিন্দনীয় কাজ যেমনটি চলনবিলে এযাবৎ হয়ে এসেছে শত বাধা নিষেধ সত্বেও। চলনবিল বিসর্জনের, বিলুপ্তির বা এর অস্তিত্বের উপর আঘাত আসে এমন কিছুর বিনিময়ে তো আমরা অন্য কিছু চাইতে পারি না তা সে যতই দামী আর মূল্যবান হোক। আমরা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত এখনও নড়চড় করতে বা সরাতে পারবো , কিন্তু চলনবিলকে তো সরাতে-নড়াতে পারবো না। সুন্দরবন বা হাওরের মতোই এটাও আমাদের এক অনবদ্য প্রাকৃতিক দান, স্থায়ী নৈসর্গিক সম্পদ, প্রকৃতির আশীর্বাদ। অপরদিকে রাষ্ট্র অনেক রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। কিন্তু একটি চলনবিল গড়ে তোলার বা সৃষ্টি করার সাধ্য কারো নেই। বিধায় সবশেষে এ সিদ্ধান্ত বিশেষভাবে পূনর্বিবেচনার সবিনয় দাবি জানাই।
লেখক : সম্পাদক , সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তা, তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ।
ফরিদপুরে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন
জুয়েল আহমেদ, ফরিদপুর থেকে ঃ বাংলা গানের ইতিহাসে এক অনন্য নাম গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার। আধুনিক ও চলচ্চিত্র সংগীতের বিশিষ্ট গীতিকার ও সুরকার। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে বাংলা ছায়াছবি ও আধুনিক গানের জগৎকে তাঁর প্রেমাবেগ-ঊষ্ণ রেখেছিলেন তিনি। গীত রচনায় তাঁর বৈশিষ্ট্য শব্দচয়ন। তাঁর লেখা গান আজও মানুষের মনে বেঁচে আছে অনন্তকাল ধরে। মান্না দের গাওয়া তাঁর লেখা বিখ্যাত ‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’ । ২০০৪ সালে বিবিসির জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানে ঠাঁই পেয়েছে এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে তাঁর লেখা দেশাত্মবোধক গান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিকে অনুপ্রাণিত করেছিল। ‘মাগো, ভাবনা কেন, আমরা তোমার শন্তিপ্রিয় শান্ত ছেলে’ এবং ‘শোনো একটি মুজিবের থেকে’- গানটি গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা, বাংলা গানের ইতিহাসে তিনি চিরস্মরণীয়, চিরঅমর। তাঁর লেখা গান শুধু গান নয়, বাঙালির অনুভূতির ভাষা।
গৗরীপ্রসন্ন মজুমদার জন্মগ্রহণ করেন ৫ ডিসেম্বর ১৯২৫, চলনবিলস্থ পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামে। বাবা প্রেসিডেন্সি কলেজের খ্যাতনামা অধ্যাপক উদ্ভিদবিদ গিরিজাপ্রসন্ন মজুমদার। মা সুধা মজুমদার ছিলেন স্নাতক। শৈশব থেকেই তিনি বাড়িতে বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত ভাষার তালিম পেয়েছেন। বাবা চাইতেন ছেলে বিলেত থেকে ব্যারিস্টারি পাশ করবে। কবিতা ও প্রবন্ধ লেখার প্রতি ছিল তাঁর অসীম আগ্রহ। ছোট থেকেই গৌরীপ্রসন্নের হাতের কাছে দেশি-বিদেশি বই। ছাত্র জীবনের গন্ডি পেরোনোর আগেই ইংরেজিতে অনুবাদ করে ফেললেন কালীদাসের ‘মেঘদূত’।ছন্দের মায়াজালে আটকে যাবার পিছনে সম্ভবত মুখ্য ছিল সুরের মুর্ছনায় হারিয়ে যাওয়াই। প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র থাকাকালে সুরকার অনুপম ঘটকের কাছে কিছুদিন গান শিখেছেন। গায়কীর চেয়ে লেখক স্বত্বাই বেশি আকৃষ্ট করেছিল তাকে।
তার গীতিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবার পিছনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল তিনি শচীন দেববর্মণ এর। যাঁর কণ্ঠ-সুর তাঁকে সবচেয়ে বেশি মোহিত করেছিল। সেই মানুষটির জন্যই প্রথম গান লেখার সুযোগ আসে তার। এরপর আর পিছনে ফিরেনি, চলেছেন দুরন্ত দুর্বার গতিতে। রোমান্টিক বাংলা গানের জগতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছিল তার লেখা গান। ‘‘শচীন দেববর্মণ, লতা মুঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে, মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, কিশোরকুমার, রাহুল দেববর্মণ, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, আরতি মুখোপাধ্যায়, তাদের সকলের সেরা ৫ টা গানের লিস্ট করলে তার মধ্যে অন্তত ৩ টি করে গান তারই লেখা। নীচে তার দৃষ্টান্ত তুলে ধরছি ঃ
ক্স পথের ক্লান্তি ভুলে স্নেহ ভরা কোলে তব – হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
ক্স আজ দুজনার দুটি পথ – হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
ক্স ও নদীরে – হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
ক্স আমি দূর হতে তোমারেই দেখেছি – হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
ক্স এই মম জোছনায় – আরতি মুখোপাধ্যায়
ক্স আজ এই দিনটাকে – কিশোর কুমার
ক্স আমি যে কে তোমার – লতা মুঙ্গেসকার
ক্স বাঁশি শুনে আর কাজ নাই – শচীন দেব বর্মন
ক্স এই পথ যদি না শেষ হয় – হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
ক্স কফি হাউজের আড্ডা – মান্না দে
ক্স যেতে দাও আমায় ডেকো না – আশা ভোসলে ।
এরকম অজস্র কালজয়ী গান পেয়েছে বাংলা গানের জগত উনার কলম থেকেই।কিংবদন্তী গীতিকারকে স্মরণের চেষ্টায় ফরিদপুর উপজেলা পরিষদ এর সামনে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার এর ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে ফরিদপুর উপজেলা পরিষদ।
পাতা-৪
শেষের পাতার ফিচার
বড়াইগ্রামে ড্রাগন চাষে সুরমান আলীর সাফল্য
সাঈদ সিদ্দিক, বড়াইগ্রাম প্রতিনিধিঃ বড়াইগ্রামে ড্রাগন চাষে সফল কৃষক সুরমান আলী। তার পথ অবলম্বন করে এ এলাকার শত শত বেকার যুবক এখন ঝুঁকেছেন ড্রাগন চাষে।
তিনি উপজেলার একজন আদর্শ কৃষক। ছোটবেলা থেকে কৃষির প্রতি যথেষ্ট ঝোঁক থাকার কারনেই এ পথে আসা। সেই থেকে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নে কখনো অবসর নেয়া হয়নি তার। কাজের প্রতি বিশেষ টান থেকেই তিনি অর্জন করেছেন যথেষ্ট সাফল্য। কৃষক সুরমান আলী নাটোর জেলার বড়ইগ্রাম উপজেলার জোয়াড়িয়া ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের মৃত তাইজুদ্দিন মন্ডল এর ছেলে। তিনি সাত বছর আগে নিজের এক একর জমিতে চাষ শুরু করেন বিদেশি ফল ড্রাগনের। তবে কর্মক্ষেত্রে তিনি কৃষিকেই বেছে নিয়েছেন। আর ছোটবেলার স্বপ্নকে এগিয়ে নিতে কাজ শুরু করেন নিজের ড্রাগন বাগানে। উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় ড্রাগন ফলের বাগানটি এখন তার। প্রথম অবস্থায় এক একর জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করলেও এখন ড্রাগনসহ বিভিন্ন ফলফলাদির বাগানের পরিমাণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ২০-২৫ বিঘার উর্ধ্বে। এ ফল চাষে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয় খুবই কম। নানা ধরনের গোবর ও মুরগির বিষ্ঠাও প্রয়োগ করা হয়। এলাকায় ড্রাগন চাষ ছড়িয়ে দিতে অন্য সব আগ্রহীদের মাঝে বিনামূল্যে বহু চারাও বিতরণ করে থাকেন তিনি। সুরমান আলী নিজের লেখাপড়া বেশি দূর এগুতে না পারলেও তার চেষ্টা ছিল এলাকার বেকার যুবকদের নিয়ে কিছু একটা করার। আজ তার কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে আশে পাশের অনেক বেকার যুবকরা স্বাবলম্বী হতে চলেছে। গত সোমবার সরেজমিনে আহমেদপুরের বালিয়াগ্রামে তার সবচেয়ে বড় ড্রাগন বাগানে গেলে দেখা মেলে,অসংখ্য নতুন ফল আসছে বাগানটিতে। এছাড়াও বাগানের মাঝে মাঝে মালটা গাছেও প্রচুর ফলের দেখা মেলে। কথা হয় ড্রাগন চাষী সুরমান আলীর সঙ্গে। বাগানের সার্বিক বিষয়ে তিনি বলেন,আমার বাগানে এখন প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক কাজ করেন। ড্রাগনের বাগান থেকে প্রথম বছরে তেমনটি লাভ না হলেও পরের বছর থেকে ভালো লাভ পেয়েছি। আশা করছি গত বছরের চাইতে এবার ফলন ও দামটা অনেক বেশি পাবো।
চলনবিলে শুরু হচ্ছে ‘কারাম’ উৎসব
আছে ‘কারাম’ গাছের সংকট
এম.আতিকুল ইসলাম বুলবুল, তাড়াশ ঃ আগামী ১৯ ভাদ্র কারাম উৎসবে মেতে উঠবে চলনবিলের আদিবাসী পল্লী। সমতলে বসবাসরত আদিবাসী সাঁওতাল,উঁরাও, মাহাতো, কুর্মি ইত্যাদি সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ‘কারাম’। ‘কারাম’ উৎসব হল ফসল কাটার একটি উৎসব, যা মূলত আদিকাল থেকে ভারতের ঝাডখন্ড, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, এবং ছত্তিশগড় রাজ্যের বিভিন্ন আদিবাসি ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীর লোকজন পালন করে আসছেন।
তারই ধারাবাহিকতায় সমতলের আদিবাসি প্রধান সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া; পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া সহ সাতটি উপজেলার আদিবাসী অধ্যুষিত কমপক্ষে ৫৫ থেকে ৬০টি গ্রামে ভাদ্র মাসের পার্শ্ব একাদশী বা ১৯ ভাদ্র তিন দিন ব্যাপী ‘কারাম’ উৎসব পালন করবেন আদিবাসী কয়েকটি সম্প্রদায়।জানা গেছে, ‘কারাম’নামক গাছের ডাল কেটে বিভিন্ন প্রাচিন প্রথা মেনে এ উৎসব করা হয়। এর নাম ‘কারাম’ উৎসব বা ডাল উৎসব যা ডাল গেড়ে পূজা করা হয়। তাই এটি কোথাও কোথাও ডাল পূজা নামেও সমধিক পরিচিত। আগে চলনবিল এলাকার আদিবাসী পল্লিতে ‘কারাম’ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা চলত পাঁচ দিন। কোথাও কোথাও সাত দিন ধরে
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ‘কারাম’ উৎসবের প্রধান অনুসঙ্গ ‘কারাম’ গাছের সংকট ‘কারাম’ উৎসবে ছন্দপতন ঘটাচ্ছে। তাই আদিবাসী সাঁওতাল,উঁরাও, মাহাতো, কুর্মি ইত্যাদি সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ‘কারাম’র অন্যতম অনুসঙ্গ ‘কারাম’ গাছের সংকট কমাতে প্রচেষ্টা নেওয়া হচ্ছে। আর এ কারণে ‘কারাম’ গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন বৃক্ষ রোপণ ও সংরক্ষণে দুইবার জাতীয় পদকপ্রাপ্ত সিরাজগঞ্জের ‘পরিবেশ ও প্রকৃৃতির পাঠশালা’ নামের সংগঠনের পরিচালক মাহবুবুল ইসলাম পলাশ।
গুরুদাসপুরে বাল্য বিয়ে পড়ানোর অপরাধে কাজীর কারাদন্ড
গুরুদাসপুর প্রতিনিধিঃ নাটোরের গুরুদাসপুরে আইন অমান্য আর ভুয়াকাগজ তৈরী করে বাল্যবিবাহ পড়ানোর অপরাধে গুরুদাসপুর পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাজী আব্দুল লতিফকে ৬ মাসের বিনাশ্রম জেল দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।
গত বুধবার সন্ধ্যার দিকে পৌর সদরের কামারপাড়া এলাকায় ওই কাজীর বাড়িতে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা আফরোজের কাছে দোষ স্বীকার করায় ওই রায় দেন। কাজী লতিফকে থানা হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাকে নাটোর কারাগারে প্রেরণ করা হবে।আব্দুর রশিদ, আব্দুল বারী, লিটন হোসেন, মকবুল হোসেনসহ স্থানীয়রা জানান, বাল্য বিবাহ পড়ানোর পর দেনমোহর কমানো-বাড়ানোসহ ভুয়া রেজিস্ট্রার তৈরী করার অভিযোগও রয়েছে কাজী লতিফের বিরুদ্ধে।উপজেলা কাজী সমিতির সভাপতি কাজী শফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাল্যবিবাহ পড়ানোসহ নানা ধরনের অনিয়ম করে আসছিলেন। ইউএনও ফাহমিদা আফরোজ বলেন, এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বড়াইগামে হিন্দু সেজে
মুসলিম নারী চোর গ্রেফতার
বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের কীর্তন অনুষ্ঠানে কৌশলে হিন্দু সেজে গহনা চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তিনজন মুসলিম নারী জড়িত বলে জানা গেছে। শনিবার (২৩ আগস্ট) রাতে উপজেলার লক্ষিকোল বাজারে শ্রী শ্রী কালী মাতার মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে আটক করেছে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ।
জানা গেছে, শ্রী শ্রী কালী মাতার মন্দিরে চলছিল মহা হরিনাম ও লীলা কীর্তন অনুষ্ঠান। শারীরিক পরিচ্ছদে হিন্দু সেজে তিন মুসলিম নারী সমাবেশে স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন।পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফাঁস হয় তাদের আসল পরিচয়। এর পর ওই ৩ নারীর দেহ তল্লাশি করে উদ্ধার হয় চায়না রাণীর ১৪ আনি ৬ রতি ওজনের স্বর্ণের চেইন। গ্রেপ্তার করা হয় ওই ৩ নারীকে। গ্রেপ্তার ওই ৩ নারী হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানার ধর মন্ডল (চকবাজার) এলাকার দুলাল মিয়ার স্ত্রী শামসুন্নাহার (২৮), আরিছ মিয়ার স্ত্রী লিপি আক্তার (৩০) এবং হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী রোজিনা খাতুন (২৬)। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ওই নারীদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে এমন তথ্যও পেয়েছেন তারা।মামলার আইও বড়াইগ্রাম থানার ওসি (তদন্ত) মাহাবুর রহমান জানান,গত রবিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে ওই ৩ নারীকে কোর্টে চালান দেওয়া হেেয়ছে।
তাড়াশের নিখোঁজ বিকাশ কর্মী রুবেল
এখনও উদ্ধার হয়নি
বিশেষ প্রতিনিধি ঃ বিকাশ কর্মী তাড়াশের বাসিন্দা নাজমুল হাসান রুবেল সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ৬ লাখ টাকাসহ অফিসে ফেরার পথে নিখোঁজ হন। আর নিখোঁজের দুই দিনেও থানা পুলিশ ওই বিকাশ কর্মীকে উদ্ধার করতে পারেননি ।নিখোঁজ নাজমুল হাসান রুবেল তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের উত্তর মথুরাপুর (ধাপ ওয়াশিন) গ্রামের নজরুল ইসলামে ছেলে। এর আগে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জেলার রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কবরস্থানের সামনে সড়ক থেকে তিনি নিখোঁজ হন হন।
পরে সোমবার সকালে রায়গঞ্জ থানা পুলিশ রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কবরস্থানের সামনে সড়কের পাশে থেকে নিখোঁজ বিকাশ কর্মীর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও হেলমেট উদ্ধার করেন। রুবেলের সহকর্মীরা জানিয়েছেন ,নিখোঁজ সহকর্মী রুবেল রায়গঞ্জ উপজেলার সলঙ্গা থানার ভূঁইয়াগাঁতী বিকাশ ডিস্ট্রিবিউশন অফিসে ডিএসও পদে কর্মরত ছিলেন।বিকাশ ডিস্ট্রিবিউশন অফিস সূত্রে জানা যায়, নিখোঁজ হওয়ার সময় তার কাছে নগদ ৬ লাখ টাকা, একটি মোটরসাইকেল ও দুইটি মোবাইল ফোন ছিল। এ প্রসঙ্গে রায়গঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম মাসুদ রানা জানান, বিকাশ কর্মী রুবেলকে উদ্ধার করার জন্য পুলিশী চেষ্টা অব্যাহত আছে।
গুরুদাসপুর প্রশাসনের চলনবিলে অভিযান প্রশংসনীয়
গুরুদাসপুর প্রতিনিধিঃ পর্যটনকেন্দ্র চলনবিলের গুরুদাসপুর উপজেলার বিলসা এলাকায় নৌকা ভ্রমণের নামে শব্দ দূষণ, অশ্লীল নৃত্য ও মাদকসেবনের দায়ে দুইজনকে জেল জরিমানা করেছে প্রশাসন।তারা হলেন- নাটোরের তেলগুপি গ্রামের সৌরভ সরদার (১৯) ও চক সিংড়ার নাফু শাহ (২২)। রবিবার সকালে তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, গত শনিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করেন গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা আফরোজ। এসময় বিলের পরিবেশ নষ্ট করায় বিভিন্ন নৌকা থেকে ছয়টি সাউন্ড বক্স ও মাইক জব্দ করা হয়। একই সাথে বিলসা ‘মা জননী সেতু’ থেকে অস্থায়ী দোকানপাট অপসারণ করা হয়েছে। অভিযানে ইউএনওকে সহযোগিতা করেন এসিল্যান্ড আসাদুল ইসলাম ও পুলিশ সদস্যরা। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন চলনবিল রক্ষা আন্দোলন গুরুদাসপুর শাখার সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু। ইউএনও ফাহমিদা আফরোজ বলেন, অপার সম্ভানাময় পর্যটন কেন্দ্র বিলসা এলাকার সুষ্ঠু পরিবেশ ও আইনশৃংখলা বজায় রাখতে প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। ইতিপূর্বেও চলনবিলে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে শব্দদূষণ, অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন, মা জননী সেতুর ওপর দোকান ও গাড়ি পার্কিং বন্ধে অভিযান চালিয়েছি। অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া অব্যাহত থাকবে।
তাড়াশে একযোগে ওএমএস’র চাল বিক্রি শুরু
তাড়াশ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্র ব্যক্তিদের মাঝে ওএমএস’র (ওপেন মার্কেট সেল ) চাল বিক্রির উদ্বোধন করা হয়েছে।
গত রবিবার সকাল থেকে উপজেলার ১৬টি স্থানে ওই চাল বিক্রি শুরু হয়েছে। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৮ হাজার ৮৪৫টি কার্ডধারী পরিবার প্রতি কেজি ১৫ টাকা ধরে ৩০ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন। মাধাইনগর ইউনিয়নের ওয়াশীন ও পৌষার বাজার এলাকায় ওই চাল বিক্রির উদ্বোধন করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল হাসান। তিনি জানান, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ১৬টি স্থানে ১৬জন ডিলারের মাধ্যেমে চাল বিক্রি শুরু হয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় ৮ হাজার ৮৪৫ টি কার্ডধারী পরিবার ১৫ টাকা ধরে ৩০ কেজি চাল কিনতে পারবেন। পুরো উপজেলায় ২ লাখ ৬৫ হাজার ৩৫০ মেট্রিক টন চাল বিক্রি করা হবে। এতে ওই সকল পরিবারের খাদ্য ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হবে। পরে খাদ্য নিয়ন্ত্রক চাল বিক্রির সকল স্থান ঘুরে দেখেন।
মাধাইনগর ইউনিয়নের ওয়াশীন গ্রামের বিক্রয় কেন্দ্রে ওমমএস’র চাল কিনতে আসা র্কাডধারী আঙ্গুর হোসেন জানান, স্বল্প মূল্যে কেনা ওই ৩০ কেজি চাল আমার পরিবারের খাদ্য চাহিদা পূরণে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে। তিনি আরো বলেন, আমরা সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে ওই চাল কিনতে পেরেছি। কোন ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি।
তাড়াশের চলনবিল থেকে
জেলের মরদেহ উদ্ধার
তাড়াশ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিলে মাছ শিকার করতে গিয়ে আহম্মেদ আলী নামের নিখোঁজ এক জেলের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে তাড়াশ থানা পুলিশ।
গত মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের পৌষার বিলের দোসপাড়া-তাড়াশ খালের পৌষার ব্রীজের সন্নিকটে। নিখোঁজ জেলে আহম্মেদ আলী (৫৫) পৌষার গ্রামের মৃত রজব আলীর ছেলে।বিষয়টি মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো.আল আমিন সরকার নিশ্চিত করেছেন।পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান,জেলে আহম্মেদ আলী গত রোববার বিকালে বিলে মাছ শিকারের কথা বলে মাছ শিকারের জাল ও আনুসাঙ্গিক জিনিস পত্র নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। পরে রোববার সারা রাত ও সোম পর্যন্ত তিনি আর বাড়িতে ফিরেননি।এ দিকে দীর্ঘ সময় আহম্মেদ আলী বাড়িতে না ফেরায় তাঁর স্বজনরা নানা স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে হতাশ গয়ে পড়েন। পরে মঙ্গলবার সকালে পৌষার বিলের দোসপাড়া- তাড়াশ খালের পৌষার ব্রীজের সন্নিকটে নিখোঁজ আহম্মেদ আলীর মরদেহ ভাসতে দেখে লোকজন বিষয়টি তাড়াশ থানা পুলিশকেকে খবর দেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ দুপুর ১২ টার দিকে ঘটনা স্থলে পৌঁছে আহম্মেদ আলীর স্বজনদের মাধ্যমে মরদেহ শনাক্ত করেন। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে ওই ব্যক্তি মূত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
পাতা-৩
নবীর জীবনাদর্শ অনুসরণের প্রকৃত পথ
পীরজাদা মুফতি খোন্দকার আমিনুল ইসলাম আবদুল্লাহ
নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মানবজাতির জন্য চিরন্তন দৃষ্টান্ত। তার জীবন, চরিত্র ও নৈতিকতা হলো কোরআন ও সহীহ হাদিসের আলোকিত নির্দেশনা, যা মুসলিম সমাজের জন্য চিরন্ত শিক্ষা। নবীর প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা বাহ্যিক প্রদর্শনীতে নয়, বরং তার জীবনাদর্শ বাস্তব জীবনে অনুসরণে প্রকাশিত হওয়া উচিত। বর্তমান সময়ে অনেকেই নবীর জন্মদিন উদযাপন বা “মিলাদুন্নবী” পালনকে ভালোবাসার প্রকাশ মনে করেন। কিন্তু ইসলামের সুন্নাহ অনুযায়ী এটি সুন্নাহ নয় বরং বিদ‘আহ, যা অনেক সময় খ্রিষ্টানদের জন্মদিন উদযাপণের অনুকরণ। নবীর প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা প্রকাশের একমাত্র পথ হলো তার সিরাত পাঠ এবং জীবনাদর্শ বাস্তব জীবনে অনুসরণ করা।
নবীর জীবন ও সিরাত পাঠের গুরুত্ব ঃ
কুরআন:“নিশ্চয়ই তোমার মধ্যে তোমাদের জন্য আছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত যিনি আল্লাহর ভয় রাখে এবং যারা বিশ্বাসে স্থির।”সূরা আল-আহযাব: ২১ নবীর চরিত্র, ধৈর্য, সততা, সহনশীলতা ও দয়ার চেতনা আমাদের জীবনের সরাসরি প্রেরণার উৎস। সিরাত পাঠ শুধুই অধ্যয়ন নয়, বরং প্রতিটি কাজে নবীর নৈতিকতা বাস্তবায়ন। এটি আমাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করে এবং মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ করে।
মিলাদ উদযাপন ও জশনে জুলুশ ঃ
ইসলামের দৃষ্টিকোণে মিলাদ উদযাপন বা জশনে জুলুশ শরিয়াহ্ বহির্মুখী প্রথা। ইসলামের সুন্নাহ অনুযায়ী নবীর জন্মদিন উদযাপন সুন্নাহ নয়।বাজনা, খাওয়া-দাওয়া ও বাহ্যিক প্রদর্শনী বিদ‘আহের মধ্যে পড়ে।নবীর প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা প্রকাশের সঠিক পথ হলো সিরাত পাঠ ও জীবনাদর্শ অনুসরণ।যদি কেউ দরূদ পাঠ ও কোরআন তিলাওয়াতের সঙ্গে সামান্য সামাজিক সমাবেশ যুক্ত করে, তা সুন্নাহ নয়; বরং এটি সুন্নাহর সঠিক পথে পরিচালিত হওয়া উচিত যাতে বিদ‘আহের ছাপ না পড়ে।
করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় ঃ
করণীয় ঃ সিরাত পাঠ ও জীবনাদর্শ অনুসরণ। প্রতিদিন নবীর জীবন অধ্যয়ন এবং তার নৈতিকতা বাস্তবায়ন ও প্রতিফলন। সুন্নাহ অনুসরণ- সততা, ধৈর্য, সহমর্মিতা ও ন্যায়পরায়ণতা প্রতিদিনের জীবনে প্রয়োগ।নেককাজ ও দান- দরিদ্র ও অসহায়দের সাহায্য, স্বেচ্ছাসেবী কাজ, সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা।কোরআন পাঠ ও শিক্ষা- নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত ও নৈতিক শিক্ষা গ্রহণ।দরূদ পাঠ ও দো‘আ – প্রতিদিন নবীর জন্য দরূদ পাঠ এবং আল্লাহর কাছে তার প্রতি ভালোবাসা নিবেদন।
বর্জনীয় ঃ
মিলাদ উদযাপন ও শোভাযাত্রা- যা সুন্নাহ নয় এবং বিদ‘আহের মধ্যে পড়ে।অযথা বাজনা ও খাওয়া-দাওয়া- বাহ্যিক প্রদর্শনীকে উৎসাহিত না করা।নেককাজের পরিবর্তে বাহ্যিক প্রদর্শনী- প্রকৃত ভালোবাসা কমে যাওয়া।সামাজিক বিভাজন বা বিতর্ক সৃষ্টি- যেখানে অনভিপ্রেত মতবিরোধ হয়।
মন্তব্য ঃ করণীয় কাজগুলো আমাদের হৃদয় ও সমাজকে পবিত্র ও শক্তিশালী করে, আর বর্জনীয় কাজগুলো মানুষের অন্তরে বিভ্রান্তি ও সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে।নবীর জীবনাদর্শ বাস্ত জীবনে প্রয়োগ ও প্রতিবিম্বিত হতে হবে। নবীর জীবন থেকে আমরা শিখতে পারি – সততা ও ন্যায়পরায়ণতা। প্রতিটি ব্যবসায়িক ও সামাজিক কাজের মধ্যে সততা রাখা।ধৈর্য ও সহনশীলতা- বিপদ ও কষ্টের সময় ধৈর্য ধরে সমস্যার সমাধান।দরিদ্র ও অসহায়দের প্রতি সহমর্মিতা যেমন- দান ও স্বেচ্ছাসেবা কার্যক্রমের মাধ্যমে পরোপকার করা। ইসলামী শিক্ষা ও কোরআন পাঠ- জীবন পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রে নৈতিকতা ও নির্দেশনা প্রয়োগ। দরূদ পাঠ ও দো‘আ- নিয়মিত দরূদ পাঠ ও আল্লাহর কাছে নবীর প্রতি ভালোবাসা নিবেদন। নবী (সা.) একবার দরিদ্রদের জন্য খাদ্য ও পোশাক সরবরাহের মাধ্যমে সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। এটি আমাদের শেখায়, প্রকৃত ভালোবাসা শব্দে নয়, কর্মে প্রকাশিত হওয়া উচিত।
সমাজে প্রভাব ও বর্তমান চ্যালেঞ্জ ঃ
বর্তমান সময়ে নবীর জন্মদিন উদযাপন অনেক ক্ষেত্রে বাহ্যিক প্রদর্শনী, জাঁকজমক ও শোভাযাত্রার দিকে বেশি মনোযোগ পাচ্ছে। এতে কিছু নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যায় – অপ্রয়োজনীয় খাওয়া-দাওয়া এবং বাজনা বাজনো নবীর আদর্শ অনুসরণের পরিবর্তে বাহ্যিক প্রদর্শনী মতবিরোধ, বিতর্ক এবং বিভাজনের সম্ভাবনা থাকে। আলেম ও উলামাদের পরামর্শ- নবীর প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা সিরাত ও সুন্নাহর মাধ্যমে প্রকাশ করা। এতে সমাজে শান্তি ঐক্য ও নৈতিকতা বজায় থাকে।
উপসংহার ঃ
নবীর প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা বাহ্যিক প্রদর্শনী নয়, তার সুন্নাহ অনুসরণ এবং নৈতিকতা বাস্তবায়নে প্রকাশিত হওয়া উচিত।মিলাদ উদযাপন ইসলামে সুন্নাহ নয়; এটি বিদ‘আহ এবং অনেক ক্ষেত্রে খ্রিষ্টানদের জন্মদিন উদযাপণের অনুকরণ।মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সঠিক কুরআন ও হাদীসের আলোকে পরিচালিত করুন এবং সঠিক বুঝ দান করূন। আমীন।
রেফারেন্স ১. কুরআন: সূরা আল-আহযাব: ২ সাহিহ বুখারি ৩. সাহিহ মুসলিম ৪. ইবনে মাজাহ: বিদ‘আহ সম্পর্কিত হাদিস ৫. ইমাম শাফি ও হানাফি ফিকহ
(মতামত লেখকের নিজস্ব)
লেখক তরুণ আলোচক ও গবেষক বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব । শেরপুর, বগুড়া।
চলনবিল বাঁচিয়ে বিকল্প স্থানে
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় হোক
ডেস্ক রিপোর্টঃ চলনবিলকে অচল করে দিয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় করা যাবে না বলে দাবী করেছে ২২টি পরিবেশবাদী সংগঠন। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস করতে হবে চলনবিলকে বাঁচিয়ে। বিকল্প স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানিয়েছে দেশের পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ২২টি পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠন সংগঠন সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানায়। সম্মেলনে লিখিত গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন চলনবিল রক্ষা আন্দোলনের সদস্যসচিব এস এম সিজানুর রহমান। সূত্র প্রথম আলো।
ফরিদপুরে উদ্বুদ্ধকরণ সভা
ফরিদপুর থেকে,জুয়েল আহমেদ: ফরিদপুর উপজেলর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কারিগরি শিক্ষায় উদ্বুদ্ধকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত সোমবার বনওয়ারীনগর সরকারি সিবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) হাসান তারেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-ফরিদপুর বিএম কলেজের অধ্যক্ষ আবু সাঈদ, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুজ্জামান, প্রেস ক্লাবের সভাপতি আব্দুল হাফিজ, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ পাল প্রমুখ।
সোনালী আঁশের সুদিন ফিরছে চলনবিলে
তাড়াশ প্রতিনিধিঃ চলতি মৌসুমে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের বানিয়াবহু এলাকার কৃষক মো. লিয়াকত আলী দুইবিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলেন।পাটের আবাদ করতে এ কৃষকের খরচ হয়েছিল দুইবিঘায় প্রায় ২৩ হাজার টাকা। আবাদ শেষে পাটের ফলন পেয়েছেন ২১ মণ। বিঘায় সাড়ে দশ মণের মতো। সে পাট তিনি স্থানীয় হাটে বর্তমান বাজার দরে বিক্রি করেছেন প্রায় ৭৯ হাজার টাকায়। অর্থাৎ পাটচাষি কৃষক লিয়াকতের লাভ হয়েছে ৫৬ হাজার টাকার মতো। তিনি জানান, অন্য ফসলের আবাদে দুই বিঘাজমিতে ওই পরিমাণ টাকা লাভ পাওয়া অনেকটাই অসম্ভব। তিনি বলছেন,চলনবিলাঞ্চলে সোনালী আঁশ পাটের আবাদে সুদিন অনেকটাই ফিরতে চলেছে।
এদিকে এক কালের পাট সমৃদ্ধ চলনবিলের পাটের হাট-বাজার বর্তমানে ক্রেতা, বিক্রেতা, কুলি, শ্রমিকের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠছে।বিশেষ করে হাট-বাজারে নতুন পাটের আমদানি গত বছরের তুলনায় বেশি। আবার দামও গত বছরের চেয়ে প্রকার ভেদে মণপ্রতি ১০০০ থেকে ১২০০টাকা বেড়েছে।এমনি ভাষ্য,তাড়াশের প্রসিদ্ধ নওগাঁ হাটে পাট কিনতে আসা পাবনার পাট ক্রেতা মহাজন মো. কাহিনুর রহমানের।
এ বছর পাটের আবাদ গত বছরের চেয়ে বেশি হয়েছে। পাশাপাশি কৃষক পাটের ভাল ফলন এবং দাম পেয়ে এখন পর্যন্ত খুশি। অপরদিকে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শমিষ্ঠা সেন গুপ্তা মন্তব্য করেন, পাটের দামটা মোটামুটি স্থায়ী থাকলে আগামী দিনে এঅঞ্চলে পাটের হারানো সুদিন ফিরবে
তাড়াশের বাজারগুলো ছোট-পোনা মাছে সয়লাব
স্টাফ রিপোর্টার ঃ চলনবিলস্থ তাড়াশ পৌর সদর বাজারসহ উপজেলার প্রায় সবগুলো হাটবাজারে বর্ষা শুরু থেকে নানা জাতের দেশী মাছের পোনা তথা ক্ষুদ্র মাছ বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। তাড়াশ উপজেলা মৎস্য বিভাগের নাকের ডগায় অবাধে পোনা মাছ বা ছোট মাছ বিক্রি হলেও তা কেউ দেখার নেই।
জানা গেছে চলনবিলের প্রায় সর্বত্র এ যাবৎ চায়না দুয়ারী জাল দিয়ে ছোট-বড় সবরকম মাছ ও জলজ প্রাণী শিকার চলছে ব্যাপক হারে। বর্তমানে একই সাথে মইজাল ব্যবহার করে মাছের সর্বনাশ করা হচ্ছে। অথচ এদিকে সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্তৃপক্ষের কোন দৃষ্টি নেই। এমনিতেই চলনবিলে এখনও যথেষ্ট বন্যা হয়নি। সে কারণে এবার মাছের সরবরাহ খুবই কম। তদুপরি চায়না কারেন জাল ব্যবহার করে এভাবে নির্বিচারে মাছ শিকার করলে আগামীতে মাছের প্রজনন আশংকাজনকহারে হ্রাস পাবে।
তাড়াশে স্বেচ্ছাসেবক দলের বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি
তাড়াশ প্রতিনিধিঃ কেন্দ্রীয় কমিটির বনায়ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিজয় র্যালি, বৃক্ষ রোপণ ও রাস্তার আবর্জনা পরিষ্কার কর্মসূচি পালন করেছে তাড়াশ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল।
গত বুধবার বিকেলে তাড়াশ পৌর শহরের হাসপাতাল গেটে বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে ওই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির দলীয় প্রার্থীর হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাশী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় যোগাযোগ বিষায়ক সম্পাদক মো. আব্দুল আলীম। এ সময় বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করা হয়। বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচিতে স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, যুবদলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা- কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
চলনবিল বার্তা chalonbeelbarta.com