সেতুর গা বেয়ে উঠেছে বট, অশ্বত্থ। সেতুর তলায় রাখা বালির বস্তা। এমনই হাল এসটিকেকে রোডের উপরে পূর্বস্থলী ২-এর লোহাচুর এলাকার সেতুটির। এই সেতু দিয়েই রাতভর পাথর, বালিবোঝাই ট্রাক যাতায়াত করে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে বারবার আর্জি জানিয়েও সেতুটির সংস্কার করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহু দিন আগে পূর্বস্থলী থেকে কাটোয়া যাওয়ার পথে ২৫ ফুট লম্বা সেতুটি তৈরি করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই এই সেতুটিতে বেশ কিছু জায়গায় ফাটল দেখা গিয়েছে। সেতুর উপরে রাস্তাতেও ফাটল রয়েছে। সেতুটি দুর্বল ও বিপজ্জনক, এই মর্মে লাগোয়া রাস্তায় পূর্ত দফতর একটি ‘সাইনবোর্ড’ও ঝুলিয়ে দিয়েছে। সেতুতে বিপদ এড়াতে এর তলায় বেশ কিছু বালির বস্তা, বাঁশ দিয়ে ঠেকনা দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এমন সেতুতে যান চলাচলে লাগাম সে ভাবে নেই বলে অভিযোগ। বাসিন্দারা জানান, দিনে ভারী যানবাহন যাতায়াত করে সেতুটি দিয়ে। দিনে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণেও থাকে। তবে রাতে গতি নিয়ন্ত্রণে থাকে না বলেই অভিযোগ বাসিন্দাদের। তাঁরা জানান, গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বালি ও পাথরবোঝাই বহু ট্রাক যাতায়াক করে এই সেতুটি দিয়ে। সেই সব ট্রাকের চালকদের বেশির ভাগই স্থানীয় এলাকার নন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়।
এলাকার বাসিন্দা পরিতোষ ঘোষের ক্ষোভ, ‘‘বহু বছর ধরে সেতুটি সংস্কার না হওয়ায় তা এই মুহূর্তে খুবই বিপজ্জনক।’’ বাসিন্দাদের দাবি, ভারী যানবাহনগুলি অন্য রাস্তায় ঘুরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা দেওয়া উচিত প্রশাসনের। কিন্তু বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি সত্ত্বেও এ বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা জারি হয়নি। এমনকী ওই সেতু লাগোয়া এলাকায় আলোরও ব্যবস্থা না থাকায় বিপদ বাড়ছে বলে অভিযোগ। জামাল শেখ নামে এক বাসিন্দার ক্ষোভ, ‘‘বিপদ না হলে প্রশাসনের হুঁশ ফিরবে না।’’
যদিও গত বুধবারই মহকুমাশাসক (কালনা) নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, সেতুটির বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ওই দফতরের এক কর্তার দাবি, সেতুটি সংস্কারের জন্য প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সংস্কারের কাজও শুরু হবে বলে আশ্বাস ওই কর্তার।