অনলাইন ডেস্কঃ গত কয়েক বছর দুর্গাপুরে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। আসানসোল জেলা হাসপাতালেও চলতি বছর অন্তত ন’জন ডেঙ্গি রোগীর চিকিৎসা হয়েছে। কিন্তু এ বার বর্ষা আসার ঢের আগে থেকেই মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে মাঠে নামছে জেলা প্রশাসন। জোর দেওয়া হচ্ছে নানা কর্মসূচিতে। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরির সভাপতিত্বে জেলা পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে।
ওই বৈঠকে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন জানায়। জেলার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানান, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রতি বছর মশাদের প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ছে। ফলে সাধারণ প্রতিষেধকে কাজ হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে মশার প্রজননে রাশ টানা গেলে সুফল মিলতে পারে বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা। এর জন্য বর্ষার আগেভাগেই মশার উৎপত্তিস্থলগুলি নষ্টের পরিকল্পনা হয়েছে। তা করতে নালা সাফ, নালার উপরে ঢাকনা দেওয়া, আবর্জনা না জমতে দেওয়া-সহ একাধিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতি বর্ষায় জল জমে যে জায়গাগুলিতে, সেই জায়গাগুলি চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া, স্কুলের শৌচালয় নিয়মিত সাফ রাখা, ফি সপ্তাহে পানীয় জলের ট্যাঙ্কার পরিষ্কার রাখার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, প্রতি ২৫ হাজার মানুষ পিছু একটি করে মশা মারার কামান রাখতে হবে। এ ছাড়া মশা মারার ওষুধ ছড়ানো, ধারাবাহিক প্রচার অভিযানও চালানো হবে বলে জানা গিয়েছে। এলাকা সাফের জন্য পুরসভা ও ব্লকগুলিতে কত সাফাই কর্মী রয়েছেন, তার একটি সম্পূর্ণ তালিকা তৈরির বিষয়েও জেলা প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছে। প্রয়োজনে অস্থায়ী কর্মী দিয়ে কাজ চালানোর বিষয়েও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু বর্ষার এত আগেভাগেই এ সব পরিকল্পনা কেন? এলাকাবাসীর মতে, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকেই হয়তো এই সিদ্ধান্ত। ২০১২ সালে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে জেলায় দু’জনের মৃত্যু হয়। ২০১৫ সালে মারা যায় এক বালিকা। ২০১৬ সালে সেপকো টাউনশিপের এক মহিলা এবং ডিএসপি টাউনশিপের এক কিশোরের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়। তাই আগামী বছরেও যাতে ডেঙ্গি বা অন্যান্য মশাবাহিত রোগের প্রকোপ না বাড়ে তাই আগেভাগেই ব্যবস্থা নিতে চাইছে প্রশাসন।
মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে মনিটরিং কমিটিও তৈরি হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) শঙ্খ সাঁতরা। তিনি বলেন, ‘‘বর্ষা শুরুর অনেক আগেই পরিকল্পনাগুলি রূপায়িত হবে।’’ প্রশাসনের কর্তারা জানান, পরিকল্পনাগুলি রূপায়ণের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে আসানসোল ও দুর্গাপুর পুরসভাও।