ইন্দো-বাংলাটোয়েন্টিফোর.কম ডেস্কঃ একুশ মাসের ব্যবধান! ছেলেকে দেখলেন মা। স্ত্রী স্বামীকে। কিন্তু ছুঁতে পারলেন না। মাঝে যে পুরু কাচের দেওয়াল!
পাকিস্তানে জেলবন্দি কুলভূষণ যাদবের সঙ্গে অবশেষে দেখা হল তাঁর মা ও স্ত্রীর। এবং জানা গেল, কুলভূষণকে এখনও জীবিত। সর্বজিত সিংহের পরিণতি হয়নি তাঁর
এই সাক্ষাৎ ঘিরে কখনও বলা হয়েছে, এ যেন বড়দিনের উপহার! কখনও বলা হয়েছে, আজ মহম্মদ আলি জিন্নার জন্মদিন, তাই এত দরাজহস্ত পাক সরকার।
আরও পড়ুন:নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনে ব্যাপক সাড়া মিলেছে
এই সাক্ষাতের পর পরই একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে পাক বিদেশ মন্ত্রক। তারিখহীন ওই ভিডিওয় কুলভূষণকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমি কম্যান্ডার কুলভূষণ যাদব। ভারতীয় নৌ সেনার প্রাক্তন কর্মী। র-এর হয়ে কাজ করতে গিয়ে ইরান থেকে দু’বছর আগে আমি পাকিস্তানে ঢুকেছিলাম। বালুচিস্তানে আমাকে পাক অফিসাররা ধরে ফেলেন। এখানে আমাকে সম্মান এবং মর্যাদার সঙ্গেই রাখা হয়েছে।’’ এর পরে কুলভূষণ বলেছেন, ‘‘মা-স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। তার ব্যবস্থা করে দেওয়ায় আমি পাক সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ।’’ মা-স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাওয়ার মন্তব্য ঘিরেই ওই ভিডিওর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দিল্লি। কারণ কুলভূষণের বেঁচে থাকা নিয়ে নানা মহলে সংশয়ের আবহে ছেলের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে তাঁর মা-ই ভিসার আবেদন জানিয়েছিলেন।
এ দিন কড়া নিরাপত্তায় ইসলামাবাদে বিদেশ মন্ত্রকের দফতরে আগা শাহি ব্লকে কুলভূষণের সঙ্গে তাঁর মা ও স্ত্রীর সাক্ষাতের বন্দোবস্ত করা হয়। টিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, কুলভূষণের মা অবন্তী এবং স্ত্রী চেতনকুল পাক বিদেশ মন্ত্রকের মূল ভবনে ঢুকছেন। পাকিস্তানের প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কাচের দেওয়ালের এক দিকে কুলভূষণ, অন্য দিকে তাঁর মা-স্ত্রী। ছবিতে মনে হচ্ছে, তাঁরা কথা বলছেন। ইন্টারকমের মাধ্যমে কথা হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। তবে ছবিটি সাক্ষাতের সময়েই তোলা, নাকি ‘পুনর্নির্মাণ’— তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
দুপুর ১টা ৩৫ নাগাদ তাঁদের কথা শুরু হয়। পাক সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ৪০ মিনিট কথা বলেছেন তাঁরা। সাক্ষাতের পরে তাঁরা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। পাকিস্তানের দাবি, ভারতের অনুরোধ তেমনই ছিল। কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করার জন্য সোমবারই ইসলামাবাদে ভারতীয় হাই কমিশনে পৌঁছন অবন্তী-চেতনকুল। সাক্ষাতের কিছু পরেই তাঁরা দেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফয়জলের দাবি, ‘‘আধ ঘণ্টা সময় দেওয়ার কথা ছিল। সাক্ষাতের শেষ দিকে কুলভূষণ এবং তাঁর মা বলেন, আরও কিছু ক্ষণ কথা বলতে চান তাঁরা। বাধা দিইনি। কথা শেষ হয় ৪০ মিনিট পরে।’’ তাঁর আশ্বাস, ‘‘এটাই শেষ দেখা নয়। কুলভূষণ পাকিস্তানে ভারতের সন্ত্রাসের মুখ। তবু মানবিক কারণেই এই সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’’