প্রেস বিজ্ঞপ্তি
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, জুয়ারি, মাদক ব্যবসায়ী, খুন, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি এবং অপহরণসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার আসামী গ্রেফতারে র্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে।
১। উক্ত মামলার এজাহারভুক্ত গ্রেফতারকৃত আসামী মাসুদ রানা (২৩), পিতা-আশরাফুল ইসলাম, সাং-দৌলতপুর, থানা-বেলকুচি, জেলা-সিরাজগঞ্জকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জানা যায় যে, গত ইং ১৪/০৪/২০২৫ তারিখ সময় অনুমান ০২.৩০ ঘটিকায় আসাামী মাসুদ রানা তার বন্ধু আলামিন ও অজ্ঞাত একজন সহ হোসনা মার্কেটে চা খেয়ে বাজারের পাশের রাস্তায় আড্ডা দেওয়ার সময় ভিকটিম ইমনকে একটি অল্প বয়স্ক মেয়ের সাথে দৃষ্টিকটু অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাদের নিকটে গিয়ে ইমনের কাছে মেয়েটির পরিচয় জানতে চায়। মেয়েটি ইমনের ছোট বোন বলে পরিচয় দিলে আসামী মাসুদ রানা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে সেখান থেকে চলে যায়। ভিকটিম ইমনও মেয়েটিকে নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। তার চার দিন পর গত ১৮/০৪/২০২৫ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪.০০ ঘটিকায় আসামী মাসুদ রানা দৌলতপুর ডিগ্রি কলেজ মাঠে বসে ক্রিকেট খেলা দেখাকালীন একজন অজ্ঞাত ছেলে মাসুদ রানাকে পেছন থেকে ডেকে কথা বলার জন্য অত্র কলেজের শহীদ মিনারের দিকে নিয়ে যায়। আসামী মাসুদ রানা শহীদ মিনারের নিকটে গিয়ে ইমনসহ আরও ৫-৬জনকে সেখানে দেখতে পায়। ভিকটিম ইমন এগিয়ে এসে ঐদিন মেয়েটিকে দেখে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসার কারণ জানতে চায় এবং ইমনের সাথে থাকা তার বন্ধুদের মধ্য হতে দুই জন মাসুদ রানাকে চড় থাপ্পর মারতে থাকে এবং মাসুদ রানার প্যান্টের পকেট হতে ৩৫০০/- টাকা বের করে নেয়। তারপর তারা মাসুদ রানাকে আলামিনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মাসুদ রানা কোনো কিছু না জানালে ইমনসহ তার বন্ধুরা মাসুদরানাকে জোরপূর্বক টেনে হিচড়ে আলামিনের সন্ধানে বের হয়। মাসুদ রানার বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মাসুদ রানা কৌশলে তাদের হাত থেকে ছুটে দৌড়ে নিজ বাড়িতে চলে যায় এবং ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেয়। ভিকটিম ইমন ও তার সাথের বন্ধুরা সেখান থেকে চলে গেলে আসামী মাসুদ রানা তার বন্ধু স্বাধীন ও সাকিবসহ আরও কয়েকজনকে ফোন দিয়ে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তাদেরকে দ্রæত আসতে বললে তারা সকলেই মাসুদ রানার বাড়িতে চলে আসে এবং সকলে মিলে ইমন ও তার বন্ধুদের খুজতে বের হয়। কিছুদুর যাওয়ার পর ইমনকে দেখতে পেয়ে আসামী মাসুদ রানা ও তার বন্ধুরা দৌড়ে গিয়ে বেহাপাড়া গ্রামের কাছে ইমনকে ধরে ফেলে এবং মাসুদ রানা তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে ভিকটিম ইমনের মাথায় সজোরে আঘাত করে। এরপর স্থানীয় লোকজন সেখানে হাজির হয়ে আসামী মাসুদ রানা সহ তার বন্ধু সাকিবকে আটক করে একটি ঘরে বন্দী করে রাখে এবং ভিকটিম ইমনকে চিকিৎসার জন্য খাজা ইউনুস আলী হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য ভিকটিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলে ভিকটিমের আত্বীয় স্বজন ভিকটিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং সেখানে চিকিৎসা শেষে গত ২৩/০৪/২৫ তারিখ ভিকটিম তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর গত ২৫/০৪/২৫ তারিখ ভোর অনুমান ০৫.৩০ ঘটিকায় ভিকটিমের শারিরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসার জন্য পুনরায় এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সকাল ০৭.৩০ ঘটিকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিম ইমন মৃত্যুবরণ করেন। ইমন হোসেন মৃত্যুবরণ করার পর হতেই আসামী মাসুদ রানা সহ অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামীরা অজ্ঞাতস্থানে পালিয়ে যায়।
২। উক্ত ঘটনায় সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার মামলা নং ১৭, তারিখ ২৭/০৪/২০২৫, ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়। এর প্রেক্ষিতে অদ্য ১৬/০৫/২০২৫ তারিখ রাত ০০.৩০ ঘটিকায় র্যাব-১২, সদর কোম্পানি, সিরাজগঞ্জ এবং র্যাব-৪, মিরপুর-১, ঢাকা এর যৌথ আভিযানিক দল আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ‘‘ডিএমপির ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন পশ্চিম মানিকদি এলাকায়’’ অভিযান পরিচালনা করে অত্র মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামী ১। মোঃ মাসুদ রানা (২৩), পিতা- আশরাফুল ইসলাম, সাং- দৌলতপুর, থানা- বেলকুচি, জেলা- সিরাজগঞ্জকে গ্রেফতার করে। উল্লেখ্য যে, অত্র মামলার ২নং আসামী মোঃ সাকিব (২০) কে গত ০৯/০৫/২০২৫ ইং তারিখ রাত ২১.৪০ ঘটিকায় র্যাব-১, ব্যাটালিয়ান সদর এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-১২, সদর কোম্পানি, সিরাজগঞ্জ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
৩। গ্রেফতারকৃত আসামি ১। মোঃ মাসুদ রানা (২৩), পিতা- আশরাফুল ইসলাম, সাং- দৌলতপুর, থানা- বেলকুচি, জেলা- সিরাজগঞ্জ।
৪। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।