কক্সবাজার: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ দুর্বল হয়ে সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম ও সন্দ্বীপ উপকূল অতিক্রম করেছে। বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়টি দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকে বৃষ্টি হয়নি। কমেছে বাতাসের গতিবেগও।
সংকেত কমে যাওয়ায় উপকূলের আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া মানুষ ভোর রাত থেকে সকালের মধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়িতে ফিরে গেছে।
ঘূর্ণিঝড় কোমেনের প্রভাবে বৃহস্পতিবার উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিকের চেয়ে ৪/৫ ফুট বেশি উচ্চতায় প্লাবিত হয়। ঘূর্ণিঝড়ে টেকনাফের সেন্টমার্টিনে গাছচাপা পড়ে মৃত্যু হয় এক বৃদ্ধের, মহেশখালীর সোনাদিয়া সাগরে বোট ডুবির ঘটনায় উদ্ধার করা হয় দুই জেলের লাশ ও বড় মহেশখালীতে পাহাড়ি এলাকায় বাড়ির মাটির দেয়ালচাপা পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়।
ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’র অগ্রভাগ বৃহস্পতিবার সকালে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও টেকনাফের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে চট্টগ্রামের দিকে অগ্রসর হয়। সেন্টমার্টিনসহ টেকনাফের ৪টি ইউনিয়নে আংশিক ও সম্পূর্ণভাবে বিধস্ত হয়েছে ৪ শতাধিক ঘর-বাড়ি। উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছপালা। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪/৫ ফুট বেশি উচ্চতায় প্লাবিত হয় উপকূলীয় এলাকা। প্লাবনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও পেকুয়া উপজেলার।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড. অনুপম সাহা জানান, কক্সবাজারের উপকূলীয় ২৮ ইউনিয়নের মানুষকে ৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরে আনায় তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। এছাড়া সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে দুর্যোগকালীন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আশ্রয় নেয়া লোকজনের চিকিৎসা সেবার জন্য মেডিকেল টিম ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কক্সবাজারের ৮ উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নে প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।