সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের সিরাজগঞ্জ জেলা কো-অর্ডিনেটর ফরিদা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। পাওনা টাকা ফেরত পেতে তার বাড়ি ঘেরাও করেন ভুক্তভোগীরা।বুধবার (১৩ জুলাই) দুপুরে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের সয়াধানগড়া মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে গ্রাহকের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের খালিশাকুড়া গ্রামের বাদশা মিয়ার স্ত্রী ফুলমালা বেগম বলেন, ২০০৭ সালে আমি ফরিদা ইয়াসমিনের কথায় সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বীমা করি। প্রতিমাসে ২১০ টাকা করে জমা দিই। ১২ বছরের মেয়াদ শেষে আরও তিনবছর পার হলেও টাকা দিতে টালবাহানা করছেন ফরিদা। তিনি প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন এবং টাকা চাইলে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন।একই গ্রামের খাইরুল কবির বলেন, আমি প্রতি মাসে ২১০ টাকা করে ১২ বছর মেয়াদী বীমা করি। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর তিন বছর পার হলেও আমাদের টাকা দিতে গড়িমসি করছেন ফরিদা। পরে রাজশাহীতে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে আমাদের জানানো হয়, আমাদের এই বইয়ের অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা জমা হয়নি। আপনারা যার কাছে টাকা দিয়েছেন, তার কাছ থেকে টাকা বুঝে নিন।
সিরাজগঞ্জ খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের খালিশাকুড়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের স্ত্রী বিলকিস বেগম বলেন, আমার স্বামী দিন এনে দিন খায়। অনেক কষ্ট করে ১২ বছর মেয়াদে প্রতিমাসে ২১০ টাকা করে বীমা করেছি। বর্তমানে আমার বীমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও মাসের পর মাস টাকা দেওয়ার কথা বলে দিচ্ছেন না ফরিদা। টাকা চাইলে উল্টো হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। আমি ফরিদা ইয়াসমিনের বিচার চাই।সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জুলফিকার হাসান খান বলেন, অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা ও তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন আমাদের গ্রামের লোক নয়। তারা কিছুদিন আগে এখানে বাড়ি করেছেন। তবুও ফরিদা ইয়াসমিনের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখি গ্রাহকরা বাড়ি ঘেরাও করেছেন। পরে উত্তেজনা বিরাজ করলে পুলিশ পরিবেশ শান্ত করে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি অনেক গ্রাহক জমা হয়ে সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরে গ্রাহক এবং ফরিদা ইয়াসমিনের স্বামী অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে টাকা ফেরত দিতে দুই মাসের সময় দেওয়া হয়। এর মধ্যে টাকা না দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।অভিযুক্ত সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের সিরাজগঞ্জ জেলা কো-অর্ডিনেটর ফরিদা ইয়াসমিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিক ও গ্রাহকের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ি থেকে সটকে পড়েন। পরে তার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।জানতে চাইলে ফরিদা ইয়াসমিনের স্বামী অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কিছু করণীয় নেই। এটি অফিসের ব্যাপার। টাকা-পয়সা অফিস থেকে নিতে হবে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে দুই মাসের মধ্যে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
|
|
|
|