ইসমাইল হোসেন বাবু, (কুষ্টিয়া) : প্রমত্তা পদ্মার আজ যৌবন হারিয়েছে। পদ্মার বুক জুড়ে জেগে উঠেছে বিশাল ধু-ধু বালুর চর। পানির অভাবে প্রশস্ত পদ্মা মরে গিয়ে ক্রমেই ছোট থেকে আরো ছোট হয়ে আসচ্ছে। জলরাশির পরিবর্তে চারিদিকে শুধু ধু-ধু বালুচর।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, রুগ্ন পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়সহ গড়াই নদীতে জেগে উঠেছে অসংখ্য ডুবোচর। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই জেগে ওঠা এসব চরে কৃষকরা ধানসহ আবাদ করছেন অন্যান্য ফসল। সুত্র জানায়, শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগির লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালের ১২ ফেব্র“য়ারি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ৩০ বছর মেয়াদি পানি চুক্তি করে ভারত সরকারের সঙ্গে । চুক্তির ২০ বছর পার হলেও কখনই হিস্যা অনুযায়ী পানি পায়নি বাংলাদেশ। পানির অভাবেই দিন দিন আরও শুকিয়ে যাচ্ছে পদ্মা হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি গার্ডারের মধ্যে ৮টি গার্ডারই এখন দাঁড়িয়ে আছে ধু-ধু বালুচরে। পানিউন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী ১লা জানুয়ারি থেকে ৩০শে মে পর্যন্তÍ সময়কে শুষ্ক মওসুম হিসেবে অভিহিত করে প্রতিটি মাসকে তিন চক্রে ভাগ করা হয়েছে। কোন চক্রে বাংলাদেশ কি পরিমাণ পানি পাবে তাও চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে। ঠিকমতো পানি বণ্টন হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) সদস্যরা বাংলাদেশ-ভারত সফর করেন। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সব সময়ই ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। পানি না পেয়ে পদ্মা আজ মরা খালে পরিণত হয়েছে। ফলে চলতি শুষ্ক মওসুমে পদ্মার বুকে দেখা দিয়েছে ধু-ধু বালুচর।
নদী শুকিয়ে যাওয়ায় এসব অঞ্চলে মরুকরণ হওয়ার উপক্রম হতে বসেছে। পরিবেশের উপর মারাত্মক বিপর্যয় নেমে এসেছে। এ অবস্থা থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদ-নদীগুলো এবং পরিবেশের ভারসাম্য ধরে রাখতে হলে সরকারকে অবিলম্বে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী ।