কোরআন ও জ্ঞান বিজ্ঞানের আলোকে
কেয়ামত, দাজ্জাল ও ইয়াযুজ মাযুজ সম্পর্কে আলোকপাত
সৈয়দ সাইদুর রহমান সাইদ
(শেষ পর্ব)
উল্লেখিত চারটি প্রাচীরের মধ্যে সবচাইতে বড় ও সবচাইতে প্রাচীন চীনের প্রাচির, যুলকারনাইনের প্রাচীর নয়, এ বিষয়ে সবাই একমত। এটি উত্তরদিকে নয়- দূরপ্রাচ্যে অবস্থিত। কোরআন পাকের ইঙ্গিত দ্বারা বোঝা যায় যে, যুলকারনাইনের প্রাচীরটি উত্তর ভূখন্ডে অবস্থিত। এখন উত্তর ভূখন্ডে অবস্থিত তিনটি প্রাচীর সম্পর্কিত পর্যালোচনা বাকী রয়ে গেল। তন্মধ্যে মাসউদী, ইসতাখরী, হমভী প্রমুখ ইতিহাসবিদ সাধারণভাবে সে প্রাচীরকে যুলকারনাইনের প্রাচীর বলেন যা দাগিস্থান অথবা ককেশিয়ার এলাকা বাবুল-আবওয়াবের দরবন্দ নামক স্থানে ক্যাম্পিয়ানের তীরে অবস্থিত। বুখারা ও তিরমিযির দরবন্দে অবস্থিত প্রাচীরকে যারা যুগলকারনাইনের প্রাচীর বলেছেন তারা সম্ভবতঃ দরবন্দ নাম দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন। এখন যুলকারনাইনের প্রাচীরের অবস্থানস্থল প্রায় নির্দিষ্ট হয়ে গেছে। অর্থাৎ দু’টি প্রাচীরের মধ্যে ব্যাপার সীমিত হয়ে গেছে। (এক) দাগিস্থান ককেশিয়ার এলাকা বাবুল আবওয়াবের দরবন্দের প্রাচীর এবং (দুই) আরও উচ্চে কাফকায অথবা কাফ অথবা ককেশাস পর্বতমালায় অবস্থিত প্রাচীর।উভয় স্থানে প্রাচীরের অস্তিত্ব ইতিহাসবিদদের কাছে প্রমাণিত রয়েছে। হযরত মওলানা আনওয়ার শাহ্ কাশ্মীরী (রহঃ) “আকীদাতুল ইসলাম” গ্রন্থে উভয় প্রাচীরের মধ্য থেকে ককেশাস পর্বতমালায় অবস্থিত প্রাচীরকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন যে, এটিই যুলকারনাইন নির্মিত প্রাচীর।যুলকারনাইনের প্রাচীর এখনও বিদ্যমান রয়েছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে।
ইউরোপীয় ইতিহাস ও ভূগোল বিশেজ্ঞরা আজকাল উপরোক্ত প্রাচীর সমূহের কোনটির অস্তিত্বই স্বীকার করেন না। তারা একথাও স্বীকার করেন না যে, ইয়াজুজ-মাজুজের পথ অদ্যাবধি বন্ধ রয়েছে। এরই ভিত্তিতে কোন কোন মুসলমান ইতিহাসবিদও একথা বলতে, লিখতে শুরু করেছেন যে, কোরআন ও হাদীসে বর্ণিত ইয়াজুজ-মাজুজ বহু পূর্বেই বের হয়ে গেছে। কেউ কেউ হিজরী ষষ্ঠ শতাব্দীতে ঝটিকার বেগে উত্থিত তাতারীদেরকেই এর নিদর্শন সাব্যস্ত করেছেন। কেউ কেউ বর্তমান যুগের পরাশক্তি রাশিয়া, চীন ও ইউরোপীয়দেরকে ইয়াজুজ মাজুজ বলে দিয়ে ব্যাপারটি সাঙ্গ করে নিয়েছেন। কিন্তু উপরের রূহুল মা’আনীর বরাত দিয়ে বর্ণনা করা হয়েছে যে, এটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। সহীহ, হাদীস সমূহ অস্বীকার করা ছাড়া কেউ একথা বলতে পারে না। কোরআন পাক ইয়াজুজ-মাজুজের অভ্যুত্থানকে কেয়ামতের আলামত হিসেবে বর্ণনা করেছে। নাওয়াম ইবনে সামআন প্রমুখ বর্ণিত সহীহ মুসলিমের হাদীসে পরিষ্কার বলা হয়েছে যে, ইয়াজুজ-মাজুজের ঘটনাটি ঘটবে দাজ্জালের আবির্ভাব এবং ঈসা (আঃ)- এর অবতরণ ও দাজ্জাল হত্যার পরে। দাজ্জালের আবির্ভাব এবং ঈসা (আঃ)- এর অবতরণ যে আজো পর্যন্ত হয়নি তাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই।
তবে যুলকারনাইনের প্রাচীর বর্তমানে ভেঙ্গে গেছে এবং ইয়াজুজ-মাজুজের কোন কোন গোত্র এপারে চলে এসেছে- একথা বলাও কোরআন ও হাদীসের কোন সুস্পষ্ট বর্ণনার পরিপন্থী নয়- যদি মেনে নেয়া হয় যে, তাদের সমগ্র পৃথিবীতে ধবংসস্তুপে পরিণতকারী সর্বশেষ ও সববিধবংসী হামলা এখনও হয়নি; বরং তা উপরে বর্ণিত দাজ্জালের আবির্ভাব এবং ঈসা (আঃ)- অবতরণের পরে হবে। এ ব্যাপারে হযরত ওস্তাদ আল্লামা কাশ্মিরী (রহঃ) এর সুচিন্তিত বক্তব্য এই, ইউরোপীয়দের এ বক্তব্যের কোন গুরুত্ব নেই যে, তারা সমগ্র ভুপৃষ্ঠ তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখেছে যে, কোথাও এই প্রাচীরের অস্তিÍত্ব নেই। কেননা, স্বয়ং তাদেরই এ ধরনের বর্ণনা বিদ্যমান রয়েছে যে, পর্যটনও অন্বেষণের উচ্চতম শিখরে পৌঁছা সত্তে¡ও অনেক অরণ্য, সমুদ্র ও দ্বীপ সম্পর্কে তারা অদ্যাবধি জ্ঞানলাভ করতে পারে নি। এ ছাড়া এরুপ সম্ভাবনাও দূরবর্তী নয় যে, কথিত প্রাচীরটি বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও পাহাড় সমূহের পতন ও পারস্পরিক সংযুক্তির কারণে তা একটি পাহাড়ের আকার ধারণ করে ফেলছে। কেয়ামতের পূর্বে প্রাচীরটি ভেঙ্গে যাবে অথবা দুরবর্তী পথ ধরে ইয়াজুজ-মাজুজের কিছু গোত্র এসে যাবে- কোরআন ও হাদীসের কোন অকাট্য প্রমাণ এ বিষয়েরও পরিপন্থী নয়।
যুলকারনাইনের প্রাচীর কেয়ামত পর্যন্ত অক্ষয় থাকবে-এর পক্ষে বড় প্রমাণ হচ্ছে কোরআন পাকের আয়াতঃ সূরা -১৮ আয়াত-৯৭-ফাইজাযাআ ওয়া’দু রব্বি জায়া’লাহু দাক্কাআ অর্থাৎ যুলকারনাইনের এই উক্তি যে, যখন আমার পালনকর্তার প্রতিশ্রæত সময় এসে যাবে (অর্থাৎ, ইয়াজুজ-মাজুজের বেরিয়ে আসার সময় হবে) তখন আল্লাহতাআলা এই লৌহ প্রাচীর চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ভূমিসাৎ করে দেবেন। এ আয়াতের ওয়া’দু রব্বি.. (আমার পালনকর্তার ওয়াদা) এর অর্থ কেয়ামত নেয়া হয়েছে। অথচ কোরআনের ভাষায় এই অর্থ অকাট্য নয়, বরং এর পরিষ্কার অর্থ এই যে, যুলকারনাইন ইয়াজুজ-মাজুজের পথ রূদ্ধ করার যে ব্যবস্থা করেছে, তা সদাসর্বদা যথাযথ থাকা জরুরী নয়। যখন আল্লাহ্ তা’আলা ইয়াজুজ-মাজুজের পথ খুলে দেয়ার ইচ্ছা করবেন, তখন এই প্রাচীর বিধবস্ত ও ভূমিসাৎ হয়ে যাবে। এটা কেয়ামতের একান্ত নিকটবর্তী সময়ে হওয়াই জরুরী নয়। সে মতে সব তফসীরবিদই ওয়া’দু রব্বি এর অর্থে উভয় সম্ভাবনা উল্লেখ করেছেন। তফসীর বাহরে মুহীতে বলা হয়েছে- এটা এভাবেও হতে পারে যে, প্রাচীর বিধবস্ত হয়ে রাস্তা এখনই খুলে গেছে এবং ইয়াজুজ মাজুজের আক্রমণের সূচনা হয়ে গেছে। ষষ্ঠ হিজরীর তাতারী ফেৎনাকে এর সুচনা সাব্যস্ত করা হোক কিংবা ইউরোপ, রাশিয়া ও চীনের আধিপত্যকে সাব্যস্ত করা হোক। কিন্তু একথা সুস্পষ্ট যে, এসব সভ্য জাতির আবির্ভাব ও এদের সৃষ্ট ফেৎনাকে কোরআন হাদীসে বর্ণিত ফেৎনা আখ্যা দেয়া যায় না। কারণ তাদের আবির্ভাব আইন ও কানুনের পন্থায় হচ্ছে। কোরআন ও হাদীসে বর্ণিত সেই ফেৎনা এমন অকৃত্রিম হত্যাযজ্ঞ, লুটতরাজ রক্তপাতের মাধ্যমে হবে যা পৃথিবীর গোটা জনমন্ডলীকেই ধবংস ও বরবাদ করে দেবে।
বরং এর সারমর্ম আবার এই দাঁড়ায় যে, দুষ্কৃতকারী ইয়াজুজ-মাজুজেরই কিছু গোত্র এপারে এসে সভ্যকরণ হয়ে গেছে। তারাই ইসলামী দেশসমুহের জন্যে নিঃসন্দেহে বিরাট ফেৎনার কারণ হয়ে দঁড়িয়েছে। কিন্তু ইয়াজুজ-মাজুজের সেসব বর্বর গোত্র হত্যা ও রক্তপাত ছাড়া কিছুই জানে না, তারা এখন পর্যন্ত আল্লাহর বাণীর তফসীর অনুযায়ী এপারে আসেনি। সংখ্যার দিক দিয়ে তারাই হবে বেশী। তাদের আবির্ভাব কেয়ামতের কাছাকাছি সময়ে হবে। দ্বিতীয় প্রমাণ হচ্ছে, তিরমিযী ও মুসনাদে আহমদের একটি হাদীস। তাতে উল্লেখিত রয়েছে যে, ইয়াজুজ-মাজুজ প্রত্যহই প্রাচীরটি খনন করে। প্রথমতঃ এই হাদীসটি ইবনে কাসীরের মতে, মা’লুল দ্বিতীয়ত: এতেও বিষয়ের বর্ণনা নেই যে, ইয়াজুজ-মাজুজ যেদিন ইনশাআল্লাহ্ বলার বরকতে প্রাচীরটি অতিক্রম করবে সেদিনটি কেয়ামতের কাছাকাছিই হবে। এই হাদীসে এ বিষয়েরও কোন প্রমাণ নেই যে, ইয়াজুজ-মাজুজের গোটা জাতি এই প্রাচীরের প্রাশ্চাতে আবদ্ধ থাকবে। কাজেই তাদের কিছু দল অথবা গোত্র হয়তো দূর-দুরান্তের পথ অতিক্রম করে এপারে এসে গেছে। আজকালকার শক্তিশালী সামুদ্রিক জাহাজের মাধ্যমে এরূপ হওয়া অসম্ভব নয়। কোন কোন ইতিহাসবিদ একথাও লিপিবদ্ধ করেছেন যে, ইয়াজুজ-মাজুজ দীর্ঘ সামুদ্রিক সফরের মাধ্যমে এপারে আসার পথ পেয়ে গেছে। উপরোক্ত হাদীস এর পরিপন্থী নয়। মোটকথাঃ কোরআন ও হাদীসে এরূপ কোন প্রকাশ্য ও অকাট্য প্রমাণ নেই যে, যুলকারনাইনের প্রাচীর কেয়ামত পর্যন্ত অক্ষয় থাকবে অথবা কেয়ামতের পূর্বে এপারের মানুষের উপর তাদের প্রারম্ভিক ও মামুলী আক্রমণ হতে পারবে না।
তবে তাদের চুড়ান্ত ভয়াবহ ও সর্বনাশা আক্রমণ কেয়ামতের পূর্বে সেই সময়েই হবে, যে সময়ের কথা ইতিপূর্বে বার বার উল্লেখ করা হয়েছে। মূলকথা এই যে, কোরআন ও হাদীসের বর্ণনার ভিত্তিতে ইয়াজুজ মাজুজের প্রাচীর ভেঙ্গে রাস্তা খুলে গেছে যেমন অকাট্য ফয়সালা করা যায় না, তেমনি একথাও বলা যায় না, যে প্রাচীরটি কেয়ামত পর্যন্ত কায়েম থাকা জরুরী। উভয়দিকেরই সম্ভাবনা রয়েছে। বায়াদুহুম ইয়াওমাইজিইইয়া মুজু ফিবাদু এ সূরা নং ২৮ আয়াত নং ৮৮ এর সর্বনাম দ্বারা বাহ্যতঃ ইয়াজুজ-মাজুজকেই বোঝানো হয়েছে। তাদের একদল অপরদলের মধ্যে ঢুকে পড়বে- বাহ্যতঃ এই অবস্থা তখন হবে, যখন তাদের পথ খুলে যাবে। এবং তারা পাহাড়ের উচ্চতা থেকে দ্রæতবেগে নীচে অবতরণ করবে। তফসীরবিদগণ অন্যান্য সম্ভাবনাও লিখেছেন। তাফসীর মাআরেফুল কোরআন ৮২১পৃঃ-২৮পৃঃ।
উপসংহার: দাক্কা শিংগার ফুৎকারের ধাক্কা এবং বাতাসের ধাক্কা। ৬.৩ থেকে ৯.৬ রিষ্টার স্কেলে মাত্র ৩০ সেকেন্ড ভূমিকম্প, (ঊধৎঃয ছঁধশব) এবং ৮০ থেকে ১০০ মাইল বেগে মাত্র ৩০ মিঃ সাইক্লোন, টর্নেডো, টাইফুন, আইলা, সুনামি, নার্গিস, উরংধংঃবৎ দুর্যোগ, ইত্যাদির আঘাতে আঘাত গ্রস্থ দেশ বা অঞ্চলের কোটি কোটি প্রাণী, অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে যাচ্ছে, যা প্রতিহত বা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তথা কৌশল বর্তমান বৈজ্ঞানিকগণ আবিষ্কার করতে পারেনি। ভবিষ্যতে যখন কিয়ামতের সময় সবার মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত শিংগার ফুৎকারের একটানা আওয়াজ অথবা যতক্ষণ সমস্ত দুনিয়ার মানব, দানব, জীন, ফেরেস্তা বিধ্বস্ত না হবে এতক্ষণ স্থায়ী পরম প্রকম্পন (অনংড়ষঁঃব ছঁধশব) তথা যে, ভূমিকম্প শুরু হবে তা প্রতিরোধ করার বৈজ্ঞানিক এমন কোন কিছু আবিষ্কারের সম্ভাবনা কল্পনা প্রসুত মাত্র। (যদি ১৫ থেকে ২০ রিক্টার স্কেল ভুমিকম্প ২-১ দিন ব্যাপী হয় অথবা ২ থেকে ৩ শত মাইল বেগে সাইক্লোন, জলোচ্ছাস, আইলা, সুনামী, টর্নেডো, টাইফুন ইত্যাদি হতে থাকে। (সমাপ্ত)
লেখক : বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী। তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ।
তাড়াশে আদিবাসীদের বিশেষ চক্ষু শিবির
স্টাফ রিপোর্টার ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের মাধাইনগর আদিবাসী কলেজ চত্বরে গত ২৪ জুলাই ২০২৫ তারিখে আদিবাসীদের জন্য একদিনের একটি বিশেষ চক্ষু শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অধ্যাপক এম. এ মতিন বিএনএসবি আই হসপিটাল, সিরাজগঞ্জ এর সহযোগীতায় স্থানীয় সংস্থা পরিবর্তন এর আয়োজনে উক্ত চক্ষু শিবিরে মোট ১১৪ জন চক্ষু রোগীকে বিনামূল্যে সেবা ও চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ওষুধ ২৪ জন, চশমা ৬৭ জন এবং চোখের ছানি অপারেশন করা হয় ২৭ জনের। উল্লেখ্য, চক্ষু রোগীর সবাই আদিবাসী জনগোষ্ঠির মানুষ। পরিবর্তন বিগত কয়েক বছর ধরেই এ ধরনের চক্ষু ক্যাম্প বাস্তবায়ন করে চলেছে। এই শিবির আয়োজনে পরিবর্তনের পক্ষে সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন সংস্থার উপপরিচালক রোখসানা খাতুন।
মধুসূদন থেকে মাইকেল মধুসূদন দত্ত
আছাদুজ্জামান
প্রথমেই পাঠকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এইজন্য যে, আজ যাকে নিয়ে লেখা তিনি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তাঁকে নিয়ে লেখার মতন শব্দ ভান্ডার, শিক্ষা ও যোগ্যতা কিছুই আমার নেই। শুধু এইটুকু বলতে পারি ছাত্র জীবনে তার লেখা চতুর্দশপদী কবিতা বঙ্গভাষা,কপোতাক্ষ নদ,কমলেকামিনী, মেঘনাদ ও বিভিষণ, সমুদ্রের প্রতি রাবণ, তাঁর অন্যান্য লেখা যেমন তিলোত্তমাসম্ভব,পদ্মাবতী ও একেই কি বলে সভ্যতা? এগুলি পড়তে গিয়ে তাঁর প্রতি চরম দুর্বলতা পেয়ে বসে যা সামাল দিতে পারিনি। সেই অবধি তাঁর সম্পর্কে লেখার জন্য লম্বা একটা প্রহর অপেক্ষা করেছি কিন্তু সাহস পাইনি। অনেক ভেবেছি কী দিয়ে শুরু করব তাও স্থির করতে পারিনি। এজন্য তাঁর লেখা বিভিন্ন কাব্য-গ্রন্থের উদ্ধৃতিও অনলাইনে বিভিন্ন কলামিষ্টের লেখার অংশ বিশেষ ধারণ করে কিভাবে তিনি মধুসূদন থেকে মাইকেল মধুসূদন দত্ত হলেন তার পেছনের অন্তর্নিহিত জীবন দর্শন আপনাদের সামনে তুলে ধরার সাহস করলাম।ভুল-ত্রæটি ক্ষমা করবেন।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত যার নাম শুনলেই গা শিউড়ে উঠে এমনকি তাঁর লেখাগুলো পড়তে ও উচ্চারনে যেমন দুর্বোধ্য তেমনি বুঝতেও দুঃসাধ্য।তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন যুগপ্রবর্তক কবি যদিও তিনি ইংরেজী সাহিত্যে লেখাপড়া করেছেন। তিনি পাশ্চাত্য ইংরেজী সাহিত্যের আদর্শ গ্রহণ করে বাঙালির জীবনদর্শন ও রুচি মিশেল করে তিনি তা তার কাব্যে রুপায়িত করেছেন। একমাত্র তিনি বাংলা সাহিত্যে নবযুগের সূচনা করেন। এজন্য তিনি বাংলা সাহিত্যে অমর হয়ে আছেন।
মাইকেল মধুস‚দন দত্ত তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ শুরু করেছেন দেবী বন্দনার মধ্য দিয়ে। দেবী বীণাপাণির বর প্রার্থনা না করে যেন এত বড় কাজ সম্পন্ন করা অনুচিত।বিশ্বগুরু বাল্মীকির চরণযুগলেও তিনি তাঁর শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেছেন। আসলেই এটা ছিল তৎকালীন প্রথা। কোনো কাব্য বা পুঁথি লোকগাথা শুরুর আগে বন্দনারীতি বাংলা কাব্যের আদি উৎসের ভিতর নিহিত। যে মধুসূদন মনে প্রাণে, ভেতর-বাহিরে পুরোপুরি ইউরোপীয়, অথচ ঐতিহ্যের কাছে, প্রথার কাছে তিনি অনুগত ছিলেন। আবার দৃঢ়চিত্তে প্রথা ভেঙেছেন। চুরমার করে দিয়েছেন পুরোনো কাব্যরীতি, কাব্যপ্রথাকে। সৃষ্টি করেছেন নবতর কাব্যরীতি, কাব্য-ভাষার। যে মধুসূদন হোমার, ভার্জিল, মিলটন, ট্যাসোর অনুরক্ত; সেই তিনিই আবার বাল্মীকি, বেদব্যাস, ভবভ‚তি, কালিদাস, জয়দেবের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। গ্রিক সাহিত্যের অপরাজেয়তা থেকে মেঘনাদ চরিত্রের নির্ভিকতা, আবার জগদ্রামী রামায়ণ থেকে প্রমীলাকে আত্মীকরণ। মেঘনাদবধ কাব্যের অধিকাংশ চরিত্র রামায়ণ থেকে আহরিত। কিন্তু মেঘনাদপতœী প্রমীলার কোনো অবস্থান নেই বাল্মীকির রামায়ণে, এমনকি ব্যাসের মহাভারতেও। কৃত্তিবাসী রামায়ণে এই নামটি আছে, কিন্তু চরিত্র-চলনে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনো কোনো গবেষক মনে করেন, প্রমীলা মধুসূদনের স্বকল্পিত। তবে ড. বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘প্রমীলার উৎস’ প্রবন্ধে দাবি করেছেন, মেঘনাদবধ কাব্যের প্রমীলা চরিত্র মধুসূদন নিয়েছেন ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে রচিত জগদ্রামী-রামপ্রসাদী ‘অদ্ভুতরামায়ণ’ থেকে। এই রামায়ণে উল্লিখিত মেঘনাদপতœী সুলোচনার ছায়াবলম্বনে প্রমীলার সৃষ্টি। সে যাই হোক, পুরো‘মেঘনাদবধ কাব্য’ রামায়ণ থেকে উৎসারিত, বাল্মীকি যেখানে মূর্তমাণ কিন্তু তার চরিত্র-সৃজন ইউরোপীয়। মধুসূদনের ভেতর এই দ্বৈতসত্তা সর্বদা সক্রিয় ছিল। একের ভেতরে দুই। মধুসূদনের ভেতরে মাইকেল, আবার মাইকেলের ভেতরে মধুসূদন। তাঁর বিভিন্ন সৃষ্টি পর্যালোচনা করলে, তাঁর জীবন বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখব, একজন অসামান্য প্রতিভাধর ব্যক্তির ভেতর দুটি সত্তা বিরাজমান; একটিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে মধুসূদন, অন্যটি মাইকেল।
ধুসূদনের জন্ম হয়েছিল একটি গোঁড়া হিন্দু পরিবারে। যেখানে সনাতন সব ধরনের সংস্কার চালু ছিল। পৌত্তলিক পূজা থেকে সব পূজাা-পার্বণ দত্তবাড়িতে অনুষ্ঠিত হতো। বাড়িতে পঠিত হতো রামায়ণ, মহাভারতসহ বিভিন্ন পুরাণগ্রন্থ। শিশু মধুসূদনের মনে এর প্রভাব পড়েছে ব্যাপকভাবে। কৈশোরে ফারসি শিখেছেন মৌলভি সাহেবের কাছে। পুরাণপ্রীতি, ফরাসি শিক্ষা, ধনী পরিবারের বিলাস-ব্যসন, আর গ্রামের ধুলোমাটি, কপোতাক্ষ তীরের সৌন্দর্য সব মিলিয়ে গঠিত হয়েছিল মধুমানস। ছাত্রজীবন থেকেই ইংরেজিপ্রীতি, ইংরেজি সাহিত্যে বড় কবি হওয়ার বাসনা তাঁকে করেছিল ইউরোপীয় সংস্কৃতির সমঝদার। তাঁর উচ্চাশা এমন স্তরে পৌঁছেছিল, যার সঙ্গে বাস্তবতা ছিল অনেক দ‚রে। আশা আর প্রাপ্তির টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে তাঁর চরিত্রে দানা বেঁধেছিল সুদৃঢ় আমিত্ব; যেখানে অন্য সবই মূল্যহীন। যা তাঁকে নিয়ে গেছে স্বপ্নের শিখরে, আবার পৌঁছে দিয়েছে চরম স্বপ্নহীনতার পাদদেশে। আশা ও প্রাপ্তির মধ্যে যে তফাত, সে তফাতটিকে তিনি বরণ করেছেন বুকের ক্ষরণ দিয়ে, নিজেকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে নিঃশেষ করে।
অবিভক্ত বাংলার এক অজগ্রাম সাগরদাঁড়ির ধূলোমাখা মধুসূদন নিজেকে নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন খাঁটি ইংরেজের মতো। গ্রাম ছেড়ে যখন শহর কলকাতায় গমন করেছেন, তখনও কথাবার্তা, আচার-আচরণে গ্রামের প্রভাব ঘোচেনি, তার আগেই ইংরেজি শিখতে এসে নিজেকে ইংরেজ বলে ভেবেছেন। ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে ভর্তি করা হয় আধুনিক শিক্ষার এক অনন্য পীঠস্থান হিন্দু কলেজে। অনেকের মতো বাংলা ভাষাকে অবজ্ঞা করতে শিখে গেছেন। ভেবেছেন, বাংলা ভাষা জেলে ও মেছুনীদের ভাষা ছাড়া আর কিছু নয়। আর এ ভাষায় উন্নত সাহিত্য সৃষ্টি; সে তো অসম্ভব! হিন্দু কলেজের শিক্ষক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও (১৮০৯-১৮৩১) কাছে না থাকলেও তাঁর মুক্তচিন্তা, যুক্তিবাদ উদার দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব কলেজের ছাত্রদের মধ্য থেকে বিলুপ্ত হয়নি।
ডিরোজিওর প্রভাব অন্যদের মধ্যে প্রতিফলিত হলেও মুুসূদনের মধ্যে ছিল কম। ডিরোজিয়ানরা ছিলেন যুক্তিশাসিত, কিন্তু মধুসূদন যুক্তির ধার ধারেননি। হিন্দু কলেজে মধুসূদন শিক্ষক হিসেবে পেলেন আরেক কৃতিজন, কবি ক্যাপ্টেন ডেভিট লেস্টার রিচার্ডসনকে (১৮০১-১৮৬৫)। ইংরেজি সাহিত্যে তাঁর ব্যুৎপত্তি, শিক্ষাদানের আন্তরিক মানসিকতা মধুসূদনের মতো অনুসন্ধিৎসু ছাত্রকে বিপুলভাবে উৎসাহিত করেছিল। প্রিয় শিক্ষকের শেক্সপিয়র পাঠদানে মধুসূদন যেমন মুগ্ধ হয়েছেন, তেমনি সমৃদ্ধ হয়েছেন তাঁর লিখিত কাব্যপাঠে। রিচার্ডসনের প্রকাশিত কাব্য গরংপবষষধহবড়ঁং চড়বসং, ঝড়হহবঃং ধহফ ঙঃযবৎ চড়বসং, খরঃবৎধৎু খবধাবং মধুস‚দনের মনে রেখাপাত করেছে বৈকি! রিচার্ডসন ইংরেজি সাহিত্যের কবিদের নিয়ে একটি বৃহৎ সংকলন সম্পাদনা করেন এ সময়। সংকলনের নামটি ছিল ঝবষবপঃরড়হং ভৎড়স ঃযব ইৎরঃরংয চড়বঃং ভৎড়স ঃযব ঃরসব ড়ভ ঈযধঁপবৎ. ঞড় ঃযব ঢ়ৎবংবহঃ ফবু রিঃয ইরড়মৎধঢ়যরপধষ ধহফ পৎরঃরপধষ হড়ঃরপবং. কলকাতার ব্রিটিশ মিশন প্রেস থেকে প্রকাশিত এই সংকলন মধুসূদনকে একান্তভাবে অনৃপআণিত ও আলোড়িত করেছিল। ইংরেজি সাহিত্যে বড় কবি হওয়ার বাসনা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছিল এই সংকলন পাঠের ফলে। স্বপ্নের কবি বায়রনের দেশ যেন তাঁর দেশ হয়ে ওঠে। তিনি ভুলে যান, তাঁর জন্ম এই বাংলায়। এ সময় থেকে তিনি ইংরেজি ভাষায় কবিতা রচনা শুরু করেন এবং তা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে।
ঊীঃবসঢ়ড়ৎধৎু ঝড়হম শীর্ষক কবিতায় লিখেন :
(১)“ দূর শ্বেতদ্বীপ তরে, পড়ে মোর আকুল নিশ্বাস
যেথা শ্যাম উপত্যকা, উঠে গিরি ভেদিয়া আকাশ;
নাহি সেথা আত্মজন; তবু লঙ্ঘি অপার জলধি
সাধ যায় লভিবারে যশঃ কিম্বা অনামা সমাধি।
(২)জনক-জননী-ভগ্নী আছে মোর; স্নেহ পরকাশি
তারা মোরে ভালোবাসে; আমিও তাদের ভালোবাসি;
তবু ঝরে অশ্রু বেগে, হেমন্তের শিশিরের সম
কাঁদি শ্বেতদ্বীপ তরে, যেন সেই জন্মভ‚মি মম!”
এতখানি উন্মাদনা যে, কবি শ্বেতদ্বীপকে নিজের জন্মভ‚মি বলে ভেবেছেন। ডিরোজিও ইংরেজ হয়েও ভারতভূমিকে ভেবেছিলেন মাতৃভ‚মি, সেখানে মধুসূদন ডিরোজিওর জন্মভ‚মিকে ভেবেছেন নিজের জন্মভূমি! লন্ডনের ‘বø্যাকআউট’ ম্যাগাজিনে কবিতা পাঠিয়েছেন কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থকে উৎসর্গ করে। যদিও ছাপা হয়নি সেসব কবিতা। তিনি ইংল্যান্ড যাবেন, বড় কবি হবেন, বন্ধু গৌরদাস বসাককে বলছেন, সে যেন তাঁর জীবনী লেখে। ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দের ২৭ নভেম্বর মধ্যরাতে বন্ধুকে তিনি লিখছেন, “তুমি জান, দেশ ত্যাগ করবার ইচ্ছে আমার হৃদয়ে এতখানি বদ্ধমূল, যা নাকি মুছে ফেলা যাবে না। সূর্য উদিত নাও হতে পারে। কিন্তু আমার এ ইচ্ছে মন থেকে কখনো বিদূরিত হবে না। নিশ্চিত জেনে রাখ- দু-এক বছরের ভিতর আমি ইংল্যান্ডে যাব, না হয় আমি আত্মহত্যা করব। এ দুটোর একটা ঘটবেই।”
১৮৪২ থেকে ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কেটে গেছে কুড়িটি বছর। তাঁর বিলেত যাওয়া হয়নি। তিনি আত্মহত্যাও করেননি। আত্মহত্যা না করলেও আত্মক্ষরণে বিক্ষত হয়েছেন প্রতিদিন, এটা সহজেই অনুমেয়। কীভাবে বিদেশ যাওয়া যায়, এটা ভাবতেই এসে গেল মোক্ষম সময়। পিতা রাজনারায়ণ দত্ত তাঁর বিয়ে ঠিক করলেন স্থানীয় এক সুন্দরী জমিদার-কন্যার সঙ্গে। তিনি অমত প্রকাশ করলেন, দেখা করলেন রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন ব্যানার্জির সঙ্গে। জানালেন- ইংরেজরা যদি তাঁকে বিলেত পাঠানোর ব্যবস্থা করেন, তাহলে তিনি খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করবেন। কৃষ্ণমোহন তেমন আশ্বাস না দিলেও তিনি আলোচনা করলেন অ্যাংলিকান চার্চের একজন কর্তাব্যক্তি আর্চডিকন ডিয়ালট্রির সঙ্গে। আশ্বাস পেয়ে হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি মধুসূদন খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করলেন। মধুসূদন নামের সঙ্গে যোগ হলো মাইকেল শব্দটি। ইংরেজি সাহিত্যের সংস্পর্শে এসে যে মাইকেল ভেতরে ভেতরে বেড়ে উঠছিল, সেই-ই পাখা মেলল; কিন্তু উড়তে পারল না। হলো না তাঁর বিলেত যাওয়া। ইংরেজ কর্তৃক প্রবঞ্চিত হলেন তিনি। ধর্ম ত্যাগের কারণে হিন্দু কলেজে পড়াশোনার সুযোগ হারিয়ে তিনি পিতার অর্থ সাহায্যে ভর্তি হলেন বিশপস কলেজে। পিতা ভেবেছিলেন পুত্রকে প্রায়শ্চিত্ত করিয়ে স্বধর্মে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। কিন্তু যার হৃদয়ে বদ্ধমূল হয়ে আছে ইংরেজ কবি আলেকজান্ডার পোপ (১৬৮৮-১৭৪৪)-এর সেই অব্যর্থ উক্তি- “কবিতার জন্য প্রয়োজনে বাবা-মা উভয়কেই ত্যাগ করতে হবে।” তাঁর পক্ষে কি সম্ভব ঘর ছেড়ে ঘরে ফিরে আসা! তিনি ফিরলেন না। এক পর্যায়ে রাজনারায়ণ দত্ত আশা ছেড়ে দিয়ে পুত্রকে অর্থ সাহায্য বন্ধ করে দিলেন।(পরবর্তী সংখ্যায় সমাপ্য)।
লেখক : বিশিষ্ট সাহিত্যিক। প্রধান শিক্ষক, লালুয়া মাঝিড়া উচ্চ বিদ্যালয়, তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ।
কবিতা
দেশের বালা-মুসিবত
আবদুর রাজ্জাক রাজু
তোমরা যতই দুর্নীতি-দুস্কর্ম- অপকর্ম-অধর্ম জুলুম-নিপীড়ন করবে
তোমাদের উপর ততই নানা বালা-মুসিবত দু:খ-দুর্দিন এসে পড়বে।
তোমরা যতই সুদ-ঘুষ হারাম অর্থ সম্পদ উপার্জন ও গলধকরণ করবে
তোমাদের উপর ততই বিচিত্র বিশৃংখলা আপদ-আঘাত এসে পড়বে।
তোমরা যতই দখল-দূষণ সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি ধর্ষণ-নির্যাতন করবে
তোমাদের মাথার উপর ততই আকস্মিক শাস্তি ও গজব এসে পড়বে।
তোমরা যতই দলবাজি-ধান্দাবাজি সহিংসতা ও সিন্ডিকেট করবে
তোমাদের উপর ততই নানা ফিতনা-ফ্যাসাদ ঘন ঘন চেপে বসবে।
তোমরা যতই ভেজাল-নকল প্রতারণা-জালিয়াতি-আত্মসাৎ করবে
তোমরা নানা দুর্ঘটনা-ট্রাজেডীতে মর্মান্তিকভাবে যখনতখন মরবে।
তোমরা যতই আখের গোছানো বা আত্মসাতের মতলব করবে
তোমাদের উপর ততই নানা সমস্যা ও বিপদের বোঝা এসে পড়বে।
তোমরা যতই মোবাইলে প্রযুক্তিতে মিথ্যাচার-পাপাচার করবে
ততই অজানা কত না ব্যাধিবিমার ও মহামারীতে অগনিত প্রাণ ঝড়বে।
তোমাদের রাজনীতি যতই অন্যায্য-দূষিত দুর্বৃত্তায়িত-কলুষিত হবে
ততই তোমাদের মাঝে দ্ব›দ্ব-কলহ অশান্তি-অস্থীরতা বিরাজ করবে।
তোমরা যতই বিভেদ-বিভাজন, মতানৈক্য, সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত রবে
ততই তোমাদের ওপর নানামুখী সংকট প্রকট আকারে আপতিত হবে।
তোমরা যতদিন নিজেদেরকে সত্যকার পরিবর্তন অথবা না বদলাবে
ততদিন তোমদের বিভিন্ন দুর্যোগ, দুর্ভোগ, দুর্বিপাক ও দুরাবস্থা হতে থাকবে।
যতদিন তোমরা নানা কায়দা-কৌশলে ফন্দি-ফিকিরে ভন্ডামী করে চলবে
ততদিন তোমাদের থেকে অগনিত বাধার হিমালয় পর্বত না গলবে।
তোমরা যতদিন অসততা, অনৈতিকতা আর অবক্ষয়ে ডুবে থাকবে
ততদিন তোমাদের উন্নতি, সমৃদ্ধি, মুক্তি আর কল্যাণের তরী না জাগবে।
যতদিন তোমাদের মৌলিক চরিত্র সংশোধন ও পরিমার্জন না হবে
ততদিন জাতি হিসেবে তোমরা কেবলই পিছিয়ে পড়বে।
তোমরা যতদিন জাতির সাথে বেঈমানী-মীরজাফরী করবে
ততদিন তোমরা অনেক বড় পাপ আর আজাবের সাথে লড়বে।
যতদিন তোমরা সন্ত্রাস, টোকাই, মানব, মাদক ও অর্থ পাচার করবে
ততদিন তোমাদের নানা ঝুটঝামেলায় অশূভ ঝন্ঝায় অসংখ্য প্রাণ ঝড়বে।
তোমরা এক অপরকে ফ্যাসিস্ট, ক্ষমতায় অন্ধ স্বৈরাচার বলো
অথচ ঘুরে ফিরে আবার তোমরা নিজেরাই সে পথে ফিরে চলো।
তোমরা ঘৃণা-বিদ্বেষ ছেড়ে যদি প্রকৃত মানবিক সভ্য সুন্দর হতে না পারো
তোমাদের সামনে অভ্যুত্থান, রক্তপাত, ধ্বংস লীলা দেখতে পাবে আরো।
তোমাদের মাঝে বস্তুত কোনো রূপান্তরের লক্ষন দেখা যায় না
বরং তোমরা ধরে আছো ধ্রæপদী-সনাতনী পুরোনো নষ্ট ভ্রষ্ট সেই বায়না।
নতুন বন্দোবস্ত এবং সংস্কারের নামে খেলছো টালবাহানার খেলা
ওদিকে তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে আর এক ভয়াবহ মরণ বেলা।
তোমরা শুধু মুখে ও শ্লোগানে গণতন্ত্রের সাধু বাক্য বলো
কিন্তু বাস্তব কর্মে অনুশীলনে ও আচরণে বিপরীত ধারায় চলো।
কোন ইতিহাস থেকেই তোমাদের শিক্ষা নেওয়ার ইতিহাস নেই
প্রবাদের মতো তোমরা “ আগেও যে লাউ ছিলে – এখনও কদু সেই”।
তাই তোমরা যতই অন্যায়, অনিষ্ট আর অবিচারের পথে চলবে
ততই তোমরা আচমকা নতুন নতুন ঝুঁকি ও বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
তোমাদের দেশপ্রেম, দেশাত্মবোধ, শিক্ষা-সংস্কৃতি মানবতা উন্নত না হলে
তোমরা কখনো পারবে না বৈশ্বিক প্রতিযোগীতায় পাল্লা দিয়ে চলে।
তোমাদের ধর্ম,নীতি, আদর্শ, মন্যুষত্ব মূল্যবোধ সবই গেছে খোয়া
তবুও দিব্যি মিথ্যে বলছো তোমরা একবারে “তুলসী পাতা ধোয়া”।
তোমদের মতো বিচ্ছিন্ন ব্যর্থ ধান্দাবাজ-ধোকাবাজ-ধরিবাজ বিশ্বে কমই দেখা যায়
সবার নেতিবাচক সমালোচনা সত্বেও তোমাদের লজ্জা বোধ-বিবেচনা না পায়।
তোমরা অন্যকে মানবতা বিরোধী মাফিয়া শাসক বলে তাড়িয়ে দাও
আবার তোমরাই সে একই বৈশিষ্ট্য বহন করে তার স্থান দখল করতে চাও।
এখন জাতির এই ক্রান্তি কালেও যদি মানুষের স্বপ্ন-আকাংখার না দিতে পারো দাম
তবে ভেবে দেখো সেই ব্যর্থতার কী হতে পারে সকরুণ পরিণাম!
২৭-০৭-২০২৫ফেব্রæয়ারীর দ্বিতীয় সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাবনা
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘ অনিশ্চয়তা ও দ্বিধা কাটিয়ে উঠতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী ৫ আগস্ট, ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তির দিনে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ওই ভাষণেই তিনি ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের নির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণা করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন সরকারের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র।
নির্বাচন কমিশনের সাথে সমন্বয়ের ভিত্তিতে ১২ ফেব্রæয়ারি ২০২৬ তারিখে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে, যা প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের মাধ্যমেই সরকারিভাবে জানানো হবে। নির্বাচনের সময়সীমা ও রোডম্যাপ দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক দলগুলোর একটি প্রধান দাবি ছিল। সরকারি ও রাজনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন এবং ভোটের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় সময়রেখা তুলে ধরবেন। এ ছাড়া অভ্যুত্থানের পর সরকারের নেয়া রাষ্ট্রীয় সংস্কার, যুদ্ধাপরাধ ও রাজনৈতিক সহিংসতার বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করা হবে।এছাড়া ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে ৫ আগস্টের ভাষণের আগেই সরকার ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশ করার পরিকল্পনা করছে। সূত্র: কালের কণ্ঠ।
‘হাসিনাকে ভারত পুশইন করে না কেন ? ’
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ ভারতের প্রতি প্রশ্ন রেখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রূহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনাও তো বাঙালি মুসলমান, বাংলাদেশের মানুষ। ভারত তাকে পুশইন করছেন না কেন? গত সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মরহুম শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ মাহফিলে এ কথা বলেন তিনি।
রূহুল কবির রিজভী বলেন, ‘যে সমস্ত দুর্বৃত্তরা পালিয়ে গেছে ভারতে, তাদের তো পুশইন করছেন না। শুধু রাজনৈতিক স্বার্থে দিল্লি। ভারতের নাগরিক, হাজার হাজার বছর ধরে যাদের সেখানে বসবাস কিন্তু তারা মুসলমান হওয়ার কারণে, তারা বাংলা ভাষায় কথা বলে জন্য তাদেরকে বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে পুশইন করা হচ্ছে। ভারত আন্তর্জাতিক আইন ও নিয়মকানুনের কোন তোয়াক্কাই করছে না। সরকারের উচিত সেটা পুশব্যাক করা।’ সূত্রঃ যুগান্তর।
জুলাই সনদের খসড়া বিতরণ
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া প্রকাশ করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। খসড়া সনদ ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে।বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত সফল ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পুনর্গঠনের এক ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, জোট ও শক্তিসমূহের প্রতিনিধিরা অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন বিষয়ে সংস্কারের লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্যে উপনীত হয়েছি। সূত্রঃ ইত্তেফাক।
চলনবিল ও বড়াল সংস্কারে
সরকারের প্রশংসনীয় পরিকল্পনা বক্সে হবে
গত ২৮ জুলাই ২০২৫ তারিখে ঢাকায় পানিভবনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (নকশা) মহোদয়ের নেতৃত্বে হেড অফিসের অন্যান্য সিনিয়র কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজশাহী বিভাগীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী, রাজশাহী ,নাটোর ও পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলীগণ যৌথভাবে বড়াল নদী পুনরুদ্ধার বিষয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্তগুলো নিম্নরূপ:
” যেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিত্তে এখনি বাস্তবায়নযোগ্য” ঃ
১. চারঘাট এবং আটঘড়ি ¯øুইচগেট অপসারণ করে বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।
২. চারঘাট থেকে আটঘড়ি পর্যন্ত প্রয়োজন অনুযায়ী বড়াল নদী খনন করা হবে।
৩. নন্দকুজা নদী এবং বড়াল নদীর মধ্যে সংযোগ রক্ষাকরী মির্জা মাহমুদ খাল খনন করা হবে।
“দ্বিতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়নযোগ্য ”
১. আটঘড়ি থেকে বনপাড়া পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার বড়াল নদী উদ্ধার ও খনন করা হবে।
২. বড়াল নদীর সাথে বিভিন্ন বিলের সংযোগ রক্ষাকারী শতাধিক ক্যানেল উদ্ধার করা হবে।
এই উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মাননীয় পরিবেশ উপদেষ্টা মহোদয়কে স্বাগত জানাই এবং তাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। বড়াল নদী পুনরুদ্ধারে সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহের সকল কর্মকর্তাবৃন্দকেও ধন্যবাদ জানাই। এছাড়া বড়াল নদী উদ্ধারের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বড়াল রক্ষা আন্দোলনের সকল কর্মীকে এবং বড়াল পাড়ের সর্বস্তরের মানুষকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
এস. এম. মিজানুর রহমান
যুগ্ম সম্পাদক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)
ও সদস্য সচিব, বড়াল রক্ষা আন্দোলন
তাড়াশে দুর্নীতির দায়ে লাইসেন্স বাতিল
বিশেষ প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দলিল লেখক সমিতির নামে সিন্ডিকেট করে ভূমি রেজিস্ট্রেশনে মাত্রা অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ ওঠে সমিতির সভাপতি কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ভূমি ক্রেতারা স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছেও অভিযোগ করেন।
এদিকে অভিযোগের ভিত্তিতেস্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর তৎকালীন সিরাজগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার মো.জাহাঙ্গীর আলম সভাপতি কামারুজ্জামানের লাইসেন্স ব্যবহার করে দলিল লেখায় স্থগিতাদেশ দেন। বিশেষ করে এ মাসের ৩ তারিখে তাড়াশে অভিযোগকারী ভূমি ক্রেতা মো. আব্দুল করিম, মো. মুজিবুর রহমান, মো. আবু তালহা ও মোছা.রোকসানা খাতুনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন তদন্ত কমিটি। অভিযোগকারীদের লিখিত সাক্ষ্য ও অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে (২১ জুলাই) সোমবার সভাপতি কামারুজ্জামানের দলিল লেখার লাইসেন্স বাতিল করা হয়।অপরদিকে তাড়াশ দলিল লেখক সমিতির সভাপতি কামারুজ্জামানের দলিল লেখার লাইসেন্স বাতিল হওয়ায় স্বস্তিপ্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। ভুক্তভোগী ভুমি ক্রেতা ও সাধারণ লোকজন জানিয়েছেন, তাড়াশ দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি কামারুজ্জামানের লাইসেন্স বাতিলের মধ্য দিয়ে উপজেলার ভূমি ক্রেতা-বিক্রেতারা প্রায় দুই যুগের জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পেলেন। এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার শরীফ তোরাফ হোসেন বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি কামারুজ্জামানের অপরাধের শতভাগ সত্যতা পাওয়া গেছে। তার লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
নিমগাছি সমাজভিত্তিক মৎস্য প্রকল্পে ব্যাপক দুনীতি
সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ
–
বিশেষ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে “ দেশের একমাত্র সমাজভিত্তিক মৎস্যচাষ প্রকল্প ” সমাজভিত্তিক মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের সুফলভোগীদের মাছ চাষের জন্য বরাদ্দের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে নিমগাছি সমাজভিত্তিক মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক (অতি. দা.) মো. শহীদুল ইসলাম ও তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের সদ্য বদলিকৃত মৎস্য কর্মকর্তা মো. মসগুল আজাদের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে সুফলভোগীদের ৭৬ পাতা ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর রেখে সুফলভোগীদের জিম্মি করে ১ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার জলাশয় নিজেরাই সংস্কার করেন এই দুই কর্তাব্যক্তি।
এদিকে প্রকল্পের আওতায় ৫১ লাখ টাকার পোনা মাছ, খাদ্য ও উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে অতি সামান্য পরিমাণ। ৪০ লাখ টাকার মাছ প্রক্রিয়াকরণ স্টেইনলেস স্টিলের বাক্স দেওয়া হয়নি।নিমগাছি সমাজভিত্তিক মৎসসম্পদ ব্যবস্থাপনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে সমাজভিত্তিক মৎসসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় সুফলভোগীদের ১৯টি জলাশয় সংস্কারের জন্য ১ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় মৎস্য অধিদপ্তর। ৪০টি পুকুরে কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষের জন্য বরাদ্দ দেয় ৩৩ লাখ টাকা। ১২টি পুকুরে প্রদর্শনী বাবদ বরাদ্দ দেয় ১৮ লাখ টাকা। মাছ প্রক্রিয়াকরণ স্টেইনলেস স্টিলের বাক্সের জন্য বরাদ্দ দেয় ৪০ লাখ টাকা।
ভুক্তভোগী বারুহাস ইউনিয়নের কাজিপুর গ্রামের কাজিপুর উত্তর পুকুর সংস্কার কাজের সভাপতি আছমত আলী, দেশীগ্রাম ইউনিয়নের দেশীগ্রামের আলমাগাড়ী পুকুরের ক্যাশিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন, দেশীগ্রাম বেদের পুকুরের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, দেশীগ্রাম ভিমদেশী পুকুরের সভাপতি আমজাদ হোসেন, দেশীগ্রাম কান পুকুরের সভাপতি ইদ্রিস আলী ও সেক্রেটারি মো. নোবা বলেন: পুকুর সংস্কারের শুরুতে পুকুরের সভাপতি ও সেক্রেটারির যৌথ নামে ১৯টি পুকুরের জন্য আলাদা একাউন্ট খোলা হয় সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, তাড়াশ শাখায়। আমরা চেকের জন্য আবেদন করি। আমাদের চার পাতা করে চেক দেওয়া হয়। মৎস্য কর্মকর্তা মো. মসগুল আজাদ ১৯টি পুকুরের ১৯জন সভাপতি ও ১৯জন সেক্রেটারিকে একদিনে তার অফিসে ডেকে নেয়। পরে ১৯টি পুকুর সংস্কারের চার কিস্তির বিল উত্তোলনের জন্য মোট ৭৬ পাতা বø্যাংক চেকে স্বাক্ষর নিয়ে চেকগুলো তার কাছে রেখে দেন। আমাদের নামে একাউন্ট, টাকার ম্যাসেজ আসে আমাদের মোবাইল নাম্বারে। অথচ ১৯টি পুকুরের অনুক‚লে বরাদ্দের ১ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে। ১ম কিস্তি ও ২য় কিস্তির ৮২ লাখ ৮৮ হাজার টাকায় পুকুর সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যায়। বাকি টাকা সংশ্লিষ্টরা আত্মসাৎ করেছেন।
সুফলভোগী সদস্যরা জানিয়েছেন, কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষ ও প্রদর্শনী সুবিধা পাওয়ার কথা ৫২টি পুকুরে। অথচ মাত্র ১৫টি পুকুরে স্বল্প পরিমাণে মাছের পোনা, খাদ্য, সার ও ১টি করে তথ্য বোর্ড দেওয়া হয়েছে। মাছ প্রক্রিয়াকরণের স্টেইনলেস স্টিলের বাক্স কেউ পান নি। সুফলভোগীদের সর্বোচ্চ ১২ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। ৭৮ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা সমাজভিত্তিক মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক (অতি. দা.) মো. শহীদুল ইসলাম ও তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের সদ্য বদলিকৃত মৎস্য কর্মকর্তা মো. মসগুল আজাদ আত্মসাৎ করেছেন।বিশ^স্ত সূত্রে জানা গেছে, তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের সদ্য বদলিকৃত মৎস্য কর্মকর্তা মো. মসগুল আজাদ নিজের বদলি করিয়ে নেন নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির দায় থেকে বাঁচতে। সুফলভোগীদের তোপের মুখে রাতের মধ্যভাগে তাড়াশ ছাড়তে বাধ্য হোন তিনি।সদ্য বদলিকৃত তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মসগুল আজাদ বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। বিধি মোতাবেক মৎস্য অধিদপ্তর ঢাকা মৎস্য ভবনে বদলি হয়েছে আমার।
প্রতিবেদকের সাথে সাক্ষাতে নিমগাছি সমাজভিত্তিক মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক (অতি. দা.) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ৪০টি পুকুরে কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষের জন্য বরাদ্দের ৩৩ লাখ টাকা ও ১২টি পুকুরে প্রদর্শনী বাবদ বরাদ্দের ১৮ লাখ টাকার পোনা মাছ, খাদ্য, সার ও উপকরণ আমি বিতরণ করেছি। তার এনড্রয়েড ফোন থেকে বিতরণের একটি ছবি দেখান। তিনি স্বীকার করেন, ৪০ লাখ টাকার স্টেইনলেস স্টিলের বাক্স এখনো সুফলভোগীদের দেওয়া হয় নি। তৈরি করে অফিসে রাখা হয়েছে। বাস্তবে তার অফিসে কোনো বাক্সের দেখা মেলে নি।তিনি স্বীকার করেন, জলাশয় সংস্কার থেকে সামান্য টাকা পেয়েছেন। এসব টাকা ঊর্দ্ধতনদের দিতে হয়। বিশেষ করে সুফলভোগীদের মাঝে মাছের পোনা, খাদ্য, সার ও উপকরণ বিতরণের তালিকা দেখাতে পারেননি তিনি। তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতি. দা.) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, আগের মৎস্য কর্মকর্তার বদলির পর আমি কয়েকদিন অফিস করেছি। এসবের কিছুই জানি না। এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কার্যালয়ের জেলা মৎস্য কর্মর্কতা মো. শাহীনুর রহমান বলেন, সংবাদ প্রকাশ হলে ইমেজ নষ্ট হবে আমাদের। তিনি এ সংবাদটি প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন।
উল্লাপাড়ায় মসজিদের ৬৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ
উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ উল্লাপাড়ায় আওয়ামীলীগ নেতা কর্তৃক মসজিদ ও বিদ্যুৎ আনার নামে ৬৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগে কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে।জানা গেছে, উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের ফাজিল নগর গ্রামের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: মতিউর রহমান, আব্দুর রউফ ও আজাহারুল ইসলাম গং। আওয়ামী স্বৈরশাসকের নৈরাজ্যের ১৬ বছরে মানুষকে বিভিন্ন মামলা ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে মতিউর রহমান ফাজিল নগর উত্তর পাড়া জামে মসজিদের সভাপতি হয়।
ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মতিউর রহমান গং নৈরাজ্যের দির্ঘ ১৬ বছরে ফাজিল নগর উত্তর পাড়া জামে মসজিদের উন্নয়নের ক্যাশ ৪ টি পুকুরের আয় ও মানুষের দানকৃত অর্থ সহ ৪০ লক্ষ্য টাকা (চল্লিশ লক্ষ্য) টাকা আত্মসাৎ করেছে। শুধু তাই নয়, গ্রামে বিদ্যুৎ আনার কথা বলে ৫ শত মানুষকে ধোকা ৫ হাজার টাকা করে নিয়েছে। এই বিদ্যুৎ আনার নামেও ২৫ লক্ষে (পঁচিশ লক্ষ্য) টাকা আত্মসাৎ করেছে। সর্বমোট জামে মসজিদ ও বিদ্যুৎ আনার নামে ৬৫ লক্ষ্য (পয়ষট্টি লক্ষ্য) টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়েছে। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান সহ তার ৯ জন দোসররের বিরুদ্ধে ৬৫ লক্ষ্য(পয়ষট্টি লক্ষ্য) টাকা আত্মসাতের বিচার চেয়ে ১৪ জুলাই ২০২৫ তারিখ অত্র গ্রামের পক্ষে মো: আব্দুল মজিদ বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ কোর্টে মামলা দায়ের করেছে। এই মামলাটি বিজ্ঞ আদালত তদন্তেরর জন্য সিআইডি’তে দ্বায়িত্ব দিয়েছেন। ন্যায় বিচারের প্রত্যাশায় ফাজিল নগর গ্রামবাসী।
স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে শাহজাদপুর
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন
শাহজাদপুর প্রতিনিধিঃ স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপি দ্রæত অনুমোদনের দাবিতে ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে প্রতীকী ক্লাসে অংশ নিয়েছেন শাহজাদপুর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবন-৩-এর সামনে মহাসড়ক অবরোধ করে মহাসড়কের ওপরে এই প্রতীকী ক্লাস শুরু হয়।
এক ঘণ্টার এই কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে মহাসড়কে বসে পাঠ গ্রহণ করেন।এদিকে মহাসড়ক বন্ধ করে প্রতীকী ক্লাস কর্মসূচি পালন করায় পাবনার সঙ্গে ঢাকা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়াসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। এক ঘণ্টা পর বেলা ১১টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। আন্দোলনকারীরা বলেন, নয় বছর ধরে ভাড়া করা ভবনে নানা দুর্ভোগের মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের। সাত দফায় ডিপিপি সংশোধন করে ৯ হাজার ২৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প প্রায় ৯৩ দশমিক ৫০ শতাংশ ব্যয় কমিয়ে ৫৯৯ কোটি ৫০ লাখ টাকায় নামিয়ে আনার পরও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পটি একনেক সভার এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। বিশ্বকবির নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতি অবিচার করা হয়েছে। আমরা বারবার আন্দোলন করার পরও শুধু আশ্বস্তই করা হয়েছে। স্থায়ী ক্যাম্পাসের অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ থেকে ফিরব না।বক্তারা আরও বলেন, একনেক সভার সবাই ডিপিপি অনুমোদনে সম্মত হলেও উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেছিলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্প অঞ্চল পরিদর্শন করে তার মত জানাবেন। তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করেও গেলেন এবং প্রতিবেদনও জমা দিলেন। এরপর একাধিক একনেক সভা পেরোলেও আমাদের ডিপিপি এজেন্ডাভুক্ত হয়নি।
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকের ঐতিহাসিক স্বীকৃতি
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ সম্প্রতি ১২৪-২০২২ নং সিভিল রিভিউ পিটিশন এ সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অনুসারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বিদ্যমান ১১তম থেকে ১০ম গ্রেড বেতন স্কেলে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সরকারের এ পদক্ষেপ ঐতিহাসিক।
এর ধারাবাহিকতায় দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ যৌক্তিক বিবেচিত হওয়ায় সরকার সারাদেশে ৬৫,৫০২ (পঁয়ষট্টি হাজার পাঁচশত দুই) জন প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল বিদ্যমান ১১তম গ্রেড (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) এবং ১২তম গ্রেড (প্রশিক্ষণবিহীন) থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণে সম্মতি প্রদান করেছে।এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হলো। সরকারের এই পদক্ষেপ প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ অন্যান্য শিক্ষকমন্ডলী, অভিভাবকগণ ও সকল স্তরের অংশীজনের সহায়তায় প্রাথমিক শিক্ষার মান কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত করবেন-এটি সরকারের প্রত্যাশা।সূত্রঃ ইত্তেফাক।
চাটমোহরে ভেজালের দায়ে প্রাণের কর্মচারি আটক
জাহাঙ্গীর আলম, পাবনা প্রতিনিধি ঃ পাবনা এনএসআই এর তথ্য ও উপস্থিতিতে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক প্রাণ কোম্পানীর অবৈধ কেমিক্যাল মিশ্রিত ভেজাল দুধ উৎপাদন বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত সোমবার জেলা প্রশাসক পাবনার নির্দেশক্রমে জেলা এনএসআই পাবনার তথ্য ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে পাবনার চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুসা নাসের চৌধুরী কর্তৃক পাবনার চাটমোহর ছাইকোলা ইউনিয়নের প্রাণের ডিপোতে অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে অবৈধ কার্যক্রমের সাথে জড়িত প্রাণের ৩ জন কর্মচারীর প্রত্যেককে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারান্ড প্রদান করা হয়। এছাড়াও চাটমোহর থানার লাঙ্গলমোরা গ্রামে অভিযান চালিয়ে কেমিক্যাল মিশিয়ে দুধ উৎপাদন করার অপরাধে ৬ জনকে আটক করে চাটমোহর থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয় । দীর্ঘদিন যাবৎ প্রাণ কোম্পানি পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা ডিপোর দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩জন কর্মচারী স্থানীয় অসাধু ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজশে বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে দুধ তৈরী করে সারা বাংলাদেশে বিক্রি করে আসছে।
তাড়াশে মৎস্য কর্মকর্তার পুকুর চুরি
চলনবিল প্রতিনিধি: নিমগাছি সমাজভিত্তিক মৎস্যচাষ প্রকল্পের আওতায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর সদরের ভাদাস মহল্লায় ১৬ বিঘা আয়তনের মাইটাল দিঘী পুকুরে সুফলভোগীদের তালিকা করা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশগুল আজাদ (সদ্য বদলীকৃত) প্রকল্পের সকল নিয়মনীতি উপেক্ষা করে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে তার পছন্দের লোকজন কে সুফলভোগী সদস্য করেছেন মর্মে, দুদক সহ মৎস্য বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী মো: আব্দুর রাজ্জাক।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, সরকারের মৎস্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নিমগাছি সমাজ ভিত্তিক মৎস্য চাষ প্রকল্প পরিচালিত হয়। এ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ৭৭৯ টি সরকারি খাস পুকুর। এসব পুকুরে পাড়ে বসবাসরত দরিদ্র ভূমিহীন পরিবার কে স্বাবলম্বী করতে সরকার প্রতি সাড়ে ১৬ শতাংশে একজন করে সুফল ভোগী বাছাই করে। এসব সুফলভোগী সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও উপকরণ দিয়ে মৎস্য চাষে সহায়তা করা হয়। কিন্তু মাইটাল দীঘিপুকুরের ক্ষেত্রে সে নিয়ম মানা হয়নি।এরমধ্যে রয়েছে একই পরিবারের একাধিক সদস্য, অন্যত্র বসবাস করেন এমন ব্যক্তি, পাকাবাড়ি ও ১০ থেকে ৩০ বিঘা সম্পত্তির মালিক, প্রকল্পের নীতিমালার বাইরে অতিরিক্ত সদস্য সহ নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগ সমর্থিতএমন ব্যক্তিদেরও সদস্য করা হয়েছে। এমন কি মৃত: ব্যক্তি কেও সদস্য হিসেবে দেখানো হয়েছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক পাশকৃত সুফলভোগী তালিকায় ২৫ নং ক্রমিকের সদস্য মোছা: সেলিনা খাতুনের প্রায় ১০ বছর আগে বিয়ে হয় রাজশাহীর বাঘমারা উপজেলায়। ২৬ নং ক্রমিকের সদস্য মোছা: সাবানা খাতুনেরও আট বছর আগে বিয়ে হয়েছে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে। এ তালিকার ৩৪ নং ক্রমিকের মোছা: মাহিরণ খাতুণ কে সদস্য হিসেবে দেখানো হলেও তিনি গত পাঁচ মাস আগে মারা গেছেন।
এ ছাড়াও তালিকার এক থেকে ১০ নং সদস্যদের রয়েছে পাকাবাড়ি ও ১০ থেকে ৩০ বিঘা পর্যন্ত আবাদী জমি। তাদের অনেকের বাড়িও পুকুড় পাড়ে নয়। অপর দিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগের নয় জন কে সদস্য করা হয়েছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে।নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি বিঘা জলকরে দুজন করে সদস্য থাকার নিয়ম থাকলেও মাইটাল দীঘিপুকুরের ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। ১৬ বিঘা জলকরে ৩২ জন কে সদস্য করার কথা থাকলেও অনিয়ম করে ৫৩ জন কে সদস্য করা হয়েছে ।আর এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছেন উপজেলা মৎস্য অফিসার মশগুল আজাদ। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী উপজেলা জলমহাল কমিটি সদস্যদের তালিকা পাস করে থাকেন। এ কর্মকর্তা তার ইচ্ছেমতো পছন্দের লোকজনকে তালিকায় নাম উঠিয়েছেন, এমন অভিযোগ উপজেলার অন্যান্য পুকুরের ক্ষেত্রেও রয়েছে। সরকারিভাবে তদন্ত করলেই এ দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র উঠে আসবে।
এ প্রসঙ্গে অভিযোগকারী মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তালিকা প্রণোয়নের সময় তিনি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন, প্রকৃত সদস্যদের তালিকাভূক্ত করার জন্য। কিন্তু মৎস্য অফিসার মশগুল আজাদ তা অমান্য করে গোপনে যোগসাজসে নিয়মবহির্ভূতভাবে ডিসিআর প্রদান করেন।তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশগুল আজাদের (সদ্য বদলীকৃত) সাথে ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।নিমগাছি সমাজভিত্তিক মৎস্যচাষ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, অনিয়মের বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে আমরা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
“প্রিয় সলঙ্গার গল্প”র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
জি,এম স্বপ্না: মানবিক সংগঠন “প্রিয় সলঙ্গার গল্প”র ১১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সলঙ্গা কদমতলা মওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশ পাঠাগার হল রুমে সংগঠনের সভাপতি কে.এম আমিনুল ইসলাম হেলালের সভাপতিত্বে কোরান তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু হয়।সংগঠনের উপদেষ্টা আব্দুল মান্নানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন,”প্রিয় সলঙ্গার গল্প”র চীফ এডমিন শাহ আলম।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল আসাদ উদ্দিন,বিশিষ্ট সাংবাদিক,কবি সৈয়দ শামীম সিরাজী প্রমুখ।বক্তারা বলেন, “প্রিয় সলঙ্গার গল্প” সংগঠন মান সেবায় অনন্য ভুমিকা রেখে চলেছেন । সকলের সহযোগীতায় তারা সমাজের অসহায়,সুবিধাবঞ্চিত মানবজাতির কল্যাণের লক্ষ্যে নিরলস ভাবে প্রচেস্টা চালিয়ে যাচ্ছেন রোগীদের বিনামুল্যে রক্তদান,শীতবস্ত্র বিতরণ,ঈদ সামগ্রী বিতরণ,কন্যাদায়গ্রস্থদের আর্থিক সহযোগীতা,হুইল চেয়ার বিতরণ,টিউবওয়েলের ব্যবস্থা,পিপাসার্তদের শরবতপান,মসজিদ মাদ্রাসায় কোরান, হাদীস বিতরণ,করোনাকালীন সময়ে প্রচারণা,সাবান,হ্যান্ড ওয়াস,মাক্স বিতরণ,সুচিকিৎসায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ইত্যাদি মানব সেবার জলন্ত প্রমাণ।সংগঠনটি ইতিমধ্যেই সলঙ্গাবাসীর নিকট প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
ভাঙ্গুড়ায় গাছের চারা বিতরণ
ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি:পাবনার ভাঙ্গুড়ায় শিশু শিক্ষার্থীদের বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ করতে গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে। অগত সোমবার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “ছওয়াব” (ঝঅডঅই) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. নাজমুন নাহার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পৌরশহরের শরৎনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২০ জন মেধাবী শিশু শিক্ষার্থীর হাতে এই গাছের চারা তুলে দেন।
এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হাবিবা খন্দকার ইভা, “ছওয়াব”-এর উপজেলা এসিস্ট্যান্ট কো-অর্ডিনেটর রাকিবুল ইসলাম,স্বেচ্ছাসেবক শিমুল আহমেদ, জামিউর রহমান জ্বীম ও শারমিন খাতুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নন্দীগ্রামে জামায়াতের মতবিনিময়
নন্দীগ্রাম প্রতিনিধি: বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ড. মোস্তফা ফয়সাল পারভেজের নন্দীগ্রামের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত রবিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে নন্দীগ্রাম উপজেলা জামায়াতের নিজস্ব কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, কাহালু-নন্দীগ্রাম উপজেলাবাসীর সুখেদুঃখে পাশে থাকার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমাকে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসন থেকে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। এরপর আমি দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট চেয়ে কাহালু-নন্দীগ্রাম উপজেলায় গণসংযোগ শুরু করে দিয়েছি। সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। তাই আপনাদের মাধ্যমে এলাকার সঠিক চিত্র উঠে আসে। নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা দেশ ও জাতির কল্যাণ বয়ে আনে। আমিও দেশ ও জাতি তথা কাহালু-নন্দীগ্রাম উপজেলাবাসীর মঙ্গল কামনা করি। এজন্য সাংবাদিকসহ জনগণের আন্তরিক সহযোগীতা কামনা করছি। আল্লাহর রহমতে জনগণের ভোটে আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারলে কাহালু-নন্দীগ্রাম উপজেলাবাসীর সেবক হয়ে জনগণের সেবামূলক কাজ করতে চাই। পাশাপাশি রাস্তাঘাট, ধর্মীয়, শিক্ষা, সামাজিক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন গুরুত্ব দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এ মতবিনিময় সভা শেষে তিনি নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্নস্থানে সংযোগ করেন।
তাড়াশের এ্যাডভোকেট আফাজ উদ্দিনের ইন্তেকাল
স্টাফ রিপোর্টার ঃ তাড়াশের প্রবীণ আইনজীবি এ্যাডভোকেট আফাজ উদ্দীন গত ২৮ জুলাই ২০২৫ রাত ৯:৪০টার দিকে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি- রাজিউন)। তিনি শুধু আইনজীবিই ছিলেন না। তিনি জাতীসংঘের সাবেক স্বেচ্ছাসেবী ও বিশিষ্ট সমাজসেবী হিসেবেও অবদান রেখেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তার স্ত্রী ছাড়াও ২ ছেলে ১ মেয়ে সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
কোরআনে মানুষ বানর, শুকুর বক্স হবে
মোঃ আবু বকর সিদ্দিক মাষ্টার
মোবাইলঃ ০১৭২৩৯৮৬৮৩৯
মুক্ত আকাশ সুপ্ত বাতাস সব দানে মহিয়ান
তাঁরই রাজ্যে চলে ফিরে কি হবি তুই গরিয়ান ।
ভেবে দেখ তুই কোথায় ছিলি কোথা হবে তোর ঠাই
এই দুনিয়ায় আর কতকাল দর্প করবি তাই?
ঘুস খাস আর অন্যায় করিস ঘুড়িস দম্ভ ভরে
কুকুরের ন্যায় ঘেউ ঘেউ করিস উচ্চ কন্ঠ স্বরে ।
ওজনে কম মানুষ ঠকাস কোরআন পড়িস নাই
মিথ্যা কথা হামেশা বলিস দোজখে হবে তোর ঠাই।
বেঈমান নির্লজ্জ তুই, কুকুর রুপে তোর ভাব
সুরা বাকারায় প্রমাণ মেলে শুকুর বানরের শব (মরা) ।
ইমানহীনে আল্লাহকে ফাঁকি দিবি তুই কতকাল
ও’ মোনাফেক কোরআন পড় তুই ছেড়ে দে ভূয়া তাল।
কোরআন হাদিস জানিস কি তুই হারাম খাবি কত?
হুদ সুরাতেই হারাম কি তা জেনে নে তুই শত।
দায়ীত্ব কাজে অবহেলা তোর নামাজে দিস ফাঁকি
মিথ্যা কাজ হরহামেশায় কি রইল তোর বাঁকি?
পরের টাকায় যা করবি সবই হারাম হবে
কথা কাজে তোর মিল নাহি পাই মোনাফেক তুই তবে।
বক্তৃতা দিস সভায় জালছায় মানুষে দিস ফাঁকি
কোরআন হাদিস বিক্রি করিস মৌলবী তুই মেকী।
মসজিদ ভাঙ্গার হাদিস দিস বড় তুই মোনাফেক
তওবা সুরার একশত আট আয়াত খুজিয়া দেখ্।
হানজালার বাপ আবু আমের সেই সে বেঈমান
মক্কায় আছে বারো মোনাফেক কোরআন তার প্রমাণ।
গুরুদাসপুর সংবাদ
গুরুদাসপুরে স্মৃতিসৌধ নির্মিত হবে ছবি
গুরুদাসপুর প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুরে নির্মাণাধীন অবস্থায় পড়ে থাকা স্মৃতিসৌধটি পুনঃনির্মাণের প্রতিশ্রæতি দিলেন জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) উপজেলা পরিষদ হলরুমে দুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই প্রতিশ্রæতি দেন তিনি।
উপজেলা সদরে দীর্ঘদিন ধরে স্মৃতিসৌধ নেই। অনেক প্রতিশ্রæতি আসে কিন্তু বাস্তবায়ন হয়না। অতঃপর দুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের অনুষ্ঠানে প্রবীণ সাংবাদিক আলী আক্কাছের দাবীর প্রেক্ষিতে স্মৃতিসৌধটি দ্রæত নির্মাণের প্রতিশ্রæতি দেন জেলা প্রশাসক। জেলা পরিষদের অর্থায়নে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ ও মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা ডাকবাংলো সংস্কারের ঘোষনা দেন ডিসি আসমা শাহীন।সময় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শামীম ভুইয়া, ইউ্এনও ফাহমিদা আফরোজ সহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, গণমাধ্যম কর্মী ও উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।
গুরুদাসপুরে কেজি স্কুলের প্রতিবাদ কর্মসূচি
গুরুদাসপুর প্রতিনিধি: প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে সারাদেশের ন্যায় নাটোরের গুরুদাসপুরে মানববন্ধন কর্মসূচী ও স্মারকরিপি প্রদান করেছে কিন্ডার গার্টেনের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১১ টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ওই প্রতিবাদ কর্মসূচী পালিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেয় উপজেলার ৩১ টি কিন্ডার গার্টেন ও বে-সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অবিলম্বে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে সারাদেশের কোলমতি শিক্ষার্থীদের পুনরায় পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কিন্ডার গার্টেন সোসাইটির জেলা শাখার সভাপতি একরামুল হক, নুর একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা মওলানা জামিল হুজুর, নুরানী কিন্ডার গার্টেন পরিচাালক মাওলানা আলমগীর হোসেন, মাস্টার একাডেমির পরিচালক মাসুদ রানা প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ সম্মিলিতভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফাহমিদা আফরোজ ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জনাব আলী এর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন।
গুরুদাসপুরে মাদকস¤্রাটের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
গুরুদাসপুর প্রতিনিধি:নাটোরের গুরুদাসপুরে অস্ত্র, চাঁদাবাজি, মাদকসহ একাধিক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী পিতা ও পুত্রের অন্যায় অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে গ্রামবাসী। উপজেলার কুমারখালী চরপাড়া গ্রামের যুব সমাজ রক্ষার্থে মাদক স¤্রাট আবুল কালাম ও তার ছেলে রাকিবুল হাসান সোহাগের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। গত বুধবার সকালে উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামে ওই মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী গ্রামবাসী। এসময় নজরুল ইসলাম, আব্দুল মতিন, সাইফুল ইসলাম, রাজ্জাক, জিয়াউর রহমান, রানাসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, কালাম ও সোহাগের মাদকদ্রব্যে নষ্ট হচ্ছে কুমারখালী যুব সমাজ। অস্ত্র, মাদক, চুরি ও চাঁদাবাজির একাধিক মামলা রয়েছে তাদের নামে। তবুও এলাকায় মাদক বিক্রি, চুরি ও চাঁদাবাজি করে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা জালটাকার মামলার সঙ্গেও জড়িত। এলাকার অনেক মানুষের ভ্যান, পুকুর থেকে মটর ও ট্রান্সফর্মার চুরি করেছে। টাকার স্বার্থে যেকোনো অন্যায় কাজ করতে পারে তারা। মাদক স¤্রাট ওই পিতাপুত্রের ছোবল থেকে যুব সমাজকে রক্ষা ও তাদের বিচারের দাবিতে দ্রæত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন গ্রামবাসী।
গুরুদাসপুরে প্রতিবন্ধীদের উপকরণ বিতরণ
গুরুদাসপুর প্রতিনিধি:নাটোরের গুরুদাসপুরে দুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের মাঝে নগদ অর্থসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করেছেন নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় উপজেলা হলরুমে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা আফরোজ। সভায় প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন ছাড়াও বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শামীম ভুইয়া, সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ও চলনবিল প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আক্কাছ।
বক্তব্য শেষে প্রধান অতিথি ২৫ জন নারীকে সেলাই মেশিন, ঘর পুড়ে যাওয়া ২০ জনকে ঢেউটিন, ৭ জন প্রতিবন্ধীকে হুইল চেয়ার ও এসিসটিভ ডিভাইস বিতরণ করেন। এর আগে উপজেলা চত্বরে বাগানবাড়ি উদ্বোধন, বৃক্ষরোপন ও ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ক্লাবে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক।
মামলা করে হুমকির মুখে বাদীর পরিবার
গুরুদাসপুর প্রতিনিধি :নাটোরের গুরুদাসপুরে মুদিদোকান ভাংচুর ও লুটপাটের মামলা করায় প্রতিপক্ষের হুমকির মুখে পড়েছে রাকিবুল হাসান সোহাগ ও তার পরিবার। উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের কুমারখালী চরপাড়া গ্রামে আবুল কালাম ও তার ছেলে রাকিবুল হাসান সোহাগকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয়ায় নিরাপত্তা দাবী করেছেন তারা। এর প্রতিবাদে প্রতিবেশী ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী নজরুল ইসলাম ও তার ছেলে শিমুলের বিরুদ্ধে শুক্রবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
ওই মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিলে চাঁদা না দেয়ায় আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে নজরুল ও তার লোকজন সোহাগের দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করেন। এতে প্রায় ১১ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
।
জুলাই পুনর্জাগরণে সভা
গুরুদাসপুর প্রতিনিধি: গুরুদাসপুরে সামাজিক নিরাপত্তা, নারী ও শিশুর সুরক্ষা এবং সাম্যতার মানবিক দর্শন বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজগঠণে লাখো কন্ঠে শপথ পাঠ (ভার্চুয়াল) উপলক্ষে শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদ হলরুমে ওই সভা হয়। এতে সভাপতির বক্তব্য দেন ইউএনও ফাহমিদা আফরোজ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমাস, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম রাফিউল ইসলাম, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেখামনি পারভীন, জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম আহŸায়ক মুকিত আহমেদ প্রমুখ।বক্তারা, জুলাই পুনর্জাগরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠণের আহŸান জানান। এসময় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী, নারী ও শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিতে শপথ করেন উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। উপজেলা প্রশাসন, সমাজসেবা অধিদপ্তর ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
গুরুদাসপুরে সোনালী আঁশে কৃষকের স্বপ্ন
গুরুদাসপুর প্রতিনিধিঃ চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের গুরুদাসপুরে পাটের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। গত বছর বাম্পার ফলন হওয়ায় দামও ভালো পাওয়া গেছে। চলতি বছর ১ হাজার হেক্টর জমিতে পাটচাষ বেশি হয়েছে। শ্রমজীবী মানুষ এবং সারের চাহিদা বাড়লেও পাটচাষে আগ্রহ হারায়নি কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়- জমির পাটগাছ কাটা, পচানো, শুকানো ও পাটকাঠি সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-শ্রমিকরা। বাম্পার ফলন ও লাভবান হওয়ায় এবার সোনালী আঁশেই স্বপ্ন দেখছেন তারা। তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। বর্তমানে নতুন পাটের বাজার দর গড়ে ৩ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার ৯০০ টাকা মণ। গতবারের চেয়ে মণে বেড়েছে ১ হাজার টাকা। ফলে স্থানীয় বাজারে ইউরিয়া সারের চাহিদাও বেড়েছে।উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, গত বছর উপজেলায় ৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে দেশী ও তোষা জাতের পাট চাষ হয়। যার দাম ছিল ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা মণ। পাট কেটে আঁশ এড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। বর্তমান বাজারদর ঠিক থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন।
চলনবিল বার্তা chalonbeelbarta.com