বিশেষ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তিন-ফসলি জমিতে গণহারে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ছেন প্রান্তিক কৃষকরা। শেষমেষ ভেক্যু মেশিন পুড়িয়ে দিয়েছেন তারা। শুক্রবার রাতে তাড়াশ সদর ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠের জমিতে অবৈধ পুকুর খননের সময় তিন গ্রামের পাঁচ শতাধিক কৃষক একটি ভেক্যু মেশিন পুড়িয়ে দেন।
মাধবপুর গ্রামের কৃষক সিদ্দিকুর রহমান, জুরান আলী ও ছাবেদ আলী বলেন, যত্রতত্র অবৈধ পুকুর খনন করায় পানি নিষ্কাশনের ক্যানেলগুলো বন্ধ হয়ে জমিতে দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। বছরের পর বছর ধরে আবাদযোগ্য জমি অনাবাদি হিসেবে পড়ে থাকছে। বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষকরা আরো প্রান্তিক হয়ে পড়ছেন চাষাবাদ করতে না পেরে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন কৃষক বলেন, মাধবপুর গ্রামের আব্দুল খালেক, আব্দুল মালেক, আদিল হোসেন, মাসুদ রানা ও দক্ষিণ মথরাপুর গ্রামের খোকা, আলাল, মিলন অবৈধ পুকুরটি খননের চেষ্টা করেন। আয়তন প্রায় দেরশ বিঘা। শুক্রবার পুকুর খননের সময় রাত দেরটার দিকে মাধবপুর, চক গোপিনাথপুর ও মথুরাপুর গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষক ভেক্যু মেশিনটি ডিজেল ঢেলে পুড়িয়ে দেন। নওগাঁ ইউনিয়নের ভায়াট গ্রামের আব্দুল মতিন ভেক্যু মেশিন দিয়ে পুকুরটি কেটে দিচ্ছিলেন চুক্তি ভিত্তিক।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পুকুর বাড়ছে। কিন্তু এক দশকে কৃষি জমি কমেছে চৌদ্দ হাজার নয়শ চল্লিশ বিঘা। বিশেষ করে ধান উৎপাদন আগের তুললনায় অনেক কমে গেছে।
তাড়াশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, ভ‚মি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২৩ উপেক্ষা করে পুকুর খনন করার অপরাধে থানায় ছয়টি মামলা হয়েছে। আসামি পঁয়ত্রিশ জন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুইচিং মং মারমা দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে ভ্রাম্যমাণ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাইকিং করা হচ্ছে। অবশ্য কর্তৃপক্ষের এসব পদক্ষেপ কোনো কাজে আসছে না দেখে জনগন নিজেরাই অবশেষে মাঠে নেমেছে।
