আবুল আকালাম আজাদঃ জাতীয় সংসদ – ৬১ ,নাটোর-৪ আসন বরাবরই আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাটি হিসেবে পরিচিত। নাটোর-৪ সংসদীয় আসনটি গুরুদাসপুর এবং বড়াইগ্রাম উপজেলা নিয়ে গঠিত। নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনে প্রথম,পঞ্চম, সপ্তম, নবম দশম , একাদশ এবং আকাদশ উপ নির্বাচনে ( বিনা প্রতিদ্বদিতায় ) আওয়ামী লীগ এবং ষষ্ঠ ও অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীরা বিজয়ী হন। ১১ বার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬ বার আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হন। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে দাবী করা হয় , ১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রত্যক্ষ ভোটে আওয়ামী লীগের আব্দুল কুদ্দুস বিজয়ী হলেও জেনারেল এরশাদের সামরিক সরকার ভটের ফলাফল পালটে দিয়ে জাতীয় পার্টির আবুল কাশেম সরকারকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়। এছাড়া ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এশারত শক্ত বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় নৌকার মনোনীত প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুস পরাজিত হন।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের রফিক উদ্দিন সরকার নির্বাচিত হন।দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৯৭৯ সালে বিএনপির এড; দলঅমোহাম্মদ বিজয়ী হন। তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির আবুল কাশেম সরকার বিজয়ী হন। চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির আবুল কাশেম সরকার বিজয়ী হন।
পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বিজয়ী হন ; ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ আসনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ১০ হাজার ৪ শত ৬৯ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩ শত ৫১ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৫৪ হাজার ৮ শত ৬০ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির মোজাম্মেল হক। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৪৭ হাজার ৬ শত ৫০ ভোট।
ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন: বিএনপির অধ্যক্ষ একরামুল আলম বিজয়ী হন; ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির শাসনামলে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে বিএনপি, ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল, অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এতে বিএনপির অধ্যক্ষ একরামুল আলম বিজয়ী হন। তিনি পান ৩৯ হাজার ২ শত ৭০ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন পঞ্চম জাতীয় সংসদ বিএনপি প্রার্থী মোজাম্মেল হক। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে পান মাত্র ৫ হাজার ১ শত ৩৫ ভোট। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল এই নির্বাচন বর্জন করে। এই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
সপ্তম সংসদ নির্বাচন:আওয়ামী লীগের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বিজয়ী হন; ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ১১ হাজার ৮ শত ১৯ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ২ শত ৮৫ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৬৭ হাজার ১৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির মোজাম্মেল হক । ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৬১ হাজার ৩ শত ৭৮ ভোট।
অষ্টম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির মোজাম্মেল হক বিজয়ী হন; ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৬৮ হাজার ৪ শত ২৮ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৩২ হাজার ৪ শত ১৫ জন। নির্বাচনে বিএনপির মোজাম্মেল হক বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ১১ হাজার ৬ শত ২৬ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৭৯ হাজার ৪ শত ৫০ ভোট।
নবম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস নির্বাচিত বিজয়ী হন ; ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৫ শত ৮৬ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৮২ হাজার ২ শত ৮০ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৬০ হাজার ৫ শত ৪৯ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির মোজাম্মেল হক হক। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ১৫ হাজার ৪ শত ৯ ভোট। দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বিজয়ী হন; ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।