আসছে দুর্গাপূজা : সিরাজগঞ্জে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

Spread the love

মোঃ আনোয়ার হোসেন সাগর, চলনবিল প্রতিনিধি: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারর্দীয় দুর্গাপূজা। ঘরে ঘরে দেবীদুর্গার আগমনী বার্তা। আর কিছুদিন পর শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব দুর্গাপূজা। এজন্য মূর্তি বা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজগঞ্জের মৃৎশিল্পীরা। খড়, কাঠ, সুতা আর মাটি দিয়ে নিপুণ হাতে তৈরি করছেন প্রতিমা। পূজা যতই ঘনিয়ে আসছে, শিল্পীদের ব্যস্ততা ততটাই বাড়ছে। এরই মধ্যে অনেকেই প্রতিমা তৈরির অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। হরিপদ পাল জানান, প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম ও চাহিদা বাড়লেও বাড়েনি প্রতিমার দাম। তবে এ বছর প্রতিমার চাহিদা গত বছরের তুলনায় বেশি বলে জানা গেছে।

সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে জেলার তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, কামারখন্দ, চৌহালী, এনায়েতপুর, সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর সহ প্রায় সব মন্ডপে প্রতিমা শিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরিতে। প্রতিমা শিল্পীদের অতি ভালোবাসায় ও রং তুলির নিপুণ আঁচড়ে তৈরি হচ্ছে একেকটি প্রতিমা। ১৪ অক্টোবর মহালয়ের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে। তাই চারদিকে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা সভাপতি অশোক ব্যানার্জি জানান, আগামী ২০ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এবাবের দুর্গোৎসব। এ বছর দেবী দুর্গা আসছেন গজে (হাতি) চড়ে, যাবেন নৌকায় চড়ে। দেবীর আগমনে বিশ্ব হবে শান্তিময়, অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে উদয় হবে শুভ শক্তির এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। এরই মধ্যে কোনো কোনো এলাকায় চলছে প্রতিমাতে রং তুলির কাজ।

জেলার কামারখন্দের ভদ্রঘাট পালপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। যেন দম ফেলার সময় নেই প্রতিমা তৈরির শিল্পীদের। পুরুষদের পাশাপাশি প্রতিমা তৈরির কাজে সহায়তা করছে নারী ও শিশুরা। কেউ কেউ খড়, কাঠ, সুতা দিয়ে প্রতিমার কাঠামো তৈরি করছেন কেউবা নিপুণ হাতে ফুটিয়ে তুলছেন দুর্গা, লক্ষী, সরস্বতীর প্রতিমা। প্রতিমার কাঠামো তৈরি শেষে এখন চলছে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির মূল কাজ। এরপর প্রতিমা শুকানোর পর কেউ কেউ শুরু করেছে প্রতিমায় রঙ্গের কাজ।
ভদ্রঘাট পালপাড়ার কারিগর শ্রীকান্ত পাল জানান, আগের মতো মানুষ মাটির তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার না করায় প্রায় সারা বছরই অলস সময় কাটাতে হয়। তবে দুর্গাপূজার সময় প্রতিমা তৈরি করে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে কোনোমতে সারা বছর সংসার চালাই। আবার এ বছর প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। কিন্তু ক্রেতারা প্রতিমার দাম বাড়াচ্ছে না।
প্রতিমা কারিগররা জানান, এ বছর এখানে দুই শতাধিক প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এ প্রতিমাগুলো পাবনা, বগুড়া, নাটোর, টাঙ্গাইলসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যাবে। সঞ্জিব পাল জানান, এখানে ১২ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা মূল্যের প্রতিমা তৈরি হচ্ছে।রায়গঞ্জ প্রতিমা শিল্পী রণজিত ও রনি কুমার পাল বলেন, এ বছরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মন্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ নিয়েছি। বংশ পরম্পরায় এই কাজ করে আসছি। এ বছরে আমাদের প্রতিমা তৈরিতে বেশি পোষাবে না। কারণ প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম কারিগরের মজুরিসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। তবুও আনন্দের সঙ্গে প্রতিমা তৈরি করছি আমরা।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD