আরিফুল ইসলাম, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) :
সিরাজগঞ্জ তাড়াশের জাফর ইকবাল কারিগরি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কাগজ-কলমে শিক্ষার্থী থাকলেও কিন্তু বাস্তবে নেই। শ্রেণিকক্ষে শূন্য শিক্ষার্থী। তবুও ২২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির সবগুলো শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থী শূন্য। বেঞ্চগুলো এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। শুধু অফিস কক্ষে কয়েকজন শিক্ষককে খোসগল্পে মেতে থাকতে দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে ২০০১ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়ার পর এমপিওভুক্ত হয়। এরপর থেকে কোনো মতো শিক্ষাক্রম চলছিল। আবার বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সুপারিন্টেন্ডেন্ট আব্দুল রাজ্জাক (বিএসসি)’র বিরুদ্ধে স্কুলের কম্পিউটার অপারেটর মিজানুর রহমান নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন ম্যনেজিং কমিটির সভাপতির বরাবর।
স্কুলের কম্পিউটার অপারেটর মিজানুর রহমান জানান, স্কুলে রুটিন অনুযায়ী নিয়মিত ক্লাস তদারকি করা হয় না৷ ছাত্রী উপস্থিতি শুন্যর কোঠায়। দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত সুপারিন্টেন্ডেন্ট সময়মত স্কুলে আসে না। স্কুলে ছাত্রী উপস্থিতি আছে কিনা সেটাও খোঁজ খবর নেন না।নাম বলতে অনিচ্ছুক একজন সহকারী শিক্ষক জানান, স্কুলে মোট শিক্ষার্থী ৭২ জন। কিন্তু শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম৷ আর শিক্ষক-কর্মচারী ২২জন। তবে শিক্ষার্থীরা কি কারণে স্কুলে আসে না তা জানি না।স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছে। কাগজ-কলমে ৭২ জন শিক্ষার্থী দেখানো হলেও বাস্তবে ৭-৮ জনও পাঠগ্রহণ করে না। তবে শিক্ষার্থী হাজিরা খাতায় সন্তোষজনক উপস্থিতি দেখানো হয়। কয়েক বছর ধরে শিক্ষার্থী ছাড়াই চলছে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। এতে করে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে অভিভাবক ও স্থানীয়রা। শিক্ষার্থী শূন্য প্রতিষ্ঠানে কীভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান করা হচ্ছে সেটি বোধগম্য নয় ।এ বিষয়ে জাফর ইকবাল কারিগরি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সুপারিন্টেন্ডেন্ট আব্দুল রাজ্জাক (বিএসসি) বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, সেগুলো সত্য নয়। আর আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দিলে শিক্ষকরা দিবে৷ তখন আমি স্কুল থেকে চলে যাবো। কিন্তু ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী অভিযোগ দেওয়ার কে ?
এব্যাপারে জাফর ইকবাল কারিগরি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান জুয়েল বলেন, অভিযোগ অনলাইনের মাধ্যমে পেয়েছি। সামনের মিটিংয়ে এবিষয়ে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তাড়াশ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল সালাম বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। ‘ওই প্রতিষ্ঠানের এমন অবস্থা সেটি আমি জানি না। তবে অভিযোগ পেলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।