তাড়াশের সেই আ’লীগ সদস্য জেমসের বিরুদ্ধে এবার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

Spread the love

তাড়াশ প্রতিনিধিঃ তাড়াশ উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও ঢাকা ইডেন কলেজ ছাত্রী ধর্ষন মামলার আসামী মনোয়ার হোসেন জেমসের বিরুদ্ধে এবার অর্থ আত্মসাথের অভিযোগ উঠেছে। আর এর প্রতিকার চেয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ বরাবর ৮০ লক্ষ টাকা অর্থসাথের লিখিত অভিযোগ করেছেন নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার গোলাম রব্বানী।
এ দিকে অভিযোগ পাওয়ার পর সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ অভিযোগটি তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন, সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মন্ডল। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলামের বড় ছেলে যুক্তরাষ্ট প্রবাসী রাসেল হোসেনের সাথে সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার আওয়ামীগের সদস্য মনোয়ার হোসেন জেমসের সাথে কলেজে পড়াকালীন সম্পর্ক গড়ে উঠে। রাসেল দেশের বাইরে থাকাকালীন সময়ে তাদের মধ্যে যোগাযোগ বিদ্যমান থাকে ও পারিবারিকভাবে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। এরই এক পর্যায়ে জেমস ২০২২ সালে রাসেলকে ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনে দেবার আশ্বাস দিয়ে জেমসের নিজের একাউন্টে বিভিন্ন দফায় মোট ৮০ লক্ষ টাকা নেন। এরপর সময় অনেক পার হলেও জেমস ফ্ল্যাটের বিষয়ে আর কোন কথা বলে না। একপর্যায়ে রাসেল ও তার ছোট ভাই গোলাম রব্বানীর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পরে গোলাম রব্বানী ফ্ল্যাট ও টাকার বিষয়ে জেমসের সাথে কথা বললে জেমস টাকার কথা অস্বীকার করে। এরপর ওই টাকা তোলার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করলেও জেমস আওয়ামীলীগের সদস্য হওয়ায় দলীয় শক্তি ব্যবহার করে টাকা দিতে অস্বীকার করে। বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগী গোলাম রব্বানী গত ২০ মার্চ সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বরাবর টাকা লেনদেনের সকল কাগজপত্র সহ অভিযোগ দায়ের করেন। অপরদিকে সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবী করেছেন তাড়াশ উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মনোয়ার হোসেন জেমস। তিনি বলেন, আমাকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার জন্য এসব পাঁয়তারা চলছে। কোন প্রকার অর্থনৈতিক লেনদেন তো প্রশ্নই উঠে না। একটি স্কিন সর্ট দেখিয়ে অভিযোগকারী আমার নিকট টাকা দাবী করেছেন।
এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রওশন আলী জানান, জেমসের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পুলিশ সুপার বরাবর এসেছে। বিষয়টির প্রেক্ষিতে আমাদের উপর সুষ্ঠ তদন্তে দায়িত্বভার দেয়া হয়েছে। দ্রæত এ বিষয়ে তদন্ত করে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বিস্তারিত জানাতে পারবো। উল্লেখ্য, গত ৫ই ফেব্রæয়ারি ঢাকার লালবাগ থানায় জেমসসহ ৩ জনকে আসামি করে শিশু ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেন ইডেন কলেজের এক ছাত্রী। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকার ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে জেমসের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে । বর্তমানে ওই কলেজ ছাত্রী অন্তসত্বা রয়েছে এবং মামলাটি চলমান রয়েছে। এছাড়াও জেমসের বিরুদ্ধে তার নিজ এলাকায় উপজেলার সগুনা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মারধর ও জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে।

তাড়াশে তরমুজের বাজারও গরম ছবি

মোঃ মুন্না হুসাইন , ভ্রাম্যমান প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে প্রচন্ড গরম ও দাবদাহের কারণে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে তরমুজের চাহিদা। যে কারণে দামও বেড়ে গেছে গ্রীষ্মকালীন এ ফলটির। বর্তমানে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা দাম বেড়ে ফলটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, কোথাও বা তারও অধিক। এর আগে কেজিপ্রতি ফলটি বিক্রি হচ্ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে।
এদিকে, রমজানের শেষ সময়ে তরমুজ বিক্রি করে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশের কৃষকরা। তবে ৪ মাস রোদে পুড়ে হাড় ভাঙা খাটুনি করে কৃষক যে মুনাফা করছেন, তার থেকে তিনগুণ মুনাফা করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।তাড়াশের পাইকারি মোকাম নাটরে গতকাল সোমবার মাঝারি সাইজের তরমুজ গড়ে বিক্রি হয়েছে (১০০ পিস) ৬ হাজার টাকায়। অর্থ্যাৎ ছোট-বড় সব তরমুজের গড় মূল্য প্রতি পিস ৬০ টাকা। মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে নগরীর বনপাড়া মোড়ে ভ্যান ও ফলের দোকানে সেই তরমুজ বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।তাড়াশের বাজারে অন্য জেলার তরমুজ নেই। গরমে চাহিদা বাড়ায় সবাই তাকিয়ে আছেন দাকোপে চাষ হওয়া তরমুজের দিকে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা অনেকে দাকোপে গিয়ে তরমুজ কিনে নিয়ে আসছেন। দাকোপের তরমুজ আকারে ছোট।কৃষকরা জানান, দুইভাবে তরমুজ বিক্রি হয়। ঢাকা থেকে ব্যবসায়ীরা দাকোপে এসে মাঠ থেকে সরাসরি তরমুজ কেনেন। তারাই ট্রাকে করে তরমুজ নিয়ে যান। চলতি সপ্তাহে ছোট আকারের তরমুজ (৩-৫ কেজি) প্রতি বিঘা বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। একই তরমুজ গত বছর বিক্রি হয়েছে ৩০/৩৫ হাজার টাকা। এছাড়া বড় আকারের (৮ কেজির ওপরে) তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ টাকায়।এছাড়া কিছু কৃষক নিজেই তরমুজ নিয়ে সিরাজগঞ্জ পাইকারি আরতে বিক্রি করেন। পাইকারি তরমুজ বিক্রি হয় পিস হিসেবে। ছোট আকারের প্রতিপিস তরমুজ (৩-৫ কেজি) গতকাল বিক্রি হয়েছে ৫০/৬০ টাকা। বড় তরমুজ বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা পিস।
তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের কৃষক পানা হোসেন জানান, শুরুতে প্রতি বিঘা ৪০-৪৫ হাজার টাকায় তরমুজ বিক্রি হবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু এখন দাম ৭০ হাজারের বেশি।এদিকে কৃষকরা অভিযোগ করেন, তরমুজ বিক্রিতে বড় বাঁধা হয়ে দেখা দিয়েছে পরিবহনে চাঁদাবাজি। প্রতিদিন অসংখ্য ট্রাক তরমুজ পরিবহনের জন্য দাকোপ থেকে বিভিন্ন রুটে যাচ্ছে। মোড়ে মোড়ে তারা চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছেন। এ থেকে পরিত্রাণের দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।কৃষি বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, এ বছর নাটরে ১২ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বনপাড়া উপজেলাতেই চাষ হয়েছে ৬ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে। অন্যান্য জেলার তরমুজ আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। এখন নাটরে উপজেলার তরমুজই ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this:

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD