প্রাণিসম্পদ দপ্তর চিকিৎসক শূন্য, পিয়ন দিচ্ছেন চিকিৎসা ,ভেঙে পড়েছে ভেটেরিনারি চিকিৎসা ব্যবস্থা
– ডাক্তার শুন্য এক ৩১ দিন
– গবাদি পশু বিনাচিকিৎসায় মারা যাচ্ছে
– ১১ জনের মধ্যে ৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারির পদ শূন্য রয়ে গেছে এ দপ্তরে
গোলম মোস্তফা, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) :
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে চিকিৎসক নেই আজ ৩১ দিন। বাধ্য হয়ে জরুরি চিকিৎসাসেবা চালু রেখেছেন এ দপ্তরের পিয়ন। এদিকে চিকিৎসক না থাকায় ভেটেরিনারি চিকিৎসা ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী খামারি ও গেরস্ত লোকজন।
প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত মার্চ মাসের ৮ তারিখ থেকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শফিউল আলম উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ময়মনসিংহে রয়েছেন। পরে রায়গঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. অলিউল ইসলামকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয় তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের কর্মকর্তা হিসেবে। কিন্তু তিনি এক দিনও অফিস করেননি। এছাড়া ভেটেরিনারি সার্জন, ইউএলএ, ভিএফএ, এফ.এ.(এ.আই), কম্পাউন্ডার, অফিস সহকারী, ড্রেসার ও অফিস সহায়কের পদের আরও ৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারির পদ শূন্য রয়ে গেছে এ দপ্তরে।
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পিয়ন ফিরোজ হোসেন বলেন, তার একার পক্ষে জরুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে এক দিন চিকিৎসা দেওয়া বন্ধ করেছিলেন। পরে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গৌরাংগ কুমার তালুকদারের নির্দেশে চালু রেখেছেন।
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কৃত্তিম প্রজননের দায়িত্বে থাকা (এফএআই) ওরাফেল আহাম্মেদ বলেন, হাসপাতালে প্রায় ১ বছর ধরে সিমেন নাই। ফলে তিনিও হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন।
ভুক্তভোগী খামারি বারুহাস ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের মোহসিন আলী বলেন, আমার খামারের একটি গরু রাত থেকে অসুস্থ। হাসপাতালে এনে দেখি ডাক্তার নাই। পরে পিয়ন প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন। তাড়াশ পৌর এলাকার কহিত গ্রামের আছিয়া খাতুন বলেন, আমার ছাগলের মরা বাচ্চা হওয়ার পর গর্ভফুল আটকে যায়। হাসপাতালের আনার পর পিয়ন বের করে দিয়েছেন।
(৮ এপ্রিল) শনিবার সকাল ১১ টার দিকে দেখা যায়, বেশ কয়েক জন খামারি ও গেরস্ত লোকজন গরু, ছাগলের চিকিৎসা নিতে প্রাণিসম্পদ দপ্তরে এসেছেন। পিয়ন ফিরোজ হোসেন চিকিৎসা করছেন।
অপর দিকে বারুহাস ইউনিয়নের কাজীপুর গ্রামের সোহেল রানা নামের এক জন খামারির প্রায় দুই লাখ টাকা দামের একটি গর্ভবতী গরু বাদলা রোগে আক্রান্ত হয়ে বিনাচিকিৎসায় মারা গেছে। ঘরগ্রাম, দোবিলা, মাঝদক্ষিনাসহ আরও বেশ কিছু গ্রামে এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. অলিউল ইসলাম বলেন, অভ্যন্তরীণ সমস্যা থাকায় তাড়াশে অফিস করছেননা।
এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গৌরাংগ কুমার তালুকদার দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, এক দিন আমি তাড়াশে গিয়ে বাদলা রোগে আক্রান্ত গরুগুলোর ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। মূলত কর্মকর্তা দেওয়া-না দেওয়া মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তবে আশা করা যাচ্ছে দ্রæতই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।