সিংড়া প্রতিনিধি : পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া অদম্য মেধাবী মহসিন আলী। নাটোরের সিংড়া উপজেলার মহিষমারী গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর সোহরাব হোসেনের ছেলে।
এত ভাল ফলাফল করেও কি কলেজে ভর্তি হতে পারবে মহসিন ? এমন প্রশ্ন তার পরিবারের। এমতাবস্থায় মহসিনের দিন কাটছে চরম হতাশায়। বাবার সামান্য আয় ছাড়া আর কিছুই নেই তাদের। বাড়ি ভিটার আড়াই শতাংশ জায়গা ছাড়া আর কোন জমিও নেই। অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় সকল দারিদ্র্য ও প্রতিকূলতাকে জয় করে সকল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায়। তার স্বপ্ন বিসিএস ক্যাডার হওয়া। সেই আলোকে প্রচন্ড সাহস ও অদম্য ধৈর্য্য নিয়ে পড়াশোনা করে দিনে গড়ে ১২/১৩ ঘন্টা।
মহসিনের পিতা সোহরাব হোসেন পেশায় দিনমজুর। দিনমজুরির কাজ করে সামান্য মজুরী পান। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৮ জন। স্ত্রী, ৪ মেয়ে ও ২ ছেলে নিয়ে সোহরাব হোসেনের সংসার। ৩ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে ১ মেয়ে ও ২ ছেলের পড়াশোনা ও সংসারের ভরণপোষণ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। প্রতি মাসে ধার করে সংসার চালাতে হয়। মহসিনের অন্য দুই ভাই-বোনও পড়াশোনা করছে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। দরিদ্রতা, শিক্ষা উপকরণের অভাব, এমনকি খাবারের অভাব তাদেরকে কোনভাবেই দমাতে পারেনি। তাদের মা মর্জিনা বেগম তাদের অভাব-অভিযোগগুলো শুনে তাদেরকে ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দেন সবসময়।
মহসিন নিজ গ্রামে অবস্থিত মহিষমারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পর শিক্ষকদের সহযোগিতায় ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পায় এবং কলেজে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখে মহসিন। ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি দেখে নাটোর কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট স্যাপার কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ফরম তুলে সে। কারণ অন্য কোথাও ফরম তোলার সামর্থ ছিল না তার। ফলাফলে কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট স্যাপার কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির সুযোগ পায়। এরপর থেকেই মহসিনের পরিবার তার ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে। মহসিন জানায়, আবাসিক ফি, ভর্তি ফি এবং অন্যান্য যে সকল খরচাদি আছে তা কিভাবে বহন করবে তা সে ভেবে পাচ্ছে না। তার বাবার সামান্য আয় দিয়ে তার সংসার চলবে নাকি তার পড়াশোনা হবে। লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস ক্যাডার হতে চায় সে।