গুরুদাসপুর প্রতিনিধি: একযুগ ধরে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিনটি বিকল হয়ে আছে। উচ্চতর জরুরী চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত অনুপযোগী এ্যাম্বুলেন্সটিও স্থানীয় এবং বহিরাগত রোগীদের স্বাস্থ্য সেবায় কোনরকম কাজে আসছে না।
মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাঝ কক্ষে মানধাতা আমলের অচল একটি এক্স-রে মেশিন ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। যার কোন কার্যকারিতা নেই। এক্স-রে কাজে নিয়োজিত টেকনিশিয়ানকে বাধ্য হয়ে নাটোর সদর আধুনিক হাসপাতালে ডেপুটেশনে রাখা হয়েছে। এতে করে দীর্ঘদিন যাবৎ মুমূর্ষ রোগীদের এক্স-রে সেবা বন্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মুমূর্ষ রোগী বহনকারী এ্যাম্বুলেন্সটি মাঝেমধ্যেই রাস্তায় বন্ধ হয়ে যায়। এতে রোগীদের ভোগান্তি বাড়িয়ে তোলে। সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই রোগী চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু পথযাত্রী হয়ে পড়ে।
এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, এ্যাম্বুলেন্সের অচল অবস্থা বারবার জানানো সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না। ফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থানরত ভাড়াটে এ্যাম্বুলেন্স অতিরিক্ত ব্যয়ে ভাড়া করে নিতে বাধ্য হচ্ছে রোগীর অভিভাবকরা। এছাড়াও প্রায় ৬ মাস যাবৎ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ড্রাইভার হিসেবে সোহেল নামের একজনকে নিয়োগ দেয়া হলেও এ পর্যন্ত গাড়ির কোন খোঁজখবর নেই। বাধ্য হয়ে সোহেল নামের ওই ড্রাইভার স্বাস্থ্য কর্মকর্তার এমএলএসএস’র কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা স¦াস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. মুজাহিদুল ইসলাম জানান, তার ব্যবহারের জন্য অবিলম্বে গাড়ি না দেয়ায় প্রশাসনিক কর্মকান্ড ব্যহত হচ্ছে।
অপরদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন এ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ না থাকায় রোগীদের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে এবং নির্দিষ্ট আল্ট্রাসনোগ্রাম বিশেষজ্ঞ না থাকায় কমপ্লেক্সে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রবিউল করিম শান্ত নিজেই মুমুর্ষ রোগীদের আল্ট্রাসনোগ্রাম করে থাকেন। এক কথায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকলেও চিকিৎসা সেবা বন্ধ নেই। তবে নানা কারণে ওই সরকারি হাসপাতালের বেহাল অবস্থা রোগীদের জীবন প্রবাহকে দূর্বিসহ করে তুলেছে।
উপজেলা স¦াস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মো. মুজাহিদুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দৈন্যদূর্দশা নিয়ে বারবার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দিয়েও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছেনা।