গোলাম মোস্তফা: চলনবিলের তাড়াশ উপজেলায় অদ্যাবদি ফলাফলের শীর্ষে তাড়াশের খরখড়িয়া বিনোদপুর কুসুম্বী দাখিল মাদ্রাসা। ২০১৩ সালে গোটা বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকারের গৌরব অর্জন করে। ছাত্রছাত্রী সংখ্যাও উপজেলার অন্যান্য মাদ্রাসার তুলনায় অনেক বেশি। অথচ মাদ্রাসাটির শ্রেণিকক্ষসহ নানামূখী সংকটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ৩৯৫ জন শিক্ষার্থীকে।
শিক্ষার্থী ফারজানা খাতুন, রুবী আকতার, জান্নাতী খাতুন, রুপালী আকতার, আব্দুস সবুরসহ অনেকে জানায়, কখনো রোদে পুড়ে আবার কখনো বৃষ্টিতে ভিজে দীর্ঘ সময় পাঠদান হয়। বৃষ্টি নামলে ফুটো টিন দিয়ে পানি পড়ে বইখাতা আর পড়নের পোশাক ভিজে যায়। ভাঙা বেড়া ও দরজা-জানালা দিয়ে পানির সাটা এসে বর্ষা মৌসুমে শ্রেণিকক্ষ সবসময় স্যাতস্যাতে হয়ে থাকে। ঝরের দিনে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় শুরু হয় ছুটোছুটি। শ্রেণিকক্ষে জায়গা সংকটে এক ব্রেঞ্চে ৫-৬ জন বসতে হয়। এরপরও দাঁড়িয়ে ক্লাস করতে হয়। গাদাগাদি বসে প্রচন্ড গড়মে ঘেমে ঠান্ডা-কাশিতে মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। এভাবে তাদের পড়ালেখায় চরম বিঘœ ঘটে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, চারপাশে সুরক্ষা প্রাচীর না থাকায় মাদ্রাসা আঙিনার ভেতরে গরু, ছাগল, কুকুর, বিড়াল ঢুকে পড়ে। অনেক সময় ভাঙা কমন রুমে কুকুর-বিড়াল ঢুকে তাদের টিফিনের খাবার খেয়ে নেয়। মাদ্রাসাটিতে কম্পিউটার ব্যবহারিক কক্ষ নাই। নামাজ ঘরও নাই। সুপারিনটেনডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ জানান, ১৯৯৪ সালে মাদ্রাসা স্থাপনের পর আজ পর্যন্ত সরকারি বেসরকারি পর্যায়ের কেউ খরখড়িয়া বিনোদপুর কুসুম্বী দাখিল মাদ্রাসার ভবন নির্মানে সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি। মাদ্রাসাটিতে প্রতি বছরই বাড়ছে শিক্ষার্থী। বাড়ছে শিক্ষার মান। ফলাফলও ভালো হচ্ছে। শিক্ষার্থী অনুপাতে শ্রেণিকক্ষ কম হওয়ায় ভাঙা ঘরে পাঠদান করতে হয়। এতে শিক্ষর্থীদের পড়ালেখায় মনোযোগে চরম বিঘœ ঘটে চলেছে। ভাঙা টিনের ঘরগুলোর স্থানে ভবন নির্মান জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি আরও জানান, ছোট্র একটি কক্ষে লাইব্রেরি ও অফিস করা হয়েছে। সেখানে একসঙ্গে ১৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী বসতে পারে না। কয়েকজন অফিস কক্ষে থাকেন। নিরুপায় হয়ে অন্যরা মাদ্রাসার অফিস কক্ষের সামনে পাইকর গাছের নিচে বসে থাকেন।
এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দৈনিক কলম সৈনিককে বলেন, খরখড়িয়া বিনোদপুর কুসুম্বী দাখিল মাদ্রাসার শ্রেণিকক্ষসহ অন্যান্য সংকট নিরসনে সরকারিভাবে ভবন নির্মান করা অতিব জরুরি।