কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ইটামুগুর

Spread the love

ফারুক আহমেদ : এক সময়ের জনপ্রিয় গ্রামবাংলার কৃষকের ইটামুগুর কালের আবর্তে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আজ থেকে তিন-চার দশক আগেও আবহমান বাংলার গ্রামগঞ্জের কৃষকদের কাছে ইটামুগুর ছিল খুব জনপ্রিয়। যা দ্বারা কৃষকেরা আউশ ধানের বিজ বোনার সময়, গমের বিজ বোনার সময়, বিভিন্ন কালাইয়ের বিজ বোনার সময় ও শীতকালীন সবজি বিজ বোনার সময় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহি ইটামুগুর এর ব্যবহার প্রচলন ছিল। গ্রামের কৃষকেরা পাড়ার সবাই মিলে গরুর লাঙ্গল দিয়ে গাঁথি করে পালাক্রমে হাল- চাষ করার সময় পালা গান, সারিগান, জারিগান, পল্লিগিতি, ভাওইয়াসহ বিভিন্ন গান গেয়ে মাঠ কাপিঁয়ে আকাশ বাতাস মুখরিত করে তুলত। মাঠ তৈরি করার আগে মাঠে বড় বড় ঢিল ভাঙতে ইটামুুগুরের বাড়িতে গুডুম গুডুম শব্দ হতো। বতর্মান সময়ে আধুনিক প্রযুক্তি, টিলার, পাওয়ার টিলারসহ বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তি দিয়ে হাল চাষ করার কারণে কৃষি মাঠে ইটা, ঢিল পাওয়া যায় না। আগে গরুর হালে চাষের ফলে মাঠে ইটা বা ঢিল হতো। তাতে ইটা বা মাটির বড় বড় ঢিলার নিচে অনেক সময় অতিথি ইটালি পাখি পাওয়া যেত। আধনিক প্রযুক্তি দিয়ে জমিতে হাল চাষ করার কারণে এখন তা আর পাওয়া সম্ভব নয়। এতে করে বাংলাদেশের মানুষেরা পাখি ও এধরনের প্রাণীকুল হ্রাস পাওয়ায় পরিবেশ বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছেন।।
আধনিক প্রযুক্তি আসার কারণে সেই চিরাচরিত ইটামুগুড়ের বাড়ি ঢেলের দাপুর দুপুর সোপ সোপ শব্দের দৃশ্য-দ্যোতনা শোনা যায় না। কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে সেই ঐতিহ্যের অনেকটাই। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই গরুর হালতো বোয়া দূরের কথা চোখেই দেখেননি গরুর হাল। সলঙ্গা থানার ধুবিল ইউপি’র আমশড়া গ্রামের ছুরমান আলী( ৮৫) বলেন, আমরা সব সময় তাবলিগ জামাতের আমির মরহুম মোবারক হোসের বাড়িতে কাজ করতাম। সেখানে আমরা নতুন ও পুরাতুন দুই বাড়ি মিলে ১৫- ২০ টি গরুর হাল দিয়ে মাঠে হাল-চাষ করতাম। আর সেখানে খোরাকি ভাও সহ বেতুনভুক্ত ছিলাম ৬-৮ জন কর্মচারী । তাতে তখন মানুষের মনে আনন্দ ছিল। ছিল তাতে মনে প্রশান্তি। কৃষকদের গোয়াল ভরা গরু ছিল, বিল ভরা মাছ ছিল। ছিল না তাতে কোন হিংসা হিংসি। কিন্তু সেদিন আর নাই।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD