গভীর রাতে বার্থ ডে পার্টির হইহল্লা, অভব্যতা থামাতে গিয়ে হামলার মুখে পড়ল পুলিশ। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে প্রধাননগর থানার গুরুঙ্গবস্তি এলাকায়।
বৃহস্পতিবার দিনভর অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন দার্জিলিং জেলা পুলিশের এক গাড়ি চালকের ছেলে। ধৃতরা সবাই একটি মিউজিক্যাল ব্যান্ডের এক সদস্যের বাড়িতে পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। আজ, শুক্রবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সুনীলকুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘পার্টিতে চিৎকার চেঁচামেচি হচ্ছিল বলে খবর পেয়ে পুলিশ যায়। সেখানে থাকা সবার পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হয়। তা নিয়ে বচসা, ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। ধাক্কা লেগে গাড়ির কাঁচ ভেঙেছে। তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, গুরুঙ্গবস্তি থেকে প্রধাননগরের নিবেদিতা রোডের দিকে যাওয়ার রাস্তায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন কয়েকজন যুবক। তাঁরা সিটি সেন্টারের এক পানশালায় গানবাজনা করেন। এমনই একজনের ঘরে রাতে বার্থডে পার্টির আসর বসেছিল। সব মিলিয়ে ১০ জন ছেলেমেয়ে ছিলেন। কাজ শেষের পর এসে তাঁরা পার্টি শুরু করেন। তাদের কয়েকজন জোরে গান বাজানো ছাড়াও মদ্যপ অবস্থায় চিৎকার চেঁচামেচি করছিল বলে অভিযোগ ওঠে। থানার খবর দেন বাসিন্দারা।
সেই সময় প্রধাননগর, গুরুঙ্গবস্তির দিকে একটি ভ্যানে ছিলেন সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরা। সেটিকে ঘটনাস্থলে যেতে বলা হয়। সাদা পোশাকের ওই পুলিশ কর্মীরা গিয়ে পার্টি বন্ধ করতে বলেন। সাদা পোশাকে থাকায় অভিযুক্তরা তাদের পুলিশ মনে করেননি। এরপরেই ধাক্কাধাক্কি শুরু হয় বলে অভিযোগ। ভ্যানটিতে এক অফিসার-সহ ৫ জন পুলিশকর্মী ছিলেন। অফিসাররা শুধুমাত্র ধাক্কাধাক্কি হয়েছে বলে জানালেও পুলিশের উপর হামলা হয় বলে থানার কয়েকজন কর্মী জানিয়েছেন। লাঠি ও ঢিল দিয়ে গাড়ির কাঁচ ভাঙা হয়। ততক্ষণে থানায় খবর যাওয়ায় আরও কয়েকটি পুলিশ ভ্যান আসে। অভিযুক্তরা পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
কমিশনারেট সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর তিনজনকে ধরা হয়। সকলের বয়স ২৫/৩০ বছর। প্রত্যেকেই পাহাড়ের বাসিন্দা। বাকিদের মধ্যে সিকিম, ডুয়ার্সের বাসিন্দাও আছেন। রাতে তাঁরা সঠিক পরিচপত্র দেখাতে পারেননি বলে অভিযোগ। সেখান থেকেই গোলমাল শুরু। ধৃতদের মধ্যে একজন পুলিশের গাড়ি চালকের ছেলে হওয়ায় বিভিন্ন মহল থেকে কমিশনারেট কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ওই যুবকেরা দুঃখপ্রকাশ করে জানায় সাদা পোশাকে থাকায় পুলিশ কর্মী বলে বুঝতে পারেননি। মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগও ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন। অভিযুক্তদের এক বন্ধু গগন আচার্য বলেন, ‘‘ভুল বোঝাবুঝি থেকে সমস্যা হয়েছে। কেউ পুলিশকে মারেনি।’’