মোঃ মোবারক বিশ্বাস :
পাবনায় স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহত স্বপনের স্ত্রী মায়া খাতুন ও তার পরিবার। গতকাল বুধবার বিকেলে প্রেসক্লাব পাবনা মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে নিহত স্বপনের স্ত্রী মায়া খাতুন বলেন, ৩ সন্তানের জনক আমার স্বামী স্বপন প্রাং এর সাথে সাঁথিয়া ক্ষেতুপাড়ার সামান্য পাড়ার প্রবাসী মোঃ আরিফের স্ত্রী রতœা খাতুনের সাথে গত ৩-৪ বছর পুর্বে পরকীয়া প্রেমের সর্ম্পক্য গড়ে ওঠে। নিহত স্বপন প্রাং মাঝে মধ্যেই রতœা খাতুনের বাড়িতে যাওয়া আসা করতো। রতœা খাতুনের চাহিদা পুরন করতে গিয়ে আমার সংসারের সকল দামি জিনিসপত্র বিক্রি করে পরকিয়া প্রেমিকা রতœাকে দিয়ে আসতো। রতœার দাবি পুরন করতে গিয়ে আমার সংসার ধ্বংস করে ফেলেছে আমার স্বামী । আমি আমার স্বামীকে তার ৩ সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে অনেক বুঝিয়েছি। এক পর্যায়ে গত ২/৩ মাস আমার স্বামী স্বপন প্রাং,রতœা খাতুনের বাড়িতে যাওয়া-আসা বাদ দিয়েছিল। এ কারনে রতœা আমাকে হুমকি দিয়েছিল তোর সংসার ও স্বামীকে কিভাবে ধ্বংস করতে হয় সে কৌশল আমার জানা আছে। এরপর গত শনিবার সকালে আমার স্বামী নিহত স্বপন প্রাং কাজের উদ্দ্যেশে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। ২দিন খোঁজ না পাওয়ায় গত সোমবার বিকালে পরকিয়া প্রেমিকা রতœা খাতুন আমাকে ফোন করে বলে, স্বপন অসুস্থ্য আপনি দ্রæত আমাদের বাড়িতে চলে আসেন। এরপর পথিমধ্যে জানতে পারি আমার স্বামীর লাশ সাঁথিয়া থানায় রয়েছে। আমি ও আমার পরিবারের লোকজন সাঁথিয়া থানায় গিয়ে আমার স্বামীর মৃতদেহ সনাক্ত করি। আমার স্বামী স্বপনের হাতের রগ কাটা ছিল। তার দেহে অনেক যায়গায় ফোলা জখম ছিল। লাশের গোসল করানোর সময় দেখতে পাই আমার স্বামীর ঘাড় মটকানো ছিল। মৃত মানুষের ঘাড় যেখানে শক্ত থাকে, সেখানে আমার স্বামীর ঘাড় এদিকে-সেদিক ঘোড়ানো যাচ্ছিল। তাতে আমার সন্দেহ হচ্ছে, আমার স্বামী স্বপনকে শরীরে স্পর্শ কাতর যায়গায় আঘাত করার পর হাতের রগ কেটে ও ঘাড় মটকিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে সাঁথিয়া থানা পুলিশের ভুমিকা রহস্যজনক। আমি মামলা করতে চাইলে তারা একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে আমাকে বিদায় করে দেয়। আমি যখন মামলা করার কথা বলি তখন থানা পুলিশ আমাকে জানায়, অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। পোষ্ট মোর্টেম রির্পোট আসার পর পরবর্তি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। যেখানে একজন মানুষকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে, পুলিশ সেখানে হত্যা মামলা না নিয়ে, অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে। এতে আমি নিশ্চিত পুলিশ আসামীদেরকে রক্ষা করতে কৌশল অবলম্বন করছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে আমার স্বামী হত্যার বিচারের জন্য প্রশাসনের কাছে জোরদাবি করছি। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। সেই সাথে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা গ্রহন ও তাদের গ্রেফতার করেআমার স্বামী হত্যার বিচার দাবি করছি।আরো একটি তথ্য দিয়ে রাখি, লাশবহনকারী ভ্যান চালক আমাদেরকে জানিয়েছে, আমার স্বামীর লাশ রতœা খাতুনের শয়ন কক্ষের খাটের নিচে ছিল। তারা আমার স্বামীর লাশ গুম করতে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য ভ্যানে তোলার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে লাশ গুম করতে না পেরে, রতœা খাতুনের ঘরের পিছনে আমার স্বামীর লাশ ফেলে রাখে। পুলিশ রতœা খাতুনের ঘরের পিছন থেকে আমার স্বামী স্বপনের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
উল্লেখ্য গত শনিবার প্রেমিক স্বপনকে ডেকে নিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রেমিকা রতœা খাতুনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার বিকালে পাবনা সাঁথিয়া উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের সামান্য পাড়া গ্রামে। নিহত স্বপন প্রাং (৪২) পাবনা সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের খয়েরসুতি গ্রামের মোঃ ইমান আলী প্রাং এর ছেলে। তিনি পেশায় একজন কাঠ মিস্ত্রি।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নিহত স্বপনের বড় মেয়ে স্বপ্নাখাতুন, ছোট মেয়ে শ্রাবন্তী ও একমাত্র ছেলে আশিক প্রাং ও নিহত স্বপনের ভাই টিপু প্রাং।