বর্ষ-০৯ সংখ্যা ০৮ বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২, ৮ রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিঃ
চলনবিলের ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ – একাল ও সেকাল
এম.আতিকুল ইসলাম বুলবুল
চলনবিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীগুলোর মধ্যে অন্যতম, গুমানি, আত্রাই, বড়াল, ফুলজোর, চিকনাই,স্বরসতী, গুড়সহ প্রায় ২৯টি। আরো আছে কাটেঙ্গার জলা, কিনু সর্দারের ধর, আক্কেলের ডওর, বেসানি, সাইড খাল, সেরাজুল হক সাহেবের খালসহ আরো নানা নামের প্রায় ৫০টির মত জলাধার। সেই সাথে এখনও বর্ষা মৌসুমে বিলের জলায়তন থাকে প্রায় ৪০০ বর্গ কিলোমিটার। প্রসঙ্গত: ইতিহাস ঐতিহ্যের লীলাভূমি চলনবিলে বর্ষাকালে আবহমান বাংলার অজওপাড়া গাঁয়ের মানুষের সুস্থ ও নির্মল বিনোদনের অন্যতম অনুসঙ্গ “নৈৗকা বাইচ”। এ অঞ্চলের নৌকা বাইচের গল্পও অনেক প্রাচিন। গীত/জারী/লাচারী গেয়ে ৪০ থেকে ১২৫ জন পর্যন্ত বৈঠিয়ালের/মাল্লা সরু ৪০-৫০, ১০০ ফুটের বাইচের নৌকার গাওয়া সেই হারানো দিনের গীত/জারীগান এখনও বিলবাসি/ এই জনপদের প্রবীণ ও মধ্য বয়সিদের মুখে মুখে ফেরে। মুলতঃ ৭০ এর দশকে যখন বর্ষাকালে নৌকা বাইচ হতো তখনকার জনপ্রিয় গীত ছিল- “জোরে জোরে মারো টান/ হেঁইও/ মকসুদ মোকামে যাব হেঁইও/ আল্লাহ বলো, রসুল বল, হেঁইও”…। আবার এ রকম গীতও ছিল- “বৈঠা ঝাঁকে তোল্, বৈঠা ঝাঁকে তোলো/ মুখে আল্লাহ বোল/বাড়িত যাইয়া খাবো আমরা বাইট্কা মাছের ঝোল”…।
এরপর ৮০‘র দশকে এলো- নৌকা বাইচের গীত বা সারি তা হলো, “নাও ছড়িয়া দে/ পাল উড়াইয়া দে/ ছল ছলছলাইয়া চলুক রে নাও/ মাঝ দইরা দিয়া”…। আরেকটি হলো, “ওরে নতুন বৌ আর শাড়ী পড়েনা/ মেকচি পইড়া ঘুইড়া বেড়ায় অংহকারে বাঁচেনা”…। বর্তমানে গাওয়া হয়- “আরে হাতে লাগে ব্যাথা রে/ হাত ছাড়াইয়া দাও সোনার দেওড়া রে”…। এগুলো বোল, গীত, জারি, সারি আবার অঞ্চল ভেদে কাওয়ালি/লাছারী নামেও পরিচিত। যা নৌকা বাইচের সময় গাওয়া আবহমান বাংলার লোকজ সঙ্গীতের একটি ঐতিহ্যবাহী রূপ। মুলতঃ নৌকা বাইচ, বিল্ডিং এর ছাদ পেটানোর সময় মাঝি- মাল্লা, শ্রমিকদের জনপ্রিয় এ গানগুলো সমবেত কন্ঠে সমস্বরে গাওযা এক ধরনের জারি গান নামেই পরিচিতি পেয়েছে। মূলত: এই গানগুলি দলবদ্ধভাবে নৌকা বাইচের সময় বৈঠা মারার তালে তালে বৈঠিয়ালরা/মাঝিমাল্লারা গাইতেন। বাইচের সময় পিতলের তৈরি খঞ্জরি বা করতাল, ঢোল, মন্দিরা, ঝাঁঝের মতো লোকজ বাদ্যযন্ত্র বাঁজানো হয়। বাইচের নৌকার গলুইয়ে (নৌকার অগ্র ও পিছনের বর্ধিত অংশকে বলা হয়) থাকা অথবা মাস্তল ধরে হাল ধরা মাঝির দিক নির্দেশক, মাল্লাদের উৎসাহদাতা খ্যাত “সারেঙ্গ” যা চলনবিলাঞ্চলে ‘ডাহক’/ গায়ক নামে পরিচিত। তাঁরা বিচিত্র পোশাক পড়ে গান ও নাচের তালে এ জারি গান চলনবিলাঞ্চলে খুব জনপ্রিয়। অতীতে চলনবিলে বছরের ৬ ছয় মাস পানি ও ছয় মাস শুষ্ক থাকেেতা। একফসলি জমিতে আমন ধান বপন ও নিড়াণি দেওয়ার পর বর্ষার ছয় মাস তাদের মাছ ধরা ও পানি রশি টানা ছাড়া আর কোন কাজ থাকতোনা । এই সময় তারা খেলাধুলা, নৌকাভ্রমণ ও গানবাজনা তথা আমোদপ্রমোদ নিয়ে সময় কাটাতেন। গ্রামে ঘরে সাধারণত হাডুডু, বদন, বাঘ-বকরি এবং বড় পরিসরে সাাঁতার, লাঠিখেলা, ফুটবল ও নৌকাবাইচ প্রতিযোগীতা হতো । গান বাজনার মধ্যে ছিল জারী, সারী, টোপ্পা, বারৈষ্যা, বেহুলা-মনসাদেবীর লাছারী, বাইচের নায়ের লাছারী, মাদার ও বদর পীরের গান, বিয়ের গীত, ঢেঁকী পারারগী আওর কত কি! যা চলমান একুশ শতকেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি।
এ ধরনের বাইচের নায়ের হাস্যরসের জারি গান গাওয়ার উদ্দেশ্য হলো কঠোর কাজের সময় কাজকে সহজ ও আনন্দময় করার পাশাপাশি চলনবিল অঞ্চলে নৌকা বাইচের শ্রমসাধ্য কাজে মাঝি, বৈঠিয়ালদের উৎসাহ জোগাতে লোকজ সঙ্গীতেরই ভিন্নতা পেয়েছে বলা যায়। যদিও চলনবিলে নৌকা বাইচের সঠিক, সুনির্দিষ্ট কোন ইতিহাস নেই। তবে নৌকা বাইচ মধ্যযুগের নবাব-সুবেদার বা ভূস্বামীদের উদ্যোগে শুরু হওয়া একটি প্রতিযোগিতা বলে ধারণা করা হয়। বিশেষ করে চলনবিলের প্রবিণ ব্যক্তিদের ভাষ্য, বিশাল জলায়তনের এ বিলে বর্ষাকালে যখন গ্রামের মানুষের হাতে কাজকর্ম কম থাকে, তখন আনন্দ ও বিনোদনের পেতেই এলাকা ভেদে এই নৌকা বাইচের আয়োাজন করা হতো। যা অজপাড়া গাঁয়ের মানুষের একটি ঐতিহ্যবাহী বা প্রতিযোগিতামুলক একটি বাৎসরিক খেলা। ইতিহাস থেকে আরো জানা যায় “বাইচ” শব্দটি থেকে ধারণা করা হয যে মধ্যযুগের নবাব, সুবেদার এবং ভূ-স্বামীরা নৌবাহিনী ব্যবহার করতেন। তখন নৌ সেনাদের দক্ষতা বৃদ্ধি অথবা প্রতিযোগিতামুলক আনন্দ বিনোদনের জন্য নৌকা বাইচের সূত্রপাত করেছিলেন। দেশের বৃহতম এ বিলে মধ্যযুগের নবাব-সুবেদার বা ভূস্বামীদের উদ্যোগেই হোক অথবা চলনবিলের প্রতিযোগিতামুলক নৌকা বাইচের বাতিক আছে এমন প্রবিণ মানুষের কারনেই নৌকা বাইচ চলনবিল অঞ্চলে প্রাচিন কাল থেকেই প্রসিদ্ধতা এবং জনপ্রিয়তা পায়। যা একুশ শতকেও একবারে খেই বা গতি হারায়নি। চলনবিল এলাকায় নৌকা বাইচের অতীত ইতিহাস বলতে বিগত শতাব্দীর ৮০ বা ৯০ দশক কাল পর্যন্ত নৌকা বাইচটা নির্মল প্রতিযোগিতামুলক আনন্দ- বিনোদনের বড় অংশই ছিল বটে। যার উদাহরণ এ বছরও চলমান বর্ষাকালে চলনবিলের নাটোর জেলার বিলশা বিলে, সিংড়ার নিয়ামত খালে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার ফুলজোড় নদীর রামকান্তপুর খেয়া ঘাটে, শাহজাদপুরের বড়াল নদীর চিতুলিয়া, পাবনার চাটমোহরের চিকনাই নদীর গুররী পয়েন্টে, ফরিদপুরের বিলে ঐতিহ্যবাহি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আবার বিলপাড়ের কয়েকটি স্থানে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রস্তুতি চলছে। যা চলনবিলের নৌকা বাইচ ঐতিহ্যের স্মারক চিহ্ন বটে। বলা বাহুল্য, চলনবিল অঞ্চলে নৌকা বাইচের বহু বছরের কিছু রেওয়াজ আছে।
যেমন- ব্যক্তির নামে নাও। মোবারকের নাও, আয়েজ উদ্দিনের নাও, কফিল মন্ডলের নাও আবার সোনার তরী, বাংলার বাঘ, আল মদিনা, সোনার বাংলাসহ নানা নামের বাইচের নৌকা আছে। যে নৌকার মালিক একক ব্যক্তি হতে পারেন। হতে পারেন গ্রামবাসি। এটা ঠিক বাইচের নৌকা শিমুল সুন্দরী, শিলকড়ই, শাল, গামারী, সেগুন কাঠের হতে হয়। অতীতে যে কাঠগুলোর বেশির ভাগ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসত। সেটা চলনবিলের নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার আসানগঞ্জের হাট থেকে বেশির ভাগই কেনা হতো। এ সকল কাঠের ৫০ থেকে ১০০ ফুট দৈঘ্যের বাইচের নৌকা তৈরিতে এখন ২ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ হয়। এখানেই শেষ নয়। বাইচের নেীকার দুই গলুইয়ে রুপা বা পিতলের তৈরি অলংকার পড়িয়ে সাঁজগোঁজ করতেন সৌখিন নাইয়ারা। পাশাপাশি ১০০ ফুট দৈঘ্যের একটি নৌকায় ৭০ জনের মত বৈঠাল বসে বৈঠা চালাতে পারেন। চলনবিলাঞ্চলে নৌকা বাইচের নানা রেওয়াজ আছে। প্রতিযোগিতামুলক নৌকা বাইচের আগে বিলে বাইচের মাল্লা, মাঝিরা কয়েক দিন প্রশিক্ষণ দেয়। পাশাপাশি নৌকার মালিক ব্যক্তি হলে তিনি বাইচের খরচা নিজেই বহন করেন। এমনকি বাইচের দিন ভাল খাবার খাওয়ানো হতো বাইচের মাল্লা, মাঝি, ডাহকসহ গ্রামের গন্যমান্যদের। এছাড়া প্রতিযোগিতায় জয়ী হলে উৎযাপনের জন্য ফের গরু খাসি জবাই দিয়ে “মেজবানি”র আয়োজন করা হতো। মেজবানির আয়োজনে আনন্দ উচ্ছাস গ্রামবাসি নারী-পুরুষদের মন ছুঁয়ে দিতো। এ ছাড়া নৈৗকা বাইচে শরিক হতে বা আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামবাসিরা একত্রিত হয়ে গ্রামের বাড়ি বাড়ি থেকে নৌকা বাইচের খরচা বাবদ টাকা, চালও তোলার স্বতফূর্ত রেওয়াজ আজও অমলিন। তবে কথায় আছে “ঘোড়া কেনার আগে চাবুক” কিনতে হয়। তেমনি বাইচের নৌকা যেনতেন হলে চলবে না। তাই নিকট অতিতে চলনবিল এলাকার সাইকোলা, কাছিকাটা, হান্ডিয়াল, দিলপাশার, উধুনিয়া, বেড়াবাড়ি, কুন্দইল, পিপলা, মাগুড়াবিনোদ, লালুয়া মাঝিড়া, বিলশাসহ প্রভৃতি গ্রামের বনেদি ধনার্ঢ্য পরিবারে অনেকে প্রতিযোগিতা করে বর্ষাকালের পূর্বেই নিজস্ব বিপুল টাকা খরচ করে বাইচের নৌকা গড়াতেন। কেননা বাইচের নৌকা থাকাটা তাঁদের কাছে গর্বের বিষয় বা পরিবারটি বনেদি, সম্মানিত সেটা প্রমাণের বিষয় ছিল।
নৌকা বাইচে চলনলিাঞ্চলে পুরুস্কারের ব্যবস্থাটাও বেশ প্রাচিন ৭০ থেকে ৮০‘র দশক পর্যন্ত ত্রিভূজ আকৃতির কাঠ, সোনা, রুপার মিশ্রণে তৈরি করা ছোট- বড় “সিল্ড” /রুপার কাপ উপহার দেওয়া হতো বাইচে বিজিত ও বিজয়ী দলকে। পরবর্তীতে রেডিও, টিভি, ক্যারাম র্বোড দেওয়া হতো। উপহার যাই হোক প্রাচিনকাল থেকে চলনবিলের নৌকা বাইচ গ্রাম বাংলার মানুষের প্রাণের উৎসব ছিল। নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান স্থল নদী, খাল, বিলের সেই জনপদে বসতো মেলা। বাবার কাঁধে চেপে হাজার হাজার দর্শকের ভীড়ে ঘাড় উঁচিয়ে দেখা যায়, যায় না, এমন নৌকা বাইচ দেখার স্মৃতিকাতর প্রবীণরা সেই অতিতে চলনবিলের শতবর্ষ আগে নৌকা বাইচের আয়োজনে নির্মল আনন্দ দিতে পেরেছেন। সেটা তাঁদের অর্জন। আবার একুশ শতকে চলনবিলবাসির সংখ্যার নিরিখে নৌকা বাইচের চলমান আয়োজন কম হলেও প্রাচিন আর অত্যাধুনিক সময়ের মধ্যে ফারাক আছে। তবে চলনবিলে এখনও কোথাও নৌকা বাইচের আয়োজন হলে হাজার হাজার নৈাকা ও নারী-পুরুষ আবালবৃদ্ধবনিতা নির্বিশেষে লাখো মানুষের উপস্থিতি জানান দেয় “চলনবিলের নৌকা বাইচ” আজও বিলবাসির সবুজ, সতেজ বিনোদনের অংশ বৈকি।
লেখকঃ প্রখ্যাত কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক । সাবেক সভাপতি, তাড়াশ প্রেস ক্লাব।
চলনবিল বাঁচলে কার লাভ, কার ক্ষতি
মোনছেফা তৃপ্তি
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা থেকে মাত্র ২০ মিনিট দূরের জেরাবম্বেরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ফুটবল ম্যাচ স্থগিত করা হয়েছে। কারণ, মাঠের মাঝখানে পেন্টাভার পাখি ডিম দিয়েছে। স্থানীয় সংস্থা ওয়াইল্ডকেয়ারের পরামর্শে খেলা পাশের মাঠে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং বলা হয়, সর্বোচ্চ ২৮ দিন পর্যন্ত খেলা বন্ধ রাখতে হতে পারে। কাউন্সিল জানিয়েছে, দেশি প্রজাতির পাখি রক্ষায় ডিম সরাতে হলে বিশেষজ্ঞের সহায়তা ও অনুমতি প্রয়োজন। জানা যায়, পেন্টাভার সাধারণত ডিম ফোটানোর সময় আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে এবং বাসা রক্ষায় তীব্র আচরণ প্রদর্শন করে। এ পাখির চোখের চারপাশে হলুদ বৃত্ত থাকার কারণেই এর নামকরণ। আমাদের দেশেও এই পাখির দেখা মেলে স্থানীয়ভাবে একে বলা হয় ছোট নথজিরিয়া বা ছোট জিরিয়া। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যদি এমন ঘটনা বাংলাদেশে ঘটত, তবে একটি মা ছোট জিরিয়ার ভাগ্যে কী জুটত? যেখানে মানুষ মা প্রজাতির জীবনই নিরাপদ নয়, সেখানে একটি পাখি ও তার ডিমের রক্ষা করা আকাশ কুসুম কল্পনা।
অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় বাংলাদেশ প্রায় ৪০০ গুণ ঘনবসতিপূর্ণ। তাই এখানে একটি ছোট পাখির ডিম রক্ষার জন্য খেলা স্থগিত রাখা অনেকের কাছেই অযৌক্তিক মনে হতে পারে। কিন্তু বিষয়টি যদি চলনবিল হয়? যেখানে রয়েছে ১০৫ প্রজাতির দেশি মাছ, ৩৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৭ প্রজাতির উভচর, ৩৪ প্রজাতির পাখি এবং অসংখ্য জলজ ও স্থলজ উদ্ভিদ। প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার পুকুর, ৩০০টির বেশি খাল, ৪৭টি নদী ও ১৬৩টি বিল নিয়ে গঠিত এই অঞ্চল শুধু উত্তরাঞ্চলের নয়, গোটা দেশেরই অমূল্য প্রাকৃতিক সম্পদ। ভরা মৌসুমে পদ্মা ও যমুনার পানি বাড়লে চলনবিল হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা পানি ধারণ করে। কমে এলে সেই পানি আবার নদীগুলোতে সরবরাহ করে।
চলনবিল দেশের জলাধার ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভারসাম্য রক্ষাকারী অঞ্চল। প্রস্তাবিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের স্থান বুড়িপোতাজিয়া এ চলনবিলেরই অংশ। জায়গাটি বড়াল ও গোহালা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত এবং বছরের প্রায় চার মাস পানির নিচে থাকে। পুরো প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪৪৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে বিল ভরাট ও বাঁধ নির্মাণে এবং ৫১৯ কোটি টাকা ব্যয় হবে ভবন নির্মাণে। বাজেট থেকেই স্পষ্ট, পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে জোরপূর্বক ব্যয়ই এখানে বড় অংশ। প্রস্তাবিত স্থানে ১০০ একর জমি ৯-১৪ মিটার উঁচু করতে প্রয়োজন হবে প্রায় ৩.৬ মিলিয়ন ঘনমিটার বালু। এরই মধ্যে মাত্র চার একর ভরাট করতেই নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে। পুরো জায়গা ভরাট করা হলে যমুনা থেকে চলনবিলে পানি আসা এবং চলনবিল থেকে যমুনায় পানি যাওয়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। এর ফলে কৃষি ও উন্মুক্ত মৎস্য চাষ সংকটে পড়বে, দেশীয় মাছের প্রজনন নষ্ট হবে এবং বিলের ওপর নির্ভরশীল জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হবে। মৌসুমি বন্যার ধরনও বদলে যাবে।
অর্থনীতিতেও এর প্রভাব ভয়াবহ। বড়াল ও গোহালা নদী দিয়ে উত্তরাঞ্চলের কৃষিপণ্য ও দুধ বাঘাবাড়ী মিল্কভিটাসহ বিভিন্ন স্থানে যায়। আবার হুরাসাগর নদীপথ দিয়ে পেট্রোল-ডিজেল বাঘাবাড়ী বন্দরে এসে উত্তরবঙ্গে সরবরাহ হয়। বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণে এসব পথ ব্যাহত হলে বন্দর ও উত্তরাঞ্চলে তীব্র সংকট দেখা দেবে। অন্যদিকে বাপা, চলনবিল রক্ষা আন্দোলন ও বড়াল রক্ষা আন্দোলনের চাপের কারণে সম্প্রতি বড়াল নদীতে নতুন প্রাণ ফিরেছে। ¯øইসগেট অপসারণের পর পদ্মা-যমুনার পানির প্রবাহ আংশিকভাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নতুন অবকাঠামো নির্মাণ আবারও চলনবিল ও পদ্মা-যমুনার সংযোগে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে, যা পুরো অঞ্চলের অস্তিত্বকে হুমকিতে ফেলবে।
বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩-এর ২০ নম্বর ধারায় স্পষ্ট বলা আছে , কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া জলাধার ভরাট, স্রোতের প্রবাহে বাধা সৃষ্টি বা গতিপথ পরিবর্তন করতে পারবে না। চলনবিল ভরাট করে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ আইন ও আদালতের রায় উভয়কেই অমান্য করছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা উপপরিচালক দাবি করছেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়েই পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং প্রতিটি ধাপে অনুমোদন নেওয়া হবে। তার যুক্তি, ‘উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি’ নিয়েই প্রকল্পের কাজ এগোচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, শুধু অনুমোদন নিলেই কি পরিবেশ ধ্বংস বৈধ হয়ে যায়?
একনেক সভায়ও কয়েকজন উপদেষ্টা চলনবিলের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন, আমরা সংবাদপত্রের মাধ্যমে তা জেনেছি। তারা প্রকল্পের সম্ভাব্য ক্ষতির বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষ ছাড়পত্রের মাধ্যমে অর্থ ছাড়ের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে স্পষ্ট, পরিবেশ রক্ষার দায় কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে উন্নয়নের নামে দেশের বৃহত্তম মিঠাপানির জলাধার ধ্বংসের পথ তৈরি হচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতি, কৃষি ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হবে।
চলনবিল রক্ষার দাবিতে পরিবেশবিদ ও কর্মীরা নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। ১০ আগস্ট চলনবিল রক্ষা আন্দোলনের পক্ষ থেকে পরিবেশ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবি জানানো হয়। একনেকে অনুমোদনের পরও দেশের ২২টি পরিবেশ ও সামাজিক সংগঠন সংবাদ সম্মেলন করে বিকল্প স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের দাবি জানায়। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রতিবাদ জানালে গালি, ব্যক্তিগত আক্রমণ ও নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
গত ১৬ আগস্ট প্রথম আলোতে চলনবিলে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ নিয়ে একটি ফিচার প্রকাশিত হলে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অনশনকারী শিক্ষার্থীরা তীব্র ক্ষোভে সংবাদপত্র পুড়িয়ে ফেলে, সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে। নানা আন্দোলনের মুখে একনেকে প্রকল্প অনুমোদন হয়। স্থানীয় শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, রাজনৈতিক প্রতিনিধি ও সংগঠনগুলো এ আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে। এতে প্রশ্ন জাগে পরিবেশ রক্ষার দায় কি শুধু পরিবেশ কর্মীদের? চলনবিল বাঁচলে কার লাভ? কার ক্ষতি?
বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ আমরা অবশ্যই চাই কিন্তু চলনবিলের মতো স্বতন্ত্র জীববৈচিত্র্যকে ধ্বংস করে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ কতটা যৌক্তিক এ প্রশ্ন করার জায়গাও ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে। বাংলাদেশে উন্নয়নের নামে প্রকৃতি ধ্বংসের ঘটনা নতুন নয়। অবকাঠামো উন্নয়নের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে দলীয় রাজনীতি, টেন্ডারবাজি, ঠিকাদার ও নানা স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। এ মহল খুবই সুসংগঠিত এবং সবাই নিজ স্বার্থ খোঁজে, পরিবেশের কোনো তোয়াক্কা করে না। বরং তারা এমনভাবে প্রচার চালায় যে, পরিবেশ কর্মীদের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ে। অথচ একই পৃথিবীতে একটি ছোট পাখি ও একটি চলনবিলের গল্প সমান গুরুত্বপূর্ণ। অস্ট্রেলিয়া যেমন একটি পেন্টাভার পাখির ডিম রক্ষায় খেলা স্থগিত করতে পারে, বাংলাদেশ কি চলনবিলের মতো বিশাল জীববৈচিত্র্য রক্ষায় একই দায়িত্বশীলতা দেখাতে পারবে না? সূত্রঃ দৈনিক কালবেলা।
লেখক: পরিবেশ ও নারী অধিকারকর্মী ।
তাড়াশে উৎসবমূখর পরিবেশে
শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে
স্টাফ রিপোর্টার ঃ সাড়া দেশের মতো চলনবিলস্থ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় যথাযথ অনুষ্ঠানাদির মধ্য দিয়ে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে উৎসবমূখর পরিবেশে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে সার্বিক নিরাপত্তার লক্ষ্যে তাড়াশ উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সরকারী-বেসরকারী সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। গত সোমবার হতে হিন্দু ধর্মালম্বীদের সর্বাপেক্ষা বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ২ অক্টোবর বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে পূজা পর্ব। এবছর তাড়াশ উপজেলায় সর্বমোট ৪৬টি পুজামন্ডপে প্রাণবন্তরূপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে যা গত বছরের চেয়ে একটি কম। বিগত বছরে এসংখ্যা ছিল ৪৫টি। অপরদিকে সাড়া দেশে চলতি বছরে প্রায় ৩৪ হাজার পুজা মন্ডপে অতি আনন্দঘন আমেজে শারদীয় পুজা চলছে। সরকার এটা নিরাপদ ও উপভোগ্য করতে যথোচিত পদক্ষেপ নিয়েছে। বিএনপি-জামাতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দুর্গপূজা নির্বিঘœ এবং শান্তিপূর্ণ করতে সহযেগিতার আহবান জানিয়েছে। তবে দেশে অব্যাহত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে পূজার আনুসঙ্গিক খরচ আগের চেয়ে বেড়েছে বলে জানিয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। উল্লেখ্য, তাড়াশ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ্ মাঠে শারদীয় বিশাল মেলা ও বেচাকেনার বাজার বসেছে বলে জানা গেছে।
ফেব্রæয়ারিতে নির্বাচন চান ৮৬% মানুষ
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ অন্তর্র্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী বছর ফেব্রæয়ারি মাসেই নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মনে করে ৮৬.৫ শতাংশ মানুষ। সেই সঙ্গে ৯৪.৩ শতাংশ মানুষ অর্থাৎ প্রতি ১০ জনে ৯ জনই জানিয়েছেন ফেব্রæয়ারিতে নির্বাচন হলে তাঁরা ভোট দিতে যাবেন।পাশাপাশি অন্তর্র্বতী সরকারের কাজে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে ৭৮.৭ শতাংশ মানুষ। ৬৯.৯ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করে, অন্তর্র্বতী সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে।
তবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নেই বলে জানিয়েছে ৫৬ শতাংশ মানুষ। যাদের ধারণা আছে তাদেরও ২২.২ শতাংশ পিআর পদ্ধতি থাকা উচিত নয় বলে জানিয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনা পরামর্শক সংস্থা ইনোভিশন কনসাল্টিং ‘জনগণের নির্বাচন ভাবনা’ নিয়ে চলতি বছর দ্বিতীয় দফায় জরিপ করেছে। গত রবিবার এ জরিপের প্রথম পর্বের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। সূত্রঃ কালের কণ্ঠ।
ড. ইউনূস ও অন্তর্র্বতী সরকারের প্রতি বিশ্বনেতাদের সমর্থন
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ গত শুক্রবার নিউইয়র্কে লাটভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ভাইরা ভিকে-ফ্রেইবারগারের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করে ।প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পোষ্টে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তার অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে পূর্ণ সমর্থন জানাতে গত শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে তার হোটেল স্যুইটে একত্রিত হন বিশ্বের বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতা।তারা বাংলাদেশকে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সহযোগিতা ও গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেয়ার অঙ্গীকার করেন।শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্ক থেকে এ খবর দিয়েছে বাংলাদেশের সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস।বাংলাদেশ প্রসঙ্গে খবরে বলা হয়েছে, জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের ফাঁকে লাটভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নিজামি গঞ্জাভি আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের (এনজিআইসি) সহ-সভাপতি ভাইরা ভিকে-ফ্রেইবারগার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি প্রফেসর ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করে এই সমর্থন ব্যক্ত করে। সূত্রঃ নয়া দিগন্ত।
ফেব্রæয়ারিতে নির্বাচন না হলে ভারত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে: মাহমুদুর রহমান
ডেস্ক রিপোর্টঃ ফেব্রæয়ারিতে নির্বাচন না হলে ভারত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড পিস স্টাডিজ (সিএপিএস) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, নির্বাচনটা হওয়া দরকার। নির্বাচন না হলে ভারত বাংলাদেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করবে। আর নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ বাস্তবায়িত হতে হবে। নির্বাচনের আগে ভারত থেকে যে থ্রেট আসবে, সেটা মোকাবিলা করতে আমাদের ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন বাড়াতে হবে এবং ডিপ্লোমাটিক স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করতে হবে।তিনি বলেন, আপনারা অনেকেই ড. ইউনূসের সমালোচনা করে থাকেন। সমালোচনা করার জন্য অনেক যুক্তিও রয়েছে। কিন্তু এভাবে কোনো সরকার প্রধান কখনো ভারতের বিপক্ষে প্রকাশ্যে মাথা উঁচু করে দাঁড়াননি, এই প্রশসংটা আমি করব। তিনি মোদির সামনে বলেছেন যে, আপনি কবে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেবেন। প্রধান উপদেষ্টার অন্যান্য ফেইলিওর থাকতে পারে। কিন্তু ভারতের বিষযয় তিনি গত ১৩-১৪ মাসে অনমনীয়তার পরিচয় দিয়েছেন। সূত্রঃ সমকাল।
তাড়াশে অতিবৃষ্টিতে রোপাআমনের ব্যাপক ক্ষতি
স্টাফ রিপোর্টার ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় গত কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে সদ্য রোপণ করা ৩৬ ও ৯০ জাতের রোপা আমন ধান সম্পূর্ণ ডুবে গেছে। এতে করে কৃষক ব্যাপক লোকসানের আশংকা করছেন। এখন কৃষকের মাথায় হাত ।
সরেজমিনে দেখা যায়, এ ধরনের হাজার হাজার বিঘা জমির চারা ধার এখন তলিয়ে পানির নীচে। এর সবই পচে ও ভেসে গেছে। মাত্র ১০-১৫ দিন আগে এসব ধানের চারা জমিতে রোপণ করা হয়েছিল। এবারে চারা ধান ছাড়াও সারের দাম ছিল অনেক বেশী। ভাদ্র মাসের শেষে মাঠের পানি শুকিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে কৃষকেরা আশায় বুক বেধে আগাম জাতের রোপা আমন ধান লাগিয়েছিল। আসছে অগ্রহায়ণ মাসে এধান ঘরে ওঠার কথা ছিল।কিন্তু গত সপ্তাহের অবিরাম বৃষ্টিতে উপজেলার তাড়াশ, মাধাইনগর, দেশীগ্রাম, তালম, নওগা ও বারুহাস ইউনিয়নের হাজার হাজার বিঘা জমির অতি সম্প্রতি লাগারো রোপাঅমনের চারা সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে। এজন্য কৃষক ব্যাপক ক্ষতির সন্মুখিন হবে। তাছাড়া পরবর্তীতে পানি নেমে গেলে তাদের বর্ধিত দামে ধানের চারা এবং উচ্চ মূল্যে সার ও শ্রমিক-মজুর কিনতে হবে। ফলে কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ হবে অনেক বেশী। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট কৃষি অধিদপ্তর হতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করে অন্তত দরিদ্র-প্রান্তিক শ্রেণির কৃষকদের সরকারী তরফ থেকে প্রণোদনার ব্যবস্থা করলে তারা হয়তো কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে বলে এলাকাবাসী মনে করেন।।
তাড়াশের মঙ্গলবাড়ীয়া বিদ্যালয়ে জলাবদ্ধতা
স্কুলের সবাই ঘা-পাঁচড়ায় আক্রান্ত
এম.আতিকুল ইসলাম বুলবুল ঃ প্রধান শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন বিদ্যালয়ে গামবুট জুতা পড়ে এসেছেন। তাঁকে গামবুট জুতা পড়ার কারন সম্পর্কে জিঞ্জাসা করলে তিনি জানান, বিদ্যালয়ের পুরো খেলার মাঠ প্রায় চার মাস যাবত জলাবদ্ধতায় ডুবে আছে। এর মধ্যে নোংরা, বদ্ধ-পঁচা পানির মধ্যে দিয়ে শ্রেণি কক্ষে পাঠদান ও অন্যান্য কাজে চলাচল করতে গিয়ে পায়ে ঘা- পাঁচড়া হয়ে গেছে তাই তিনি গামবুট পড়েছেন। তিনি আরো জানান, এ অবস্থা শুধু আমার নয় বিদ্যালয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীর বেশির ভাগ ও সহকর্মী শিক্ষকদের একই অবস্থা। পাশাপশি জলাবদ্ধতায় সৃষ্ট অসহনীয় দূর্ভোগে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষকরা নাকাল হয়ে পড়েছি।
মুলতঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর এলাকার মঙ্গলবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ প্রায় চার মাস যাবত জলাবদ্ধতায় ডুবে আছে। জলাবদ্ধ পানির মধ্যে চলাচল করতে গিয়ে শিক্ষার্থীর ওই অবস্থা হয়েছে। সেই সাথে জলমগ্ন বিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষার্থীদের অ্যমেম্বলীসহ সকল খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে।অবশ্য, মঙ্গলবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, অসহনীয় দূর্ভোগে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষকদের দুরাবস্থা নিরসনে এক মাস পূর্বে জলাবদ্ধ মাঠে মাটি ভরাটের জন্য তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুসরাত জাহান বরাবর একটি আবেদন করেছি। তবে এখনও কোন সাড়া পায়নি।
তাড়াশে ওএমএস‘র মাল কিনতে চরম দুর্ভোগ
তাড়াশ প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জের পৌর এলাকার মঙ্গলবাড়ীয়া ওএমএস‘র বিক্রয কেদ্রে খোলার দুই ঘন্টা পূবেই বৃষ্টিতে ভিজে আটা কিনতে এসে কাঁদা মাটির লাইনে দাঁড়িয়েছেন মরিয়ম পারভীন (৪৮) ও প্রায় তিন শতাধিক নারী- পুরুষ। সকাল ১০ টায় ওএমএস‘র ডিলার আটা বিক্রি শুরু করেছেন। কিন্তু বেলা বাড়ার সাথে কাঁদা মাটির লাইনে দীর্ঘ হচ্ছেই। এক পর্য্যায়ে দুপুর গড়ানোর আগেই এ ডিলারের বরাদ্দকৃত ৫০০ কেজি আটা শেষ হয়ে যায়। অবশ্য, মরিয়ম আটা পাওয়ার পর পরই বরাদ্দকৃক আটা ফুরিয়ে যাওয়ায় আটা না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন অনন্তঃ শতাধিক নিন্ম আয়ের লোকজন।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে এ দৃশ্য দেখা গেছে, পৌর এলাকার মঙ্গলবাড়ীয়া ওএমএস‘র বিক্রয কেন্দ্রে। এ সময নিন্ম আয়ের মানুষ মনোয়ার হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, সরকারি বরাদ্দ কম তাই ওএমএস‘র বিক্রয় কেন্দ্রের ডিলারের আটা শেষ হয়। কিন্তু লাইন শেষ হয়না। অবশ্য, পৌর এলাকার মঙ্গলবাড়ীয়া ওএমএস‘র বিক্রয কেন্দ্রের ডিলার হাদিউল হৃদয় জানান, সকালেই আটা কিনতে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে যান প্রায় ৩২০- ৩৪০ জন তিন নারী- পুরুষ। অথচ সরকারি বরাদ্দ প্রতি ডিলারের জন্য প্রতিদিন ৫০০ কেজি আটা। যা জন প্রতি ৫ কেজি করে দিলে সে আটা দেওয়া যায় ২০০ জনকে। এ কারনে চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ কম হওয়ায় শতাধিক লোক তো আটা পাবেন না। এটা বাস্তবতা।
একীভূত হচ্ছে এনসিপি-গণঅধিকার পরিষদ ?
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ছোট রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলোকে নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করছে বড় দলগুলো। নিজেদের ভোট ব্যাংক বাড়াতেই বড় দলগুলো এই কৌশল নিয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে এখন দলগুলোর কয়েকটি জোট বা পক্ষ আলাদা কাজ করছে। এসব জোট বা পক্ষের অবস্থানও ভিন্ন ভিন্ন। আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলন করার সময়ের রাজনৈতিক সঙ্গীদের বিএনপি এখনো তাদের জোটে ধরে রেখেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলন করা জামায়াতে ইসলামী নতুন নির্বাচন ফ্রন্ট গড়ার কাজ করছে। এর বাইরে বাম ও মধ্যম ধারার আরও কয়েকটি দল তৃতীয় একটি জোট গঠনের চেষ্টা করছে। এই জোট গড়ার চেষ্টায় ভোটের রাজনীতি নতুন হিসাবনিকাশও শুরু হয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে পুরনো সঙ্গীদের বাইরে কিছু দলের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বিএনপি।
ভোটের জোটে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের একীভূত হওয়ার বিষয়টি। এ নিয়ে দুই দলের নেতারা অনানুষ্ঠানিক আলোচনাও করেছেন। তবে একীভূত হলে দলের নাম কি হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান আলোচনার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এনসিপির অন্য একজন নেতাও এমন আলোচনার বিষয় জানিয়ে বলেন, দলের নাম বদলে একীভূত হতে চায় না এনসিপি। সূত্রঃ মানবজমিন।
তাড়াশে কমিউনিটি ক্লিনিকে ঔষধ নেই প্রায় চার মাস
ষ্টাফ রিপোর্টার ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ভাটারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রজনী মাহাতো জ্বর-শরীর ব্যথা নিয়ে নিজ গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকে আসেন। সেখানে স্বাস্থ্য সেবা দানকারী বা কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) সঞ্জিত কুমার তাঁকে জানান, রোগের ব্যবস্থাপত্র দিতে পারব। কিন্তু ঔষধ দিতে পারবেননা। কেননা গত প্রায় সাড়ে তিন মাস হলো উপজেলার ৩০টি কমিউনিটি ক্লিনিকে সরকারী ভাবে ঔষধ সরবরাহ নেই। তাই দুই মাস যাবত ৩০ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ঔষধ না পেয়ে খালি হাতে বাড়ী ফিরে যাচ্ছেন। এ চিত্র মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে।
পাশাপাশি স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ ঔষধ না পাওয়া প্রান্তিকের লোকজন ঔষধ থেকে বঞ্চিত হয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছেন।সিরাজগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জনের অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রত্যন্ত জনপদের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দোর গোড়ায় পৌঁছে দিতে তাড়াশে আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকায় ৩১টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৩০টি চালু আছে। বাঁকী ১টি চালুর অপেক্ষকায় আছে। চালু থাকা কমিউনিটি ক্লিনিকে থেকে বিনা খরচে চিকিৎসার পরামর্শ মত ২২ প্রকার ঔষুধ বোগীদের রোগ অনুযায়ী কমিউনিটি ক্লিনিক থেকেই বরাবর সরবরাহ করা হয়।এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মো. এরফান আহম্মেদ জানান, ২০২৫-২০২৬ নতুন অর্থ বছরের ঔষধ কেনার দরপত্র আহবান করা হয়েছে। আশা করছি স্বল্প সময়ে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ সম্ভব হবে।
তাড়াশে চাঁদাবাজির অভিযোগে যুবদল নেতা বহিষ্কার
শফিকুল ইসলাম, তাড়াশ ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে চাঁদাবাজির অভিযোগে মোঃ হাফিজুর রহমান নামে এক যুবদল নেতাকে বহিষ্কার করেছে সংগঠন। হাফিজুর রহমান তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব ছিলেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি এবং পেশীশক্তি প্রদর্শন করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ নানা অন্যায়-অনাচারে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে।
গত শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক মাসুম রেজা মুসা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযুক্ত চাঁদাবাজি ও পেশীশক্তি প্রদর্শন করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ নানা অনাচারে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগ করে সংশ্লিষ্ট মাধাইনগর ইউনিয়ন বিএনপি ও যুবদল। আনীত অভিযোগ তদন্ত করে প্রমাণিত হওয়ায় এবং পাঠানো কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব মোঃ হাফিজুর রহমানকে সদস্য সচিব পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) আল আমিন খান ও সাধারণ সম্পাদক মুরাদুজ্জামান মুরাদ বলেন, ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অদ্যকার তারিখ হতে বহিষ্কৃত নেতা মোঃ হাফিজুর রহমানের কোনো ধরনের অপকর্মের দায়দায়িত্ব দল নেবে না। যুবদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
তাড়াশ পৌরসভার দুর্নীতির রাস্তা মেরামতে
তাড়াশ ছাত্রদলের সেবামূলক কাজ
তাড়াশ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক ইমরান এইচ সজিবের উদ্যোগে ছাত্রদলের কর্মীদের সাথে নিয়ে ও যুবদলের সহযোগীতায় সংস্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে তাড়াশ উপজেলা যুবদল ও ছাত্রদল নিজেদের শ্রম ও অর্থে পৌর শহরের প্রবেশ দ্বারে ওই জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির সংস্কার করেন।
জানা গেছে, বারোয়ারী বটতলা থেকে তাড়াশ প্রেসক্লাব পর্যন্ত রাস্তাাটির সরকারী গার্লস হাই স্কুল গেট সংলগ্ন ৪০ থেকে ৫০ ফুট রাস্তা খানা খন্দের সৃষ্টি হয়ে চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়ে ছিল। একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হতো স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও পৌরবাসীদের। ফলে জন ভোগান্তি চরমে উঠেছিল। পৌর প্রশাসককে বারবার বলেও রাস্তর ওইটুকু অংশ সংস্কার হচ্ছিল না এমনটি জানিয়েছেন স্থানীয় পৌরবাসী। আর এ অবস্থায় নিজেদের শ্রম ও অর্থে রাস্তাটি সংস্কার করলেন তাড়াশ উপজেলা যুবদল ও ছাত্রদল। তাদের এমন মহতী উদ্যোগকে ভুক্তভোগী শত শত পৌরবাসী প্রসংশা করেছেন। অপরদিকে দুর্নীতিগ্রস্থ তাড়াশ পৌরসভার ত্রæটিপূর্ণ রাস্তা নির্মাণ করে জনদুর্ভোগ বাড়ানোর নিন্দা করেছেন অনেকেই।
তাড়াশে সাড়া বছরই ট্রান্সফরমার চুরি
থানায় জিডি’র পরিবর্তে নেয় অভিযোগ
ষ্টাফ রিপোর্টারঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে একই রাতে ফসলী মাঠের বৈদ্যুতিক সেচযন্ত্র থেকে দুইজন কৃষকের মূল্যবান দুইটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়ে গেছে। সোমবার রাতে উপজেলার তালম ইউনিয়নের লাউতা গ্রামের মো. আশরাফুল ইসলাম ও জন্তিপুর গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের ফসলী মাঠ থেকে সর্বশেষ ক্ষুদ্র অগভীর সেচযন্ত্র থেকে সংঘবদ্ধ চোরের দল বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার দুটি চুরি করে নিয়ে যায়।
এ নিয়ে গত দুই মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১৯ জন কৃষকের সেচযন্ত্রের মোট ১৯ টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকার অধিক। এ দিকে অব্যহৃত চুরির এ ঘটনায় ভুক্তভোগি কৃষকেরা সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধীনে থাকা তাড়াশ জোনাল অফিসে দায়িত্বরতদের দুষছেন। তাঁরা বলছেন, ১৯টি ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ার কারণে প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার বিঘা জমির সেচ কার্যক্রম বন্দ হয়ে যাওয়ায় চলতি রোপা আমন ধানের আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কৃষকগণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ট্রান্সফরমার চুরির পর থানায় গেলে সাধারণ ডাইরীও (জিডি) নেওয়া হয় না। বরং ডিউটি অফিসার বেশিভাগ ক্ষেত্রেই বলেন, অভিযোগ দেন দেখবো। এমনই অভিযোগ ভুক্তোভোগী একাধিক কৃষকের। যদিও তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান জানান, ট্রান্সফরমার চুরি হলে নিয়মনুযায়ী অভিযোগই হবে। হারিয়ে গেলে সাধারণ ডাইরী (জিডি) হয়। আর তাড়াশ জোনাল অফিসের এজিএম মো. শামসুজ্জামান জানান, ট্রান্সফরমার চুরির বিষয়ে কৃষকদের সচেতন হতে হবে। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে কৃষকদের হয়রানির বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেলারেল ম্যানেজার আবু আশরাফ মো. সালেহ বলেন, পল্লী সমিতির গাফিলাতির বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, চুরি তো সারা বছরই হয়। আমরা গ্রাহককে সচেতন হতে বলি। পাশাপাশি থানায় মামলা করতে বলি।
নিম্নকক্ষ নির্বাচন হবে আসনভিত্তিক
উচ্চকক্ষ পিআর পদ্ধতিতে: বদিউল আলম
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ নিম্নকক্ষ হবে আসনভিত্তিক এবং উচ্চকক্ষ নির্বাচন হবে পিআর পদ্ধতিতে বলে মন্বব্য করেছেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘নিম্নকক্ষ হবে আসনভিত্তিক এবং উচ্চকক্ষ হবে পিআর পদ্ধতিতে। দুটিরই ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক আছে। তবে আমরা মনে করি, এটি প্রবর্তন করা দরকার।’
গত শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার সময় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বদিউল আলম আরও বলেন, আমরা আশাবাদী যে, ঐক্যমত্যের মাধ্যমেই একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই লক্ষ্যে কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। কিছু কিছু বিষয়ে ঐকমত না হলেও আমাদের নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতেই হবে এবং নির্বাচন হতেই হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। তার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তোরণের পথ প্রশস্ত হবে। পিআর পদ্ধতি এবং আসনভিত্তিক পদ্ধতির ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক নিয়ে কথা হচ্ছে। সবার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সফল নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। নির্বাচন কমিশন ও সংবিধান কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা সংস্কারের প্রস্তাব করেছি।অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারবো। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। তার মাধ্যমে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।সূত্রঃ সমকাল।
গুরুদাসপুরে ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ -অতঃপর অন্যত্র বদলী
গুরুদাসপুর প্রতিনিধি.ঃ মাসিক আইন শৃঙ্খলা সভায় গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসমাউল হকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম অবহেলার অভিযোগ করা হয়েছে। এক পর্যায়ে অনেকে ওসির প্রত্যাহার দাবি করেন সভার সদস্যরা। গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
আইন শৃঙ্খলা সভার নারী প্রতিনিধি অঞ্জলী আফছারী ওসির সাথে দেখা করতে না পারার আক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘নারীদের নানা সমস্যা নিয়ে কাজ করেন তিনি। সম্প্রতি ভুক্তভোগি এক নারীকে নিয়ে থানায় গিয়েছিলেন। থানার মূল ফটক পেরোলেও ওসির সঙ্গে দেখা করতে দেননি দায়িত্বেরত পুলিশ সদস্যরা। বাধ্য হয়ে একই সমস্যা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে যেতে হয়েছে। তিনি বলেন, থানায় এমন বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে যে, সাধারণ মানুষ ওসির সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা বলার সুযোগ পাননা। বাধ্য হয়ে এসব মানুষ ইউএনও’র কাছে যাচ্ছেন।আইনশৃঙ্খলা সভার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা আফরোজ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘তিনিও ওসি আসমাউলের অসৌজন্যমূলক আচরণের শিকার। মোবাইল কোর্টের জন্য সময় মতো পুলিশ চেয়েও পাচ্ছেন না। এতে করে থানা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে দুরত্ব তৈরি হচ্ছে। বিষয়টি তিনি উচ্চ পর্যায়ে জানিয়েছেন।’এসব অভিযোগের বিষয়ে সভার সদস্য সচিব ওসি আসমাউল হক বলেন, ‘পুলিশের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতেই তিনি কঠোর হতে বাধ্য হয়েছেন। তাকে ভুল বোঝা হচ্ছে।’নাটোর পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম মুঠোফোন বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এরপরই তাকে গুরুদাসপুর থেকে অন্যত্র বদলী করা হয় বলে জানা গেছে।
চাটমোহরে খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ
চাটমোহর প্রতিনিধি ঃ পাবনার চাটমোহর উপজেলার আনকুটিয়া গ্রামে সরকারি জায়গা ও পানি নিষ্কাশনের ক্যানেল জবরদখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে করে যে কোন মূহুর্তে ক্যানেলটি বন্ধ হয়ে আনকুটিয়া বিলের প্রায় দেড়শত বিঘা জমি জলাবদ্ধতার শিকার হবে।
দেখা গেছে, আনকুটিয়া গ্রামের মোঃ মনসুর আলী, রায়হান আলী গং সরকারি জায়গা জবরদখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। দখল করা হয়েছে পানি নিষ্কাশনের ক্যানেলটি। স্থানীয় বাসিন্দা, জমির মালিক ও স্থানীয় ইউপি সদস্যের চাপে ক্যানেলের এক পাশের পাকা স্থাপনা মনসুর আলী গং অপসারণ করলেও দখলকৃত জায়গা ছাড়েনি। এতে করে ক্যানেলে ভেঙে যাচ্ছে পাশের জমির অংশ। মনসুর আলী গং কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো সরকারি জায়গা দখল করে নিয়েছে। এলাকার লোকজন বাধা দিলে মনসুর আলী গং চাটমোহর থানায় এলাকার কতিপয় ব্যক্তির নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করে হয়রানী করছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম সরকারি জায়গা দখলের বিষয়ে বলেন, আমি বারবার জায়গা ছেড়ে দিতে বলেছি। কিন্তু তারা তা মানছেন না। আমি বিষয়টি উপরে জানাবো। এই জমি দ্রæত দখলমুক্ত করা দরকার।
ফরিদপুরে সড়ক বেহাল
চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী
ফরিদপুর থেকে জুয়েল আহমেদঃ পাবনার চলনবিলস্থ ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর থেকে আগপুংগলী ব্রিজ পর্যন্ত সড়কটি বর্তমানে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় পুরো রাস্তাটি ভেঙে গিয়ে জায়গায় জায়গায় বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এই ব্যস্ততম সড়কে যানবাহন চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কৃষক, রোগী ও সাধারণ মানুষ চলাচল করে। কিন্তু রাস্তটির এমন নাজুক অবস্থার কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সবাইকে। বর্ষাকালে এই দুরাবস্থা আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। সামান্য বৃষ্টিতেই গর্তগুলো পানিতে ঢেকে গিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়ে যায়।এ বিষয়ে ফরিদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব আলম জানিয়েছেন, “রাস্তাটি মেরামতের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। ইতোমধ্যে বরাদ্দ পাওয়া গেছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে ”।
তাড়াশে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বাস্থ্য সহকারী নিহত ছবি
লুৎফর রহমান তাড়াশ ঃ হাটিকুমরুল বনপাড়া মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের তাড়াশের মান্নান নগর নামক এলাকায় বাস চাপায় ইজাব আল মাসুদ (৪৫) নামের এক স্বাস্থ্য সহকারী নিহত হয়েছেন।
গত শনিবার (২৭ সেপ্টম্বর) দুপুর ২টার দিকে দ্রæতগামী বাস চাপা দিলে মাসুদ রানা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তিনি তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের ঘরগ্রামের ইসাহাক আলীর ছেলে এবং ওই ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী পদে কর্মরত ছিলেন।প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুর ২ দিকে রাস্ত পারাপারের সময় বনপাড়া থেকে ছেড়ে আসা একটি দ্রæতগামী বাস মান্নাননগর চৌরাস্তা এলাকায় ওই ব্যক্তিকে চাঁপা দেয়। এতে তিনি গুরুত্বর আহত হন।উপস্থিত লোকজন মূমুর্ষ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে জরুরী বিভাগের কর্মরত চিকিৎসক সিরাজুম মুনিরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
চাটমোহরে বিশ্ব নদী দিবস পালিত
চাটমোহর প্রতিনিধি : “নদী ও জলাধার : আমাদের প্রকৃতি সংস্কৃতি ও সামাজিক মুল্যবোধের আঁধার”-এই প্রতিপাদ্য নিয়ে পাবনার চাটমোহরে বিশ্ব নদী দিবস পালন করা হয়েছে।গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বড়াল বিদ্যা নিকেতনের আয়োজনে দিবসটি উপলক্ষ্যে র্যালী, আলোচনা সভা ও গ্রাফিতি অংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।চাটমোহর উপজেলার কুমারগাড়া গ্রামে বড়াল বিদ্যা নিকেতন থেকে ব্যানার ফেস্টুন ও বিভিন্ন শ্লোগান নিয়ে একটি র্যালী বের হয়ে স্থানীয় সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালী শেষে পথচারীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
পরে স্কুল প্রাঙ্গণে বড়াল বিদ্যা নিকেতন এর প্রধান শিক্ষিকা দিল আফরোজ এর সভাপতিত্বে ও বিদ্যালয়টির অঙ্কন শিক্ষক মিলন রব এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মানুষের বেঁচে থাকার বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে জন্য নদীনালা, খাল-বিল, পুকুর, প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
নন্দীগ্রামে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ
নন্দীগ্রাম প্রতিনিধি: বগুড়ার নন্দীগ্রামে মাধ্যমিক পর্যায়ে গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে শিক্ষকসহ তিন জন গুরুত্বর আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের নন্দীগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিস বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন, মাঝগ্রাম এম.এ ফাজিল মাদ্রাসার সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক আবু তালহা। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করে বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের আদেশে ৫২ তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বাছাইপর্বে রবিবার (২ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় হাটকড়ই বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী বনাম হাটকড়ই বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ৫০ মিনিটের খেলায় উভয় পক্ষের কোন গোল না হওয়ায় টাইব্রেকার এর মাধ্যমে হাটকড়ই উচ্চে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১-০ গোলে জয়লাভ করে। খেলা শেষে পরাজিত হয়ে আমার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগণ মাদরাসায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় হাটকড়ই উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অতর্কিত হামলা করে। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গুরুদাসপুরে জলাবদ্ধ স্কুলমাঠ
সংস্কার দাবিতে মানববন্ধন
গুরুদাসপুর প্রতিনিধি ঃ নাটোরের গুরুদাসপুরে পোয়ালশুড়া-পাটপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও ধানসিঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটি সংস্কারের অভাবে স্থায়ী জলাবদ্ধতার রুপ নিয়েছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে মাঠটি সংস্কারের দাবিতে এলাকাবাসী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন।
স্কুলের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফরিন সুলতানা, দশম শ্রেণির স্বাধীন মন্ডলসহ অনেকে জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে যায় তাদের খেলার মাঠ। পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় ৬ মাস জলাবদ্ধ থাকে মাঠটি। তপ্তদুপুরে মাঠে জমে থাকা গরম পানি পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে স্কুলের স্বাভাবিক পরিবেশ। নোংরা কাদাপানি পেরিয়ে এবং মশা-মাছির কামড় উপেক্ষা করে স্কুলে ক্লাস করতে হচ্ছে। দ্রæত খেলার মাঠটি সংস্কারের দাবি জানান তারা। মাঠ সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ওই হাইস্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জিয়াউর রহমান, প্রধান শিক্ষক আব্দুল আলীম ও প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক আঞ্জুয়ারা খাতুন, প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. রকি ও স্বপন আলী।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা আফরোজ বলেন, ‘ওই স্কুলের মাঠ সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই স্কুলটির নতুন ভবন নির্মাণ হবে বলেও জানান তিনি।’
দুর্গা পূজা উপলক্ষে তাড়াশে বস্ত্র বিতরণ
তাড়াশ প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে শতাধিক অসহায় নারীদের মাঝে শারদ উপহার হিসেবে বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। গত শুক্রবার সকালে উপজেলার রামবল্লভপুর শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র শাখা আশ্রমে “সনাতন ১৯৯৮-২০০০ পরিবার”র নামের সংগঠনের নিজস্ব অর্থায়ণে বস্ত্র বিতরণের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সংগঠনের পলাশ সরকার ও আশীষ সরকার। পরে সনজিত সরকারের উপস্থাপনায় রামবল্লভপুর অনুকূল চন্দ্র শাখা আশ্রমের সভাপতি শিবলাল চন্দ্র মাহাতোর সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন, আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক সুজন কুমার মাহাতো, কুড়মালি ভাষার লেখক ও গবেষক উজ্জ্বল কুমার মাহাতো, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পরেশ চন্দ্র মাহাতো, তাড়াশ উপজেলা শাখার সভাপতি সনজিৎ কুমার সিংহ, মিসাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল কুমার মাহাতো, রাজকুমার মন্ডল, নারায়ণ বৈদ্য, জয় বণিকসহ প্রমুখ। পরে বস্ত্র বিতরণ শেষে গীতি পরিবেশন করেন জিত্তি বসাক ও পবিত্র কুমার বসাক ।
“আমি সৃষ্টি করেছি জিন্ ও ইনসানকে কেবলমাত্র এজন্য যে, যেন তারা আমারই ইবাদত করে।” আল কোরআন, সূরা – যারিয়াত।
চলনবিলে পোনা ও মা-মাছ নিধনের হিড়িক
সরকারি কর্তৃপক্ষ নিরব
চলনবিল প্রতিনিধি ঃ পোনা ও মা-মাছ নিধনে চলবিলের মৎস্য অধিদপ্তর এবং উপজেলা প্রশাসনের দু’চারটি অভিযান চললেও চলনবিলের সব উপজেলায় মৎস্য অধিদপ্তরের সমন্বিত অভিযান, নজরদারি নেই। আর ঢিলেঢালা অভিযান, সংশ্লিটদের হাত গুটিয়ে বসে থাকার সুযোগে দেশীয় মাছের বড় ক্ষেত্রস্থল চলনবিলে নির্বিচারে পোনা ও মামাছ নিধন চলছে দেদার দীর্ঘদিন যাবত।
জানা গেছে, চলনবিল ছাড়াও ও ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, টাঙ্গাইল, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর সহ বিভিন্ন মাছের বাজার ও আড়তে চলনবিলের সুস্বাদু দেশীয় মাছের চাহিদা বেশি।পাশাপাশি মৎস্যজীবী জেলেরা বিলের মাছের উচ্চ মূল্য পাওয়ায় বেপরোয়াভাবে পোনা, মা-মাছ শিকার করছেন। বিশেষ করে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, রায়গঞ্জ; পাবনার ভাঙ্গুড়া,ফরিদপুর, চাটমোহর; নাটোরের বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, সিংড়াসহ এলাকার অন্তত ১০টি উপজেলায় ছোট বা পোনা মাছ নিধনযজ্ঞ চলছে পুরো বর্ষকাল ধরেই। এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহীনুর রহমান জানান, চলনবিল অঞ্চলে অভিযান চলমান আছে। পাশাপাশি স্বল্প সময়ে পোনা ও মা-মাছ নিধন বন্ধে চলনবিল অঞ্চলে একযোগে অভিযান পরিচালনা করা হবে। কিন্তৃ তিনটি জেলার সুবিস্তৃত এই বিলে কখন কীভাবে তা করা হবে সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি।
তাড়াশ ইউনিয়নের প্রশাসক ও
ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে নয়ছয় এর অভিযোগ
জাকির আকন , বিশেষ প্রতিনিধি ঃ তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ও ইউপি সদস্য সোলায়মান হোসেনের বিরুদ্ধে কাবিখা,কাবিটা,টিআর, এডিপি, মাতৃকালীন ভাতা, ভিডরিøউবি , টিসিবি,সরকারী খয়রাতিচালসহ সকল সরকালি কার্যক্রমে অনিয়ম ও দূর্ণীতির লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে । উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের মোঃ আবু হানিফ জেলা প্রশাসক সিরাজগঞ্জের নিকট লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে তদন্ত প্রদান করা হয়েছে ।
লিখিত অভিযোগে জানাযায়, সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বিশেষ সুবিধা নিয়ে ইউপি সদস্য সোলায়মান হোসেনকে দিয়ে কাবিখা,কাবিটা,টিআর প্রকল্প ও রাস্তা নির্মাণ কাজ করছেন। সদর ইউনিয়নের অন্য ওয়ার্ডের সদস্যদের সাথে মিটিং করেন না এবং কোন প্রকল্প দেন না । এমন সরকারী কর আদায়ের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে পকেটে রেখে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে । সরজমিনে ও বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, প্রকল্পের রাস্তা নির্মানের জন্য ঠিকাদার হিসাবে মেম্বর কাজ করছেন এবং কাজের লাভের অংশ অফিসার ও মেম্বর ভাগ করে নেন । অভিযোগকারী আবু হানিফ বলেন সরকারী বিধি ছাড়াই অর্থের বিনিময়ে ধনী শ্রেণীর লোকদের সরকারী বিভিন্ন কার্ড দেওয়া হচ্ছে কিন্তু টাকা দিতে না পারায় দরিদ্র মানুষ কোন কার্ড পায় না । তিনি নিরপেক্ষ ভাবে সঠিক ভাবে তদন্তের দাবী করেন । এ বিষয়ে তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে জানান অন্য ওয়ার্ডের মেম্বরগণ তাহার সাথে যোগাযোগ করেন এবং অনেকেই আত্মগোপনে থাকায় তাদের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ করা সম্ভব হয়নি । ইউপি সদস্য সোলায়মান হোসেন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অবিযোগ করে হয়রানি করা হচ্ছে ।
সাংবাদিক ফারুক আহমেদ গুরুতর অসুস্থ
সলঙ্গা প্রতিনিধিঃ ১৯৯৯ সাল থেকে সিরাজগঞ্জ হতে প্রকাশিত দৈনিক সাহসী যোদ্ধা পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি, বর্তমানে রায়গঞ্জ-সলঙ্গার বিশিষ্ট সাংবাদিক ফারুক আহমেদ ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক জাতীয় সংগ্রাম, অর্থদৃষ্টি, প্রথম প্রহর, সময়ের কথা ২৪ ঘন্টা নিউজ টিভি, মানবাধিকার চিত্র টিভি, ৯ বাংলা টিভি ও জোনাকি টিভিসহ বিভিন্ন নিউজ পোর্টালে কর্মরত এবং সলঙ্গা রিপোর্টার্স ইউর্নিটির সহ সভাপতি ফারুক আহমেদ ডান পায়ের গোড়ালিতে সমস্যার কারণে গত ১০ দিন যাবৎ গুরুতর অসুস্থ। একটু ঔষুধ খেলে কমে ব্যথা। দুই এক ঘন্টা পরে আবারও বেড়ে যায় পায়ের ঘোরালির ব্যথা। পল্লিচিকিৎসক ও স্থানীয় কবিরাজদের পারমর্শে তাড়াশ বাজারের হোমিও ডাক্তার আব্দুল হকিমের তত্ত¡াবধানে তার চিকিৎসা নেওয়াে পর ভাল না হলে তাকে সিরাজগঞ্জ মেডিনোভা হাসপাতালে তার পায়ের অপারেশন করা হয়। বর্তমানে তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।
সাংবাদিক ফারুক আহমেদের আশু রোগমুক্তির জন্য মহান আল্লাহ যেন তাকে মাফ করে দেন- আত্মীয়স্বজন,বন্ধুবান্ধব দেশবাসিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে দোয়া কামনা করেছেন।
গুরুদাসপুরে নরপশু সন্তান
সম্পত্তি না পেয়ে পিতা-মাতাকে নির্যাতন
গুরুদাসপুর প্রতিনিধিঃনাটোরের গুরুদাসপুরে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধ বাবা-মাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ছেলে ইসমাইল হোসেন ও আহসান হাবীবের বিরুদ্ধে। গত রবিবার বেলা ১১টায় উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বৃগড়িলা এলাকায় অভিযুক্তদের বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তারা।
জানা যায়, মৃত আতিকুল্লাহ মাঝির ছেলে বৃদ্ধ ইদ্রিস মাঝি (৭১) প্রায় ৯০ বিঘা সম্পত্তির মালিক। তার জমিজমা ভোগদখল করে খাচ্ছেন অভিযুক্ত দুই ছেলে। বৃদ্ধ বাবা-মাকে ঠিকমত ভরনপোষন করেন না তারা। সময়মত ওষুধ কিনেও দেয় না। বড় ছেলে ইসমাইল (৪০) লালপুর উপজেলা পোস্টমাস্টার এবং মাদকাসক্ত ছোট ছেলে আহসান হাবীব (৩২) বেকার। মূলত দুই মেয়ে নুরুন্নাহার ও শিউলী খাতুনকে বঞ্চিত করে দুই ছেলেকে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধ বাবাকে মাঝে মধ্যেই মারধর করেন তারা।গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. দুলাল হোসেন বলেন,- এ ব্যাপারে মামলা রুজু হয়েছে। আসামীদের দ্রæত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে
তাড়াশে “মানবতার আহবান” কর্মসূচি শুরু
তাড়াশ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মো: ইমরান এইচ সজিব এর উদ্যোগে “মানবতার আহবান” নামে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।গত ১৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকালে পৌরসভার শহরে এ কর্মসূচি শুরু করা হয়। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো অসহায় দরিদ্র ক্ষুধার্ত মানুষ যেন বিনামূল্যে শুকনো খাবার মনের আনন্দে খেতে পারে। এ জন্য পৌর শহরে ৬টি খাদ্য সামগ্রী রাখার ঝুড়ি স্থাপন করা হয়েছে। এই ঝুড়িগুলোতে খাদ্য সহায়তার জন্য তিনি বিবেকবান মানুষদের প্রতি আহবান করেছেন।
ইমরান এইচ সজিব এর কাছে এমন উদ্যোগের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিতারিত করার পর থেকেই আমরা জিয়াউর রহমানের আদর্শে গড়া ছাত্রদলের কর্মী হিসেবে তাকে অনুসরণ করে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এর মধ্য দিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বপ্নের দেশ বিনির্মাণ হবে।
তাড়াশে সরকারি রাস্তা থেকে
গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ
চলনবিল প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ১নং তালম ইউনিয়নের কলামুলা(নামা কলামুলা) গ্রামে সরকারি রাস্তারর পাশ থেকে লাখ টাকা মূল্যের গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মোঃ মমিন হোসেন (৬০) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে ১৫টি ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে পাশের রাস্তার উপর রাখা হয়েছে। মমিন হোসেন কলামুলা গ্রামের বাসিন্দা। গাছ ক্রেতা একই ইউনিয়নের দামড়া গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে সরকারি গাছ কেন কিনেছেন বল্লে তিনি বলেন, আমি মমিনের কাছ থেকে গাছ কিনে নিয়েছি। আমার এখানে কোন দোষ নেই। এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত জাহান বলেন, সরকারি রাস্তার পাশ থেকে গাছ কাটার কোনো সুযোগ নেই। আমি খবর পাওয়া পর সেখানে ইউপি চেয়ারম্যানকে পাঠিয়েছি।কাটা গাছগুলো জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিংড়ার সাংবাদিক রানা
হেফাজতের উপদেষ্টা
সিংড়া প্রতিনিধি ঃ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ নাটোরের সিংড়া পৌর শাখার উপদেষ্টা হলেন সিংড়া প্রেসক্লাব ও হিলফুল ফুজুল বাংলাদেশ এর সভাপতি সাংবাদিক মোল্লা মোঃ এমরান আলী রানা।
গত সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাদ মাগরিব সিংড়া হামিদিয়া জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসায় সংগঠনের জেলা সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাদানীর সভাপতিত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়।উক্ত কমিটিতে মুফতি সৈয়দ মোল্লাকে সভাপতি ও মুফতি ইউসুফকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।পৌর শাখার উপদেষ্টা কমিটিতে মোল্লা মোঃ এমরান আলী রানাকে উপদেষ্টা করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সিংড়ার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়।
তাড়াশে পূজা উপলক্ষে নারকেলের দাম চড়া
তাড়াশ প্রতিনিধিঃ আসন্ন শারদীয়া দূর্গা উৎসব। যার প্রস্তুতি চলছে গ্রামে গ্রামে পাড়া মহল্লায়। যেমন- পুজার প্রতিমা শিল্পীরা প্রতিমায় রঙের শেষ আচঁড় আঁকছেন। জোরে সোরে চলছে মন্ডপের ডেকোরেশনের কাজ, পাশাপাশি চলছে বাড়ির সদস্যদের পোশাকসহ পুজার প্রয়োজন দ্রব্যাদি কেনা কাটা। আবার পূজা মন্ডপের বাহিরে অন্দর মহলে শেষ মর্হুতের ধোয়া মোছার কাজও। একই সাথে পুজার অন্যতম অনুসঙ্গ পুজা কালে সংকল্প ও নাড়– তৈরির প্রধান উপকরণ নারকেল কেনার তোরজোড় ও নাড়– তৈরি করার বার্ষিকী আয়োজন।
মুলতঃ নারকেল পুজার আগেই উচ্চবিত্ত থেকে নিন্মবিত্ত সবাই কম বেশি কেনেন। কিন্তু গত এক সপ্তাহেরর ব্যবধানে চলনবিল অঞ্চলে সব ধরনের নারকেলের দাম বেড়ে গেছে। বিশেষ করে গ্রাম গঞ্জের হাট বাজারে প্রতি জোড়া ছোট, মাঝারি, বড় আকারের সকল নারকেল প্রকার ভেদে জোড়ায় বেড়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। বৃহস্পতিবার চলনবিলের নারেকেলের জন্য প্রসিদ্ধ হাট ও বাজারে চান্দাইকোনা, সাইকোরা, কাছিকাটা, নওগাঁ, মীর্জাপুর, হান্ডিয়াল, অবশ্য রাযগঞ্জের নিমগাছী গ্রামের গৃহিনি মারতি রানী পোদ্দার জানান, দূর্গা পুজা তো বছরে একবারই আসে। আর অতিথি অপ্যায়নে বাঙালি সনাতন পরিবারে পুজা কালে নাড়–, মুড়ি, খই ছাড়া ভাবা যায়না। তাই নারকেলের দাম যাই বাড়–ক বেশি কিনতে না পারলেও কিছু তো কিনতেই হবেই।
চল্লিশ বছর পর চলনবিলে ‘হেইয়াবোল’
আলী আক্কাছ, গুরুদাসপুর (নাটোর) ঃ চারদশক পর হঠাৎ জেগে উঠলো চলনবিল। ১শ’ ফিটের বাহারি নৌকাগুলোর বাইচ দেখতে বিলের দুইপাড়ে লাখো মানুষের ঢল। মুহুর্মুহু বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দে এগিয়ে চলছে একেকটি নৌকা। সেই শব্দে তাল মিলিয়ে গর্জন করে উৎসুক দর্শনার্থীরা প্রেরণা দিচ্ছিল বাইচের নৌকায়।বেরসিক বৃষ্টি বাধা হতে পারেনি অদম্য প্রতিযোগিদের। আল্লাহ-রাসুলের নাম নিয়ে হেইয়াবোল-হেইয়াবোল সহ নানা শ্লোক আর নেচে গেয়ে চলনবিলের বিলসাসহ কাটাগাং নদী এলাকায় দারুন ছন্দের সূচনা করেন মাঝিরা। ঐতিহ্যের এ নৌকা বাইচের বর্ণিল আয়োজনে গ্রাম বাংলার চারপাশ রাঙিয়ে যায় উৎসবে।
নাটোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গুরুদাসপুরের খুবজীপুর ইউনিয়নের বিলসা এলাকায় কাটাগাঙে ওই নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়। “নদী দূষণ রোধ করি, নির্মল বাংলাদেশ গড়ি” প্রতিপাদ্যে আয়োজিত প্রতিযোগিতাটি মা জননী সেতু থেকে রুহাই পর্যন্ত দুই কিলোমিটার বিস্তৃত জলপথে অনুষ্ঠিত হয়।
নাটোর জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক গুরুদাসপুরের শহিদুল
গুরুদাসপুর প্রতিনিধি ঃ ভালো কর্ম করলে ভালো ফল মেলে। তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ গুরুদাসপুরের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম। আদর্শ ও নীতিবান এই শিক্ষক নাটোর জেলার শ্রেষ্ঠ গুণী প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন।
জানা যায়, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহা. আব্দুল হান্নান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শহিদুল ইসলাম উপজেলার যোগেন্দ্রনগর-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি ১৯৯৩ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন। ২০০০ সালের ৩ মার্চ থেকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।এ পর্যন্ত সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ শিক্ষাদানে অবদান রাখায় ওই শ্রেষ্ঠ গুণী প্রধান শিক্ষকের মর্যাদা লাভ করেন শহিদুল ইসলাম। চাঁচকৈড় বাজারপাড়া মহল্লায় তাঁর মাতা-পিতার নামে শাহিদা-জলিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। গুরুদাসপুরে একটি ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবও পরিচালনা করেন তিনি।শহিদুল ইসলাম বলেন, তারা তিনভাই দুইবোন। ছোটভাই শাহীনুর ইসলাম আমেরিকার সফ্টওয়ার ইঞ্জিনিয়ার এবং মেজো ভাই শফিকুল ইসলাম খুবজীপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক। তাকে জেলার শ্রেষ্ঠ গুণী প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জনাব আলী বলেন, ‘যোগ্য ব্যাক্তি শহিদুল ইসলামকে শ্রেষ্ঠ গুণী প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত করায় আমরা গর্বিত। আশা করছি তিনি বিভাগীয় পর্যায়েও শ্রেষ্ঠ হবেন।’
তাড়াশে পরিবর্তনের কর্মসূচি মূল্যায়ন
স্টাফ রিপোর্টার ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে কর্মরত বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের সহযোগী সংস্থা পরিবর্তন কর্তৃক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে বাস্তবায়িত ১ থেকে ১০ম পর্যায়ের কর্মসূচির উপকারভোগীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, পরিবর্তন এক যুগ হল ফাউন্শেনের অর্থ সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে এবং তা বর্তমানেও অব্যাহত আছে।
এদিকে গত ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকার মিরপুরের ডুবেএমটি কনসালটিং ফার্মের গবেষণা কর্মকর্তা মো. গাইদুর রহমান পরিবর্তন বাস্তবায়িত বিভিন্ন পর্যায়ের প্রকল্প উপকারভোগীদেন সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করে কথা বলে মূল্যায়ণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এ লক্ষ্যে তিনি তাড়াশ, দেশীগ্রাম ও মাধাইনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ১০জন পুরাতন উপকারভোগীর পেশাগত কর্মকান্ড পরিদর্শনের মাধ্যমে তাদের সাথে পৃথক পৃথকভাবে একান্তে আলাপ করেন। পরে তিনি পরিবর্তন অফিস পরিদর্শনকালে সংস্থার পরিচালকসহ কর্তকর্তাদের সাথে আলোচনায় মিলিত হন।শেষে সংস্থার পরিদর্শন বইয়ে মূল্যায়ণ কার্যক্রমের ফলাফল ভালো বলে উল্লেখ করেন।