তিনি এখন সরকারি কলেজের নন ক্যাডার প্রভাষক

Spread the love
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি 
নিবন্ধন সনদ জাল ধরা পড়লেও কোনো শাস্তি পেতে হয়নি পাবনার ভাঙ্গুড়া সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রভাষক সালমা খাতুনকে। উল্টো ওই কলেজেই প্রভাষক পদে পুনরায় চাকরি পেয়েছেন তিনি। অথচ একি অপরাধে কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক নাজনীন নাহারকে কারাভোগ করতে হয়েছে। কলেজটি জাতীয়করণ হওয়ায় সালমা খাতুন এখন সরকারি কলেজের নন ক্যাডার প্রভাষক ! পাচ্ছেন  সরকারি বেতন-ভাতাও । মাউশি থেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অধ্যক্ষকে একাধিকবার চিঠি পাঠালেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে , ২০১০ সালের ২৫ অক্টোবর হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের ভূগোল বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন সালমা খাতুন। ২০১৪ সালে কলেজে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অডিট করেন। ২০১৫ সালে প্রকাশিত অডিট রিপোর্টে  প্রভাষক সালমা খাতুনসহ কলেজের তিন শিক্ষকের নিবন্ধন সনদ জাল ধরা পড়ে। অডিট কর্মকর্তার সুপারিশে মাউশি ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে তৎকালীন অধ্যক্ষ শহিদুজ্জামানকে নির্দেশ দেয়। এর কিছুদিন পর কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক নাজনীন নাহারের নিবন্ধন সনদও জাল ধরা পড়ে। এর প্রেক্ষিতে প্রভাষক নাজনীন নাহার ও প্রভাষক সালমা খাতুন সহ চার শিক্ষক চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। এদের মধ্যে অধ্যক্ষ শহিদুজ্জামান শিক্ষিকা নাজনীন নাহারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে তিনি কারাভোগ করেন। অন্যদিকে অদৃশ্য কারণে জাল সনদধারী অন্য  শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
এরপর এসব পদে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তখন সালমা খাতুন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মো. মকবুল হোসেন ও অধ্যক্ষসহ নিয়োগ বোর্ডকে ম্যানেজ করে পুনরায় ২০১৬ সালের ৯ জানুয়ারি স্নাতক স্তরে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। তবে দ্বিতীয়বার নিয়োগে তিনি অন্য আরেকটি নিবন্ধন সনদ ব্যাবহার করেন।এদিকে ২০১৮ সালে কলেজটি জাতীয়করণ হলে সালমা খাতুন সরকারি নন ক্যাডার প্রভাষক হিসেবে সরকারি বেতন-ভাতা ভোগ করতে শুরু করেন। অথচ সর্বশেষ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সালমা খাতুন সহ জাল নিবন্ধন সনদে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠায় মাউসি। এরপরও  তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। উল্টো সালমা খাতুনকে স্নাতক স্তরে নতুন  করে নিয়োগ দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়! এ বিষয়ে অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষিকা সালমা খাতুন বলেন, ‘আমি ২০১০ সালে প্রথম নিয়োগ পাই। এরপর অডিটে আমার নিবন্ধন সনদ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে আমি চাকরি থেকে রিজাইন দেই। পরবর্তীতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নতুন করে নিয়োগ পেয়েছি। এতো কোনো অসুবিধা থাকার কথা না। এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. শহিদুজ্জামান এর বক্তব্য  জানতে চাইলে তিনি  বলেন, সালমা খাতুনের নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিক আছে।তার সনদও ঠিক আছে। তবে প্রথমবার নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আর কোনো বক্তব্য নাই।কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল লতিফ বলেন,  কলেজটিতে আমি দু’বছর আগে যোগদান করেছি। তার নিয়োগ ও যোগদান সবকিছু আগের অধ্যক্ষের সময়ই হয়েছে। তার জাল নিবন্ধনের বিষয়ে মাউশি’র চিঠির জবাব দেয়া হয়েছে।এ বিষয়ে মাউসির সহকারি পরিচালক (কলেজ-১) মুহাম্মদ সফিউল বশর বলেন, জাল নিবন্ধনের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD