নওগাঁ মাজার- রঙমহল সড়ক পাকাকরণ কাজ
শেষ না করে তিন বছর হলো ঠিকাদার লাপাত্তা
ষ্টাফ রিপোটারঃ
সড়কের পাকা করণের কাজ হয়েছে মোট কাজের ৬০ ভাগ। ঠিকাদার বিল তুলেছেন মোট বিলের ৮০ ভাগ। এরপর বাঁকী ৪০ ভাগ কাজ শেষ না করেই তিন বছর যাবত ঠিকাদার লাপাত্তা রয়েছেন। আর দীর্ঘ সময়েও সিরাজগঞ্জের তাড়াশে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নওগাঁ মাজার থেকে রঙমহল পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণ কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় জন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরা বিপাকে পড়েছেন। ইতিমধ্যেই সড়কে বিছানো খোয়া উঠে, ধুলা- বালি জমে সামান্য বৃষ্টিতে কাঁদা হয়ে চরম জন দূর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমনি অভিযোগ স্থানীয়দের।
অবশ্য, সংশ্লিষ্ট বিভাগ কাজটি শেষ করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগাদা দিলেও ঠিকাদারের কোন রকম সাড়া না পেয়ে কার্যাদেশ বাতিল করেছেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন, তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক।
তাড়াশ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্র থেকে জানা যায়, গত ২০২১-২২ অর্থ বছরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব¡পূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প-৩ এর আওতায় তাড়াশ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ মাজার হতে রঙ মহল পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের কাজ হাতে নেয়। এ কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ বরা হয় ৬৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৯৪ টাকা। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ৬৬ লাখ ১১ হাজার ৮৯৯ টাকায় কার্যাদেশ পায় মেসার্স সাব্বির এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। যে কাজটি ২০২২ সালের ৩০ জুলাইয়ে মধ্যে সম্পূর্ণ করার কথা চুক্তিতে উল্লেখ ছিল। কিন্তু প্রায় তিন বছরেও তা শেষ হয়নি।
এ দিকে ২০২১ সালে ২২ অক্টোবর তৎকালিন সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ সড়কটির পাকাকরন কাজ শুরুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। উদ্ধোধনের পরপরই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাব্বির এন্টারপ্রাইজ সড়কের উভয় পাশে এজিং করে বালি ফেলে, খোয়া বিছিয়ে দেন। তারপর সড়কের অবশিষ্ট কাজ অসমাপ্ত রেখেই ঠিকাদারী প্রদিষ্ঠান লাপাত্তা হয়ে যায়। সেই থেকে প্রায় তিন বছর যাবত সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। যাতে করে ওই সড়কে চলাচলকারী জনসাধারণের চলাচলের সুবিধা না হয়ে যারপর নাই ভোগান্তি কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনি ভাষ্য এলাকার স্কুল শিক্ষক মো. মিজানুর রহমানের।
যদিও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মোট কাজের ৬০ ভাগের জন্য ৮০ ভাগ বিল দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বিল পেলেও পুরো কাজ শেষ না করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাতের অন্ধকারে তাঁদের বেস ক্যাম্প গুটিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন। যার প্রেক্ষিতে কাজটি সম্পূর্ণ করার জন্য এলজিইডি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বারবার চিঠি চিালাচালি করে তিন বছর পার করলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাঙ্খিত সাড়া মেলেনি। নিরুপায় হয়ে সংশ্লিট বিভাগ কার্যাদেশ বাতিল করেছেন। এখন চলছে পূনঃ দরপত্র আহবানের প্রক্রিয়া। এমন ভাষ্য সংশ্লিট বিভাগের।
যদিও জন গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়ক দিয়ে ঐতিহাসিক নওগাঁয়ে হযরত শাহ শরীফ জিন্দানী (রঃ) মাজার, নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজ, নওগাঁ ফাজিল মাদ্রসা, নওগাঁ হাট ও বাজার, নওগাঁ সোনালী ব্যাংক, নওগাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ অফিসে যাতায়াত করতে হয়। সে কারণে অধিক জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির অসম্পূর্ণ কাজ অল্প সময়ে শেষ করার দাবী জানিয়েছেন, রহমত আলী, সোনা মিয়া, আব্বাস উদ্দিনসহ আরো অনেক এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাব্বির এন্টারপ্রাইজের সত্বাধীকারী মো. আলম হোসেনের সাথে মুঠো ফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হোননি।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন, প্রকল্পের পিডি সড়কটি পরিদর্শন করেছেন। ঠিকাদার প্যালাসাইডিং, বক্স কাটিং, সাববেজ, এজিং, সেন্ট ফিলিং ও ডব্লিউবিএম করেছে। সে অনুযায়ি আমারা বিল পাঠিয়েছি। দীর্ঘদিন তাগাদা দিয়ে কোনো সাড়া না পাওয়ায় ওই ঠিকাদারের চুক্তিপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এম.আতিকুল ইসলাম বুলবুল
