তাড়াশে তালের শাঁস বিক্রি ধুম পরেছে

Spread the love
মোঃ মুন্না হুসাইন: প্রচন্ড গরম পড়েছে বেশ কিছুদিন যাবৎ। এই গরমেও সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিভিন্ন হাটবাজারে সুস্বাদু তালের শ্বাস বিক্রির ধুম পড়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছেই প্রিয় এই শ্বাস। কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জ্যেষ্ঠের ভ্যাপসা গরমে শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে ভূমিকা রাখে এ ফলটি। রয়েছে বিভিন্ন রকমের ওষুধি গুণও।
বাংলাদেশের সর্বত্র তালগাছ দেখা যায়। তালগাছ শাখা-প্রশাখাবিহীন একবীজপত্রী উদ্ভিদ। তালগাছ বাড়ির আনাচে-কানাচে, পুকুর পাড়ে, নদীর ধারে, পরিত্যক্ত স্থানে বেশি দেখা যায়। তবে দিনে দিনে বিলুপ্তির পথে তালগাছ। তালগাছ কিন্তু দীর্ঘজীবী। পৃথিবীর বহু দেশে তালগাছ আছে। এই গাছ কমবেশি শতবছর বাঁচে। তালগাছের প্রতিটি অংশই আমাদের প্রয়োজনীয়। পাতায় ঘরের ছাউনি, জ্বালানি, গরমের বন্ধু হাত পাখা, পাতার ডগার আঁশ দিয়ে মাছ ধরার নানা যন্ত্র তৈরির উপকরণের জোগানদার এই তালগাছ। মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানির বিখ্যাত টুপি এই তালের আঁশ দিয়েই তৈরি। তালের ডোঙা বর্ষাকালে গ্রাম-বাংলার অন্যতম বাহন। তালের রস, তালের গুড়, কচি তালের শাঁস, পাকা তাল, তালের পিঠা, পাকা তালের বিচির শাঁস এসবই অত্যন্ত মজার ও উপাদেয় খাবার। আর তালের দীর্ঘজীবনের প্রায় পুরোটা সময়ই ফল দেয়।
কলেজছাত্র পার্থ ঘোষ বলেন, তাল যখন কাঁচা থাকে, তখনও খাওয়া যায়, তখন বাজারে এটি পানি-তাল হিসেবেই বিক্রি হয়। কেউ বলে তালশাঁস আবার কেউ বলে তালের চোখ, কেউ বলে তালকোরা।
যে যেই নামে চিনুক বা জানুক এটি মৌসুমি ফল। জ্যৈষ্ঠ মাসে বিভিন্ন ফলের সঙ্গে এই ফলেরও কদর বাড়ে। খেতে সুস্বাদু ফলটি রাস্তার মোড়, ফুটপাথ কিংবা হাট-বাজারে এ সময়টায় দেদার বিক্রি হয়। অনেকে বিক্রির জন্য এই কচি তাল বাজারে তুলেছেন। আর চোখে পড়ে বিক্রেতারা হাঁসুয়া বা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাল কেটে তালের শাঁস বের করছে।
উপজেলার সদরের কলেজগেটে তালশাঁস বিক্রেতা হোসেন আলী জানান, প্রতিটি তাল ১০ থেকে ১৫ টাকা বেচাকেনা হয়। প্রতিটি তালের পাইকারি দাম ৪ থেকে ৬ টাকা। সে হিসাবে প্রতি গাছের তাল ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা করে বিক্রি হয়।
প্রবীন ব্যক্তি শাহ আলম জানান, বাজারে আসা অসংখ্য ফলের চেয়ে তাল শাঁসের বৈশিষ্ট্য আলাদা। একটি তালে ২-৩টি বীজ বা আঁটি থাকে। পরিপক্ব হওয়ার আগে সুস্বাদু তাল শাঁস তুলতুলে থাকে। মূলত তালের ভেতরে নরম তুলতুলে শাঁসই তালকোরা বা তাল শাঁস। এটি ঠান্ডা ও মিষ্টিজাতীয় সুস্বাদু খাবার। সব বয়সের মানুষের কাছে প্রিয়। গরমের দিনে পিপাসা কাতর পথিকের তৃষ্ণা মেটায় তালের শাঁস দিয়ে। তাল বিক্রেতা মহরম আলী বলেন, শিশু, কিশোর, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সবার কাছে প্রিয় তালের শাঁস। আবার মৌসুমি ফল বলে শখের বশেই অনেকে এটি খায়। দামেও বেশ সস্তা। তাই বাজারে এর কদরও বেশি। পাড়া মহল্লায় ভ্যানে নিয়ে ফেরি করে বিক্রি করেন তিনি।
Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD