লুৎফর রহমান: ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, জাতিকে উন্নত করতে হলে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই’। আর শিক্ষা হলো এমন একটি অদৃশ্য শক্তি যা ইচ্ছা করলে অন্য কেউ কেড়ে নিতে পারে না। আর সেই অদৃশ্য শক্তির প্রথম ধাপ হলো প্রাথমিক শিক্ষা। তাই প্রাথমিকের ভীত শক্ত করতে সরকারের রয়েছে নানাবিধ পরিকল্পনা। যা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার, ও তার সহযোদ্ধা একাধিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাবৃন্দ। শিক্ষা কর্মকর্তার যোগ্য নেতৃত্বে প্রাথমিক শিক্ষার ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়। অনেক শিক্ষা কর্মকর্তা আছেন যারা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে সরকারি নীতিমালার পাশাপাশি বিভিন্নমুখী উদ্যোগী কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকেন। যে উদ্যোগগুলো মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
এ দিকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম দিনে তাড়াশ উপজেলায় যোগদান করেন, বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. মুসাব্বির হোসেন খান। চলমান এক বছরে তাড়াশ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছেন তিনি। এতে করে যুগোপযোগী পাঠদানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি রোধ হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ার হার। মুসাব্বির হোসেন খানের প্রচেষ্টা ও দিক নির্দেশনায় এরই মধ্যে বদলে গেছে তাড়াশ উপজেলার ১৩৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার চিত্র এবং সুফল পেতে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। সাড়া দেশের ন্যায় বছরের প্রথম দিনে তাড়াশ উপজেলার ১৩৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই উৎসব পালন হয়েছে। পাশাপাশি জানুয়ারী মাসেই উপজেলার ওই সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ২১ হাজার শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে বাংলা ও ইংরেজী খাতা। ইহাতে শিক্ষার্থীদের হাতের লেখা সুন্দর হবে এবং অর্থরোধ হবে অভিভাবকদের। এছাড়াও উপজেলার সকল প্রাক-প্রাথমিকের শ্রেণিকক্ষ সাজানো হয়েছে নানান রংয়ে ও বর্ণে। কোমলমতী শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি নন্দন করতে সকল শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি ভবনের সন্মুখভাবে অংকণ করা হয়েছে স্মরণীয় বরণীয় ব্যক্তি’র ছবি ও বাণী দিয়ে। ‘আমাদের স্কুল, এযেন এক রঙ্গিন ফুল’ শুধু লেখায় নয়, বাস্তবে সেটি দৃশ্যমান। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার এমন উদ্যোগে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এলাকার সকল সুধীজন, অভিভাবকসহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও কর্মরত শিক্ষকরাও।
উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি আইয়ূবুর রহমান রাজন বলেন, আমাদের শিক্ষা অফিসার সৎ এবং পরিশ্রমী মানুষ। ঘুষ ও দূর্ণীতিকে কোনরুপ প্রশ্রয় দেন না। অন্যদিকে তিনি একজন শিক্ষকবান্ধব অফিসার। তার পরিকল্পনা শতভাগ বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের মধ্যে তাড়াশ উপজেলার একটি উদাহরণকারী।
তাড়াশ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সনাতন দাশ বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে কাজ করছেন শিক্ষা অফিসার মুসাব্বির হোসেন খান। ইতিমধ্যে কিছু বাস্তবায়ন হলেও সম্পূর্নটা বাস্তবায়ন হওয়া জরুরী।
বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ময়নুল হক জানান, মুসাব্বির হোসেন খান অত্যান্ত দক্ষ ও ভালো মনের মানুষ। তিনি কোন ঘুষ দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন না।
উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন জানান, শিক্ষার যে বুনিয়াদ সেটি শুরু হয় প্রাথমিক শিক্ষার স্তরে। যদি সফলভাবে প্রতিটি শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার চেতনা এবং শিক্ষার সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করা যায় তাহলেই সাধিত হবে দেশের উন্নয়ন। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার। আর তা বাস্তবায়ন করছেন আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমন্ডলী।
তাড়াশ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. মুসাব্বির হোসেন খান উপজেলার শিক্ষা কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করে তুলেছেন। তার কর্মদক্ষতা দিয়ে তাড়াশবাসীর মনজয় করেছেন। এটি অব্যাহৃত থাকলে শিক্ষারমান আরো উন্নতি হবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. মুসাব্বির হোসেন খান বলেন, আমি আমার দায়িত্বে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন, উন্নয়নের যে মহাসড়কে আজ বাংলাদেশ ধাবমান সেই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে অত্যন্ত জরুরী।