স্টাফ রিপোর্টার : বিভিন্ন প্রভাবশালী মহল কর্তৃক ক্রমাগত দখল ও ভূমি গ্রাসের ফলে দ্রুতই হারিয়ে যাবার পথে ঐতিহ্যব্হাী তাড়াশ চক্ষু হাসপাতাল । বর্তমানে এটা সিরাগঞ্জস্থ অধ্যাপক এমএ মতিন মেমোরিয়াল বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের সহায়তায় কেনোরুপে ধুঁকে ধুঁকে চলছে। তবে এই ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠানটি বিলুপ্ত হতে আর বেশী দিন বাকি নেই। তেমনটি হলে তাড়াশবাসীর দুর্ভাগ্য বটে । কেননা এমন একটি জনকল্যাণকর বিশেষ ধরনের হাসপাতাল আর কখনই তাড়াশে স্থাপন করা সম্ভব হবে না।
এর পূর্বে এই হাসপাতাল সম্পর্কে সর্বশেষ খবর ছিল, স্থানীয় একটি লোভী আগ্রাসী সিন্ডিকেট মহল অপ্রমাণিত দলিল ও কোর্টের রায় তাদের পক্ষে দেখিয়ে তাড়াশের একমাত্র চক্ষু হাসপাতালের অধিকাংশ জায়গা বেদখল করে। এটা কয়েক বছর পূর্বের ঘটনা। সেই থেকে তারা বেড়ার প্রাচীর দিয়ে ঘিরে এ চক্ষু হাসপাতালের উত্তর প্্ূর্ব পাশের সবটুকু ফাঁকা জায়গা ঘিরে ফেলে। লক্ষ্য, এটা দখলে নিয়ে কোনো ঘরবাড়ি নির্মাণ করা। তখন তাড়াশ চক্ষু হাসপাতালের অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে আশংকা করে চলনবিল বার্তাসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রে খবর প্রকাশ সত্বেও কোন কাজ হয় নি। দখলদাররা এ সময় চুপটি করে ও ঘাপটি মেরে কিছুকাল তাদের তৎপরতা বন্ধ রেখে সুযোগের অপেক্ষায় ছিল।
সর্বশেষ সদ্য গত ১৫ অক্টোবর ২০২২ শনিবার সকালে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, চক্ষু হাসপাতালের বিশাল এলাকা জুড়ে দীর্ঘ লম্বা পাকা দেয়ালের সাড়ি সাড়ি বিল্ডিং ঘর নির্মাণ শুরু হয়েছে মার্কেট করার আদলে। এখন পূবের প্রধান সড়কে দাঁড়িয়ে পশ্চিমে তাকালে আগের মতো আর চক্ষু হাসপাতালের ভবনগুলো দেখা যায় না। বুঝতে অসুবিধা হয় না , এগুলো শীঘ্রই দৃষ্টি সীমানা থেকে হারিয়ে দখলকারীদের ভবনের আড়ালে পড়ে যাবে। তাড়াশের এই বিশেষায়িত হাসপাতাল শুধু তাড়াশ নয়, গোটা চলনবিলের মানুষের বিশেষ উপকারে তথা চক্ষু চিকিৎসা সেবা দিয়ে এসেছে সেই আশি দশক থেকে। এরকম একটি স্থানীয়ভাবে বিরল ও দুর্লভ চক্ষু হাসপাতাল তাড়াশের মতো প্রত্যন্ত-পশ্চাৎপদ উপজেলায় আর কখনই করা সম্ভব হবে বলে বিশ^াস ও কল্পনা করা যায় না। এই চক্ষু হাসপাতালটি দখলদারদের অশুভ কবল এবং করাল গ্রাস থেকে রক্ষার্থে স্থানীয় কোন উদ্যোগ এমনকি প্রতিবাদও চোখে পড়ল নাএ যাবৎ যা খুবই দুঃখজনক। এমন একটি অনন্য প্রতিষ্ঠান তাড়াশের জন্য ছিল সুস্পষ্ট বাস্তব আশীর্বাদ। অথচ তাড়াশ সদরের কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল গোপন যোগসাজসে ও বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে সুকৌশলে ম্যানেজ করে হাসপাতালটির সুবিস্তৃত অঙ্গন নিজেদের কব্জা করে এ রিপোর্ট লেখার সময় তাদের ব্যক্তিগত ঘরবাড়ি নির্মাণ শুরু করে দিয়েছে।
তবে এখনও কিছু সময় আছে। অবিলম্বে কুচক্রীদেওর উক্ত অপতৎপড়তা রুখে দিতে দ্রুত পয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে তাড়াশের মাননীয় সাংসদ, উপজেলা প্রশাসন ও নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দকে যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জোর দাবি জানিয়েছে তাড়াশ উপজেলাবাসী। তাছাড়া শীঘ্রই তাড়াশ চক্ষু হাসপাতালের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে সন্দেহের অবকাশ নেই। আর তেমনটি হলে চিরকালের জন্য তাড়াশের মানুষ বঞ্চিত হবে নিজেদের দোরগোড়ায় বিদ্যমান মহামূল্যবান জীবন রক্ষাকারি এই জনসেবামূলক চক্ষু চিকিৎসা সেবা থেকে তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।