সোনালি আঁশে সোনালি স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা
আবুল কালাম আজাদ.
আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবারে পাটের বাম্পার ফলনের আশা করছেন গুরুদাসপুরের পাট চাষীরা। গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরও এমনটাই আশা করছেন। কিন্তু বাদ সেধেছে বাজারে রাসায়নিক ইউরিয়া সারের কৃত্রিম সংকট। সোনালি আঁশে সোনালি স্বপ্ন দেখছেন পাট চাষিরা।নাটোরের গুরুদাসপুরের চাষীরা আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সুষ্ঠুভাবে রবি শষ্য ( রসুন, গম, কালাই,বাঙ্গি,তরমুজ,ভুট্রা ইত্যাদি) ফসল ঘর উঠানোর পর ধান চাষ কমিয়ে দিয়ে ব্যাপকভাবে অধিক ফলন এবং লাভের আশায় পাট চাষের দিকে ঝুঁকেছেন। এ পর্যন্ত পাট চাষের উপযোগি আবহাওয়া বিরাজ করায় মাঠে মাঠে ভরে উঠেছে পাটের সবুজের সমারহ। পুবান হাওয়ায় দোল খচ্ছে পাটের সবুজ পাতা।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো হারুনর রশিদ জানান, গত বছরে পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা গত বছরের চেয়ে ৩০০ হেক্টর অর্থাৎ২ হাজার ১৭৫ বিঘা বেশি জমিতে পাট চাষ করেছেন। এ বছর ২০২২ মৌসুমে উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে ৪ হাজার ১৫০ হেক্টর বা ৩০ হাজার ৮৮ বিঘা। গত বছর ২০২১ মৌসুমে চাষ হয়েছিল ৩ হাজার ৮৫ হেক্টর বা ২৭ হাজার ৯১৩ বিঘা। মাটি এবং ভৌগলিক অবস্থানে গুরুদাসপুর উপজেলায় সাধারনতঃ তোষা এবং দেশী দুই জাতের পাট চাষ করা হয়। এর মধ্যে তোষা জাতের ৪ হাজার হেক্টর বা ২৯ হাজার বিঘা এবং দেশী জাতের ১৫০ হেক্টর বা ১ হাজার ৮৮ বিঘা চাষ হয়েছে। উপজেলায় পাট চাষির সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার।উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা ( এইও) মোঃ মতিয়ার রহমান জানান পাট চাষিরা যাতে ভাল ফলন পায় সেজন্য মাঠ পর্যায়ে উপ সহকারি কৃষি অফিসাররা এবং তিনি নিজে পাট চাষের আধুনিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি বিষয়ে সার্বক্ষনিক মাঠে থেকে হাতে কলমে পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি জানান ,এক বিঘা পরিমান জমিতে পাট চাষে ঘরে ওঠানো পর্যন্ত উতপাদন খরচ হয় ১২ হাজার টাকা । বিঘায় পাটের ফলন হয় ৮ মন। মওসুমে বাজার দর মোতাবেক পাট ২০ হাজার টাকা এবং পাটখড়ি বিক্রি করছে ২-৩ হাজার টাকায়।বিঘায় পাট চাষ করে কৃষকরা খরচ বাদে মওসুমেই লাভবান হচ্ছেন ১১ হাজার টাকা। মওসুমের পর এবারে বর্তমানে বাজারে পাট বিক্রি হচ্ছে ৩ – ৪ হাজার টাকা মন। এছাড়া পাট কাটার পর ঐ পাটের জমিতে রোপা আমন এবং মাসকালাই, কাতিকালাই আবাদ করে অধিক লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
চলতি খরিপ মওসুমে হঠাত করে বাজারে রাসিয়নিক ইউরিয়া সারের সংকটের কারন জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, বিগত বছরের চেয়ে এবারে ২ হাজার ১৭৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ বেশি হওয়ায় ইউরিয়া সারের চাহিদা বিগত বছরের চেয়ে বেড়ে গেছে।বিগত বছরের বিবেচনায় পর্যাপ্ত সারের মজুত ছিল। কিন্তু এবারে বেশি জমিতে পাট চাষ হওয়ায় সাময়িক ইউরিয়া সারের সংকট দেখা দিয়াছিল। তবে নতুন করে আরো ২৪০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বিসিআইসি অনুমদিত ১০ ডিলারকে বরদ্ধ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বাজারে সারের সংকট নাই বলে কৃষি অফিসার এবং বিসিআইসির ডিলাররা দাবি করছেন। তিনি আরো জানান, গুরুদাসপুর উপজেলা ছাড়াও পার্শবর্তি তাড়াশ, বড়াইগ্রাম, সিংড়া ও নাটোর সদর উপজেলার কৃষকরাও গুরুরদাসপুর উপজেলার বরয়াদ্দ সার কিনছে। তাই সারের ওপড় চাপ বেড়েছে। তারপরো কৃষকদের চাহিদা বিবেচনায় সারের আরো চাহিদা দেয়া হয়েছে। শিঘ্রই ইউরিয়া সারের সাময়িক সংকট থাকবেনা । এতে আতংকের কারন নাই ।##
# আবুল কালাম আজাদ, গুরুদাসপুর, নাটোর,০১৭২৪০৮৪৯৭৩ # ১২/৬/২২ ##
|