প্রেস বিজ্ঞপ্তি
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) এর ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ
বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের হাজতি জহিরুল হাওলাদার (২৩) ১৩ মার্চ, ২০২২ তারিখ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ করে বুকে ব্যথা উঠলে তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। কারা হেফাজতে জহিরুল হাওলাদারের মৃত্যুকে অস্বাভাবিক বলে দাবি করে তার স্বজনেরা জানান তাঁকে অমানবিক নির্যাতন করে কারা অভ্যন্তরে হত্যা করা হয়েছে। কারা হেফাজতে জহিরুল হাওলাদারের মৃত্যুর ঘটনায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। পাশাপাশি অভিযোগটির সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।
সংবাদ সূত্রে জানা যায়, বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের চরফেনুয়ায় একটি হত্যা মামলার অভিযোগের ১২ নং আসামি হিসেবে জহিরুল হাওলাদার (২৩) পিবিআই সদস্য কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে ১২ জানুয়ারি থেকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থান করছিলেন। জহিরুলের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী আকবর জানান, জহিরুল হাওলাদার কোনোভাবেই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। ঢাকায় তার স্ক্রিনপ্রিন্টের দোকান রয়েছে। তিনি ঢাকা থেকে বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। পিবিআইয়ের লোকজন জহিরুল হাওলাদারকে গ্রেফতার করে আদালতে না উপস্থিত না করে তাকে নির্যাতন ও ব্যাপক মারধর করে। সেই থেকে জহিরুল অসুস্থ ছিলেন। ৪-৫ দিন আগে কারাগারের মধ্যে কিছু লোকজন জহিরুলকে জোর করে চেপে ধরে ঘাড়ে ইনজেকশন দিয়েছিল এবং এ কথা জহিরুল নিজে জেল থেকে ফোন করে জানিয়েছিলেন।সংবাদ সূত্রে আরো জানা যায়, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কারাগারে মৃত হাজতি নির্যাতিত হননি। এমনটি হওয়ার কোনো সুযোগও নেই। পূর্বে কেউ তাকে নির্যাতন করেছে কিনা সে বিষয়টি তাঁদের নজরে আসেনি। জহিরুল নামের হাজতি বেশ কয়েক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। হঠাৎ করেই তার মৃত্যু হয়েছে। বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের অ্যাম্বুলেন্সচালক মোহাম্মদ আব্দুল হাই জানান, সকালে যখন হাজতিকে গাড়িতে ওঠানো হচ্ছিল, তখন তার মুখ থেকে ফ্যানা বের হচ্ছিল। কারাগারেই তিনি মারা গেছেন। বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম জানান, হাজতি জহিরুল হাওলাদারকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) মনে করে, কারা হেফাজতে যে কোন ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করা কারা কর্তৃপক্ষের আইনি দায়িত্ব। কারা হেফাজতে হাজতির উপর নির্যাতনের অভিযোগ বা মৃত্যু গুরুতর ঘটনা তাই এর পূর্ণ সুষ্ঠূ তদন্ত হওয়া উচিত। কারা কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী জহিরুল যদি বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ থেকে থাকেন, কর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসার কি ব্যবস্থা গ্রহন করেছিল তা প্রকাশ করা হউক। এম এস এফ মনে, করে জহিরুল হাওলাদারের মৃত্যু যে ভাবেই হোক না কেন জেল কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে অনতিবিলম্বে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠূ তদন্ত নিশ্চিত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।