গুরুদাসপুরে রসুন চাষে ঝুঁকছে কৃষকরা

Spread the love

গুরুদাসপুর  প্রতিনিধি :  নাটোরের গুরুদাসপুরে পরপর দু’বার বন্যা হওয়ায় এলাকার কৃষকদের আমন ধান চাষে বিপর্যয় ঘটেছে। গাছ বাঁচলেও শীষ বাঁচেনি ধানের। প্রথমবার বন্যার পর কিছুটা আশাবাদী হয়ে আমন চাষের প্রস্তুতির মুহুর্তে আবারো বন্যায় তছনছ হয়ে যায় কৃষকদের স্বপ্ন। চোখে পড়ছে না আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ব্যস্ততা। তাই বাধ্য হয়ে কৃষকরা ঝুঁকছেন রবিশস্য আবাদে। এরমধ্যে অধিকাংশ জমিতেই রসুনের বীজ বপন করা হচ্ছে।
যদিও গুরুদাসপুর তথা দেশের বৃহৎ চলনবিলাঞ্চলের মানুষের প্রধান অর্থকারি ফসল এখন রসুন। এ বছরেও রেকর্ড পরিমাণ জমিতে রবিশস্যের আবাদ করা হচ্ছে। গুরুদাসপুর পৌর এলাকাসহ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মাঠজুড়ে চলছে কৃষকদের ব্যাপক প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে রসুন, সরিষা, খেসারী, আলু, ভুট্টাসহ বিভিন্ন রবিশস্য রোপন কাজ শুরু হয়েছে। আমন চাষ ব্যাহত হওয়ায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে রবিশস্যের আবাদ হচ্ছে কৃষকরা জানিয়েছেন।
উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের যোগেন্দ্রনগর গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক, আক্কাছ আলীসহ অনেকে জানান, মাঠ থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে তারা জমিতে রবিশস্য আবাদ শুরু করছেন। রবি ফসল উৎপাদনে খরচ কম কিন্তু লাভ বেশি হওয়ায় তারা ধানের চেয়ে এই চিকন আবাদে বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।খুবজীপুর ইউনিয়নের দিয়ারপাড়া গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, গত বছর ফলন ভালো হয়েছে। এ বছর নিজ জমিতে চাষ করায় বিঘা প্রতি ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বন্যার কারনে জমি চাষ দিতে হয়নি। তবে উৎপাদিত রসুনের দাম ভালো পেলে আগামিতে আরও বেশি রসুনের চাষ করবেন বলে তিনি জানান।
একই গ্রামের কৃষক মামুনুর রশিদ বলেন, বর্ষার পানি নেমে যাবার পর জমি চাষ না করে নরম কাদামাটিতে সার ছিটিয়ে রসুন কোয়ার অর্ধেকটা পুতে দেওয়া হয়। এরপর খড়, কচুরীপানা দিয়ে পুরো জমি ঢেকে দেয়া হয়। গত বছর রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর ৫ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছি। বিঘা প্রতি ৩০ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। গত বছরের ন্যায় এবারো দাম ভালো পেলে সামনে বছর আরো বেশি পরিমাণ রসুন চাষ করব।গুরুদাসপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে রবিশস্যের আবাদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ভাল দাম পাওয়ায় এবারও সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত মৌসুমে সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে রসুনের চাষ করেছিল কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, কৃষকরা বীজ ক্রয়ে যেন প্রতারিত না হয় সেক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন চাষাবাদে অল্প খরচে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষকদের লাভবান হওয়ার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।#

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this:

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD