পারদ সাতে, শীতলতম দিন জেলায়

Spread the love

নয় থেকে এক ধাক্কায় সাতে! বৃহস্পতিবার, মরসুমের শীতলতম দিনে কাঁপল জেলা।

‘ক্যালেন্ডারে পৌষ। কিন্তু, উত্তরে হাওয়ার কাঁপুনি কই?’ কিছু দিন আগেও অনেকেই বলছিলেন সে কথা। সেই দল থেকে বাদ যাননি বোলপুর সহ শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন এলাকার মানুষও। পৌষমেলাতেও স্থানীয় হোক কিংবা পর্যটক— প্রত্যেকের মুখে একটাই কথা ছিল, ‘‘মেলায় ঠান্ডাটা সেই আর আগের মতো পড়ে না!’’

শীত যে হারিয়ে যায়নি তারই প্রমাণ মিলল নতুন বছরে। মাঝে ডিসেম্বরের ক’টা দিন শীত পড়েছিল ঠিকই। কিন্তু, এখনকার মতো এমন জাঁকিয়ে বসেনি। ছিল না হাড় কাঁপানো ঠান্ডাও— এমনটাই বলছেন সাত থেকে সত্তর। এর সঙ্গে দোসর হয়েছে উত্তরের ঠান্ডা হাওয়া। তাতেই কাবু জেলাবাসী।

শ্রীনিকেতন আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে ৩ ডিগ্রি কম। বৃহস্পতিবার সেই তাপমাত্রা আরও কমে দাঁড়ায় ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এই মরসুমের শীতলতম দিন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বৃহস্পতিবারকে।

এই ঠান্ডা কিছুটা হলেও ব্যাহত করেছে স্বাভাবিক জনজীবনকে। অনেক স্কুল এ দিন নির্ধারিত সময়ের পরে শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত ঠান্ডার জন্য ছাত্রছাত্রীরাও দেরিতে স্কুলে আসে। সকালে প্রাতঃভ্রমণকারীদেরও খুব একটা দেখতে পাওয়া যায়নি। অন্য দিন, রাস্তায় যে হারে সকাল থেকে যানবাহন চলে, সেটাও কম ছিল। বেলা বাড়লে ঠান্ডা কমবে, এই আশায় যাঁরা সকালে বেরোননি, শেষমেষ তাঁদেরও বেরোতে হয়। বেলা বেড়ার সাথে সাথে ঠান্ডা কমার বদলে হাওয়ার দাপট বেড়েছে, তাই ঠান্ডাও বেড়েছে বেশি। শেষ পর্যন্ত সোয়েটার, চাদর সম্বল করেই বেড়িয়ে পড়তে হয়েছে তাঁদের। অনেকেই বলছেন, ‘‘যা শীত, তাতে এ ভাবে না বেড়িয়ে আর উপায় কি?’’

নিত্য দিনের বাজারেও পড়েছে ঠান্ডার প্রভাব। ভেদিয়া, গুসকরা থেকে যে সমস্ত ব্যবসায়ী সকালের ট্রেনে বোলপুর আসেন, তাঁদের বৃহস্পতিবার সকালের হাটে দেখা যায়নি। এত দিন সে ভাবে শীত পড়ছে না বলে মুষড়ে পড়েছিলেন যে সব শীতপ্রেমীরা, তাঁরা অবশ্য বেজায় খুশি। তবে অতিরিক্ত ঠান্ডা পড়ায় অনেককেই বাতিল করতে হয়েছে পিকনিকের পরিকল্পনা।

শীত এলে যে শুধু আমেজ বাড়বে, জমিয়ে খাওয়া দাওয়া করা যাবে শুধু তাই-ই নয়। রবিচাষে শীতের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। সঙ্গে কমবে রোগের প্রকোপ।
জানাচ্ছেন কৃষি বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকরেরা। ঠান্ডা না পড়লে চাষ মার খাওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা ছিল। বলছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। শীতে রোগের প্রকোপ কমবে বলছেন চিকিৎসকেরাও। অনেকেই বলছেন, ‘‘ঠান্ডা লেগে সর্দি, কাশি জ্বর হতে পারে কারও কারও। অন্য রোগের দাপট কমবে।’’

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD