ঢাকা: নতুন সিএনজি (সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস) স্টেশনের অনুমোদন বন্ধ করতে যাচ্ছে সরকার। সঙ্কট থাকায় মূল্যবান প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে আনতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। এর আগে একই যুক্তিতে নতুন কোনো ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টের (শিল্পকারখানায় স্থপিত ক্ষুদ্র বিদ্যুৎ উৎপাদন জেনারেটর) জন্য গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে।
যদিও বর্তমান সরকারের গত মেয়াদের শেষ দিক থেকেই নতুন সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সংযোগ দেয়া অলিখিতভাবে বন্ধ রয়েছে।
সিএনজির বদলে এলপিজি (লিকুইফায়েড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) দিয়ে গাড়ি চালানোকে উৎসাহিত করতে চাইছে সরকার। যদিও ইতোমধ্যে সরকারের অনুমোদন ছাড়াই অনেক পরিবহনেব এলপিজি ব্যবহৃত হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানির পরিচালক এমএএস ইমন বাংলামেইলকে জানান, সঙ্কটের কথা মাথায় রেখেই গ্যাস ব্যবহারে সংকোচনশীন নীতি নিতে হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই সিএনজিতে আর নতুন কোনো সংযোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসছে।
তিনি জানান, বিকল্প হিসেবে আমরা এলপিজি ব্যবহার বৃদ্ধি করতে চাই। এ জন্য একটি নীতিমালা হচ্ছে, যা আগামী মাসেই চূড়ান্ত হতে পারে।
এখন দেশে মোট গ্যাসের পাঁচ শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে সিএনজি খাতে। এতে দৈনিক অন্তত ১৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সিএনজিতে ব্যবহার হচ্ছে। যা দিয়ে কম্বাইন্ড সাইকলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৪৫০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত দাম সাশ্রয়ী হওয়ায় এলপিজির দিকে ঝুঁকছে গ্রাহকেরা। প্রতি ইউনিট সিএনজির দাম ৩০ টাকা আর এলপজির ইউনিট প্রতি মূল্য ৫৯ টাকা। কিন্তু এলপিজির হিটিং ভ্যালু সিএনজির চেয়ে বেশি হওয়ায় সমপরিমাণ দূরত্ব অতিক্রম করতে এলপিজিতে খরচ কম। এদিকে প্রতিলিটার পেট্রোল এবং অকটেনের দাম ৯৯ টাকা এবং তা দিয়ে যতটুকু দূরত্ব অতিক্রম করা যায় ৫৯ টাকার এলপিজিতেও সমপরিমাণ দূরত্ব যাওয়া যায়। এছাড়া এলপিজিতে রূপান্তরের খরচ সিএনজিতে রূপান্তরের এক তৃতীয়াংশ। আর এলপিজিতে রূপান্তরিত গাড়ি পেট্রোল এবং অকটেনেও চলে। তাই দিন দিন এলপিজির জনপ্রিয়তা বাড়ছে।
জানা যায়, এখন রাজধানী ঢাকাতে ‘তমা’র যেসব ট্যাক্সিক্যাব চলছে তার সবগুলোই এলপিজিতে চালানো হয়। রাজধানী ছাড়াও খুলনা, যশোর এবং রংপুরের গাড়িতেও এলপিজি ব্যবহার হচ্ছে।
এ বিষয়ে জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ বাংলামেইলকে বলেন, ‘আমি সম্প্রতি তেজগাঁওয়ে গাড়ির জন্য জ্বালনি নিতে গেলে এলপিজির বিষয়টি নজরে আসে। এটি যেহেতু সস্তা তাই যথাযথ প্রক্রিয়ায় এর ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব। তবে এলপিজির পুরোটাই আমদানি করতে হবে। যাতে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় বেড়ে যাবে।’
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেও জানা গেছে, ট্যাংক বিস্ফোরণের ঝুঁকি সিএনজি’র এলপিজিতে কম। এলপিজি রক্ষণাগারের জন্য জায়গাও কম লাগে।
এদিকে জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নতুন নীতিমালায় এলপিজি ব্যবহার, দাম, স্টেশন নির্মাণসহ সব বিষয় উল্লেখ থাকছে। সুত্র: বাংলামেইল২৪ডটকম