জিটিবি নিউজ : নাম সালমা আক্তার ওরফে সালমা । বর্তমানে বয়স প্রায় ১৫বছর । গাইবান্ধা জেলার গবিন্ধগঞ্জ উপজেলার পেরাপুর গ্রামে তাদের বাড়ী । মা গত হবার পর বাবা আব্দুস সালাম দ্বিতীয় বিয়ে করে অনত্র চলে যান ।
নানার বাড়ী থাকাবস্থায় ৪ বছর বয়সে সালমাকে গৃহপরিচারিকা হিসাবে বগুড়া শহরের খান্দার এলাকার সামছুল হকের বাড়ীতে আসতে হয়েছিল । ওসব কথা সালমার তেমন আর মনে নেই ।
তার শুধু মনে আছে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর সে নানার বাড়ীতে আর যেতে পারছিলনা । তাকে যেতে দেয়া হয়নি। একরকম জোর করেই তাকে আটকে রাখা হত। এমন কি তাকে বাড়ী থেকে বেরুতে পর্যন্ত দেয়া হতোনা। গৃহকর্তীর লান্ছনা গঞ্জনা সহ্য করেই অর্ধাহারে কখনো অনাহারে তাকে দিন কাটাতে হচ্ছিল । এক রকম বন্ধি দশায় থাকতে হয়েছে ও বাড়ীতে তাকে । আত্বিয় সজনরা এলে সালমার সাথে দেখা করতে দেয়া তো দুরের কথা তাদেরকে দুর দুর করে তাড়িয়ে দেয়া হত। তার পরেও নানা বাড়ী থেকে তাকে দেখতে এসে লান্ছিত হয়ে ফিরে যেতে হত তাদের । সালমা কি অবস্থায় আছে, কেমন আছে ,এ কথা জানার সুযোগ তাদের কোন দিনও হয়নি । তারা শুধু বুঝতে পারতো সালমা বেঁচে আছে ।
এমনি ভাবে চলছিল সালমার জীবন । শিশু সালমা এখন কিশোরী । ও বাড়ীতে দীর্গ ৯বছর বন্ধি দশা অবস্থায় তার উপর নেমে আসে মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন। গৃহকর্তা সামছুল হক গত কয়েক মাস আগে মারা যাবার পর কিশোরী সালমাকে নানা বাড়ীর লোকজন নিতে এলে তাদের শারিরীক ভাবে লান্ছিত করে তাড়িয়ে দেয়া হয় । একই সাথে তাদের শাসিয়ে দেয়া হয় এবার এলে টের পাইয়ে দেয়া হবে ।
অবশেষে বিষয়টি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও গন্যমান্যদের অবহিত করা হলে তারাও এব্যপারে কোন ভূমিকা নিতে ব্যার্থ হন । অপারক হয়ে কাউন্সিলর ছাপ জানিয়ে দেন আইনের আশ্রয় নিতে । অবশেষে নানা ইউছুপ আলী স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ীতে এব্যপারে অভিযোগ দাযের করেন। সোমবার রাতে স্থানীয় ফাঁড়ী ইনচার্জ টিএসআই নজরুল এব্যপারে হস্তক্ষেপ করে প্রথমে ব্যার্থ হলেও পরে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ৯বছরের বন্ধি দশা থেকে অবশেষে মুক্ত করে আনেন কিশোরী সালমাকে । এসময় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গ্রেপতার করা হয় প্রভাবশালী গৃহকত্রী সেলিনা বেগমকে । মঙ্গলবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় তাকে। থানায় সাংবাদিকদের কাছে নিজের বন্দি দশা ও নির্যাতনের বর্ননা করতে গিয়ে বার বার চমকে উঠতে হয় সালমাকে । কারন তার বিশ্বাস হচ্ছিলনা সে আজ মুক্ত । পুলিশ সালমাকে তুলে দেন তার বৃদ্ধ নানা ইউছুপ আলীর হাতে । এনময় সালমার মামা মামী সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
![](http://www.chalonbeelbarta.com/wp-content/uploads/2017/12/Untitled-1.jpg)