সিরাজগঞ্জ(সলঙ্গ) থেকে ফারুক আহমেদঃ
ডিস সংযোগে টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল, ইন্টারনেটের ভিড়ে এখন আর টেপরেকর্ডার ক্যাস্টে ও রেডিও চোখে পড়ে না বললেই চলে। আগে প্রায় বিয়ে বাড়িতে, চায়ের দোকান, হোটেল রেস্তোরাঁয় রেডিও টেপরেকর্ডার বাজতে শোনা যেত।
ডিজিটাল যুগের ছোঁয়া পড়তে না পড়তেই দ্রুত এগুলো যেন হারিয়ে গেছে। এখন আর একত্রে দল বেঁধে টেপরেকর্ডার ক্যাস্টে বিভিন্ন ছায়াছবির, ভক্তি মূলক, পল্লীগীতি, ভাটিয়ালি, ফোকরান্তি, পালাগান জারি গান গানেসহ রেডিওতে অনুরোধের আসর, নাটক বা খবর শোনার জন্য কেউ অপেক্ষা করে না। এ সকল জায়গায় এখন স্থান করে নিয়েছে ডিস সংযোগে টিভি, কম্পিউটার, ইন্টারনেট সংযোগ বিশিষ্ট মোবাইল ফোন।
যে কারণে হাল আমলে রেডিও টেপরেকর্ডারের কদর আর নেই। ফলে দ্রুতই হারিয়ে যাচ্ছে এ সকল যন্ত্র। সিরাজগঞ্জ তাড়াশ উপজেলার তাড়াশ সদর ইউনিয়নে মুধারাপুর বাজারের হেনা ট্রের্ডার্স স্বর্ণকার আবু হানিফ এখনোও ধরে রেখেছেন এ ঐতিহ্য।
প্রতিদিন ভোরে তিনি রেডিওতে প্রভাতি বাংলা অনুষ্ঠান চালিয়ে দিয়ে স্বর্ণকারের কাজ শুরু করেন। মাঝে মাঝে সেন্টার পাল্টিয়ে শোনেন বাংলা, হিন্দি, উর্দু গান। সময় হলে ভয়েস অব আমেরিকা, বিবিসি’র খবর শোনেন ফুল ভলিউমে। এভাবে চলে ভোর ৬টা থেকে রাত ১১টা বা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এর ফাঁকে মাঝে মধ্যে টেপরেকর্ডার ক্যাস্টে চলে পালা, জারি, ভাটিয়ালি পল্লীগীতি ও বিভিন্ন ছায়াছবির গান। অধিকাংশ ক্রেতারা তাকে এ ঐতিহ্য ধরে রাখায় সাধুবাদও জানান।স্বর্ণকার আবু হানিফ বলেন, এখন অধিকাংশ চায়ের দোকানে ডিসের মাধ্যমে টিভি চলে। তাদের কাছে এখন আর টেপরেকর্ডার ফিতা দিয়ে বাজানো ক্যাস্টেরের গান ও রেডিও’র কদর নেই। আমার কাছে টেপরেকর্ডার ক্যাস্টের পুরানো দিনের ভাটিয়ালি, পালা,জারি, পল্লীগীতি গানসহ বিভিন্ন গান শুনতে এমনকি রেডিওতে খবর, বাংলা গান, পুরনো হিন্দি ও উর্দু গান চালিয়ে দিয়ে দোকানে কাজ করতে ভালোই লাগে। যে কারণে এটা ছাড়তে পারিনি।
তিনি আরো বলেন, এ টেপরেকর্ডারটি আমার কাছে ৩২ বছর ধরে রয়েছে। এখন আর ফিতা ক্যাসেট না পাওয়ায় ওটা আমি শুধু রেডিও হিসেবে ব্যবহার করি। আমি যত দিন বেঁচে আছি টেপরেকর্ডারটি রেডিও হিসেবে থাকবে ততদিন।
