আবদুর রাজ্জাক রাজু
আজ ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে বাঙ্গালীর পথের দিশা , জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার সম্পূর্ণ অন্যায় ও অমানবিকভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এটা ছিল পরাজিত পাকিস্তানী মৌলবাদের প্রতিশোধ আর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মিলিত প্রতিহিংসার কামনা থেকে উৎসারিত বিশাল দংশন। স্বাধীনতাকে ঠেকাতে না পেরে তারা সেই ব্যর্থতার বিষ দাঁত বসিয়েছিল স্বাধীনতার মহানায়ককে নিশ্চিহ্ন করার বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ব্যর্থ রাষ্ট্রের সূচনা করতে। কিন্তু তারই সুযোগ্য কন্যা , তারই প্রজ্ঞা ও চেতনা যার শিরা ধমনীতে সেই জননন্দিত নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ একটি সফল ও অগ্রসরমান দেশ থেকে উন্নত দেশের স্বপ্ন সিড়িতে উত্তরণের পথে এগিয়ে চলেছে। ফলে দুর্বৃত্তদের স্বপ্ন দু:স্বপ্নই থেকে গেছে বিশেষ করে সেই জঘন্য হত্যার ন্যায় ও বিশ^ প্রশংসিত বিচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যা বঙ্গবন্ধু কন্যার দূরদর্শীতা ও সাহসিকতার কারণে সম্ভব হয়েছে। সেই শোক আজ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে তা বলাই বাহুল্য।
বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙ্গালীর বন্ধু নয় তিনি গোটা বিশে^রও বন্ধু। তিনি ছিলেন বিশ^মানের অকুতোভয়, অতুলনীয় ঐতিহাসিক কেরিসম্যাটিক নেতা। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক। বাংলাদেশের ¯্রষ্টা ও স্বপ্নদ্রষ্টা। বাঙ্গালীর অমর কীর্তিমান চির অনুপ্রেরণার উৎস। হেমিলনের বংশীবাদকের মত তার বজ্রকণ্ঠের মহা দুর্বার আকর্ষণে বাঙ্গালী ঘর থেকে বেড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।যতদিন এ পৃথীবি টিকে থাকবে, বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে ততদিন বাঙ্গালীর হৃদয় গভীরে চির স্মরণীয়, বরণীয়, পূজ্য এবং আরাধ্য হয়ে থাকবেন এই মহামানব। বঙ্গবন্ধু মূলত বাংলাদেশের শেকড়। বাংলাদেশকে একটি বৃহৎ বৃক্ষ কল্পনা করলে তা দাঁড়িয়ে আছে যে ভিত বা শেকড়ের উপর নির্ভর করে সেই বাহ্যিক ও অন্তর্নিহিত শেকড়টা হল বঙ্গবন্ধু। তাহলে বাঙ্গালী জাতি চিরদিন সে শেকড়ের অমৃত নির্যাস পান করে সেই মহান বৃক্ষমূলের নীতি আদর্শ বহন করে চলবে। মনে রাখতে হবে, শেকড়ের সাথে যে গাছের সংযোগ-সম্পর্ক যত নিবিড় ও গভীর সে গাছ তত সজীব ও শক্তিশালী।তেমনি বাঙ্গালী চিরকাল জাতির পিতার প্রদর্শিত পথ তথা তার জীবনাদর্শ এবং কর্মকীর্তি যথাযথ অনুসরণ ও অনুশীলন করে এগিয়ে যাবে। তাহলেই দেশ হবে উন্নত, জাতি হবে সমৃদ্ধ। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না , বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধৃ একই সূত্রে গাঁথা একই সুরের ব্যঞ্জনা ও মূর্চ্ছনা। তাই ১৫ আগষ্ট জাতির শোকের দিন হলেও তা শেকড়ে ফিরে যাবার দিন এবং শেকড় স্মরণ ও সন্ধান করে তা জানার, উপলব্ধি করার এবং আগামী দিনে তার পরিপূর্ণ স্বার্থক করার শপথ নিতে হবে। তার নীতি আদর্শের বিচ্যুতি কখনই বরদাশত করা সঙ্গত হবে না সে যে-ই হোক না কেন।