জনসংযোগে জোর সিপিএম জেলা সম্মেলনে

Spread the love

অনলাইন ডেস্কঃ শহরের ডাকবাংলা মোড় থেকে ধূলাডাঙা রোড। সারি দিয়ে লাল-সাদা কাপড়ে মোড়া খুঁটির ডগায় লাল পতাকা। পুরসভা মার্কেটের উপর সম্মেলনস্থল ঘিরে ‘নভেম্বর বিপ্লব’-এর স্মারক তোরণ। শহর জুড়ে ছোট ছোট গেটে সাম্প্রদায়িকতা, প্রাদেশিকতার বিরুদ্ধে স্লোগান লেখা ফ্লেক্স। শিল্প গড়ে প্রত্যেকের কর্মসংস্থানের দাবিও। শহরের পথে আদিবাসী, তফসিলি, সংখ্যালঘু মানুষের মিছিল।

২২তম বীরভূম জেলা সম্মেলন ঘিরে রামপুরহাট শহরে যেন উজ্জীবিত হলো সিপিএম। ভাঁড়শালাপাড়া দীঘির মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশে ভিড় দেখে আগামী দিনে রামপুরহাটে আরও বড় কোনও মাঠে সভার আয়োজন করার বিষয়ে নেতা, কর্মীদের চিন্তাভাবনা করতে বলে গেলেন সূর্যকান্ত মিশ্র।

অথচ ভোটের হিসেবে এই ছবি কিছুটা বেমানান। জেলার ১১টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে একমাত্র নানুর ছাড়া আর কোনও বিধায়ক নেই সিপিএমের। গত তিন বছরে রামপুরহাট মহকুমার ৮টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে মুরারই ২, নলহাটি ১ ও নলহাটি ২— তিনটি ছিল দলের হাতে। নলহাটি ২ পঞ্চায়েত সমিতি ছাড়া বাকি দু’টি সমিতিতে দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত অধিকাংশ  সদস্য এখন তৃণমূলে। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ— পরিস্থিতি একই।

তারই মধ্যে জেলা সম্মেলন ঘিরে কার্যত জনজোয়ারে ভাসল সিপিএম। তা নিয়েও আলোচনা হলো নেতৃত্বের।

জেলার বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূলের নতুন কৌশল হলো— ‘সিপিএমকে উঠতে দাও’। কারণ সিপিএম দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ধরে রাখতে পারে আখেরে তৃণমূলের লাভ। কারণ সিপিএম থেকে অনেকেই সামিল হচ্ছেন বিজেপিতে। সেই কারণেই রামপুরহাটে সিপিএমের জেলা সম্মেলন ঘিরে এত উন্মাদনা ছড়িয়েছে।

সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য এ জন্য দলের জনসংযোগকেই সামনে রাখছে। দলের বক্তব্য, জেলা সম্মেলন ঘিরে এই মাতামাতিতে স্পষ্ট মানুষ তাঁদের পাশে রয়েছে। জেলা নেতৃত্ব এ জন্য সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মনকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। রামপুরহাটের মতোই জনসংযোগ বাড়িয়ে রাজ্যের অন্য প্রান্তে সংগঠনকে আরও মজবুত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে সম্মেলনে।

সম্মেলনে দলের জেলা প্রতিনিধিরা অনেকেই জানিয়েছেন, অনেক বুথে সরাসরি কাজ করা যাচ্ছে না, এমন এলাকা থেকেও অর্থসংগ্রহ করা গিয়েছে। এতে স্পষ্ট, তৃণমূলের প্রতি মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। পঞ্চায়েতে জনগণের হাতে অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য এখন থেকেই দলের কর্মীদের কাজে নেমে পড়ার জন্য সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে।

দলের জেলা সম্পাদক হিসেবে পুনরায় মনোনীত হয়েছেন মনসা হাঁসদা। পার্টির বর্তমান গঠন-কাঠামো অনুযায়ী, ৫০ জনের জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে। ৪৮ জনের নামা ঘোষিত হয়েছে।  নতুন জেলা কমিটিতে মহিলা রয়েছেন ৭ জন। যুব প্রতিনিধি ৪। নতুনদের সুযোগ করে দিতে পুরনো জেলা কমিটির ২১ জন সদস্য অব্যাহতি নিয়েছেন।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD