ফাগুন-হাওয়ায় রঙ-রুপে ভরপুর
মোঃ মুন্না হুসাইন তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
তারুণ্যে-মনে বসন্তের বার্তা নিয়ে হাজির ঋতুরাজ বসন্ত। ফুলের সৌরভে মেতে উঠেছে চারপাশ- প্রেমহীন হৃদয়ে জেগেছে ব্যাকুলতার হাঁসফাঁস। সৃষ্টির চিরায়ত নিয়ম মেনে ফাল্গুন যখন আসে, রঙিন সাজে প্রকৃতিও তখন হাসে। ফাল্গুনের উদাস হাওয়া, পলাশ, শিমুলসহ রঙিন ফুল আর গাছে গাছে বাসন্তী রঙের কঁচিপাতার শোভায় অন্য রকম আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। এর সঙ্গে যোগ দেয় কোকিলের মন পাগল করা কুহুতান। সব মিলিয়ে ঋতুরাজ বসন্তের খেতাবটি যেন প্রকৃতির রঙ-রূপে ভরপুর।
ঐতিহ্যগতভাবে বসন্তকাল উৎসবমুখর ঋতু। এই ঋতুতে বাসন্তী পূজা, চড়ক পূজা ও বসন্ত উৎসব এই ঋতুকে রঙিন করেছে। ‘পলাশ ফুটেছে শিমুল ফুটেছে এসেছে দারুণ মাস/ আমি জেনে গেছি তুমি আসিবে না ফিরে মিটবে না পিয়াস’- এমন হৃদয় আকুল করা গানে কার না হৃদয়ে সাগরের ঢেউ তোলে! প্রেমহীন জীবনে পিয়াস কী করে মিটবে যদি ভালোবাসার মানুষটিই না থাকে।বসন্ত তারুণ্যের হৃদয়কে আলোড়িত করে। তরুণ-তরুণীদের কাছে প্রেম, ভালোবাসায় মায়ার বন্ধনে মিলিত হওয়ায়। ফাল্গুনে তরুণীরা খোঁপায় গাঁদাফুল দিয়ে বাসন্তী রঙের পোশাকে সেজেগুঁজে ঘুরে বেড়ায়। সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন পার্ক, বিপণি-বিতানে তরুণ-তরুণীদের ঢল নামে। রঙে, রূপে, গানে, হৈ-হুল্লড়ে ফাগ্লুনে কেবলই তারুণ্যের!
ফাল্গুনে কোকিল না ডাকলে, পলাশ শিমুল না ফুটলে বসন্ত কি পূর্ণতা পায়? এরই সঙ্গে বাসন্তী শাড়িতে তরুণ-তরুণীরা বেরিয়ে পড়ে বন্ধুবান্ধবীদের সঙ্গে বসন্তের উচ্ছ্বাসে। এসব বসন্তদূতের দেখা মেলে সারাদেশের জেলা-উপজেলা শহরে। বসন্ত বরণে তরুণ-তরুণীদের উচ্ছ্বাসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সংগঠন আয়োজন করে নানা আনন্দ অনুষ্ঠানের। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গান-বাজনার আয়োজন হয়। আর দিনশেষে বসন্তদূতদের ঢল নামে বইমেলায়।শুধু তরুণরাই কি সাজে বসন্তের রঙে? ঠিক তা নয়। এই দিনে বাসায়, অফিসে কর্মব্যস্তর নারী-পুরুষরা বসন্তের রঙের সঙ্গে মিল রেখে পোশাক পরেন। তবে পোশাক যেমনই হোক না কেন, মনের বসন্তকে উসকে দেয়। সামগ্রিকভাবে ফাল্গুনে বসন্ত বরণ এখন বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। এ উপলক্ষে প্রচুর বাণিজ্য হয় পোশাক, গয়না, চুড়ি, ফুলসহ নানা প্রসাধনীর। বাংলা ১৪০১ সালে প্রথম ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন করার রীতি চালু হয়। সেই থেকে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ নানা আয়োজনে উৎসবমুখরভাবে দিবসটি পালন করে। চারুকলার বকুলতলায় বসন্ত বরণে মেতে ওঠে নগরবাসী। এসব উৎসব বাংলা সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করছে।
ফাল্গুন’ ও বিশ্ব ভালোবাসা মাসে যেন একই সূত্রে গাঁথা। এ দুটি উপলক্ষ যেন একে অপরের পরিপূরক হিসেবে তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সির কাছে অন্য রকম আমেজে দোলা দেয়।
ReplyReply allForward
|