রমজানে বাজার দর  যেন কিছুতেই না বাড়ে

Spread the love

রমজান আসন্ন। মুসলিম জগতের জন্য এটা এক গুরুত্ব এবং তাৎপর্যপূর্ণ মাস। এ মাসের ফজিলত ব্যাপক অপরিসীম। রমজান বহু রহস্যময় সৃষ্টির সূতিকাগার। এ মাসেই বিশ্বের অনন্য ঐশী গ্রন্থ মানবজাতির হেদায়াত ও আলোকবর্তিকা পবিত্র কোরআনুল কারিম  নাজিল হয়েছে। রমজান মানুষকে বিশুদ্ধ, পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করার জন্য বিরাট সুযোগ এনে দেয়। তাই এর মধ্যে নাজাত ,মাগফেরাত ও রহমত অর্থাৎ মানবের যাবতীয় কল্যাণ এবং মুক্তি নিহিত। এর জন্য মুসলিম সমাজ সাড়া বছর অধীর অপেক্ষায় থাকে। রমজানের আগমনী সুর বাজে শাওয়ালের চাঁদ দেখার পর থেকেই। আর শবে বরাত যাপিত হলে রমজান প্রায় দোর গোড়ায় এসে পড়ে, দিন গণনা শুরু হয়ে যায়। তখন থেকে প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় অন্তরে ও মননে এই কল্যাণময় মাসকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানাতে।সবাই  মনে-মানসে গাইতে থাকেন – আহলান সাহলান মাহে রমজান !

লক্ষ্যনীয়, সেই রমজান উপলক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ  মুসলিম অধ্যূষিত বাংলাদেশের সর্বত্র সর্বাগ্রে কী আওয়াজ ওঠে, কী সুর বাজে । তা হলো বাজার দর উর্দ্ধমূখি হওয়ার দু:খজনক খবর। তথা দ্রব্য মূল্যবৃদ্ধির ঘৃন্য প্রতিযোগিতা। নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের মূল্য বাড়াবার নানা ফন্দি ফিকির জাহির হতে থাকে। রমজানে অপর মুসলিম ভাইদের নানাভাবে স্বস্তি-শান্তি দেয়াই যেখানে এ মাসের মূল আবেদন। সেখানে জিনিষ পত্রের দাম বৃদ্ধি করে মানুষকে কষ্ট যন্ত্রনায় ফেলা আমাদের অভ্যাসগত বা মজ্জাগত কালচারে দাঁড়িয়েছে বহু কাল যাবৎ যা সম্পূর্ণ মোনাফেকী কর্মের শামিল। আর এ কাজটি বিবেক-ধর্ম বিসর্জন দিয়ে করে যাচ্ছেন বলা চলে আমাদের মুসলিম ভাইয়েরাই। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে রমজানে ব্যবসায়ীগণ সকল দ্রব্য মূল্যে বিশেষ ছাড় দিয়ে রমজানের প্রতি সম্মান ও স্বধর্মীয় জনগণের প্রতি সহমর্মিতা ও আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। আর বাংলাদেশে তার উল্টো চিত্র ঘটে চলেছে দীর্ঘ দিন যাবৎ। এখানে রাষ্ট্র, সরকার, সমাজ ,নেতৃত্ব, প্রশাসন সব যেন ব্যর্থ। আলাদাভাবে  বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য নামাতে হয় টিসিবিকে যা  সাড়া দেশের প্রেক্ষাপটে একটা অকার্যকর প্রয়াস বলে গণ্য হয়ে থাকে। এটা কোন সমস্যার খন্ডিত সাময়িক উপশমও বলা যায় না। বিশেষত রমজানে সাধারণ জনতার এ কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হয়, তারা উচ্চ বাজার দরে বিরম্বনায় পড়ে যায়।

এবারও বাণিজ্য মন্ত্রনালয়সহ সরকারী কর্তৃপক্ষ বিভিন্নভাবে সতর্কবার্তা দিচ্ছেন রমজানে দ্রব্যমূল্য না বাড়ানোর জন্য। আমরাও তাই চাই।  কিন্তু বাজারের গতি প্রকৃতি দেখে কারোই তা বিশ্বাস ও আস্থায় আসছে না যতক্ষণ পর্যন্ত পুরো রমজান জুরে বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল না দেখা যাবে, এমনকি তা ঈদ পর্যন্ত  যদি না টেকসই হয়। পরিশেষে বলা যায়, রমজানে বেচাবিক্রিতে অতি মুনাফা ও স্বার্থের লোলুপতা ঈমানের পরিপন্থি। কোন প্রকৃত মুসলিম এ কাজ করলে সে মুসলিম নামের কলংক। এমন  গর্হিত ও অনায্য বাজার মূল্য বৃদ্ধির হীন ও সংকীর্ণ প্রয়াস থেকে অবশ্যই সবার বিরত থাকা উচিৎ। এদিকটায় সরকারী প্রশাসনের ভূমিকাই মূখ্য বলে মনে করা হয়। বরঞ্চ এই মহিমান্বিত মাসে কীভাবে দাম স্বাভাবিক বা হ্রাসকৃত মূেল্য ব্যবসা করা যায় সেদিকে বেশী যত্নবান হওয়া দরকার। যাতে আমরা রমজানের খেদমতগার হয়ে এর  চূড়ান্ত পুরস্কার আল্লাহর অনুগ্রহ আর ভালবাসা পেতে পারি। আল্লাহ আমাদের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়সহ সবাইকে হেদায়েত দান করুন এবং  সবাইকে রমজানের নেক আমল অর্জনের তাওফিক দিন।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD