খোন্দকার আমিনুল ইসলাম আবদুল্লাহ , সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে শতবর্ষী খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ নিয়ে ইউএনও-এসিল্যান্ডের ওপর হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাত নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) হাসিবুল ইসলাম জানান, রোববার রাতেই ভূমি অফিসের পেশকার আব্দুল হাই বাদী হয়ে ৫৪ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১২০ নারী ও পুরুষকে আসামি করে মামলা করেন।মামলা পরপরই উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের বলদিপাড়া ও হলদি গ্রামে অভিযান চালিয়ে সাত নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।বলদিপাড়া ও হলদি গ্রামের দুটি খেলার মাঠের যে কোনো একটিতে মাটি ভরাট করে সেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে উপজেলা প্রশাসনের। রোববার সকালে এসিল্যান্ড লিয়াকত সালমানকে নিয়ে কায়েমপুর ইউনিয়নের হলদি গ্রামের মাঠটি পরিদর্শন করতে যাচ্ছিলেন শাহজাদপুরের ইউএনও তরিকুল ইসলাম। পথেই তাদের আটকে দেয় গ্রামবাসী এবং তখন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
গ্রামবাসীরা রাস্তায় গাছের গুঁড়ি পুঁতে দেয় এবং ও বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করেন। ব্যারিকেড ভেঙে প্রশাসন জোর করে মাঠ এলাকায় যেতে চাইলে গ্রামবাসীর সঙ্গে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।এ সময় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর ইট-পাটকেলের আঘাতে এসিল্যান্ড লিয়াকত সালমানের মাথা ফেটে যায় এবং ইউএনওর সরকারি গাড়ির একাংশের কাঁচ ভেঙে যায়। এ অবস্থায় ইউএনও আশ্রয়ণ প্রকল্পের স্থান পরিদর্শন না করেই ফিরে আসেন বলে পুলিশ জানায়। এলাকাবাসী বলছে, মাঠটি রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম এবং সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি চালাচালি করে আসছে স্থানীয়রা। ১৪ জুলাই ও ১৫ অগাস্ট এই মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরির প্রতিবাদে মানববন্ধনও করেছিলেন তারা। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন তাদের দাবির প্রতি কোনো কর্ণপাত না করে আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরির প্রক্রিয়া এখনও চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে ঘটনার পর থেকে বলদিপাড়া ও হলদি গ্রাম পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে।অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল বলেন, “রাতেই রাস্তার ওপরে গাছের গুঁড়ি ও বাঁশ দিয়ে গ্রামবাসীর তৈরি করা ব্যারিকেড সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনার জড়িতদেই গ্রেপ্তার করা হবে, কাউকে হয়রানি করা হবে না।”
|