সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলা একটি অবহেলিত উপজেলা। দেশের অনেক উপজেলায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র (এমসিডব্লিউসি) থাকলেও তাড়াশ উপজেলায় নেই। এমসিডব্লিউসিগুলো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন। এগুলো ১০ (দশ) শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের পর্যায়ভুক্ত। এ ধরনের কেন্দ্র বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনজীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেবা ও চিকিৎসার অবলম্বন হিসেবে কাজ করে। বলাবাহুল্য তাড়াশ উপজেলার মানুষ এই তাৎপর্যপূর্ণ সরকারি সেবা থেকে যুগ যুগ ধরে বঞ্চিত। এটা দুর্ভাগ্য বটে। তাড়াশের কোনো নেতৃত্বই এযাবৎ বিষয়টির দিকে নজর দেন নি।
গোটা তাড়াশ উপজেলা চলনবিল জনপদভুক্ত হলেও বর্তমানে সগুনা ও মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের সমগ্র অংশ ও নওগাঁ ও বারুহাস ইউনিয়নের দক্ষিণাংশ মূল চলনবিলভুক্ত। এখানকার জনগণ নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা ও সীমাবদ্ধতা উপেক্ষা করে জীবন ধারণ করেন। বিশেষ করে এখানে চিকিৎসা তথা স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তি সহজ নয়। এমনকি নারীর গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসবোত্তরকালের এবং নবজাতক ও শিশুর স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তি অত্যন্ত জরুরী হলেও তাও প্রাপ্তি সহজ নয়।
এমতাবস্থায় এই এলাকার জনগণ অত্র এলাকায় একটি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপনের দাবী জানিয়েছেন। জনগণের প্রত্যাশা, এর ফলে এই এলাকায় নারীর গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসবোত্তরকালের এবং নবজাতক ও শিশুর স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তি অত্যন্ত সহজ হবে। এ বিষয়ে লালুয়ামাঝিড়া গ্রামের শিক্ষক ও লেখক জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা মূল চলনবিলের তাড়াশ উপজেলার অংশের জনগণ নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা ও সীমাবদ্ধতা উপেক্ষা করে বসবাস করি। এখানকার গর্ভবতী নারীরা এবং নবজাতক ও শিশুরা যথাযথ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন দীর্ঘকাল যাবৎ। এ বিষয়ে কুন্দইল গ্রামের মিজানুর রহমান প্রধান বলেন, মুল চলনবিলের তাড়াশ উপজেলা অংশে একটি এমসিডব্লিউসি স্থাপন বিশেষ প্রয়োজন। এখানে এমসিডব্লিউসি স্থাপন করা হলে সংলগ্ন নাটোর জেলার গুরুদাসপুর ও সিংড়া উপজেলার মূল চলনবিলভুক্ত জনগণও সেবা পাবেন। মাকড়শোন গ্রামের মোহাব্বত আলী বলেন, কুন্দইল-দিঘীসগুনা বাজারের পাকা সড়কের ধারে উপযুক্ত ও সুবিধাজনক স্থানে এমসিডব্লিউসি স্থাপন করা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল আজিজ দেশের একজন খ্যাতনামা শিশু বিশেষজ্ঞ ও মূল চলনবিলভুক্ত তাড়াশ উপজেলার সন্তান হওয়ায় আমাদের প্রত্যাশা তিনি আমাদের উক্ত দাবী পূরণ করবেন। সবশেষে বলা যায়, তাড়াশ উপজেলায় উক্ত মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র (এমসিডব্লিউসি) স্থাপিত হলে শুধু তাড়াশ উপজেলার নয়, চলনবিলস্থ পাশর্^বতী অন্যান্য উপজেলার হাজার হাজার মানুষ বিশেষ করে নারী ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা লাভ করে অপরিসীম উপকৃত হতে পারবেন। তাই সংশ্লিষ্ট সরকারী উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে এব্যাপারে কার্যকরী দৃষ্টি দিতে এলাকাবাসী অনুরোধ জানিয়েছেন।