সদ্য অনুিষ্ঠত তাড়াশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী তিনজনই স্থানীয় পরিষদে নতুন মুখ। তাদের আমরা স্বাগত এবং অভিনন্দন জানাই। তারা সকলেই বয়সেও তরুণ নির্বাচনী মঞ্চেও নবীন অর্র্থাৎ নবাগত। তাদের রাজনীতির কিছু অভিজ্ঞতা থাকলেও স্থানীয় এলাকার উন্নয়নে এবারই প্রথম কাজ করতে যাচ্ছেন। অপরদিকে বিশেষ লক্ষ্যনীয়, নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দুজনই কলেজ শিক্ষক। অর্থাৎ আমাদের গ্রামাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের সম্মানিত শিক্ষাগুরু। তার মধ্যে একজন আবার অধ্যক্ষ পদাধিকারী। এরা উভয়েই উচ্চ শিক্ষিত,আধুনিক,উদার দৃষ্টিসম্পন্ন ও ত্যাগী মানসিকতার অধিকারী বলে জনগণের বিশ্বাস। ঠিক এর প্রমাণ মেলে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মর্জিনা ইসলামের জীবনের সর্বপ্রথম নির্বাচনী লড়াইয়ে অবিশ্বাস্য বিপুল পরিমাণ ভোট পাওয়া। আমরা জনমুখে জেনেছি, মানুষ একজন নারী প্রভাষকের কাছে অতি মান সম্পন্ন এবং আত্মোৎসর্গ জনসেবা প্রত্যাশা করে। সেই আশা-আকাংখা থেকেই তাকে এত বিপুল ভোটে বিজয়ী করা যা অনেকে কল্পনাও করতে পারেন নি। অনুরূপ চেয়ারম্যান পদে যিনি অধিষ্ঠিত হলেন মনিরুজ্জামান মনি তার রয়েছে আরো বর্ণাঢ্য ও ব্যতিক্রমী পরিচিতি। কারণ, মনির পিতা শুধু তাড়াশ উপজেলারই নয় গোটা চলনবিলের একজন স্বনামধন্য কবি,লেখক,সাহিত্যিক ও সমাজসেবী। ফলে মনিরুজ্জামান মনি মূলত: একটি ঐতিহ্যবাহী সাহিত্য চর্চাশীল আলোকিত পরিবারের গর্বিত সন্তান। জাতির পিতাকে নিয়ে লেখা এম. রহমত উল্লাহ্র শিশুতোষ বই অতি সম্প্রতি বাংলাদেশ বেতারের পর্যালোচনায় ব্যাপক প্রসংশিত হয়েছে। ওদিকে আনোয়ার হোসেন খানও উদ্যমী ও সাহসী নেতৃত্বের প্রতীক। তাছাড়া চেয়ারম্যান মনিসহ উপরোক্ত দুজন ভাইস চেয়ারম্যানও উপজেলা পরিষদের নেতৃত্বে সম্পূর্ণ নতুন মুখ হওয়ায় তাদের স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি রয়েছে। কেননা, এই তো সমাজ ও মানব সেবায় সবে তাদের পথ চলা বা যাত্রা শুরু। তারা যদি সততা, নৈতিকতা, আদর্শ ও নি:স্বার্থপরতা দিয়ে তাড়াশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারেন, ভবিষ্যতেও মানুষ তাদের ভালবাসতে, শ্রদ্ধা করতে আর মনে রাখতে চাইবে। খেয়াল রাখতে হবে, আমাদের সমাজে নেতা নির্বাচিত হয়ে, ক্ষমতায় গিয়ে সবাই ক্ষমতার দাপটে ও স্বার্থের লোভে অন্ধ হয়ে জনগণের আস্থা ও সমর্থন হারিয়ে ফেলে ছিটকে পড়ে যায় ঘৃণার আস্তাকুড়ে তা আমরা আমাদের চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি। অথচ মানুষের ইতিহাস এই যে, সে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না। পরিশেষে বলবো, নব নির্বাচিত আমাদের তরুণ এসব নেতৃত্বের প্রতি তাড়াশবাসীর স্বপ্ন এবং প্রত্যাশা অনেক বেশী। স্থানীয় উন্নয়ন ক্ষেত্রে তারা ব্যতিক্রম অবদানের ইতিহাস সৃষ্টি করবেন সেটাই উপজেলাবাসী দেখতে চায়। বর্তমান সমাজের প্রচলিত নষ্ট প্রবণতা থেকে সতর্কভাবে নিজেদেরকে দূরে ও কলুষ- দুর্নীতিমুক্ত রেখে সর্বোচ্চ ত্যাগ ও সততা নিয়ে কাজ করে যাওয়াটা যদিও চ্যালেঞ্জ, তবু মানুষের মাঝে বেঁচে থাকা ও বারবার ফিরে আসার জন্য সেটাই সর্বোত্তম পথ ও পন্থা। কারণ ,এই সম্ভাবনাময় সমাজসেবকদের সামনে পড়ে আছে দীর্ঘ জীবন, সোনালী সময়। তাদের যেতে হবে বহু দূর। তাই কোনো চোরাবালিতেই যেন পা আটকে তারা হারিয়ে না যান সেই কামনা থাকবে এলাকাবাসীর। আপনাদের যাত্রাপথ শুভ হোক।