পিঠা বিক্রির আয়ে চলছে রাশেদার সংসার 

Spread the love
মোঃ মুন্না হুসাইনঃ চলছে শীতকাল।প্রথম দিকে শীত তেমন অনুভব না হলেও পৌষের মধ্যাহ্ন হতেই উত্তরের ঘন কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো শীতের শিহরণ অব্যাহত রয়েছে। আর এই কনকনে শীতের সন্ধ্যায় মজাদার,মুখরোচক ভাপা পিঠা আর চিতই পিঠার চুলার কাছেই যেন ভোজন রশিকদের অপেক্ষা। হাটবাজার,উন্মুক্ত স্থানসহ রাস্তার  মোড়ে মোড়ে বিকেল হতে অনেক রাত পর্যন্ত চলে পিঠা খাবার প্রতিযোগীতা।সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা সদর ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের নিচে কাপড় পট্রিতে তেমনি পিঠা বিক্রি করতে দেখা গেছে এক নারীকে। নাম তার রাশেদা।বাড়ি সলঙ্গার পুর্বে চড়িয়া শাওপাড়া। ৩ সন্তানের জননী,স্বামী পরিত্যক্তা। নিজের পরিশ্রমে কেনা বসবাসের ২ শতক ভিটে ছাড়া অসহায় রাশেদার নেই কোন সম্বল।আপনজন আর স্থানীয়দের সহযোগীতা আর শ্রমের টাকায় ২ টি মেয়েকে বিয়ে দিলেও পরিবারে রয়েছে ১১ বছরের ছেলে ইব্রাহিম। ছেলের লেখাপড়া আর অভাবের সংসারে খরচ জোগাতে ছোট্ট শিশু ইব্রাহিমকে সাথে নিয়ে জীবন যুদ্ধ ভাপা ও চিতই পিঠা বিক্রির ব্যবসা। ভোজন রশিকদের সাদা ও ঝাল চিতই পিঠার সঙ্গে দিচ্ছে মরিচ ভর্তা,সরিষা ভর্তা,ধনিয়া পাতা ভর্তা।প্রতিদিন ২৫০-৩০০ পিচ পিঠা বিক্রি করছে রাশেদা। পিঠা বিক্রিতে তার আয় হয় পঁচিশ শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা।
স্থানীয়রা জানায়,হতদরিদ্র,অসহায় রাশেদার পিঠা মানেই অন্য রকম স্বাদ। সন্ধ্যা হতে অনেক রাত পর্যন্ত পিঠা পেতে যেন সিরিয়াল ধরতে হয় ক্রেতাদের। তার পিঠার সুনাম যেন সলঙ্গা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।গরম গরম পিঠা খেতে বিকেল হতে রাত পর্যন্ত ভীড় লেগে থাকে তার দোকানে।
সদা হাস্যোজ্বল,সলঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন সাগর তার হিতাকাঙ্খিদের নিয়ে পিঠা খেতে খেতে বলেন,সব শ্রেণী পেশার মানুষ এখানে পিঠা খেতে আসেন। ব্যস্ততার কারণে বাড়িতে বসে পিঠা খাওয়ার তেমন সময় হয়ে ওঠে না। তাই বিকেলে বসে বন্ধু বান্ধব মিলে হতদরিদ্র রাশেদার দোকানে প্রায়ই পিঠা উৎসব করি।
বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী,সিয়াম গার্মেন্টস্ এর স্বত্বাধিকারী হাফিজুর রহমান হাফিজ জানান,  যেভাবে শীতের তীব্রতা চলছে, বাড়িতে বসে বসে পিঠা খাওয়ারই সময়। কিন্তু ব্যবসার ব্যস্ততায় বাড়িতে বসে পিঠা খাবার সময় হয়ে ওঠে না। তাই ব্যবসার অবসরে প্রায়ই সন্ধ্যায় সবাই মিলে মজা করে চিতই/ভাপা পিঠা খাই।
সলঙ্গার সুশীল ব্যক্তিত্ব,সলঙ্গা ডিগ্রী কলেজের (অব:) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান জানান, পিঠা পছন্দ করেন না এমন মানুষ পাওয়া ভার। শীত এলেই বাঙালির ঘরে ঘরে পিঠা তৈরির ধুম পড়ে যায়। শীত মৌসুমে উন্মুক্ত স্থানে ভাপা,চিতই পিঠা বিক্রি করে আয়ও করছেন নিম্ন আয়ের অনেক অসহায় মানুষ।এটা খুব ভালো উদ্যোগ মনে করেন।
Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD