মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং প্রতিবেদন জুন ২০২৩

Spread the love

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)

৩০ জুন ২০২৩

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী জুন ২০২৩ মাসে মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা পর্যালোচনায় দেখা যায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু, নির্যাতন, হয়রানি, কারা হেফাজতে মৃত্যু বেড়েছে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও পুলিশি বলপ্রয়োগের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং মতামত প্রকাশের সংবিধানপ্রদত্ত অধিকার প্রয়োগের পথ রুদ্ধ করার ঘটনা অব্যহত রয়েছে। সীমান্তে হতাহতের মতো ঘটনা বেড়েই চলেছে। ধর্ষণসহ নারী ও শিশুদের উপর সহিংসতার ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটেই চলেছে এবং তা উদ্বেগজনক। অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধারের ঘটনা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েই চলেছে। অপরদিকে গণপিটুনির মতো ঘটনা কমছে না। মানবাধিকার লংঘনের এই ঘটনাগুলো ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে। একই সাথে এসব ঘটনা রোধে সরকারের নিষ্ক্রিয়তারও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। পাশাপাশি মানবাধিকার লংঘনকারীদের বিচার ও ভূক্তভোগীদের জন্য সুবিচারের দাবি জানাচ্ছে।

পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেয়া /অপহরণ/নিখোঁজ

 বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী জুন মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেয়া, একজনকে চোখ বেঁধে তুলে নেয়ার পর লাশ উদ্ধার করা গেছে ও অপর একজন নিখোঁজের দশ দিন পরও সন্ধান মেলেনি।

৬ জুন সিদ্দিক মিজি সোহেল (৫০) নামে এক ব্যবসায়ীকে রাজবাড়ির বাগমারা কালার দেয়ালব্রিজ থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হলেও তার খোঁজ মেলেনি। রাজবাড়ী থানার এসআই মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ডিবি পুলিশ সেহেলকে তুলে নিয়ে যায়নি।২৫ জুন বিকেলে ৩টা দিকে খুলনা নগরীর শেখপাড়ার বাসা থেকে বের হওয়ার পর ব্যবসায়ী বনমালী মণ্ডল (৪০) কে তিন-চারজন ব্যক্তি চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যায়। তার দোকানের কর্মচারী হেমন্ত কুমার মণ্ডল সোনাডাঙা থানায় যান ও পুলিশী সাহায্য কামনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পরদিন ২৬ জুন সকালে রেলওয়ে থানা-পুলিশ খুলনা রেলস্টেশন এলাকা থেকে বনমালী মণ্ডলের লাশ উদ্ধার করেন।

৩০ মে দুপুরের দিকে রবি কম্পানির এসআর মো. মাহফুজুর রহমান (৩০) কুমিল্লার বাগুর এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পড়ে সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং সেখানের একটি গ্যারেজে মোটরসাইকেলটি মেরামতের জন্য রেখে আমদানির টাকা চান্দিনার একটি ব্যাংকে জমা দেওয়ার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। বহু খোঁজাখুঁজি করে তার সন্ধান না পেয়ে ১ মে মাহফুজুর রহমানের পিতা মো. রফিকুল ইসলাম নিখোঁজের বিষয়ে দেবীদ্বার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। চান্দিনা ফ্লাইওভারের কাছ থেকে তিনি বেলা আনুমানিক ৩টার সময় নিখোঁজ হন বলে সিসি ক্যামেরার সূত্র ধরে এবং পুলিশের তথ্যমতে তারা জানতে পারেন। দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর জানান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ঢাকা-চট্টগ্রামের চান্দিনা বাসস্ট্যান্ডের ফ্লাইওভার ব্রিজ পর্যন্ত দেখতে পেলেও, তার পরের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আজ পর্যন্ত তার কোন খবর পাওয়া যায়নি।

এমএসএফ মনে করে, অপহরণ ও নিখোঁজের নামে অপতৎপরতাগুলো গুরুতর অপরাধ ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। যা ঠেকানোর দায়িত্ব আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর। এ নিয়ে নাগরিক জীবনে চরম উৎকন্ঠা ও আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি ক্রমাগত আস্থাহীনতা বেড়ে যাচ্ছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু

জুন, ২০২৩ মাসে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে আসামির মৃত্যুর বিষয়টি অনাকাঙ্খিত ও অগ্রহণযোগ্য। পুলিশী হেফাজতে আসামির মৃত্যুর বিষয়ের যথাযথ নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া আবশ্যক বলে এমএসএফ মনে করে।

৬ই জুন তুরাগ থানা এলাকায় ফাতেমা আক্তার নামে এক নারী হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে বাড়ির কেয়ারটেকার আলাল দেওয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ প্রায় দশদিন হেফাজতে রাখে ও পরবর্তী সময়ে তাঁকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ডিবি পুলিশের দাবি, আলাল হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন। স্বজনদের অভিযোগ, সুস্থ মানুষ আলালকে নিয়ে গেল পুলিশ তাঁর হাত-পা ভাঙল কীভাবে? কীভাবেই বা তিনি মারা গেলেন? পুলিশই তাঁকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে বলে তারা দাবি করেন।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের রাজগঞ্জ ইউনিয়নের মৎস্য খামারী ব্যবসায়ী দুলাল চন্দ্র দাস হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. বাদশা ২৪ জুন সকালে নিজ বাড়িতে এসে মায়ের সাথে দেখা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে আটক করে স্থানীয়রা গণপিটুনি দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় বাদশাকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ জুন রাতে মোঃ বাদশা মারা যান। এ বিষয়েও যথাযথ তদন্ত হওয়া এবং তা প্রকাশ করা আবশ্যক বলে মনে করে এমএসএফ।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্যাতন, অনৈতিক তৎপরতার ও গ্রেফতার এড়াতে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মৃত্যু অভিযোগ

 বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী, জুন ২০২৩ মাসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্যাতনসহ কয়েকটি অপরাধের সাথে জড়িত থাকার বিষয় উত্থাপিত হয়েছে।এমএসএফ মনে করে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যে অপতৎপরতা চলছে তা বেআইনী, ক্ষমতার অপব্যবহার, মানবাধিকারের চরম লংঘন ও ন্যায়বিচারের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনেরই নামান্তর । এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক যা নাগরিক জীবনে চরম উৎকন্ঠা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি ক্রমাগত অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতার জন্ম দিচ্ছে।

২৬ জুন মধ্যরাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর কুড়িঘর গ্রামের জাহান ইটভাটার পাশে কিছু লোক জুয়া খেলছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তিন জুয়াড়িকে আটক করে। জুয়াড়ি দলে থাকা ছগির মিয়া পালাতে গিয়ে পানিতে ঝাঁপ দেন। ২৭ জুন বিকালে নান্দুরা গ্রামের পূর্বপাশে তিতাস নদীতে ছগির মিয়ার লাশ ভেসে উঠে।

৩১ মে ২০২৩ কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কামাত আঙ্গারীয়া গ্রামের একরামুল হোসেন এরশাদ (৩৫) কে আটক করে ভূরুঙ্গামারী পুলিশ এবং ১ জুন ২০২৩ তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। ৩ জুন ২০২৩ বেলা সাড়ে ৩টার দিকে একরামুল হোসেন এরশাদকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) আলী আজমের বিরুদ্ধে বিয়ের আশ্বাসে এক তরুণীকে (২১) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে তরুণীটি অভিযোগ করার পাশাপাশি বিয়ের দাবি নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

৬ জুন চট্টগ্রামের নগরীর আতুরার ডিপোর তাহেরাবাদ আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচলাইশ থানার পুলিশ কর্মকর্তারা মক্কা ম্যানশনের পঞ্চম তলার ফ্ল্যাট থেকে ৫ নারীসহ ৬ জনকে আটক করেন। এ ঘটনার সাক্ষী দেওয়ার জন্য একই ভবনের ৬ষ্ঠ তলার ভাড়াটিয়া এক নারীকে ডেকে নেয় পুলিশ। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর পালটে যায় প্রেক্ষাপট। উলটো ওই নারীর বিরুদ্ধে অনৈতিক কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ তোলে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত দেড় লাখ টাকা আদায় করে ওই নারীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অপরাধ করে থাকলে বিচারের আওতায় না এনে অর্থের বিনিময়ে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়া দূনীতির পর্যায়ে পড়ে।

কারা হেফাজতে মৃত্যু

এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী জুন ২০২৩ মাসে কারা হেফাজতে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গত মাসে কারা হেফাজতে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১১ জন। এ মাসে কারা হেফাজতে মৃতদের মধ্যে ৮ জন কয়েদি ও ৮ জন হাজতি রয়েছে।

কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৮ জন, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ১ জন, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে ১, চট্রগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ১ জন, চাঁদপুর জেলা কারাগারে ১ জন, রংপুর কারাগারে ১ জন, কক্সবাজার জেলা কারাগারে ১ জন ও কুড়িগ্রাম কারাগারে ১ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া গাজীপুরের টঙ্গী কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে নয়ন মিয়া নামের এক বন্দির মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, ৬ জুন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যান্তরে পুলিশের ব্যারাকের ছাদ থেকে এক পুলিশ পরিদশর্কের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

অপরদিকে গাজীপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে রুনা লায়লা (৩৮) নামের এক আইনজীবী হাজতিকে নির্যাতন করা হয়েছে। রুনা লায়লার কাছে ৭ হাজার ৪০০ টাকা পাওয়ায় কারগারের দায়িত্বে থাকা হাবিলদার ফাতেমা ও নাসিমা অন্যান্য বন্দীদের নিয়ে তাকে বেধরক পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছে।

উল্লেখ্য, মারা যাওয়া সকল কারাবন্দিকে বাইরের হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এমএসএফ মনে করে, কারাগারের অভ্যন্তরে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি, হেফাজতে মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে তদন্ত করে তা প্রকাশ করা গুরুত্বপূর্ণ।

সীমান্তে পরিস্থিতি ও হতাহত

সীমান্তে হত্যা ও নির্যাতন বন্ধ করতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ার কারণে সীমান্ত হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না বরং বেড়েই চলেছে। এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী জুন মাসে সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক গুলিতে ৩ জন নিহত, ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত, গুলি ও গ্রেনেড বিস্ফোরণে এক বাংলাদেশী যুবক গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন ও ভারতীয় সীমান্ত থেকে নিখোঁজের ৮ দিন পর এক বাংলাদেশী যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

১৫ জুন দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাংলাদেশের লালমনিরহাট পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ও ভারতের মেখলিগঞ্জ থানার সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে গৌতম বর্মণ ভারতীয় নাগরিক গরু পারাপারের কাজ নিয়জিত নিহত হন। ৪ জুন রাতে বিএসএফের গুলিতে জগতবেড় ইউনিয়ন সীমান্তে ইউছুফ আলী (২৬) নামের বাংলাদেশি গরু পারাপারকারী নিহত হন। ১০ জুন দুপুর দেড়টার ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে জিন্নাত আলী (৫৫) নামে একজন বাংলাদেশি কৃষক নিহত হয়েছেন।

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা বাকশিমুল ইউনিয়নের জামতলা সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের গুলিতে রিপন (২৬) নামের বাংলাদেশি এক যুবক আহত হয়েছেন। আহত রিপনকে পেছন থেকে করা ছিটা-গুলি তার কোমরের উপরিভাগে এবং মাথার দুই পাশে লাগে।

৬ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে দুই বাংলাদেশি কৃষক আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন-ধজনগর গ্রামের মৃত নূর আলীর ছেলে আজম আলী ভূইয়া (৫৫) ও একই গ্রামের মৃত লোকমান ভূইয়ার ছেলে ইকবাল ভূইয়া (৪৫) ।

২৮ জুন ভোরে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ী ইউনিয়ন সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি গরুর রাখাল আলমগীর হোসেন (৩৫) আহত হয়েছেন।

১ জুন, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কুটিচন্দ্রখানা গ্রামের সীমান্তবর্তী নাখারজান সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের গুলি ও গ্রেনেট বিস্ফোরণের ঘটনায় এক বাংলাদেশি গুরুতর আহত হয়েছেন।

এমএসএফ মনে করে, সরকার সীমান্ত হতাহতের প্রতিবাদ ও প্রতিকারে যে ব্যর্থতা দেখাচ্ছে তা জনমনে ক্রমাগত প্রশ্নের সৃষ্টি করছে। কথা ছিল প্রয়োজনে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী রাবার বুলেট ব্যবহার করবে। এখানে সুষ্টত: ই তার ব্যতয় ঘটেছে।

রাজনৈতিক সহিংসতায় হতাহত, মামলা ও সমাবেশে যোগদানে বাধা

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী জুন, ২০২৩ সময়ে বিরোধী দল বিএনপি ও বিরোধী দলীয় কর্মসূচী বাস্তবায়নে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক বল প্রয়োগ, শান্তিপূর্ণ সভা, মিছিলে বাধাদান অব্যহত ছিল। এ মাসে রাজনৈতিক, নির্বাচনী সহিংসতা ও সভা সমাবেশে বাধার ২৯টি ঘটনায় সহিংসতার শিকার হয়েছেন ১ জন নিহতসহ মোট ১৮৫ জন। ১ জুন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বরপা এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ রেস্তোরাঁর বাবুর্চি বিল্লাল হোসেন (৪৫) নিহত হন। সহিংসতার শিকার আহতদের মধ্যে ২ জন গুলিবিদ্ধ হন।

জুন মাসে বিএনপির বিরুদ্ধে ২টি মামলা হয়েছে। এ সময় মোট ৩০ জন রাজনৈতিক কর্মীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যাদের মধ্যে ২১ জনকে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চলমান অবস্থায় গ্রেফতার এবং বাসা বাড়ি ও বিভিন্ন স্থান থেকে অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ২০ জন বিএনপি ‍ও এর সহযোগী অঙ্গসংগঠনের এবং ১০ জন জামায়েতে ইসলামীর কর্মী।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহার/অপব্যবহার

 ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রবলভাবে সমালোচিত হওয়া সত্বেও এ আইনে মামলার নামে হয়রানি অব্যাহত রয়েছে ও এর যথেচ্ছ অপব্যবহারের বিষয়টি ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী জুন ২০২৩ মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৭টি মামলায় ২ জন গ্রেফতার হয়েছেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২ টি মামলা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী ও দেশের ভাবমূর্তি  ক্ষূন্ন হয় এ ধরনের সমালোচনামূলক পোস্ট/শেয়ার/ কমেন্ট করার কারণে, ২ টি মামলা হয়েছে চট্টগ্রামে তথ্যমন্ত্রী  হাছান মাহমুদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে ‘ভুয়া, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর’ তথ্য প্রচারের অভিযোগ এনে ‘নাগরিক টিভি’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল ও এর ফেসবুক পেজ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ৭ জনের বিরুদ্ধে। ২ টি মামলা হয়েছে ধর্ম এবং ধর্মীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক পোস্ট/শেয়ার/ কমেন্ট করার কারণে ও ১ টি মামলা হয়েছে ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য  প্রচারের অভিযোগে । এ সমস্ত অভিযোগের সুষ্ঠু বিচার ও প্রমান হওয়ার আগেই গ্রেফতার করা হয় এই আইনে, যা মানবাধিকারের চরম লংঘন।

এ আইনের যথেচ্ছ অপব্যাবহারের মাধ্যমে মানুষকে তাঁর মতামত প্রকাশে বাধাগ্রস্ত করা ও ভয় দেখানো এবং সকলের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার একটিু ভয়ংকর তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এম এস এফ এই আইনের বাতিল দাবী করছে।

সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের লংঘন

সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে যেভাবে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে এবং তাদের যেভাবে শারীরিকভাবে আক্রমণ, হয়রানি, হুমকি ও লাঞ্চিত করা হচ্ছে তা শুধুমাত্র অনাকাঙ্খিতই নয় বরং বস্তুনিষ্ঠ ও সৎ সাংবাদিকতার কন্ঠরোধ করার সামিল। স্বাধীন সাংবাদিকতা ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকেরা নানাভাবে হুমকি, হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন যা ছিল উদ্বেগজনক।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী জুন, ২০২৩ সময়ে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় অন্তত ১১ জন সাংবাদিক নানাভাবে নিপীড়ন, হয়রানি, নির্যাতন, হত্যা ও হত্যার হুমকির শিকার হয়েছেন।

এ মাসে জামালপুরে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি অনলাইন পোর্টাল ‘বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের’ পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাসায় ফেরার সময় চিহিৃত সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে নিহত হন। অপরদিকে ১ জন সাংবাদিক হয়রানি, ৩ জন সাংবাদিককে হত্যার হুমকি ও ৬ জন সাংবাদিক স্বার্থান্বেসী মহলের দ্বারা আক্রমণে আহত হয়েছেন ।

সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করছে যা শুধুমাত্র অনাকাঙ্খিতই নয় বরং এভাবে বাধার সৃষ্টি করে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকারকে সংকুচিত করা হচ্ছে। একই সাথে জনগনের তথ্য পাওয়ার অধিকারও খর্ব করা হচ্ছে।

অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার

জুন, ২০২৩ মাসের অত্যন্ত উদ্বেগ-আতঙ্কের বিষয় অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধারের ঘটনা। দুই-তিনটি একটি ঘটনা ছাড়া সব কয়টি লাশের পরিচয় অজ্ঞাতই থেকে যাচ্ছে। যা অত্যন্ত ভয়ংকর, অনাকাঙ্ক্ষিত এবং নাগরিক জীবনে নিরাপত্তাহীনতার বড় কারণ। কাজেই এসব ঘটনার জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। সরকারকেই এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে দৃশ্যত সম্পুর্ণ নির্বিকার।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী এ মাসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২ জন কিশোর, ১১ জন নারী, ৩ জন বৃদ্ধ, ২ জন মাঝ বয়সী ও ১১ জন যুবক, মোট ২৯ জনের অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার হয়েছে। গত মাসে এর সংখ্যা ছিল ২৬ জন। এসব অজ্ঞাতনামা লাশ বেশীর ভাগই নদী বা ডোবায় ভাসমান, বস্তাবন্দী, মহাসড়কের পাশে, ব্রীজের নীচে, রেললাইনের পাশে, মুখমন্ডল গামছা পেচানো, বিল বা ফসলী ক্ষেতে রশি দিয়ে হাত পা বাধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।এমএসএফ মনে করে, শুধুমাত্র অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা যত ক্ষমতাবানই হোক, সব অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করা রাস্ট্রের দায়িত্ব।

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা

দেশে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী জুন, ২০২৩ মাসে দেশে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা যেমন; ধর্ষণ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, আত্মহত্যা ও পারিবারিক সহিংসতা বিশেষ করে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা বিগত মাসের তুলনায় কিছুটা কম হলেও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা, অপরাধ প্রতিরোধে দৃশ্যমান হচ্ছে না।

এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্য অনুযায়ী এ মাসে ৩১১টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে যা গত মাসের তুলনায় ১৪৬টি কম। এ মাসে ধর্ষণের ঘটনা ৫৯টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ১৯টি, ধর্ষণ ও হত্যা ২টি। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৬জন প্রতিবন্ধী শিশু ও কিশোরী।

উল্লেখ্য যে ধর্ষণের শিকার ৫৯ জনের মধ্যে ১১ জন শিশু,২৬ জন কিশোরী রয়েছে, অপরদিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৭জন কিশোরী এবং ধর্ষণ ও হত্যার শিকার ১জন শিশু ও ১জন নারী। ধর্ষণের চেষ্টা ১৮টি, যৌন হয়রানি ২৪টি, শারীরিক নির্যাতনের ৩৭টি ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ে ২ জন শিশু, ১৯ জন কিশোরী ও ৪০জন নারীসহ মোট ৬১ জন আত্মহত্যা করেছেন। এ মাসে অপহরণের শিকার হয়েছেন ২ জন কিশোরী অপরদিকে ১ জন শিশু, ৪ জন কিশোরী ও ২ জন নারী নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়াও এপ্রিল মাসে ২ জন শিশু, ৪ জন কিশোরী ও ৫ জন নারী অস্বাভাবিক মৃত্যুসহ মোট ৭১ জন শিশু, কিশোরী ও নারী হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে ২১ জন শিশু ও কিশোরী রয়েছেন। গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রতিশোধ, পারিবারিক বিরোধ, যৌতুক, ও প্রেমঘটিত ইত্যাদি কারণে এ হত্যাকান্ডগুলো সংঘটিত হয়েছে।

এ মাসে ২টি ধর্ষণের ও ৩টি শারীরিক নির্যাতনের ঘটনার ঘটনা সালিশে মীমাংসা করা হয়েছে। ২টি ঘটনায় সমাজপতিরা আপোস করেছেন যা প্রচলিত আইনকে অবজ্ঞা করে বেআইনি ভাবে সালিশে মীমাংসার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

এ মাসে ৪জন মৃত ও ২জন জীবিত নবজাতক শিশুকে বিভিন্ন স্থানে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে যা অমানবিক ও নিন্দনীয়।

এমএসএফ মনে করে, দেশব্যাপি ধর্ষণ, শিশু ও নারীদের প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন, শ্লীলতাহানি, যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন, শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা যেভাবে ঘটে চলেছে তাতে করে সামাজিক সুরক্ষা, রাষ্ট্রের দায়দায়িত্ব ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টি নিরন্তর প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

গণপিটুনি

এমএসএফ’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ মাসে অন্তত ৭টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ২ জন যুবকের মৃত্যু ও ২ জন শিশুসহ মোট ৮ জন আহত হয়েছেন। চুরি বা ডাকাতির সন্দেহে ও উত্যক্ত ও শ্লীলতাহানী করার সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়েছে। এমএসএফ মনে করে প্রচলিত আইন অবজ্ঞা করে গণপিটুনির ঘটনাগুলোকে বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ড যা অবশ্যই ফৌজদারী অপরাধ। গণপিটুনির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে গণমাধ্যমে জানা যায়নি।

২৪ জুন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের রাজগঞ্জ ইউনিয়নের মৎস্য খামারী ব্যবসায়ী দুলাল চন্দ্র দাস (৫৫) হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. বাদশা (২৮) সকালে নিজ বাড়িতে এসে মায়ের সাথে দেখা করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয় । গুরুতর আহতবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে ২৫ জুন রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোঃ বাদশা মারা যান।

৯ জুন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নির্মাণাধীন ১৫ তলাবিশিষ্ট ক্যানসার বিল্ডিংয়ে নির্মাণ শ্রমিকে নয়ন মিয়া (২২) কে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আরো একজন শ্রমিক আইয়ূবকে গুরুতর আহত আবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

তথ্যমতে যারা গনপিটুনির শিকার হন তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করা হয়। গনপিটুনির মত নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার ঘটনায় যারা জড়িত থাকেন তাদের বিচারের আওতায় আনা হয় না। এটা মানবাধিকারেরনীতির পরিপস্থি।

তথ্যসূত্র: প্রথম আলো, দি ডেইলি ষ্টার, নিউএইজ, কালের কন্ঠ, যুগান্তর, সংবাদ, জনকন্ঠ, আমাদের সময়, বাংলাদেশ প্রতিদিন, দৈনিক মানবজমিন, সমকাল, ইত্তেফাক, আজকের পত্রিকা, ঢাকা ট্রিবিউন, বিডি নিউজ ২৪, বাংলাদেশ জার্নাল, যায়যায় দিন, জাগো নিউজ ও অন্যান্য জাতীয় দৈনিকসমূহে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে উপরোক্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়াও প্রায় প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রেই স্থানীয় হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারদের মাধ্যমে ভেরিফাই করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে ১ জুন ২০২৩ থেকে ৩০ জুন ২০২৩ পর্যন্ত সংঘটিত ঘটনার ভিত্তিতে এ রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD