শতাধিক দুস্থ খেলেন ভালো খাবার – আয়োজনে ভিলেজ ভিশন, তাড়াশ

Spread the love
তাড়াশ প্রতিনিধি: খুঁজে বের করা হলো ১০০ জন অসহায়-দুস্থ মানুষকে। তারপর দুপুরে আয়োজন করে রান্না করা হলো পোলাও, মুরগির রোস্ট, গিলা-কলিজা দিয়ে মুগের ডাল। আর সেই মেন্যুতে পেট পুরে খাওয়ানো হলো তাঁদেরকে। খাওয়া শেষে দই দিয়ে মিষ্টি মুখ করিয়ে ১০০ জন অসহায় দুস্থ মানুষকে বিদায় করলেন স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন ভিলেজ ভিশন।
দেয়া হলো যাতায়াত ভাড়াও। 
গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলার কুসুম্বী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ আয়োজন করা হয়। জানা গেছে, সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা প্রথমে যে এলাকার মানুষদের খাওয়াবেন সে এলাকায় স্বেচ্ছাসেবিদের মাধ্যমে খোঁজ খবর নেন  দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের। কেউ রিকশাচালক বা দিনমজুর, কেউবা ছিন্নমূল শিশু-কিশোর, যাঁদের একবেলা ভালো খাবার জোটেনা।  তারপর তাঁদের দাওয়াতের স্থান ও সময় জানিয়ে টোকেন দেয়া হয়। নির্ধারিত দিনে ওই টোকেন নিয়ে দাওয়াতিরা হাজির হন। ২০১৯ সাল থেকে তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বিনামূল্যে প্রতি শুক্রবার সর্বোচ্চ ১০০ জনের জন্য অন্তত ৩৫ শুক্রবার ভালো খাবার পেয়েছেন অসহায় মানুষগুলো এই সংগঠনের আয়োজনে।
সংগঠনের পরিচালক শরীফ খন্দকার ছাড়াও এই সংগঠনের উপদেষ্টা,  দাতাগণ এবং স্বেচ্ছাসেবীরা  খাবার পরিবেশনে নিয়মিত সহযোগিতা করেন। এতে আনন্দ পান- মাসুম বিল্লাহ, খন্দকার শাহাদাৎ হোসাইন, নাজমুল হক মেহেদী, মাসুদ প্রারমাণিক, তাইবুর খন্দকার, নাইম শেখ, ফাহাদ খন্দকার, নাইম হাসান সাগরসহ অনেকেই। 
খেতে আসা প্রবীণ ব্যক্তি রহিস উদ্দিন বলেন, টাকা ছাড়া তৃপ্তি সহকারে দুপুরের খাবার খেলাম। একদম জামাই আদর। যাঁরা খাওয়ালেন তাঁদের জন্য দোয়া করি। সবার সঙ্গে বসে খাবার খেয়ে মনে হলো পৃথিবীটা কত সুন্দর।
শমশের ফকির বলেন, পোলাও মাংস দিয়ে পেট ভরে খেতে পেরে বুকের মধ্যে যে কষ্ট  তা ভুলে যাই। যাঁরা খাওয়ালেন তাঁদের জন্য দোয়া করি। 
এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে অসহায় মানুষের পাশে থাকার জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ভিলেজ ভিশনের উপদেষ্টা সাইফুল ইসলাম বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেকে মাছ-মাংস কেনার ক্ষমতা হারিয়েছেন। অনেকে না খেয়ে থাকছেন। তিনি বলেন,  সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করছেন এ সংগঠন।  সবার সহযোগিতায় এই উদ্যোগ চলমান থাকবে ইনশাআল্লাহ।  সমাজে এ ধরনের মানবিক কাজের চর্চা ও পরবর্তি প্রজন্মের কাছে এই সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠাও এই আয়োজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।  তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
ভিলেজ ভিশনের পরিচালক শরীফ খন্দকার বলেন, ভিলেজ ভিশন নামের সংগঠনটি ২০০৭ সালে পাবনার বেড়া উপজেলার নাটিয়াবাড়ি এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হলেও তা এখন তাড়াশ উপজেলাসহ সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলায় কাজ করে যাচ্ছে। । বর্তমানে তাড়াশে ৩৫ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন। আমরা ২০১৯ সাল থেকে প্রতি শুক্রবার সর্বোচ্চ ১০০ জনের জন্য এ আয়োজন বিভিন্ন দাতাদের অনুদানের মাধ্যমে করে থাকি। আজকের  খাবারের খরচ বহন করেছেন ইউরোপী প্রবাসী এক বোন।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম আতিকুল ইসলাম বুলবুল বলেন, দুঃস্থ্য মানুষদের খাবার খাওয়ানো ভালো। ভালো খাবার পেয়ে মানুষগুলোর তৃপ্তি আনন্দ দেখে ভালো লাগছে।  তবে তাঁদের অন্যভাবে স্বাবলম্বী করা যায় কি না সেটা ভাবা উচিত।
Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD