নিজস্ব প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় আদা চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। বাড়ির আঙিনা, অনাবাদি ও পতিত জমিসহ বিভিন্ন জায়গায় বস্তায় মাটি ভরে কিংবা টবে আদা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। তা দেখে আরও অনেকের আগ্রহ বাড়ছে বস্তায় আদা চাষের।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চৈত্র থেকে বৈশাখ মাসে বস্তায় আদা রোপণ করলে পৌষ-মাঘে আদা উত্তোলন করা যায়।কন্দ পঁচা রোগ ও পোকামাকড়ের হাত থেকে আদা রক্ষায় নিয়মিত বিকেলে ছত্রাক নাশক ও কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। আদা উত্তোলনের আগ পর্যন্ত প্রতি বস্তায় খরচ হয় ৫০-৬০ টাকা। প্রতিটি বস্তায় ১-১.৫ কেজি আদা উৎপাদন হয়। এতে প্রতি বস্তায় খরচ বাদে আয় হবে ১৩৫-১৪০ টাকা।
স্বল্প পরিচর্যা ও স্বল্প খরচে বস্তায় আদা চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে একাধিক পরিবার। এছাড়া আদা চাষে সেচ, কীটনাশক ও সার প্রয়োগসহ অন্যান্য খরচ কম হয় বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
উপজেলার ধুবিল ইউনিয়নের কৃষক ইউনুস আলী বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারীদের পরামর্শে বাড়ির আঙিনায় বস্তায় মাটি ভরে প্রায় ৩ হাজার বস্তা
আদা চাষ শুরু করেছি।বস্তায় আদা চাষাবাদের অনুকরণে আশেপাশের অনেকের মধ্যেই আদা চাষে আগ্রহ বেড়েছে।’
একই ইউনিয়নের কৃষক রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘পরীক্ষামূলকভাবে ১ হাজার ১৫০ বস্তায় আদা চাষ করেছি। ফলন ভালো হওয়ায় কয়েক গুণ লাভের আশা করছি।’
ঘুড়কা ইউনিয়নের কৃষক সোহাগ হোসেন বলেন, কয়েক দিনের মধ্যে চারা বের হয়ে দ্রুত বেড়ে উঠছে আদা গাছগুলো। বাড়ির পরিত্যক্ত উঠানের দেড় শতাংশের মতো জায়গা কাজে লাগিয়ে লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছি আমি। সারিবদ্ধাবস্থায় বস্তায় সবুজ আদা গাছ দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন আশে পাশের কৃষকেরা।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার জহুরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ খবর কে বলেন, আমরা কৃষককে আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করছি, কারিগরি সহায়তা এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে ভালোমানের বীজ সংগ্রহে সহায়তা করছি। বস্তায় আদা চাষ করলে পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি কৃষক বাড়তি আয়ও করতে পারবে।
এ বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রউফ সিরাজগঞ্জ খবরকে জানান, ‘বস্তায় আদা চাষ করলে অতি বৃষ্টি বা বন্যায় ফসল নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে না।একবার ফসল তোলার পর সেখানে আলাদা করে কোনো সার ছাড়াই আরেকটি ফসল ফলানো যায়। ফলে খরচ একেবারেই কম হয়।
মসলা জাতীয় এই আদা চাষে রোগবালাই নিরাময়সহ যাতে আদার ফলন ভালো হয়ে কৃষকরা লাভবান হয়। এ ব্যাপারে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’