গুরদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুরে ধর্ষনে অন্তঃসত্তা হয়ে পরা সিজারিয়ান শিশু মা ও তাঁর নবজাতক সন্তানের পাশে দাড়িয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবনী রায়। গত রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১ টার দিকে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে শিশু মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন। নবজাতকের নাম রাখলেন “আলো”।
প্রতিবেশী দাদার লালশার শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরে ১১ বছর বয়সী চতুর্থ শ্রেনী পড়ুয়া ওই শিশু শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ধর্ষক জাহিদুল খাঁ (৫২) নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের দক্ষিণ নাড়িবাড়ি গ্রামের কালু খাঁর ছেলে।
গুরুদাসপুরে ১১ বছর বয়সী এক শিশু শিক্ষার্থী ধর্ষনে গর্ভবতি হওয়ার বিষয়টি অবগত হওয়ার পর উপজেলা প্রশাসন তাঁর পাশে দাড়ানোর ঘোষনা দেয়। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান অপারেশান ব্যবস্থা করা হয়। গত শনিবার দুপুরে ওই শিশু মা একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান জন্ম দেন।
রবিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও)শ্রাবনী রায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে নবজাতককে কোলে নিয়ে তার নাম রাখেন ‘আলো’। এরপর নতুন পোষাক,খাবার ও নগদ অর্থ প্রদান করেন। এ সময় ওই শিশু মায়ের দাদি ও চাচি উপস্থিত ছিলেন।
ওই ধর্ষিতার দাদি বলেন,ইউএনও স্যার হাসপাতালে এসে মা ও সন্তানের পাশে দাড়ানোয় তিনি আবেগাপ্লুত। তিনি ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবনী রায় বলেন,মা ও নবজাতক সন্তান নিস্পাপ এদের কোন দোষ নেই। যে বা যারা ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট আইনের মাধ্যমে তাদের বিচার শুরু হয়েছে। মা ও সন্তানকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাসও দেন তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মুজাহিদুল ইসলাম জানান, ধর্ষিতা অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার কারনে স্বাস্থ্য ঝুকির বিষয়টি মাথায় রেখে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানো হয়েছে। প্রসব পরবর্তী সময়গুলোতে তিনি ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে আছেন। বর্তমানে মা ও নবজাতক দু’জনেই সুস্থ্য আছে।
উল্লেখ্য-গত নভেম্বর মাসে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে শিশুটিকে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত। এরপর স্থানীয়ভাবে ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে প্রচেষ্টা চালায় জাহিদুল খাঁ। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে গা ঢাকা দেয় সে। গত ১৮ জুন তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন ভুক্তভোগীর দাদি। দশ মাসপর ২৫ আগস্ট রাতে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার হেলেঞ্চা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৫ এবং র্যাব-১০ যৌথ বাহিনী। বর্তমানে তিনি জেল হাজতে আছেন।