সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তা, সংখ্যা-৩২, ২০২৩

Spread the love

“জলভাগে ও স্থলভাগে মানুষের কৃতকর্মের দরুন ফ্যাসাদ ছড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে আল্লাহ তাদেরকে তাদের কিছু কিছু কাজের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে” । (আল কোরআন, সূরা রূম, রুকু-৫, আয়াত-৪১)

ভোটের সহায়ক পরিবেশ 
তৈরিতে চাপে সরকার

ডেস্ক রিপোর্ট : ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রাক-নির্বাচনী পর্যেবক্ষক দল আজ শনিবার ঢাকা আসছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে জোটের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয়ে মতামত দেবে ছয় সদস্যের এ দলটি। তাদের মতামত নেতিবাচক হলে তা সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে। ফলে আগামী জাতীয় নির্বাচনের সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে তাদের এ সফর চাপে ফেলেছে সরকারকে। নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে ইইউর ছয় সদস্যের পর্যবেক্ষক দলটি আজ থেকে ২৩ জুলাই বাংলাদেশ সফর করবে। প্রতিনিধি দলটির মূল কাজ হবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনের কর্মপরিধি, পরিকল্পনা, বাজেট, লজিস্টিকস, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয় মূল্যায়ন করা।

এ দলটি বাংলাদেশের সরকারের প্রতিনিধি, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে ২৭ দেশের জোট ইইউ পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে কিনা, সে সিদ্ধান্ত নেবে এ প্রতিনিধি দলের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে।ইইউর প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলটি আগামী জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে। তারা মূলত নির্বাচনের সময় পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও সহিংসতামুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা, নির্বাচন করার পরিবেশের মতো বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে। সূত্রঃ সমকাল।
কাঁচামরিচের দামে আমদানির প্রভাব নেই ছবি

ডেস্ক রিপোর্ট : ভারত থেকে আমদানির পরও স্থিতিশীল হয়নি কাঁচামরিচের বাজার।

ঈদের পর সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে কাঁচামরিচের দাম আকাশচুম্বি হয়েছিল। কেজিতে দাম হাজার ছুঁয়ে যখন ২০০ তে নেমেছে, তখন কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল ভোক্তা। কিন্তু তা স্থায়ী হয়নি। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের দ্বিগুণ হয়েছে পণ্যটির দাম।শুক্রবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কেজিপ্রতি ২৫০ থেকে ৪২০ টাকায় কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে। ঢাকার বাজারে একদিনের ব্যবধানে স্থানভেদে ২০০ টাকা পর্যন্ত মরিচের দাম ওঠানামা করে। মরিচের ঝাঁজে ভোক্তা যখন অতিষ্ঠ তখন বাজারের অন্য কাঁচামালের দামেও সুখবর নেই। সবমিলিয়ে ভোক্তার যেন নাভিশ্বাস অবস্থা।রাজধানীতে বাজারভেদে শুক্রবার ২৫০-৩০০ টাকা কেজি দরে মরিচ বিক্রি হয়েছে। আগেরদিন বৃহস্পতিবার বিক্রি হয় ৪০০-৫০০ টাকায়। তবে কারওয়ান বাজারে তুলনামূলক দাম কিছুটা কম ছিল। অন্যদিকে চট্টগ্রামে কাঁচামরিচের দাম কমে আবার দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। গত ছয়মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৫ গুণের কাছাকাছি।সরবরাহ সংকটের অজুহাতে আড়তদাররা সেখানে অস্বাভাবিকহারে কাঁচামরিচের দাম বাড়াচ্ছে। মে মাস পর্যন্ত চট্টগ্রামের বাজারে কাঁচামরিচের কেজি সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা উঠেছিল। জুন শেষে তা ৫০০ টাকা ছুঁয়ে যায়। পবিত্র ঈদুল আজহার পর থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

তাড়াশে প্রতিবন্ধী শিশুকে
সুস্থ করে তুললেন এমপি আজিজ গোলাম মোস্তফা , বিশেষ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে তাড়াশ সদর গ্রামের অর্পন নামে এক শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। উপায়ন্তর না দেখে অর্পনের বাবা অশোত ঘোষ সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজকে সন্তানের অসুস্থতার কথা মুঠো ফোনে জানায়। তখন তড়িঘড়ি করে নিজে মাইক্রো গাড়ী চালিয়ে ছুটে যান তাড়াশ হাসপাতালে সংসদ সদস্য ডা. আজিজ। চিকিৎসাসেবা দিয়ে শঙ্কা মুক্ত করে তোলেন শিশু অর্পনকে। অর্পনের বাবা অশোত ঘোষ বলেন, তার প্রতিবন্ধী ছেলে অর্পনের শারীরিক অবস্থা ক্রমশঃ খারাপ হতে থাকে। নিরুপায় হয়ে মুঠো ফোনে সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজের স্মরণাপন্ন হোন। তিনি দ্রæততম সময়ের মধ্যে অর্পনকে হাসপাতালে ভর্তি করার মরামর্শ দেন।
তাড়াশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মো. আমিরুল ইসলাম আলভী বলেন, রাত ২টা ১০ মিনিটে এমপি স্যার জরুরি বিভাগে আসেন। কিছুক্ষণ পর অর্পনকে নিয়ে তার বাবা অশোত ঘোষ কাঁদতে কাঁদতে আসেন। অর্পনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। এমপি স্যার নিজেই বেশটা সময় ধরে অর্পনের চিকিৎসা করেন ও সুস্থ করে তোলেন।এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ, রায়গঞ্জ, সলঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ বলেন, সংসদ সদস্য হলেও পেশায় একজন শিশু চিকিৎসক আমি। প্রতিবন্ধী শিশুটির অবস্থা মূমুর্ষ ছিল। চিকিৎসাসেবা দেওয়া আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

তাড়াশ পৌর নির্বাচনে নৌকার
জোয়ার তুলেছে আওয়ামী লীগ

শামিউল হক শামীম : তাড়াশ নব গঠিত পৌরসভার নির্বাচন ১৭ জুলাই, প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীর লোকজন। দিন যতো ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনী মাঠ ততোই সরব হয়ে উঠছে। ঈদ আনন্দ নির্বাচনের আমেজকে আরোও স্বতঃস্ফূর্ত করে তুললেও, আষাঢ়ের বাদল ক্ষণে ক্ষণে বাঁধা সৃষ্টি করছে। তবুও থেমে নেই প্রার্থীদের প্রচারণা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে ভোট প্রার্থনার কাজ।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনিত আব্দুর রাজ্জাক-নৌকা, স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবুল শেখ- জগ, মোঃ শহিদুল ইসলাম-নারিকেল গাছ এবং আল-আমিন- মোবাইল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ সাধারণ ভোটাররা হিসাব মেলাচ্ছেন কে হবেন তাড়াশ পৌরসভার প্রথম মেয়র।
০৯টি ওয়ার্ডের ১৯ হাজার ২শত ৮৭ জন (পুরুষ ৯ হাজার ৪শত ৬৭ ও নারী ৯ হাজার ৮শত ২০ জন)। ভোটারদের মন কাড়তে মেয়র পদে এবারের নির্বাচনে চার প্রার্থীর শুরু হয়েছে ভোটযুদ্ধ। নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডে ৪৫ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন। আওয়ামীলীগ দলের সংশ্লিষ্টরা জানান, শুরুতে মেয়র পদে নৌকা বঞ্চিতদের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে কিছুটা বিভেদ সৃষ্টি হলে সেটি জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে দ্ব›দ্ব নিরসন হওয়ায় বর্তমানে তাড়াশ উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীদের একাত্মতা ঘোষণা করে জোরসোওে মাঠে নেমেছেন নৌকার বিজয়ের জন্য। তাড়াশ পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ আব্দুল হাকিম বলেন, দলের সংগে বেঈমানী না করলে কোন অপশক্তি নৌকাকে হারাতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, সাধারণ ভোটাররা নিরাপদে থাকতে, উন্নয়নের ধারাবাহিতা রক্ষায় নৌকার পক্ষে রায় প্রদান করবেন। তাছাড়া আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আব্দুর রাজ্জাক একজন রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান।

জমে উঠেছে তাড়াশ পৌরসভা
নির্বাচনের প্রচার-প্রচারনা

স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারনায় সরগরম এখন তাড়াশ পৌরভার সবগুলো গ্রাম,পাড়া-মহল্লা।মাইকের ঘোষণা, সংলাপ ও গানের সুরছন্দে তাড়াশ সদরসহ পৌর এলাকার সকল ওয়ার্ড এখন মুখরিত, ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত। পাশাপাশি মেয়র ,কাউন্সিলর, সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর সবাই দৌড়াচ্ছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। চাচ্ছেন দোয়া। প্রার্থনা করেছেন ভোট। এই সুবাদে চা-পানের স্টলগুলো জনসমাগমে ভরপুর। লক্ষ্যনীয় যে ,প্রার্থীদের মধ্যে বিচিত্র গুনাবলীর সমাবেশ রয়েছে। একবারে প্রায় নিরক্ষর বা স্বাক্ষর জ্ঞান থেকে শুরু করে সর্রোচ্চ এমএ পাশ প্রার্থীও রয়েছেন। কেউ বা সম্পূর্ণ গৃহবধু , শ্রমজীবি, পূর্বে ইউপি সদস্য-চেয়ারম্যান, আগে এসবে ছিল না, ঠিকাদার, চাকুরে, ব্যবসায়ী, বেকার যুবক ইত্যাকার হরেক রকম পটভূমি থেকে এখন পৌর নির্বাচনে প্রার্থী। আছে দীর্ঘ সমাজকর্ম এবং উচ্চ শিক্ষার অভিজ্ঞ প্রার্থীও যদিও সেটা সংখ্যায় কম। অপরদিকে ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থীকে নিয়ে চলছে সংঘবদ্ধ প্রচারনার তোড়জোড়। আওয়ামীলীগের দলীয় সিদ্ধান্তে সকল সদস্য নেত্রী মনোনীত একমাত্র প্রার্থীর জন্য কাজ করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। ইতোমধ্যে দলের নীতি না মেনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় জনৈক মেয়র প্রার্থীকে আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যরা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রচার কাজ করে যাচ্ছেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সমগ্র পৌর এলাকায় অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও সুশৃংখলভাবে প্রার্থীদের প্রচারাভিযান চলছে। এটা অবশ্যই ভাল দিক। তবে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমিকে তাড়াশ সোনালী ব্যাংকের পর্বে একটি চা স্টলের বেড়ার সাথে আটকানো একজন মেয়র প্রার্থীর পোস্টার পুলিশের সহায়তায় তুলে ফেলতে দেখা যায়। বিধি মোতাবেক এ মুহুর্তে পোস্টার টানানো ছাড়া দেয়ালে সাটানো যাবে না। প্রশাসন যে নিয়মনীতির প্রতি কড়া নজর রেখেছে তা প্রশংসনীয়। যদিও দড়ি-সুতা দিয়ে টানানো পোস্টারে ছেয়ে গেছে তাড়াশ সদরসহ পৌর এলাকার প্রতিটি গ্রাম , হাট ও বাজার। মনে হয় তাড়াশ পৌরসভার প্রথম নির্বাচন বলে উৎসাহের আমেজটা একটু বেশী। সবাই এখন তাকিয়ে আছে অবাধ, স্বচ্ছ , নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায়। চলছে সেই দিন-ক্ষণ গননা।

তাড়াশে আলোড়নের ঝর তুলেছেন
সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী রোখসানা 

বিশেষ প্রতিনিধিঃ চলতি জুলাই মাসের ১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে সিরাজগঞ্জ জেলায় তাড়াশ উপজেলার নব গঠিত পৌরসভার প্রথম নির্বাচন। এ নির্বাচনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কর্মক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন তাড়াশের এমন একজন বিশিষ্ট নারী নেত্রী ও সমাজকর্মী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন। তার নাম রোখসানা খাতুন রুপা। সে তাড়াশ পৌর এলাকার আসানবাড়ী গ্রামের বিশিষ্ট লেখক, সাংবাদিক ও সমাজসেবক আবদুর রাজ্জাক রাজুর কনিষ্ঠ মেয়ে।
এদিকে মাস্টার্স অব সোস্যাল সাইন্স (এমএসএস) ডিগ্রি অর্জনকারী একজন উচ্চ শিক্ষিত নারী নেত্রী ও সমাজকর্মীকে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী হিসেবে পেয়ে উপজেলাবাসী আনন্দিত। বিশেষ করে, ভোটাররা তার প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সে নির্দিষ্ট ৩টি ওয়ার্ডেও একজন প্রার্থী হলেও গোটা পৌরসভা জুড়েই তাকে নিয়ে সরব আলোচনা চলছে। উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, তাড়াশ পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নাম্বার ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর পদে নিবার্চন করছেন রোখসানা খাতুন রুপা।
কাউন্সিলর প্রার্থী রোখসানা খাতুন রুপা বলেন, পারিবারিক সূত্রে সমাজকর্মে জড়িয়ে পড়েন তিনি। পরে সরকারি চাকরি করতে ইচ্ছে হয়নি। দুই যুগেরও অধিক সময় ধরে সুবিধাবঞ্চিত নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, তৃতীয়লিংগের মানুষ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায় তথা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কল্যাণে কাজ করছেন। দৃশ্যত তাড়াশে প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ ও তাদের কর্মতৎপড়তার সূচনা তার উদ্যোগেই। এজন্য তিনি স্থানীয়ভাবে অনেক প্রতিবন্ধী মানুষের কাছে তাদের “ মা জননী ” হিসেবে সমাদৃত। প্রতিবন্ধিতায় কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি জাতীয় পদকও লাভ করেছেন।
রোখসানা খাতুন রুপা আরো বলেন, আমাদের প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় বর্তমানে সৎ, সুশিক্ষিত ও নীতি-আদর্শবান নেতৃত্বের খুব দুর্ভিক্ষ চলছে। বিশেষ করে, জাতীয় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সবখানেই অবক্ষয়িত বিবর্ণ চিত্র আমাদের নিরুদ্যম ও হতাশ করে।রোখসানা খাতুন রুপা সমাজকর্মের সুবাদে বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাবেক রাষ্ট্রদ্রæত উইলিয়াম হান্না, আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রদ্রæত মার্শা বার্নিকাটসহ অনেকের সুপরিচিত বলে জানা গেছে। এর আগে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক তার হাতে বাংলাদেশ এ্যাকশন এইডের নাসরীন স্মৃতি পদক তুলে দেন। একই সাথে ২০ হাজার টাকাও প্রদান করেন। এছাড়া বেসরকারী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন সূত্রে তিনি অনেক দেশী-বিদেশী স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বের সাথে কাজ করেছেন। তাই তার সম্পর্কে আলোচনা ও আলোড়নের ঝর তুলেছে গোটা পৌরসভায়।
পৌর এলাকার ২ নাম্বার ওয়ার্ডের আসানবাড়ী গ্রামের ছাত্তার প্রামানিক (৫৫) বলেন, কাউন্সিলর প্রার্থী রোখসানা আগে থেকেই সমাজের মানুষের সমস্যা সমাধান ও উন্নয়নে কাজ করছেন। আমরা তাকেই ভোট দেব। এমনকি সে মেয়র হওয়ার যোগ্যতা রাখে।১ নাম্বার ওয়ার্ডের কহিত গ্রামের আব্দুল গফুর নামে একজন সাবেক সরকারি চাকুরেজীবী বলেন, মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে সুশিক্ষিত, সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের বিকল্প নাই। সেই দৃষ্টিকোনে রোখসানা আসলেই যোগ্য প্রার্থী। উন্নয়ন ও সমাজ পরিবর্তনের জন্য তার মতো নারী নেতৃত্ব দরকার। তাড়াশ ৩ নাম্বার ওয়ার্ডের তরুণ ভোটার সোহানুর রহমান সোহান, শহিদুল ইসলাম, মির্জা শুকুর ও পনো কুমার বলেন, কাউন্সিলর প্রার্থী রোখসানা আপার চেষ্টায় আমাদের পাড়া-মহল্লার অনেক মানুষের প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা কার্ড হয়েছে। এছাড়াও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়ক উপকরণ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় সহায়তা দিয়েছেন। প্রতিবন্ধী শিশুদের একীভ‚ত শিক্ষায় অন্তভর্‚ক্ত করেছেন। আমরা তরুণরা তাকেই ভোট দেব। এমন নেতৃত্ব আমাদের পৌরসভার জন্য একান্ত প্রয়োজন।উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাঃ মুজিবুল আলম বলেন, অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটাররা যাদের যোগ্য মনে করবেন তাদের ভোট দেবেন।

তাড়াশ সদরে ভয়াবহ যানজট 
সীমাহীন ভোগান্তি

স্টাফ রিপোর্টার : সিরাজগঞ্জের তাড়াশে চৌড়াস্তা মোড়ের যানজটে আটকে নাকাল অবস্থা লোকজনের। সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের চৌরাস্তা মোড়ের এ স্থানটি তুলনামূলক বেশ সরু।
এদিকে সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. দিদারুল আলম তরফদার দৈনিক ইত্তেফাককে জানিয়েছেন, সরকারের পরিচালন বাজেট থেকে ভ‚মি অধিগ্রহনের টাকা দেওয়া বন্ধ রয়েছে। পরিপত্র জারি করা হয়েছে। তাড়াশ উপজেলা সদরের চৌরাস্তা মোড়ের চারপাশের জায়গা ব্যক্তিমালিকনা। উপায়ন্তর না পেয়ে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা করেছি। প্রকল্পটির অনুমোদন পাওয়া গেলে ভ‚মি অধিগ্রহন করা সম্ভব হবে। সওজের এই কর্তা ব্যক্তি আরো বলেন, তিনি নিজেও দীর্ঘ ৬১ মিনিটি চৌড়াস্তা মোড়ের যানজটে আটকে ছিলেন একদিন।(৩ জুলাই) সোমবার বেলা ১১ টার দিকে দেখা গেছে, চৌরাস্তা মোড়ের মাঝে একটা মাইক্রো বাস ঢুকে পড়েছে। আর তাতেই ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। থমকে আছে জনজীবন।
তাড়াশ সদর গ্রামের বাসিন্দা তপন কুমার গোস্যামী বলেন, চৌরাস্তা মোড় গণপরিবহন ও লোকজনের চলাচলের মিলনস্থল। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এ মোড় হয়ে তাড়াশ উপজেলা শহরে প্রবেশ করেন। এখানে সিএনজি, ইজিবাইক, অটোভ্যান ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল বিশৃঙ্খলভাবে গ্যারেজ করায় সারাক্ষণ যানজট লেগে থাকে। তাড়াশ বাজার কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা স ম আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তাড়াশে যানবাহন স্ট্যান্ড করে রাখার কোন নির্দিষ্ট জায়গা নেই। চৌরাস্তা মোড়ে যানবাহন স্ট্যান্ড বন্ধ করা গেলে যানজটের অসহনীয় দুর্ভোগ থেকে লোকজন কিছুটা মুক্তি পেত। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম বলেন, চৌরাস্তার যানজট নিরসনে সওজ বিভাগের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। পৌরসভার নির্বাচন সন্নিকটে। নির্বাচন পরে যানবাহন রাখার স্ট্যান্ড হয়ে যাবে।

তাড়াশের চরকুশাবাড়ী গ্রামীণ
সড়কের বেহাল অবস্থা 

গোলাম মোস্তফা,বিশেষ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সগুনা ইউনিয়নের চরকুশাবাড়ী গ্রামীণ সড়কের চৌরাস্তার চারপাশে প্রায় আধা কিলোমিটার করে দুই কিলোমিটার সড়ক বহুকাল ধরে বেহাল। বিশেষ করে, বৃষ্টির মৌসুমে পুরো সড়ক জুড়ে কাদার ভাগাড় ও গর্তের সৃষ্টি হয়। এ সময়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে ভেঙ্গে পড়ে। যাতায়াতের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে কাঁচা সড়কটি পাকাকরণের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।
চরকুশাবাড়ী গ্রামের আলাউদ্দীন, ওছমান আলী, পিন্টু, তোতা মিয়সহ ভুক্তভোগী আরো অনেকে বলেন, যাতায়াতের কষ্ট তাদের আজন্মকালের। তাদের পূর্বপুরুষরা অনুরূপ কষ্টে থেকেছেন। চরকুশাবাড়ী সড়কের চার মাথা হয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। শুষ্ক মৌসুমে এ সড়ক দিয়ে বাস, ট্রাক চলে। কিন্তু বৃষ্টি হলে পায়ে হাঁটা মুশকিল হয়ে পড়ে। তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পায় না। তাদের ছেলে মেয়ে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পাওে না। এ জনপদের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভঙ্গুর যোগাযোগ ব্যবস্থা।
চরকুশাবাড়ি গ্রামের শিক্ষার্থী বায়েজিদ, ইমদাদুল হক, আছাদুল হক ও নাহিদ জানায়, বৃষ্টি হলে সড়কে কাঁদা হয়ে থাকে। সড়কের যেখানে-সেখানে গর্ত। বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় কাঁদা, পানি লেগে বই, খাতা নষ্ট হয়ে যায়। পোশাক মেখে যায়। তারা বিদ্যালয়ে যেতে পারেনা। এদিকে চরকুশাবাড়ী গ্রামের কোরবান আলী নামে এক ব্যক্তি বলেন, সড়কের কাঁদায় পিছলে পড়ে গিয়ে তার বাম পা ভেঙে যায়। দুই মাসের বেশী হয়ে গেছে এখনো পা ঠিক হয়নি। জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের চরকুশাবাড়ী গ্রামীণ সড়কের চার মাথা হয়ে প্রতিদিন অসংখ্য লোকজন হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহা সড়কের ১০ নাম্বার সেতু এলাকা ও কাছিকাটা টোল প্লাজা দিয়ে বেড় হয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছান। এ সড়কের চার মাথার উত্তরে নাদোসৈয়দপুর খেয়াঘাট পাড় হয়ে তাড়াশ উপজেলা সদরে যেতে হয়। দক্ষিণে প্রসিদ্ধ ধামাইচ বাজার।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তাড়াশের প্রত্যন্ত এলাকার চরকুশাবাড়ী সড়ক দেখতে গেলে তাৎক্ষণিক শতাধিক মানুষ জড়ো হয়ে এ প্রতিবেদকের কাছে তাদের দু:খ ও দর্দশার কথা তুলে ধরেন। তাদের সামর্থ্য থাকলে বহু আগেই এটুকো সড়ক পাকা করে নিতেন। চরকুশাবাড়ী দরিদ্র নিপীড়িত এলাকা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নজর না দিলে সড়ক পাকা করার জন্য ভিক্ষা করা শুরু করবেন স্থানীয়রা। উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক সড়কটি পাকা করণের জন্য সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজের সহযোগিতা চেয়েছেন। এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ, রায়গঞ্জ, সলঙ্গা) এলাকার সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তাকে বলেন, বিশেষ অর্থায়নে হলেও আগামী শুস্ক মৌসুমে চরকুশাবাড়ী গ্রামীণ সড়ক পাকা করে দেওয়া হবে।

 

তাড়াশ পৌর নির্বাচন
আবদুর রাজ্জাক রাজু

তাড়াশ পৌরসভার নির্বাচন
হুজুগে মেতো না মন
স্মরণ রেখো সর্বজন
উন্নয়নের সুযোগ এখন।

তাড়াশ বাজার আজো ‘বাজে’
কাঁচা বাজার মাঠের মাঝে
পানি-টয়লেট পাবে না যে
ধুলা-বালি সকাল সাঁঝে।

রাস্তাঘাট নজরে পড়ে
বৃষ্টি হলেই পানি গড়ে
নর্দমা নেই কাদা ঝরে
চলতে পায়ে মাটি ধরে।

সড়কগুলো গলির মতো
এবড়ো-থেবড়ো ময়লা কত
পরিকল্পনার অভাব যত
এবার যদি হয় উন্নত।

তাই তো সবাই বেছে নাও
কেমন প্রার্থী-নেতা চাও
ভাল লোকদের ভোটটা দাও
তবেই মানসম্মত পৌর পাও।

তাড়াশে বয়সন্ধীকালীন ছবি
স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে সভা

স্টাফ রিপোর্টার : সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বয়সন্ধীকালীন স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে কিশোরী দলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে কুন্দইল কিশোরী ক্লাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সগুনা ইউনিয়নের কুন্দইল গ্রামের ১৫ জন কিশোরী এ সভার আয়োজন করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন খাদিজাতুল কুবরা নামে স্থানীয় এক কিশোরী। প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা পরির্তনের প্রকল্প পরিচালক গোলাম মোস্তফা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুন্দইল কিশোর-কিশোরী ক্লাবের জেন্ডার প্রমোটার মৌসুমী খাতুন, আবৃতি শিক্ষক ফারুক হোসাইন প্রমূখ।

তাড়াশ পৌর নির্বাচন উপলক্ষ্যে
আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভা 

তাড়াশ প্রতিনিধিঃ তাড়াশ পৌর নির্বাচন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনিত নৌকার প্রার্থীর বিজয়ের লক্ষ্যে যৌথ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত রবিবার বিকালে তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এই জরুরী যৌথ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।আগামী ১৭ জুলাই তাড়াশ পৌর সভার নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনিত নৌকার প্রার্থী মোঃ আব্দুর রাজ্জাককে বিজয়ের লক্ষ্যে এসভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মোঃ আব্দুল আজিজ। তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার মোঃ আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকারের সঞ্চালণায় দিক নির্দেশনামুলক বক্তব্য দেন সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু ইউসুফ সুর্য এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুস সামাদ তালুকদার।
সভায় বক্তারা দলের নেতা কর্মীদের সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়াও ভোটারদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভোট প্রার্থনা এবং দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারী প্রদান করা হয়।

তাড়াশে ৩শ বৃক্ষরোপণ অভিযান উদ্বোধন 

তাড়াশ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ বস্তুল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের উদ্দ্যোগে সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মোঃ আব্দুল আজিজ ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে. এম. আব্দুস সালাম বৃক্ষরোপণ অভিযানের উদ্ভোধন করেন।
গত শনিবার দুপুর ১২ টায় উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম বারুহাস ইউনিয়নের বস্তুল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজে ১টি করে ফলজ, বনজ ও ঔষধী গাছ রোপণের উদ্ভোধন করেন উপরোক্ত নেতৃবৃন্দ। এসময় অধ্যক্ষ মোঃ শাহিনুর ইসলাম জানান, আবহাওয়া পরিস্কার হলেই বারুহাস ও তালম ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে আরো ৩শত ফলজ, বনজ ও ঔষধী গাছ রোপণ করা হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মেজবাউল করিম, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ময়নুল হক, আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ মহাসিন রেজা, শিক্ষানুরাগী মোঃ আবুল কালাম, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মন্ডলী ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ।

সম্পাদকীয়
প্রেক্ষাপট তাড়াশ পৌরনির্বাচন
সৎ ও আদর্শবান প্রার্থীরাই গড়তে পারে উন্নত পৌরসভা

তাড়াশ পৌরসভার আসন্ন নির্বাচন ১৭ জুলাই ২০২৩।এটা তাড়াশের ইতিহাসে একটা মাইলফলক নির্বাচন। কেননা,নতুন পৌরসভা হিসেবে প্রথম নির্বাচন এবার। সেজন্যই এই নির্বাচন ঘিরে উৎসাহ ও উদ্দীপনা অপেক্ষাকৃত বেশী। এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য তাই স্বতন্ত্র,ভিন্ন বটে।এই নির্বাচনে যে সব প্রার্থী নির্বাচিত হবেন,তারাই অত্র পৌরবাসীর ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ পাবেন।নেতৃত্ব দেবেন এই পৌরসভাকে উন্নত মানের একটি জনপদে পরিণত করার।স্মরণযোগ্য,দেশের সব পৌরসভার মানগত স্তর নির্ধারণ প্রক্রিয়া বিদ্যমান আছে। ফলে সেই নিরিখে প্রথম,দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীর পৌরসভা বিবেচিত ও সে মোতাবেক সরকারী বরাদ্দসহ সুযোগ-সুবিধার তারতম্য রয়েছে।কাজেই পৌরসভাসমূহের মধ্যে উন্নয়ন-অগ্রগতির মাপকাঠিতে প্রতিযোগিতা রয়েছে অর্থাৎ কোন পৌরসভা কত ভাল পারফরমেন্স (গ্রেড) দেখাতে পারে সেটা একটা বিবেচ্য বিষয়।এক্ষেত্রে পৌর এলাকার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভূমিকাই প্রধান, তারাই পৌরসভার উন্নয়নের কর্ণধার। এখানেই সৎ,সুশিক্ষিত,যোগ্য, নিষ্ঠাবান ও দক্ষ নেতৃত্বের প্রশ্ন আসে।
অবশ্য এসব গুণ-বৈশিষ্ট্য কেবল পোষ্টারে-লিফলেটে শোভা পেলে অথবা মাইকে অডিও গানে বাহ্যত ধ্বনিত-প্রচারিত হলে চলবে না। বাস্তবে অতীতে তার সমাজকর্মে অভিজ্ঞতার স্বাক্ষর থাকতে হবে। কারণ যে কোন স্থানীয় সরকারের উৎকর্ষ ও সমৃদ্ধির জন্য সুযোগ্য-দক্ষ নেতৃত্ব পূর্ব শর্ত।ভোট দানের বেলা নেতৃত্বের আদর্শ,নীতি-নৈতিকতা ও গুণাবলী তাই পৌরবাসীর পছন্দের শীর্ষে থাকা দরকার প্রার্থী বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে।অবশ্য আমাদের দেশে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্ধারিত যোগ্যতার কোনো মানডন্ড নেই।ফলে যোগ্য-অযোগ্য, অশিক্ষিত-অজ্ঞ-মুর্খ সবাই দাঁড়াতে পারে। তবে সেটা বিচারের ভার ভোটার জনতার উপর। কোনো দল, মত ও বিশেষ হুজুগে মেতে নয়, সার্বিক তথা সামষ্টিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করা উচিৎ। কারণ কোন স্থানের বা সমাজের নেতৃত্ব যেমন হবে – উন্নয়নও হবে তেমনি।ভাল মানুষ নির্বাচিত হলে ফল হবে ভাল। অনুরুপ মন্দ বৈশিষ্ট্যের নেতৃত্বের কর্ম পরিণামও অনুরুপ মন্দ হতে বাধ্য।তাই প্রায়শ বলা হয়,দুর্নীতিবাজ,মাদক ব্যবসায়ী,সুদ-ঘুষখোর, জঙ্গী,অর্থ পাচারকারী ও অতি স্বার্থপর ব্যক্তিদের নির্বাচনে বয়কট করা উচিত।
আমাদের সমাজে যতই আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের আর অবকাঠামোগত উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাক না কেন; বর্তমানে নৈতিক অবক্ষয় ও মূল্যবোধহীনতা সর্বগ্রাসী রুপ নিয়েছে।আমাদের সমাজের আজ মাথায় পচনের ফলে সমাজের সারা শরীর ব্যাধিগ্রস্থ,দূষিত,কলুষিত তা আমরা জানি। আজ স্বার্থপরতা ও অপরাধ প্রবণতা চরমে উঠেছে, সর্বত্র ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রাজনীতি, সমাজনীতি কোথাও সততা ও পরিশুদ্ধতার প্রতিফলন নেই বললেই চলে। এ অবস্থার ক্রমশ: অবসান হতে পারে যদি আমরা দেশ ও সমাজের সর্বস্তরে সৎ ও আদর্শবান আর ত্যাগী মানুষগুলোতে নেতৃত্বের আসনে বসাতে পারি। এরাই হতে পারে উন্নয়নের সহায়ক। জাতির পিতারও স্বপ্ন ছিল এ ধরনের সোনার মানুষ গড়তে।
উল্লেখ্য, তাড়াশ পৌরসভার মোট ৯টি ওয়ার্ডের ১৯ হাজার ২শত ৮৭ জন (পুরুষ ৯ হাজার ৪শত ৬৭ ও নারী ৯ হাজার ৮শত ২০ জন)। ভোটারদের মন কাড়তে প্রার্থীরা নেমেছেন ভোটযুদ্ধে। নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডে ৪৫ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এছাড়া মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিত করছেন ৪ জন। সেই দৃষ্টিতে তাড়াশ পৌরবাসীর সামনে এটা শুধু একটা নিয়মতান্ত্রিক নির্বাচন নয়,প্রথম পরীক্ষা ও চ্যালেঞ্জ।তারা যদি স্বচ্ছ ভাবমূর্তির,নিবেদিত,নিঃস্বার্থ, শিক্ষিত ও উন্নয়ন চিন্তাধারার নেতৃত্বে তথা প্রার্থীদের পক্ষে রায় দিতে পারে তবেই তাড়াশ পৌরসভা হবে আধুনিক ও অগ্রসর শহরগুলোর একটি।তাছাড়া দুর্বল ও সমস্যাজর্জরিত, নামে মাত্র একটি পৌরসভার সাইনবোর্ড নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে চলতে হবে তাড়াশ পৌরসভাকে। যেটা অত্র পৌর নাগরিকদের কারো কাম্য হতে পারে না।
এটাও স্মরণে রাখা বাঞ্ছনীয়, পৌরসভার নির্বাচিত প্রার্থীগণ তার সংশ্লিষ্ট পৌর আসনকে নিজের কামাই-রোজগারের প্লাটফরম ভাবতে পারবেন না। এখানে তাদের পাবার বা লাভের তেমন কিছু নেই সামান্য নির্ধারিত সন্মানী ভাতা ছাড়া। পক্ষান্তরে পৌরবাসীকে সেবা প্রদানের দায়িত্ব সীমাহীন। পৌরবাসীর আকাঙ্খা থাকবে তাদের কাছে অনেক কিছু চাওয়া-পাওয়ার।বিনিময়ে তারা পাবেন জনগনের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। তার জন্য প্রার্থীদের সেই মেধা, ত্যাগ ও প্রজ্ঞা থাকা অপরিহার্য। পৌর এলাকার উন্নয়ন ও পরিকল্পনা সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে। আমরা আধুনিক, আলোকিত ও উন্নত মডেলের তাড়াশ পৌরসভা চাই, জরাজীর্ণ বিবর্ণ খুঁড়িয়ে চলা কোনো পৌরসভা নয়। এসময় প্রথাগত গড্ডালিকা প্রবাহে না মেতে বুঝেসুজে সচেতন ও সতর্কতার সাথে গোটা পৌরবাসীর ভবিষ্যৎ কল্যাণ ও মঙ্গল চিন্তা করে ভোট দেয়া হবে সুবিবেচনাপ্রসূত জ্ঞানীর কাজ। মনে রাখতে হবে সবগুলোপ্রার্থী সে মেয়র,কাউন্সিলর,সংরক্ষিত কাউন্সিলর যেই হোক, হোক সে নারী কিংবা পুরুষ, সঠিক ও যথাযোগ্য, দূরদর্শী নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে আমরা সেই মানের ও শ্রেণীর পৌরসভা আশা করতে পারি। প্রবাদে আছে “যে এলাকার নেতা যেমন; সে এলাকার উন্নয়নও তেমন”। তাহলে স্মার্ট ও ডিজিটাল পৌরসভা গড়তে হলে প্রার্থী নেতাদেরও সেই পরিমাপের জ্ঞানবত্তা থাকতে হবে।
তাই আমরা সত্যকার প্রকৃত একটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা তখনই পেতে পারি ,যখন এর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্ব টিম হবে বলিষ্ঠ,আধুনিক জ্ঞান-চেতনায় ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ, প্রগতিশীল এবং পরার্থপরতা মানসিকতা সম্পন্ন।যা অশিক্ষিত,স্বল্পশিক্ষিত,নিরক্ষর,সংকীর্ণ , মাদক ব্যবসায়ী , কুপমন্ডুক ,স্বার্থপরতা ও নি¤œমানের এক গুচ্ছ নেতৃত¦ দিয়ে কখনই সম্ভব নয়। সবশেষে বলব,একেবারে শুরুতে আমরা তাড়াশ পৌরবাসী অত্র পৌরসভার নেতৃত্বে একদল নির্ভেজাল ও যুগোপযোগী তারকা নেতৃত্ব দেখতে ও পেতে চাই যেন এই পৌরসভার আগামী দিনগুলি হয় সুন্দর ও সুখময়। পাশ্ববর্তী উপজেলার পৌরসভাগুলোর সাথে উন্নয়ন প্রতিযোগীতায় আমরা এগিয়ে থাকতে পারি – তেমন উন্নত একটি তাড়াশ পৌরসভা আমরা প্রত্যাশা করি। অবশেষে ইভিএম প্রসঙ্গে বলতে হয়, সরকারীভাবে আগেই ভোটারদের ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারের ওরিয়েন্টেশন না দিলে সেক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। কারণ তাড়াশ পৌরসভার প্রায় অর্ধেক ভোটারই অশিক্ষিত অথবা নিরক্ষর।

তাড়াশের সাংবাদিকতা : একাল সেকাল

“লাখে লাখে সৈন্য মরে/কাতারে কাতার
একুনে শুমার হইল চল্লিশ হাজার”
– সোনাভানের পূঁথি
তাড়াশের সাংবাদিকতার একটি ইতিবৃত্ত লেখার জন্য জোড় তাগাদা দিয়েছেন একাত্তর টেলিভিশনের সাংবাদিক মাসুদ পারভেজ। তিনি আমার একান্ত স্বজন, পরম হিতৈষী। টেলিভিশন সাংবাদিকতার যা কিছু গুপ্ত ব্যাপ্ত বিষয় তাঁর কাছেই দীক্ষা নিয়েছিলাম, সে অর্থে তিনি আমার ওস্তাদ-শিক্ষক-গুরু। তাঁর নির্দেশনার ফলেই এ লেখার অবতারণা।

তাড়াশের ইতিহাস :
তাড়াশের সাংবাদিকতার একাল সেকাল- নিয়ে লেখার আগে আমাদের পরিচিত হওয়া দরকার তাড়াশ জনপদের ইতিহাস ও ভৌগলিক অবস্থানের। বর্তমান তাড়াশের পরিচিতি সিরাজগঞ্জ জেলার সর্ব পশ্চিমে চলনবিল বিধৌত একটি উপজেলা হিসেবে। বাংলাদেশের চার শ ৯৫ টি উপজেলার মতোই তাড়াশ একটি উপজেলা মাত্র। আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে এ উপজেলা গঠিত। কিন্তু অতীতে কেমন ছিল তাড়াশ? এ নামের উৎপত্তিই বা কোথা থেকে? – এসব প্রশ্নে উত্তর খুঁজতে হলে ইতিহাসের পাতায় ফিরে তাকাতে হবে।
রাধারমণ সাহার ‘পাবনা জেলার ইতিহাস’ ও অধ্যক্ষ এম. এ হামিদের ‘চলনবিলের ইতিকথা’ থেকে জানা যায় ‘ত্রাস’ থেকে ‘তরাস,’ এবং তা থেকে বর্তমান ‘তাড়াশ’ নামের উৎপত্তি। অতীতে তাড়াশ ছিল চলনবিলের জলমগ্ন দ্বীপ সদৃশ জনপদ। ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর আর দস্যূ তস্করের এক নিরাপদ আড্ডাস্থল। অনেকে নিকট অতীতেও তাড়াশকে ‘আন্দামান নিকোবর’ দ্বীপের সাথে তুলনা করেছেন। সে সময়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তাড়াশে কোনো সরকারি অফিসারকে পোস্টিং করা হলে ধরে নেয়া হতো তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে।
প্রমথনাথ বিশী লিখিত ‘চলনবিল’ গ্রন্থ থেকে জানা যায়-‘ সংসারে অচল লোকের স্থান চলনবিল। যাহাদের কিছুই নাই, কেবল বীর্য আছে, চলনবিলে তাহাদের সবই আছে অথবা ইচ্ছা করিলেই অল্পদিনে সবই অর্জন করিতে পারে’। সে কথার সত্যতাও মেলে মোঘল আমলে চলনবিলের বিখ্যাত পন্ডিত ডাকাত বেণী রায়ের কিংবদন্তিতে। তার বাড়িও ছিলো তাড়াশের কোহিত গ্রামে। কুলশাস্ত্রে বলা হয়েছে-

‘ গঙ্গা পথের গঙ্গাধর, কহিতের বেণী
ছাতকের বসন্ত রায়, পুঙ্গলির ভবানী।’
উল্লেখিত এই চারজনই ছিল চলনবিল অঞ্চলে দুর্ধর্ষ ডাকাত। এ অঞ্চলের অনেক জমিদারও ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা প্রচলিত রয়েছে।
‘ইম্পিরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া’ হতে জানা যায়- ‘হাঁড়িয়াল নগরের (বর্তমান হান্ডিয়াল) ১০ মাইল উত্তরে তাড়াশ নামক একটি গ্রাম রয়েছে। যেখানে ভদ্র কয়েক ঘর কায়স্থ বাস করে’।আপাতত: ইতস্তত বিক্ষিপ্ত এসব ইতিহাস পাঠ করলে পাঠকের মনে হতে পারে তাড়াশের ইতিহাস হয়তবা এইত সেদিনের। এবং তার অতীতও কালিমা লিপ্ত। কিন্তু প্রকৃত ইতিহাস তা বলে না। সাক্ষ্য দেয় স্বর্ণোজ্জ্বল এক বর্ধিষ্ণু জনপদের। ঐতিহাসিকরা তাড়াশের ইতিহাস লিখেছেন একপেশে এবং গবেষণালদ্ধ তথ্য উপাত্ত ছাড়াই।
এ অঞ্চলের বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা নিয়ে বই লিখেছেন তাড়াশের কৃতি সন্তান, দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ড. মোঃ হোসেন মনসুর। ১৯৯৮ সালে বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত তাঁর গবেষণালদ্ধ ‘কোয়াটারনারি এবং বাংলাদেশের ভূতাত্তি¡ক ক্রমবিকাশ’ গ্রন্থের দ্বিতীয় অধ্যায়ে (পৃষ্ঠা-৫৮-৮১) ‘বরেন্দ্র এলাকার কোয়াটারনারির স্তরক্রম’ ও ‘ চলনবিল এলাকার কোয়াটারনারির স্তরক্রম’ শীর্ষক শিরোনামে তিনি এ অঞ্চলের ভূতাত্তি¡ক গঠন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। উপর্যুক্ত দুটি আলোচনাই তাড়াশের জন্য বিশেষভাবে প্রযোজ্য। কেননা তাড়াশ উপজেলাটি মূলত: দুটি ভাগে বিভক্ত। এর দক্ষিণ পশ্চিম অংশ চলনবিল অঞ্চল ও উত্তর পূর্ব অংশ লালমাটির খিয়ার বা বরেন্দ্র অঞ্চল।
অধ্যাপক ড. মোঃ হোসেন মনসুর তাঁর গবেষণায় লিখেছেন-পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নাটোর জেলার বেশ কিছু অংশ জুড়ে আছে বিখ্যাত চলনবিল। বর্ষাকালে এই এলাকার উপর দিয়ে নদীর মতো ¯্রােতাকারে পানি প্রবাহিত হয় বলেই নাম হয়েছে চলনবিল। চলনবিলের উপর দিয়ে উল্লেখযোগ্য প্রবাহিত নদী হচ্ছে আত্রাই ( উপরের ধারা) বা গুমানি (মধ্যধারা) বা বড়াল (নি¤œধারার) নদী। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উত্তারাঞ্চলে যে বৃষ্টিপাত হয় তাতে নদী সমূহ কানায় কানায় ভরে উঠে। উপচে পড়া পানি প্রবলবেগে চলনবিলের উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে নি¤œাঞ্চল যমুনার দিকে।
চলনবিল এলাকা হলোসিন সময়ের প্লাবনাবক্ষেপ দ্বারা আবৃত। বরেন্দ্র সংঘ দ্বারা এককালে ঢাকা ছিল চলনবিল। প্লেইস্টোসিনের শেষে এবং হলোসিনের গোড়ার দিকে প্রবল বর্ষনে যে মহাপ্লাবন হতে থাকে তার প্রচন্ড ¯্রােতে ধূয়ে মুছে গেছে বরেন্দ্র সংঘের উপরের দুটি সভ্য। আনুমানিক প্রায় ৫০০০ বছর আগে অবস্থান পরিবর্তন হয়। বৃষ্টিপাত কম হওয়ার ফলে খর¯্রােতা নদী ধীর গতিসম্পন্ন হয় এবং ক্ষয়প্রাপ্ত চলনবিলের তলে অবক্ষেপগুলোকে চলনবিল সংঘ নামকরণ করা হয়েছে। এই চলনবিল সংঘকেও দুটি অনু-এককে বিভক্ত করা হয়েছে। উপরের অনু-এককটি কালচে বা বাদামি রংয়ের খুব আঠালো সিল্ট-কাদা এবং নিচের অনু-এককটি হলুদ তামাটে এবং বালি প্রধান।
কোনো জনপদের ইতিহাস জানতে হলে ওই জনপদের নদীর ইতিহাসও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা বিশ্বের প্রাচীনতম সকল সভ্যতা গড়ে উঠেছে নদী কেন্দ্রিক। অতীতে তাড়াশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে দুটি পৌরাণিক নদী করতোয়া ও আত্রাই। পুরাণ ও ইতিহাসে এ দুটি নদীকে বলা হয়েছে পূণ্যসলিলা নদী।(বর্তমানে এদুটি নদীই ভারত-বাংলাদেশ আন্ত: সীমান্ত নদী)। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরিপে করতোয়া এখন সংকীর্ণ ও ক্ষীণতোয়া নদী। অথচ মাহŸুব সিদ্দিকী ও ড. শেখ মেহ্দী মোহাম্মদ এর যৌথ সম্পাদিত-‘করতোয়া নদীর তীরবর্তী জনজীবন/অতীত ও বর্তমান’ গ্রন্থে তাঁরা মাঠগবেষণা করে জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের নদ নদীর মধ্যে করতোয়াই দীর্ঘতম নদী। তাড়াশের উপর দিয়ে প্রবাহিত করতোয়ার প্রাচীন খাতটি এখন অবলুপ্ত। নওগাঁহাটের দক্ষিণ পাশে মরা করতোয়া নামে একটি খাত এখনো দৃশ্যমান রয়েছে। করতোয়ার অপর নাম পূণ্যতোয়া। মহাভারতের বনপর্বে রয়েছে-
‘করতোয়াং সমাসাদ্য ত্রিরাত্রো পোষিতোনর:।
অশ্বমেধমবাপ্নোতি প্রজাপতি কৃতোবিধি:।।’
অর্থাৎ- পবিত্র করতোয়া নদী তীরে তিন রাত্রি বাস করলে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফলপ্রাপ্তি হয়।
এ নদীর উভয়তীরে অসংখ্য তীর্থ স্থান রয়েছে। তাড়াশে নওগাঁর মরা করতোয়ায় এখনো পূণ্যার্থীরা অষ্টমীর ¯œান করে থাকেন। করতোয়ার পশ্চিম তীরের জনপদ তাড়াশ ও পূর্ব তীরের জনপদ নিমগাছির ঐতিহাসিক বিরাট নগর। যেখানে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় মাঠ জরিপ করে গুপ্ত ও পাল শাসণামলের বৌদ্ধ সভ্যতার অনেক নিদর্শন খুঁজে পেয়েছেন। এ ছাড়াও সেখানে সেন শাসনামলের জয়সাগর,প্রতাপদীঘি ও উদয় দিঘী নামক সুবৃহৎ জলাশয় রয়েছে।
পাঠক, করতোয়ার পশ্চিমে প্রবাহিত ধারাটির সঙ্গে তাড়াশের ইতিহাস জড়িত। এ কারেণে একটু বিস্তৃত বিবরণ দেয়া প্রয়োজন। করতোয়া পুরাণ গ্রন্থে ত্রি¯্রােতার অন্যতম ¯্রােত হিসেবে আখ্যায়িত। প্রকৃতপক্ষে বাংলার উত্তর জনপদের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সর্ববৃহৎ এ নদীটির উৎপত্তি ঘটেছিল সিকিমের সুউচ্চ পর্বত শ্রেণি থেকে। তিব্বতের হিমবাহ থেকে উৎপন্ন তিস্তা করতোয়া পাশাপাশি সমান্তরাল প্রবাহপথ ধরেই সমতলে নেমে এসেছে। পুনর্ভবা প্রাচীন করতোয়াই অন্যতম প্রধান শাখা। ১৭৮৭ সালে তিস্তার মহাপ্লাবনে করতোয়া আদি উৎস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। করতোয়ার বর্তমান উৎস ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার বৈকুণ্ঠপুর অরণ্যের নি¤œ জলাভূমি। ১৭৮৭ পরবর্তী করতোয়া প্রয়োজনীয় ¯্রােত না পেয়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং দিনাজপুর করতোয়া, রংপুর করতোয়া,বগুড়া করতোয়া, পাবনা করতোয়া ইত্যাদি নামে এর বিভিন্ন প্রবাহপথে পরিচিতি পেয়েছে ( করতোয়া নদীর তীরবর্তী জনজীবন/ অতীত ও বর্তমান) ।
অর্থাৎ করতোয়া নদী বাংলাদেশ অংশে দিনাজপুর, রংপুর ও বগুড়া জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এরপর বগুড়া জেলার অন্তর্গত শেরপুর উপজেলার খানপুর গ্রামের নিকট হলহলিয়া নদীর সাথে মিলিত হয়ে কিছুদুর গেলে বাঙালি নামক অন্য একটি নদীও এর সাথে মিলিত হয়েছে। এবং ওই স্থান থেকে করতোয়া ‘ফুলজোড়’ নাম ধারন করে ক্রমশ দক্ষিণবাহি হয়ে রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা হাটের পাশ দিয়ে ধানঘড়া, রায়গঞ্জ প্রভৃতি স্থান ঘুরে প্রায় ১০ মাইল অতিক্রম করে পূর্বদক্ষিণে নলকা হয়ে ১৪ মাইল পথ পরিভ্রমণ করে শাহজাদপুর উপজেলার নবীপুর ও নরনিয়া গ্রামদ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে যমুনার শাখা নদী হুরাসাগরের সাথে সংযুক্ত হয়েছে। বর্তমান প্রজন্মে র কাছে করতোয়া নদীর এটুকুই পরিচিতি।
কিন্তু করতোয়ার আরেকটি খাত (যা বর্তমানে অবলুপ্ত) প্রাচীনকালে স্রোতস্বীনি সুবৃহৎ নদী ছিলো। যার তীরে গড়ে উঠেছিল বর্ধিষ্ণু শহর বন্দর। বগুড়া জেলার শেরপুরের ভবানীপুর, সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জের নিমগাছির বিরাটনগর, তাড়াশের নওগাঁ (প্রাচীন নবগ্রাম) ও পাবনার চাটমোহরের হান্ডিয়াল ( হাঁড়িয়াল নগর),মির্জাপুর, অষ্টমণীষা ইত্যাদি।
লঘুভারত,৩য় খন্ডে উল্লেখ রয়েছে-
‘পশ্চিমে করতোয়া আস্তে দেবীপুরং মহৎ।
ভাবতায়াং ভবানীতি মহাপীঠ নিদর্শম।। ৬৪
তদুত্তরে সেরপুরং করতোয়া নদীতটে।
তস্য পূর্বে সেরপুরং দ্বিতীয়ং বঙ্গমন্ডলে।।৬৫
তয়োর্ম্মধ্যে করতোয়া প্রবলাসীম্মহানদী।
ত্রি¯্রােতা ব্রক্ষপূত্রাদেঃ শাখাভিম্মিশ্রিতা পরে।।৬৬
লেভিরে নৌকয়া পারং দশ কার্যাপণৈর্নরাঃ।
দশকার্যাপণ সেরপুরং তেনৈব গীয়তে।।, ৬৭
করতোয়ার বিস্মৃত এই খাতটি প্রাচীনকালে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মহাপীঠ ভবানীপুর হয়ে সিরাজগঞ্জের নিমগাছি, তাড়াশ, নওগাঁ, পাবনার হান্ডিয়াল, অষ্টমনীষা হয়ে মাটিয়াদহের নিকটে আত্রাইয়ের সাথে মিলিত হয়েছে। করতোয়ার ন্যায় আত্রাইও পুরাণ প্রসিদ্ধ নদী। যা তাড়াশের পশ্চিম পাশ দিয়ে এখনো প্রবাহমান। দেবী পুরণে উল্লেখ রয়েছে-
‘আত্রেয়ী ভারতী গঙ্গা যমুনা চ সরস্বতী।
সরযু গন্ডকী পূণ্যা শ্বেত গঙ্গা চ কৌশিকী।
ভোগবতী চ পাতালে স্বর্গে মন্দাকিনী তথা।।’
ঐতিহাসিকগণ মহাভারতের ঐতিহাসিক বিকাশ ও রচনাকালীন স্তরগুলো নিয়ে গবেষণা করে দেখিয়েছেন, অধুনা প্রাপ্ত পাঠটির প্রাচীমতম অংশটি মোটামোটি ৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ গুপ্তযুগে রচিত। এ মহাকাব্যে উল্লেখিত করতোয়া ও আত্রাই নদীর পললে গড়ে ওঠা জনপদই আজকের তাড়াশ। সে অর্থে গুপ্তযুগ থেকে পাল ও সেন আমলে তাড়াশ সহ চলনবিল অঞ্চলের বহু জনপদ গড়ে ওঠেছে। অনেক ঐতিহাসিক ধারণা করেন, খ্রিস্টপূর্ব দ্রাবিড় আর্যদের সংঘাতময় সময়ে এ জনপদের অনেক গ্রাম গড়ে ওঠে। বিনসাড়া ও বস্তুল গ্রাম তার উদাহরণ। এসব নগরে উন্নত বণিক পরিবার বাস করত। সে যুগে উত্তরের লালমাটির দেশের সাথে দক্ষিণের নরম পলিমাটির দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের পথ ছিলো তাড়াশ। এর প্রামানিক নিদর্শন নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার ধানাইদহ গ্রামে ৪৩২ খ্রিষ্টাব্দের আবিষ্কৃত কুমার গুপ্তের তাম্্র শাসন ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগরে আবিষ্কৃত রাজা লক্ষণ সেনের তা¤্রশাসন অন্যতম। (পরবর্তী সংখ্যায় চলমান)
লেখক ঃ বিশিষ্ট সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক। সভাপতি, তাড়াশ প্রেস ক্লাব, সিরাজগঞ্জ।

উত্তর বঙ্গের মানুষকে ‘মফিজ’ বলা হয় কেন ?
ডাঃ আমজাদ হোসেন মিলন ছবি
গাইবান্ধা জেলার প্রত্যন্ত এক গ্রামের স্বল্পশিক্ষিত অত্যন্ত সৎ ড্রাইভার ছিলেন মফিজ। তাঁর শেষ জীবনের সঞ্চয় এবং বাবার দেয়া সামান্য জমি বিক্রয় করে ঢাকা রুটের একটা পুরাতন বাস ক্রয় করে ঢাকা- গাইবান্ধা রুটে বাসটি চালু করলেন। গরীব দরদী মফিজ সাহেব দিনমজুর লোকদের স্বল্প ভাড়ায় ঢাকা নিয়ে যেতেন।
এক সময় বয়সের ভারে মফিজ সাহেব অন্য ড্রাইভার দিয়ে বাস চালনো শুরু করলেন। কিন্তু দিনমজুর শ্রেনীর লোকেরা ভাড়া সাশ্রয়ের জন্য তাঁর বাড়িতে ধর্না দেয়া শুরু করলো। তাদের উপকারের জন্য সাদা কাগজে মফিজ লিখে সুপারভাইজারকে দিতে বলতেন এবং বাসের ছাদে নামমাত্র ভাড়ায় ঢাকা যাতায়াতের সুবিধা করে দেয়ার ব্যবস্থা করতেন। বাসের সুপারভাইজার মফিজ স্বাক্ষরযুক্ত কাগজ সংগ্রহ করে কম ভাড়া আদায় করতেন।
তাই বাসের ছাদে উচ্চস্বরে সুপারভাইজার বলতেন কয়জন মফিজ আছো ছাদে? অর্থাৎ কয়টা মফিজের ¯িøপ আছে? আর এভাবে গরীবের উপকারী বন্ধু মফিজ শব্দটি চালু হয়। আজ আমরা ঠাট্রা করে অনেকে ‘মফিজ’ শব্দটি উচ্চারণ করি। কিন্তু বুকে হাত দিয়ে বলেন ‘মফিজ’ হওয়ার যোগ্যতা কি আপনার আমার আছে? এখন আসুন মুল কথায়ঃ ব্যাকডেটেট পিছিয়ে থাকা জনগন ভাইভা বোর্ডে নব্বই ডিগ্রী এ্যাংগেলে ভ্রু-কুঁচকে বলা হয়,”ও! তোমার বাড়ি উত্তর- বঙ্গে। “তারপর রেজাল্ট যা হবার তাই হয়। একটা কমন চিত্র। ব্যাপারটা কি সত্যি এরকম? আসলেই কি এরা ব্যাকডেটেট? যাদের মানসিকতা এমন তারা কি আপডেটেড? আজকের প্রভাবশালি জনপ্রিয় লেখক আনিসুল হক কোথাকার? সৈয়দ শামসুল হক কোথাকার? কবি শেখ ফজলল করিম কোথাকার ছিলেন? ফকির মজনু শাহ? আব্বাস উদ্দীন? তেভাগা আন্দোলনের সফল নায়ক হাজী দানেশের বাড়ি কোন বঙ্গে ছিল? প্রফুল্ল চক্রবর্তী আর ক্ষুদিরাম বসু জানেন কোথাকার ছিল? . যে মেয়ে ম্যাডামটা আজকে ভাইভাতে বসে উত্তরবঙ্গকে ব্যাকডেটেট বলে,সে হয়তো ভুলে গেছে মেয়ে মানুষদের পড়াশুনার ইতিহাস? উত্তরবঙ্গের বেগম রোকেয়া না থাকলে আজ কি হতো? তানিয়া আমিররা আইনজীবী হতে পারতো না, বিমানের পাইলট হতে পারতো না কানিজ ফাতেমারা, ওয়াসফিয়ার হিমালয় জয় করা লাগত না।
চুলায় আগুন দিতে দিতে জীবন শেষ করতে হতো। মৌর্য সেনদের রাজধানী কোথায় ছিল? ঢাকা তো দু- চার’শ বছর আগে রাজধানী হল। ঢাকা অনেক জুনিয়র , সিনিয়র রাজধানী তো মহাস্থানগড়!! . নয় বছর দেশ চালানো এরশাদ সাহেব কোথাকার? শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কোন বঙ্গের? বগুড়ার ম্যাডাম খালেদা জিয়ার জন্ম দিনাজপুর । দেশের সংকট সময়ে সাহসী সেনাবাহিনীর প্রধানরা কোন বঙ্গের ছিল? বিখ্যাত সাংবাদিক থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে যাওয়া মশিউর রহমান যাকে আমরা জাদু মিয়া নামে চিনি তার বাড়িটাও উত্তরবঙ্গের রংপুরে। কিংকর্তব্যবিমূঢ!! বাংলাদেশের বিপদকালীন সময়ে হাল ধরা রাষ্ট্রপতিরা আর সেনাপ্রধানরা কোন বঙ্গের? একবার বাংলা একাডেমিতে আঞ্চলিক বিতর্ক হচ্ছে। এই বিতর্ক নিজের অঞ্চলের ভাষায় করতে হয়।
একটু মজাও করতে হয়। রংপুরের পক্ষে বিতর্কের যে অংশটুকু চ্যানেল আই-এ দেখানো হল সেটি ছিল সংক্ষেপে এরকম “হামার দ্যাশের জনক বঙ্গবন্ধুর ছাওয়া শেখ হাসিনা। বিয়ার জন্যে পাত্র খুজিবার নাগচে। কোনোটে ভালো পাত্র পায় নাই। শ্যাষে সবার চাইতে ভালো পাত্র কোটে পাইচে কন তো বাহে? হামারঅমপুরে!!” . বাদ দেন সারা দেশে শতসহস্র ছেলে থাকতে বঙ্গবন্ধু ওনার মেয়েকে উত্তরবঙ্গের ছেলের সাথে বিয়ে দিল কেন? কারন বঙ্গবন্ধু জানতেন ওয়াজেদ জিনিয়াস, হু ইজ রিয়েলি স্মার্ট!!” দেশ চালায় কোন বঙ্গের মানুষ? কোন বঙ্গের পুত্রবধু? সাবধান।
মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, জাতীয় চার নেতার এক নেতা ক্যাপ্টেন মনসুর , জেনারেল জে.এন.চৌধুরী (সাবেক ভারতীয় সেনাপ্রধান),সাবেক বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল(অবঃ) এ.কে. খন্দকার, স্যামসন এইচ চৌধুরী। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ঔষধ প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লি: এর প্রতিষ্ঠাতা। সঙ্গীতশিল্পী তপন মাহমুদ, বাপ্পী লাহিড়ী,ডলি সায়ন্তনী, বাদশা বুলবুল ,খ্যাতিমান উপস্থাপক ফজলে লোহানী,বাংলা গদ্যরীতির সার্থক রূপকার সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী ,কবি বন্দে আলী মিয়া, জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা সুচিত্রা সেন,টিভি ব্যক্তিত্ব চঞ্চল চৌধুরি, জাহিদ হাসান, তৌকির আহমেদ, নায়ক আলি রাজ, বৃন্দাবন দাস সহ অনেকে। স্বপ্নাতুর কবি সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী, ডক্তর আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দিন, মাওলানা খোন্দকার আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, যাদব চন্দ্র চক্রবর্তী , রজনী কান্ত সেন, ফতেহ লোহানী, কন্ঠ শিল্পি কনকচাঁপা, মুসা ইব্রাহীম একজন বাংলাদেশী পর্বতারোহী এবং সাংবাদিক, যিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয় এরম ন্ত্রী মো. নাসিম এরা সকলেই উত্তরবঙ্গের কৃতি সন্তান ।
ভুলে যাবেন না সামনে সজীব ওয়াজেদ জয় একজন রংপুর সন্তান। হাসের মত প্যাকপ্যাক করে ভাইভা বোর্ডে উত্তরবঙ্গের মফিজ বলে সবাইকে তাড়িয়ে দিলে প্রেসিডেন্ট জিয়া, জেনারেল এরশাদ, খালেদা জিয়া, আনিসুল হক দের পেত না এই বাংলাদেশ। ভারত সহ বিশ্বে ১৫০ টির বেশি দেশে পন্য রপ্তানি করে সারা বিশ্বে দেশের সুনাম এনেছে প্রাণ আর এফ এল গ্রুপ,দু:খিত ভাই এটাও উত্তরবঙ্গের,সারাবিশ্বে ফ্যাশন দুনিয়ার রানি বলে সমাদৃত বিবি রাসেল,এই মানুষটার বাড়ি রংপুর।অশংখ্য রহিমুদ্দি, করিমুদ্দি ভরসা কিংবা আমজাদ খান চৌধুরি পুরা উত্তরবঙ্গ জুড়ে। মেধার অভাব উত্তরবঙ্গে নেই বরং কিছু কিছু চেয়ারে বসা বিচারকের “সুস্থ মানষিকতার” অভাব আছে। . কথিত মহান ব্যাক্তিরা উত্তর-বঙ্গ বলে যখন কাউকে পাঠিয়ে দিলেন তারা হয়তো তখন ভাসানী, ক্যাপ্টেন মনসুর একজন আনিসুল হক কে কিংবা ভবিষ্যত কোন রাষ্ট্রপতিকে হারিয়ে ফেললেন। সাথে সাথে এক ধাপ পিছিয়ে গেল বাংলাদেশ। আমি একটা কথা সবসময় বলি, ”মনে রাখবেন রাষ্ট্র শাসনের নবাবীত্ব উত্তরবঙ্গ থেকেই এসেছে।তাই উত্তরবঙ্গের মানুষকে মফিজ বলার আগে এই কথাগুলো একবার ভেবে দেখবেন।

লেখক : বিশিষ্ট কবি, কলামিস্ট, লেখক ও সাংবাদিক। উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ।

বর্ষার বিদ্রোহ
এ্যাডঃ মোঃ আব্দুলওহাব, বীর মুক্তিযোদ্ধা

বর্ষা তুমি ফিরে আসো ভয়ংকর রুপে
বর্ষা তুমি আকাশ ভরা মেঘ আনো।
বর্ষা তুমি মুষলধারে বৃষ্টি আনো
বর্ষা তুমি পাহাড় থেকে ঢল নামো।

বর্ষা তুমি মরা নদী, খাল-বিল ভাসিয়ে দাও
বর্ষা তুমি দুঃখি মানুষের ঘর-বাড়ী ভাঙ্গো।
বর্ষা তুমি নদীর দু-পাড় ধ্বংস কর
বর্ষা তুমি জীবন ও সম্পদের বিনাশ কর।

বর্ষা তুমি গ্রাম, শহর, পথ-ঘাট ডুবিয়ে দাও
বর্ষা তুমি কবি নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা।
বর্ষা তুমি কবিদের কবিতার ভান্ডার
বর্ষা তুমি কৃষকের দু’চোখ ভরা স্বপ্ন।

বর্ষা তুমি বানভাসী অনাহারী মানুষের আতঙ্ক
বর্ষা তুমি ত্রাণের নামে কর রাজনীতি
বর্ষা তুমি হও পত্রিকার প্রধান শিরোনাম।

চাটমোহরে ফুটবল টুর্ণামেন্ট ফাইনাল খেলা 
চাটমোহর প্রতিনিধি : চলনবিলের চাটমোহওে গত শনিবার বিকেলে বেজপাড়া খেলার মাঠে সরকার গোলাম মোহাম্মদ স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশিষ্ঠ শিল্পপতি সরকার কবির আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ফুটবল খেলায় অতিথি হিসেবে খেলা উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, পাবনা-৩ আসনের এমপি মনোনয়ন প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আব্দুল আলীম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এস,এম নজরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও পাবনা-৩ এর এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশী মোঃ আতিকুর রহমান আতিক, ডিআইজি হাইওয়ে পুলিশ পশ্চিমঅঞ্চল আলহাজ¦ মোঃ মোজাম্মেল হক বিপিএম (বার) পিপিএম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ইছাহক আলী মানিক, ডিবিগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ অহেদ আলী। খেলায় চাটমোহর নারিকেলপাড়া স্প্রোটিং ক্লাবকে হারিয়ে তাড়াশ চলনবিল ষ্প্রোটিং ক্লাব ৩-১ গোলে পরাজিত করে। খেলায় পুরুস্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দরা। এসময় গন্যমান্য সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

নিমগাছি কলেজ শিক্ষক আলহাজ্ব
এম এ হাশিম মনির বিদায়ী সভা

আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার – সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলাধীন নিমগাছি অনার্স কলেজের ভূগোল বিভাগের শিক্ষক বিশিষ্ট সাংবাদিক, কবি, উপন্যাসিক, সংস্কৃতজন এবং সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তার নিমগাছি প্রতিনিধি আলহাজ্ব এম এ হাশিম সরকার মনি দীর্ঘ কর্মজীবন শেষে অবসর গ্রহণ করায় কলেজ কর্তৃপক্ষ আয়োজিত বিদায়ী সভা গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয় বেলা ১২ টায় শিক্ষায়তনের হলরুমে অধ্যক্ষ আলহাজ্ব আমিনুল বারী তালুদারের সভাপতিত্বে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজের গভার্নিং বডির সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিদায়ী শিক্ষকের কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন তার বিশেষ ঘনিষ্টজন সিরাজগঞ্জ সরকারী কলেজের সহকারী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম তালুকদার, নিমগাছি কলেজের সহকর্মী বাংলা বিভাগের অধ্যাপক জহুরুল ইসলাম, হিসাব বিজ্ঞানের প্রফেসর শংকর কুমার, প্রকৌশল অংকন বিভাগের প্রফেসর অমল কৃষ্ণ বিশ্বাস , ইংরেজীর প্রফেসর হাফসা খাতুন, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর শহিদুল ইসলাম তালুকদার, রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মজিদ তালুকদার প্রমূখ। বক্তাগন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের জীবনের বাকী দিনগুলো যেন সুন্দর ও মঙ্গলময় হয় এই কামনা করেন পরম করুনাময়ের নিকট। বিদায়ী শিক্ষক নিজেও কান্না জড়িত কন্ঠে তার নিজের বক্তব্য রাখেন, বিশেষ করে সবার কাছে ভূল – ক্রটির জন্য ক্ষমা ও দোয়া চান । অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন কম্পিউটার শিক্ষক শামসুল আলম।
তাড়াশে গুণীজন সংবর্ধনা
বিশেষ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের তাড়াশে আব্দুর রহমান মিঞা নামে একজন শতবর্ষী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অঞ্জলী রানী ঘোষ নামে একজন মহিয়সী নারী শিক্ষককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তার সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক রাজুর লেখা ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় দিনগুলি’ শিরোনামের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। গত শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা ও মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আবদুর রাজ্জাক রাজু। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাক্ষ মো. মনিরুজ্জামান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) নূরী তাসমিন ঊর্মি, রাজশাহী সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ইউনিভারসিটি, নাটোর এর রেজিষ্টার ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক, লেখক ও গবেষক কে এম আব্দুল মমিন প্রমূখ। সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তার আয়োজনে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা রুবি ও লালন গবেষক সাইফুল ইসলাম।

রায়গঞ্জ প্রেসক্লাবের এজিএম অনুষ্ঠিত 
রায়গঞ্জ প্রতিনিধি : গত বুধবার বিকেল তিনটায় ঐতিহ্যবাহী রায়গঞ্জ প্রেসক্লাবের এজিএম অনুষ্ঠিত হয় সংগঠনের ধানঘড়া বাসস্ট্যান্ডের নিজস্ব অফিসে কে এম রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে। এতে ক্লাবের বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন সাধারণ সম্পাদক ও মাইটিভির সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি এইচ এম মোনায়েম। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও নিমগাছি অনার্স কলেজের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আলহাজ্ব এম এ হাশিম সরকার মনি, সিনিয়র সদস্য এবং বেগম নুরুন্নাহার তর্কবাগীস কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফজলুল হক খান, তাড়াশের নওগাঁ সিনিয়র মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি ডঃ গোলাম মোস্তফা, ধানঘড়া মহিলা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, দৈনিক প্রথম আলো প্রতিনিধি সাজেদুল আলম আলামীন, ক্লাবের নতুন ভর্তিকৃত সদস্যগনের পক্ষে আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন প্রমূখ। উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং গতবার প্রনীত গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক এবার ৪ জন নুতন সদস্য ভর্তি করা হয় রায়গঞ্জ প্রেস ক্লাবে। যদিও ভর্তির জন্য আবেদন করে ১০ জন যাদের মধ্যে ৬ জন যাচাই বাছাইয়ে বাদ পড়েন, জানান সভার সভাপতি কে এম রফিক। এর আগে নুরুল হক নয়ন, শিহাবুল আলম সায়েম, ফয়সাল সহ নতুন ভর্তিকৃত ৪ জন সদস্যকে লাল গোলাপের শুভেচ্ছা জানিয়ে বরন করে নেন ক্লাবের নেতৃবর্গ। শেষে নতুনদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে এবং সংগঠনের সবার মঙ্গলের প্রার্থনা জানিয়ে মোনাজাত করেন সাবেক জিএস আব্দুলাহ সরকার। উল্লেখ্য, ক্লাবের কোনো মিটিংয়ে নতুন – পুরান সকল সদস্যের উপস্থিত হওয়ার রেকর্ড বুধবারের সভায় প্রথম সংঘটিত হলো
সিংড়ায় শিশু ধর্ষণের অভিযোগে বিক্ষোভ 
সিংড়া প্রতিনিধি : নাটোরের সিংড়ায় ১০ বছর বয়সী ৪র্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামে নানা (মায়ের মামা) আলাল হোসেন (৬০) ওই শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে বলে শিশুর পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ।
বর্তমানে শিশুটি সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে ঘটনার পর ধর্ষক আলাল হোসেনকে গণধোলাই দেন এবং তার গ্রেপ্তার দাবিতে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। ধর্ষক আলাল হোসেন বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মৃত নবাব আলীর ছেলে বলে জানা গেছে।শিশুর পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মুদি দোকানি আবদুস সামাদের শিশু কন্যা বাড়ি থেকে বের হয়ে স্থানীয় বাজারে তার বাবার দোকানে কাঁচা সবজি-তরকারি আনতে যায়। এসময় আলাল হোসেন তাকে সিগারেট আনতে দেন। পরে বাজার থেকে ফেরার পথে সিগারেট নিয়ে তাকে দিতে গেলে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ওই শিশু শিক্ষার্থীকে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করেন আলাল হোসেন। পরে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ধর্ষক আলাল হোসেনকে বেধরক পিটুনি দেন শিশুটির পরিবার ও এলাকাবাসী। এদিকে ঘটনার পর শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনা জানার পরে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা শুনেছি। থানার বাহিরে থাকায় অভিযোগটি দেখিনি। থানায় গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।চলনবিলে পোনা মাছ নিধনের মহোৎসব 
ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি:মৎস্য ভান্ডার নামে খ্যাত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চলনবিলে বর্ষার পানি এসেছে। পানি আসার সাথে সাথে মা ও পোনা মাছ নিধনের মহোৎসব শুরু হয়েছে। ডিমওয়ালা মা মাছ নিধনরোধে প্রশাসনের কোন প্রকার পদক্ষেপ নেই। ফলে থামছে না মা ও পোনা মাছ নিধনযজ্ঞ। নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল,বাদাই জাল,খৈলশুনিসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে রাত-দিন চলছে মা ও পোনা মাছ ধরা। প্রতিদিন সকালে বিলপাড়ের ভাঙ্গুড়া চাটমোহর,তাড়াশ,বড়াইগ্রাম,গুরুদাসপুর ও সিংড়া উপজেলার বাজারগুলোতে প্রকাশ্যে পোনা মাছ ও ডিমওয়ালা মাছ বিক্রি হচ্ছে। জনপ্রতিনিধি,সরকারি কর্মকর্তাসহ বিলপাড়ের স্বচ্ছল পরিবারের ব্যক্তিরা ডিমওয়ালা মাছ কিনতে যেন উন্মুখ হয়ে থাকেন। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ডিমওয়ালা মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রতি কেজি টেংরা ৬শ’ থেকে ৮শ’ টাকা,পুঁটি ৫শ’ টাকা,মোয়া মাছ ৬থেকে ৭শতটাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। ডিমওয়ালা বোয়াল বিক্রি হয়েছে ৮শত টাকা কেজি। ডিমওয়ালা লোভনীয় দেশী মাছ ও পোনা মাছ কিনতে ভীড় পড়ে যায় বাজারগুলোতে। বর্ষা শুরু হলে জুন-জুলাই মাসে চলনবিলে মাছ ডিম ছাড়ে। এসময়টাতে মাছ ধরা একেবারেই নিষিদ্ধ। ১৯৫০ সালের মৎস্য আইন অনুযায়ী যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু কেউ আইনের তোয়াক্কা করছে না। এভাবে ডিমওয়ালা মা মাছ নিধন করা হলে চলনবিল থেকে দেশী প্রজাতির মাছ ক্রমান্বয়ে বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে সচেতন মহলের অভিমত।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.নাজমুল হুদা জানান,ইতোমধ্যে কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। মা মাছ নিধনরোধে দ্রæত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে।

ভাঙ্গুড়ায় রক্ষকই যখন ভক্ষক 
ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি: ভাঙ্গুড়া পৌর সভার জিনিসপত্র, হাট বাজার ও পৌরবাসীর সুযোগ সুবিধা দেখভালের দায়িত্ব যাদের উপর ন্যাস্ত তারা হলেন নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরবৃন্দ। কিন্তু মেয়র হজ্ব পালনের জন্য মক্কা নগরীতে গমনের সুযোগে জনৈক কাউন্সিলর পৌরসভার পশুর হাটের জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ করে ভক্ষকের আসনে আসীন হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এমন অভিযোগ উঠেছে পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর মোজাম্মেল হক বিশুর বিরুদ্ধে। তিনি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর । পৌর কর্তৃপক্ষের নিষেধ আমান্য করে এই ভবন নির্মাণ কাজ করছেন প্রভাবশালী এই কাউন্সিলর।
জানা গেছে, প্রথম শ্রেণির ভাঙ্গুড়া পৌরসভার অর্থনৈতিক আয়ের একমাত্র উৎস ঐতিহ্যবাহী শরৎনগর পশুহাট। প্রতিবছর এই হাট ইজেরা দিয়ে দুই কোটি টাকার অধিক আয় হয় ।যা দিয়ে পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীদের সারা বছরের বেতন ভাতা হয়ে থাকে। রেলের মালিকানাধীন বড়াল ব্রিজ রেলস্টেশনের পাশে কয়েক একর জায়গায় সপ্তাহে একদিন এই পশুহাট বসে। তবে এ বছর পৌরসভার মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল পবিত্র হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব গমন করেছেন। এই সুযোগে কাউন্সিলর মোজাম্মেল হক বিশু রেলের নীতিমালার তোয়াক্কা না করে জোরপূর্বক হাটের এই জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ শুরু করেছেন।সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায় , রেললাইন ও উপজেলা সড়ক ঘেঁষে পশুহাটের পূর্বদিকে ৫-৬ শতক জায়গা নিজের দখলে রেখেছেন এই কাউন্সিলর। এই জায়গার মধ্যে প্রায় ২০ ফুট প্রশস্ত ও ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য পাকা ভবন নির্মাণ শুরু করেছেন তিনি। এরই মধ্যে তিনি ভবনের দুই পাশের ওয়াল নির্মাণ কাজ শেষ করেছেন। কাজ চলাকালীন পৌর কর্তৃপক্ষ ও রেলের লোকজন ভবন নির্মাণ বন্ধে নিষেধ করলেও তা মানছেন না এই কাউন্সিলর।ভবন নির্মাণকারী কাউন্সিলর মোজাম্মেল হক বিশু বলেন, পূর্বে রেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া ছিল। তাই ভবন নির্মাণ করছি। অনুমতির কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি বলেন, সকলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাজ বন্ধ রেখেছি।এ বিষয়ে পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. বরাত আলী বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবগত হয়েছেন। মেয়র মহোদয় হজ্জ থেকে ফিরলেই এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তাড়াশে শত্রæতাবশে মাছে বিষ প্রয়োগ 
তাড়াশ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশের এক মৎস্য চাষির দশ বিঘা জলাশয়ের একটি পুকুরে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগ করে ৫লক্ষ টাকা মূল্যের মাছ মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের সান্দ্রা গ্রামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ময়নুল হক।
ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষি আব্দুল হান্নান জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করে আসছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি দশ বিঘা জলাশয়ের ওই পুকুরে খাবার দিয়ে বাড়ি ফেরেন। গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা পূর্ব শত্রƒতার জের ধরে পুকুরে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগ করে। ফলে পুকুরের অধিকাংশ মাছ মরে ভেসে উঠে। এতে তার প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।

তাড়াশে গোখাদ্যের অবারিত সবুজ মাঠ 

বিশেষ প্রতিনিধিঃ আষাঢ়ের বৃষ্টিতে বিস্তীর্ণ মাঠের পতিত জমিতে লকলকিয়ে বেড়ে উঠেছে সবুজ ঘাস। এসব পতিত জমি এখন গবাদিপশুর চারণভ‚মি। ফলে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা থেকে দীর্ঘদিনের গোখাদ্যের সংকট কেটে গেছে। সরেজমিনে গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে দেখা যায়, মাঠে-মাঠে চরে বেড়াচ্ছে গবাদিপশুর দল।
তাড়াশ পৌর এলাকার আসানবাড়ি গ্রামের গেরস্থ ছাত্তার প্রামানিক ও বেল্লাল হোসেন বলেন, তাদের গবাদিপশুগুলো এখন মাঠেই ঘাস খায়। বাড়ির খড় সংরক্ষিত রয়ে যাচ্ছে। বন্যার সময় খড় খাওয়াতে হবে। এদিকে পৌর এলাকার কহিত গ্রামের আলম নামের একজন গেরস্থ বলেন, আমি মাত্র চার শতক জায়গাতে ঘাসের আবাদ করে রেখেছি। সারা বছর আমার ৬টি গরু ও বাড়ির ছাগলগুলো ঘাস খায়। এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. ওয়ালীউল ইসলাম সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তাকে বলেন, চারণভ‚মি বাড়ায় খড় সংরক্ষিত রয়ে যাবে গেরস্থদের। ফলে গোখাদ্যের সংকটের শঙ্কা কমে গেল। একই সাথে গেরস্থদের বাড়ির আঙিনায় ঘাসের আবাদ করে রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

চাটমোহরে গুমানী নদীতে কচুরিপানা 
চাটমোহর প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহরে গুমানী নদীর বুকে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাসমান কচুরিপানা জমে থাকায় নৌচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। নদীতে জোয়ারের পানি আসলেও কচুরীপানার কারণে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায় স্থলপথে পণ্য পরিবহন করতে এই এলাকার ব্যবসায়ীদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। নদী ব্যবহার করতে না পারার বিরুপ প্রভাব পরছে এ এলাকার হাজার হাজার মানুষের জীবন যাত্রায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসের দিকে এ এলাকার নদ নদীগুলোতে জোয়ারের পানি আসে। অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল হামিদ রচিত চলনবিলের ইতিকথা গ্রন্থ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জলপাইগুড়ির পাহাড় থেকে উৎপন্ন হওয়া আত্রাই ও গুর নদী রাজশাহীতে এসে কয়েকটি শাখায় বিভক্ত হয়ে পরে। এর একটি শাখা কয়রাবাড়ি, নন্দনালী, ও আত্রাই হয়ে আত্রাই ঘাটের এক মাইল ভাটি হতে “গুড়” নামে সিংড়া, একান্ন বিঘা, যোগেন্দ্রনগর ও কালাকান্দরের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে চাঁচকৈড় ত্রিমোহনায় নন্দ কুজার সাথে মিশেছে।

রায়গঞ্জে প্রাইভেট কারে আগুন 
স ম আব্দুস সাত্তার ,রায়গঞ্জ ঃ সিরাজগঞ্জে রায়গঞ্জে সোনাখাড়া ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান আবুহেনা মো: মোস্তফা কামাল রিপনের ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার গাড়ীটি বৃহস্পতিবার মধ্যে রাতে দৃর্বূত্তরা আগুন দিয়ে পুড়ে দিয়েছে। জানা যায়, উপজেলার ২নং সোনাখাড়া ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান ও সোনাখাড়া ইউনিয়ন আ: লীগের সভাপতি আবুহেনা মো: মোস্তফা কামাল রিপনের ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার গাড়ীটি গত ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের নিমগাছী অস্থায়ী কার্যালয় চত্বরের টিন সেটের মধ্যে প্রাইভেট কার গাড়ীটি রেখে বাড়ি যায়। এরপর দৃর্বূত্তরা মধ্যে রাত বৃহস্পতিবার সাড়ে ১২ টার দিকে প্রাইভেট কারটিতে আগুন দিয়ে পুড়ে দেয়। এসময় গাড়ীর সামনে ও পিছনে পুড়ে যায়। খবর পেয়ে রায়গঞ্জ থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। এব্যাপারে ২নং সোনাখাড়া ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান আবুহেনা মো: মোস্তফা কামাল রিপন জানান, গত রাত সাড়ে ১০ টার দিকে প্রাইভেট কার গাড়ীটি পরিষদের গাড়ী রাখা সেটের মধ্যে রেখে বাড়ি যাই। এরপর সোনাখাড়া ইউনিয়ন আ: লীগের যুগ্নসম্পাদক শাহাদৎ হোসেন আমাকে ফোনে বলে যে, আমার গাড়ীটি আগুন লেগে পুড়ে গেছে। তাৎক্ষনিক এসে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে খরব দিলে তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রন করে। আমার ধারনা পূর্বশত্রæতার জেরে আমার গাড়িটি আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছে। এঘটনায় আমার সন্দেহভাজন ২-৩ জনকে আসামী করে মামলা করবো। এঘটনায় পরদিন শুক্রবার বিকালে রায়গঞ্জ-তাড়াশ আসনের এমপি অধ্যাপক ডাক্তার মো: আব্দুল আজিজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এবিষয়ে রায়গঞ্জ থানার এস আই মোস্তফাজিুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে রাত পোনে ১ টার দিকে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রন পৃর্বক তাৎক্ষনিক তদন্ত করেছি।

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD