বীরমুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শুকুর মাহমুদ
রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকান্ড, দূর্ঘটনা না ষড়যন্ত্র সে যাই হোক এতবড় ক্ষতি এটি যে আল্লাহ’র গজব তা অনস্বীকার্য এর প্রতিকুলে শুধু ভুক্তভোগী নয় সমগ্র জাতীরই ভাবা উচিৎ, কেন এমন হচ্ছে? যেহেতু আমরা মুসলিম সে সুত্রে আমাদের ধর্মীয় দিক দিয়েই ভাবা উচিৎ। মুসলিম মুখে সীকার করে আমরা আল্লাহ’র গোলাম কিন্তু কাজে ভিন্ন। দেশে প্রায় ৯০ ভাগ মুসলিমের বসবাস এখানে পর্দানীসিন রাস্তায় চলবে নির্ভয়ে, অর্থ-সম্পদ থাকবে মুক্ত অবস্থায়। এদেশে চুরি-ডাকাতি, যিনা-ব্যাভিচার ঘটার কথা নয়। মুসলিমদের সম্পদ প্লাবনে ডুববে না, আগুনে পুরবে না, অথচ দেখা যায় যে, বিচার বিভাগ আদালত-জেলখানায় হাজারে নয়শত ৯০ জনই মুসলিম আসামী, এই কি কোরআনের শিক্ষা? এই কি নবীর আদর্শ? দূর্ঘটনা অথবা ষড়যন্ত্র যাই হোক মুসলিমের সম্পদের এত বড় ক্ষতি হাবার কথা নয়, শতর্ক হও।
অতীতে ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনা-আজাব, গজব ও ভয়বহ তান্ডব দেখে-শুনে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিৎ। মুসলিমদের জন্য জরুরি হুকুম হচ্ছে, সঠিক নিয়মে সম্পদ/মালের জাকাত ওসুল করো, জাকাত প্রদান কারীর মাল/সম্পদ দড়িয়ায় ডুবে না, আগুনে পুড়বে না। ইসলামে পরিস্কার নির্দেশ রয়েছে মালের জাকাত যথাযথ আদায় করলে সম্পদের ক্ষতি হয় না, মালে বরকত হয় জরুরি হুকুম রয়েছে, সুদ আদান-প্রদান থেকে বিরত থাকা। সুদে বরকত থাকে না, পেরেশানি লেগেই থাকে। মানুষকে ধোকা দিলে নিজের ক্ষতি হয়, কাউকে ঠকালে নিজের ঠকা অনিবার্য। ব্যবসায় মানুষকে ঠকালে আল্লাহ’র বরকত পাবে না।
আল্লাহ’র নবী হযরত সোয়ায়েব (আ.) এর কওমের মানুষেরা ওজনে কম দিয়ে ব্যবসায় অনিয়ম করত। নবীর নিষেধ শত্তেও ওই অপরাধটি করতেই ছিল। ওই জাতীর উপর আসমানী বালা, আল্লাহ’র গজব নাজিল হয়, আকাশ থেকে আগুন বর্ষিত হয়ে সে জাতি ধ্বংস হয়েছে। আমাদের নবী করিম (স.) বলেছেন তোমরা ব্যবসায়ে অনিয়ম করিও না, অনিয়মের শাস্তি সইতে পারবে না।
বাংলাদেশের সর্ব বৃহত শপিং মার্কেট বঙ্গবাজার, ওই বাজারে যত অনিয়ম-দূর্নীতি, ইসলাম পরিপন্থি কাজ হয় তা কোন মুসলিমের কাজ এটি বিশ্বাস করা যায় না, অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতা নর-নারী ইসলাম পরিপন্থিভাবে চলাফেরা করছে। মুসলিম হয়েও ধর্মীয় অনুশাসন নেই, ব্যবসায়ে অনিয়ম। জানা যায় যে, ১০০০ টাকা মুল্যের পোষাক ৫০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়, এ রকম বহু অনিয়ম চলমান। অধিকাংশ ব্যবসায়ী সুদের সাথে জরিত, যথাযথ মাল বা অর্থের জাকাত প্রদান করে কি না তা সন্দেহ আছে।
ব্যবসায়ে অনিয়ম দূর্নীতি ইসলাম পরিপন্থি চলাফেরা সুদের আদান-প্রদান করা সুষম জাকাত ওসুল না করা, নানা অনিয়মের শতর্ক সংকেত স্বরূপ ১৯৯৫ সালে বঙ্গবাজারে অগ্নিকান্ডে ক্ষতি, ২০১৮ সালে আগুনে পুরলো মার্কেট, ২০২৩ সালে ভয়বহ অগ্নিকান্ডে সর্ববৃহত ক্ষয়ক্ষতি। এসব কিসের আলামত? এখান থেকে শিক্ষাগ্রহন করা উচিৎ।
আল্লাহ’র বিরোধীতা করে কেউ-ই সীমা অতিক্রম করতে পারেনি। পৃথিবীতে বহু নজির রয়েছে, তাঁর হুকুমের বিরোধীতা করে বহু জাতি ধ্বংস হয়েছে। বর্তমান সময়েও বিশ্বের বড় বড় ক্ষমতাধর-রা ¯্রষ্ঠাকে অতিক্রম করে চলার চেষ্টা করছিলো। তাদের অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ হয়েছে, করোনা মহামারি থামিয়ে দিল তাদের তকব্বারি। কিছুটা হলেও বুঝিয়ে দিয়েছে, সর্বোচ্চ ক্ষমতা তাঁরই হাতে। খুব অল্প সময় আগের কথা, তুরস্ক ও সিরিয়ায় স্বরনকালের ভয়াবহ ভুমিকম্প ঘটে গেল, তারপরও কয়েকদিন ধরে বিরামহীনভাবে চলছিল মৃদু ভুমিকম্প। দেশগুলো মুসলিম শাসিত হলেও তাদের আচার-আচরণ ও সংস্কৃতি পশ্চিমা বিশ্বের ইহুদি-খ্রিষ্ট্রানদের অতিক্রম করে যাচ্ছে। যার ফলে এ পরিনতি। এখান থেকে শিক্ষা গ্রহন করা উচিৎ।
বাঙালি মুসলিমগণ, তোমাদের বলছি আল্লাহর আইন অতিক্রম করিও না। বেশি দুর অগ্রসর হতে পারবে না, তাঁর আইন মেনে চলো। পিছনের ঘটে যাওয়া তান্ডব থেকে শিক্ষা গ্রহন করো, নাফরমানির পরিনতি।
কথাসাহিত্যিক ও কলামিষ্ট
শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ।
আলাপচারিতা: ০১৭৮২-৪৫