সরকারি পুকুর গিলে খাচ্ছে রাস্তা, ঘরবাড়ি ও গাছপালা

Spread the love

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.
নাটোরের গুরুদাসপুরে রক্ষনাবেক্ষণ না করায় এক কিলোমিটার হেরিনবন্ড রাস্তা সরকারি পুকুরে ধ্বসে পড়েছে। শুধু তাই নয় ওই রাস্তা সংলগ্ন অর্ধশত বসতবাড়ীও ভাঙনের কবলে পড়েছে। ভারি বর্ষন হলেই এসব ঘরবাড়ি পুকুরের তলদেশে চলে যাবে। উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর মাঝপাড়া গ্রামের তিন একরের সরকারি ওই পুকুরটি প্রায় ৩০ বছর ধরে সংস্কার করা হয়নি। রাস্তাটি পুকুরের পেটে চলে যাওয়ায় চলাচল করতে পারছেনা মানুষ। দিন ও রাতে অপরিচিত লোকজন পুকুর সংলগ্ন বাড়িগুলোর মধ্যে দিয়ে যেতে চাইলে ঘটে নানান বাধাবিপত্তি। এ ব্যাপারে আবেদন নিবেদন করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
পুকুরপাড়ের বাসিন্দা স্থানীয় ইউপি সদস্য ফাহিমা বেগম বলেন, অনেক ঘরবাড়ি ভাঙনের শিকার হয়েছে। পাশের মসজিদটিও ধ্বসে পড়ার উপক্রম। বিকল্প পথ না থাকায় এলাকাবাসী ক্ষতিগ্রস্থ ওই হেরিনবন্ড রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতেন। বর্তমানে রাস্তাটি পুরোপুরি ধ্বসে গেছে। অনেক গাছপালাও চলে গেছে পুকুরের পেটে। ভুক্তভোগী বাসিন্দা বাবুল শিকদার, সুলতান শিকদার, আব্দুস সালাম, নুরুল ইসলাম, নুরুজ্জামান তুলাসহ এলাকাবাসী সমস্যাটির দ্রুত সমাধান চান।
সরেজমিনে জানা যায়, প্রায় ৩০ বছর ধরে আশপাশের তিন গ্রামের মানুষ এভাবেই ওই পুকুরপাড়ের রাস্তা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে আসছেন। নাজিরপুরসহ চন্দ্রপুর হাইস্কুল, প্রাইমারী স্কুল, হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও বীরবাজারের হাজারো মানুষ প্রতিদিন ওই পুকুরপাড়ের রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। মুসল্লীরা মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় মাঝেমধ্যেই পা পিচলে পুকুরে পড়ে যায়। ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারেনা। এমনকি কেউ মারা গেলে তার খাটিয়া নিয়ে চারজন মানুষ ওই পুকুরপাড়ের রাস্তা দিয়ে কবরস্থানে যেতে পারেনা। তাছাড়া এলাকায় গড়ে ওঠা আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষ বিকল্প পথ হিসেবে এই পুকুরপাড়ের রাস্তা ব্যবহার করেন। বর্তমানে তাদের যাওয়া আসার সেই রাস্তাটি আর নেই। ফলে অন্যের বাড়ির ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয় এলাকার মানুষদের। দিন ও রাতে অপরিচিত লোকজন বাড়ির মধ্যে দিয়ে যেতে চাইলে বাধাবিপত্তিও ঘটে। ইউএনও সাহেবের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও সুফল পাননি ভুক্তভোগীরা।স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু বলেন, এলাকাবাসীর ভোগান্তি দূর করতে গত বছর পুকুরসংলগ্ন সরকারি রাস্তাটি মেরামত করা হয়। কিন্তু পুকুরের ইজারাদারের অবহেলার কারণে এক কিলোমিটার রাস্তাটি পুকুরপাড়ের ভাঙনে ধ্বসে গেছে। পুকুরপাড়ে শক্ত বাধ না দেওয়ায় বারবার রাস্তাটি ভাঙনের শিকার হচ্ছে।
পুকুরটির ইজারাদার শ্রী নেপাল চন্দ্র বলেন, পুকুরের ভাঙন ঠেকাতে চারমাস আগে ইউএনও স্যারকে জানানো হয়েছে। জানতে চাইলে ইউএনও মো. তমাল হোসেন এসিল্যান্ডের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। এসিল্যান্ড মো. আবু রাসেল বলেন, পুকুরটি সংস্কারের জন্য কোনো বরাদ্দ পাইনি। সরেজমিন পরিদর্শন করে বিষয়টি উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে উপস্থাপন করা হবে।উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, সরেজমিন পরিদর্শন করে সরকারি ওই পুকুর সংস্কার করে দ্রুত এলাকাবাসীর ভোগান্তি দূর করা হবে।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD