নাটোর জেলায় ৩ লাখ ৩৫ হাজার পশু অনলাইনে বিক্রির জন্য প্রস্তত

Spread the love

আবুল কালাম আজাদ।।

নাটোর জেলায় আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিক্রির জন্য ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৯৫৮টি কোরবানির পশু প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। জেলার ভিতরে এবং বাহিরের জেলায় এবার হাট বসিয়ে কোরবানির পশু বিক্রি করা যাবে কিনা এই আশংকায় গড়ে উঠেছে অনেকগুলো অনলাইন প্লাটফর্ম।৩  লাখ ৩৪ হাজার ৯৫৮টি কোরবানির পশু মধ্যে এক লাখ ১৯ হাজার ৮৪টি গরু ও মহিষ, বাকিগুলো ছাগল ও ভেড়া। এসব পশুর বাজারমূল্য অন্তত ৯০০ কোটি টাকা। এবার নাটোর জেলায় প্রায় দুই লাখ ১০ হাজার কোরবানির পশু জবাই হবে বলে আশা করছে জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ।

নাটোর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় ইতোমধ্যে নাটোর পশুর হাট ও অনলাইন ডিজিটাল পশুর হাটসহ ৯টি অনলাইন প্লাটফর্ম তাদের কাজ শুরু করেছে। আরও কয়েকটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে কোরবানির পশু কেনাবেচার জন্য গড়ে উঠেছে অসংখ্য অনলাইন প্লাটফর্ম। যেগুলো থেকে ক্রেতা সহজেই পশু পছন্দ করে কিনতে পারবেন।নাটোর জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় ছোট বড় মিলিয়ে মোট ১২ হাজার ১৫০টি পশুর খামার রয়েছে। এবার জেলার সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় ও আকর্ষণীয় গরুর খামার করেছেন সদর উপজেলার ডালসড়ক এলাকার চাল ব্যবসায়ী রেকাত আলী। এই খামারের ১৮০টি গরুর মধ্যে বেশিরভাগ বিদেশি। এরমধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের শাহীওয়াল, ভারতের রাজস্থান ও উলুবাড়িয়া জাতের গরু। লাল, সাদা, কালো রঙের এসব এক একটি গরু লম্বায় ৯ ফুট ও উচ্চতায় ৬ ফুটেরও বেশি।

প্রতি বছর কোরবানির হাটে তোলার আগেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা গরু কিনতে তার খামারে ভিড় করলেও এবার পরিবেশ একেবারেই ভিন্ন। বিষয়টি মাথায় রেখে গত বছর থেকে এই ব্যবসায়ী ‘কাউ মার্কেট’ নামে একটি অনলাইন প্লাটফর্ম চালু করেছেন। এই অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে করছেন তার খামারের গরু বিক্রি।জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া ফজলীতলার রাজু আহম্মেদের খামারে এবার ৩৭টি বড় গরু রয়েছে। তারাও এবার অনলাইনে গরু বিক্রি করবেন। শহরতলীর দিঘাপতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য তেগাছী গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম প্রায় ১৫ বছর থেকে গরুর খামার পরিচালনা করেন। এবার তার খামারে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ছোট বড় ৫০টি গরু।

এর মধ্যে ব্যতিক্রম রাজা, বাদশা ও কালিয়া নামের তিনটি বড় গরু। ২৫ থেকে ৩৩ মন ওজনের এসব গরুর দাম হাঁকাচ্ছেন তিনি ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া জেলার সবচেয়ে বড় গরুর দাবিদার সদরের হয়বতপুরের ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলামের গরু কালা তুফান ইতোমধ্যে দেশ জুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে। তিনিও এখন তার কালা তুফানের দাম চান ১৫ লাখ টাকা।এসব খামারিরা বড়গুলো ঢাকা কমলাপুর হাটে বিক্রির স্বপ্ন দেখলেও করোনার মহামারির কারণে শেষ পর্যন্ত যেতে না পারলে অনলাইন প্লাটফর্মেই বিক্রি করতে চান।খামারিরা জানান, প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরামর্শে পুষ্টিকর খাবার- খৈল, গম, ভুষি, ছোলাসহ সবুজ ঘাস খাইয়ে খুব সহজেই গবাদিপশু মোটাতাজা করেছেন। ক্ষতিকর স্টেরয়েড বা হরমোন ব্যবহার করা হয়নি।

কোরবানির পশু বিক্রির জন্যে প্রতি বছর জেলার ১৪টি পশুর হাট প্রসিদ্ধ হলেও গত বছর থেকে হাটে না গিয়ে এলাকার মানুষ খামারে গিয়ে সরাসরি গরু কিনতে বেশি পছন্দ করছে। আর দূরের মানুষ কিনতে শুরু করেছে অনলাইনে।প্রাণিসম্পদ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী গত বছর জেলায় কোরবানির সাড়ে পাঁচ হাজার গরু মহিষ অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। তারা আশা করছেন প্রযুক্তির উন্নতি ও করোনার ভয়াবহতার কারণে এবার মানুষ হাটে গিয়ে পশু কিনতে চাইবে না। তাই এবার অনলাইনে বেচাকেনা বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। এছাড়া করোনার প্রকোপ ঈদের আগে কমলে জেলার হাটগুলোও বসবে।জেলার সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর হাট বড়াইগ্রামের মৌখাড়া

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD